শিরোনামঃ মুক্ত বাংলায়-
সংবাদপত্রঃ দেশ বাংলা (১ম বর্ষঃ ৪র্থ সংখ্যা)
তারিখঃ ১৮ নভেম্বর, ১৯৭১
রংপুরের মুক্ত এলাকায় প্রাণের স্পন্দন (নিজস্ব সংবাদদাতা)
রংপুরের জেলার ৮টি জেলা এখন সম্পূর্ণ মুক্ত। প্রয় ১২০০ বর্গামাইল এলাকা জুড়ে স্থানগুলিতে ৭ লক্ষ মানুষের বাস।
মুক্ত থানাগুলিতে এখন বাংলাদেশ সরকারের গ্রাম ও ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রশাসন ব্যবস্থা পুনর্গঠনের কাজে হাত দিয়েছেন। উত্তরাঞ্চলীয় জোনাল কাউন্সিলের তত্বাবধানে আইন ও শৃংখলা রক্ষার জন্য পুলিশ বাহিনী যথারীতি কাজ করে যাচ্ছে, যদিও অপরাধের সংখ্যা খুবই নগণ্য। প্রতি থানায় কার্যাদি পরিচালনার জন্য ম্যাজিষ্ট্রিট নিয়োগ করা হয়েছে। একটি জেলখানাও স্থাপিত হয়েছে। ডাক তার ও টেলিফোন যোগাযোগ নিয়মিত ভাবে চলছে।
প্রাইমারী পর্যায় পর্যন্ত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পুরাদমে চালু রয়েছে। সাব রেজিষ্ট্রার অফিস, বিবাহ রেজিষ্ট্রেশন অফিস ও শুল্ক অফিসগুলিতে স্বাভাবিক কাজ চলছে।
প্রত্যেক থানায় একটি করে ডিস্পেন্সারি স্থাপিত হয়েছে এবং হেলথ অফিসারদের তত্ত্ববধানে ব্যাপকহারে কলেরা-বসন্তের টীকা দেওয়ার কাজ চলছে।
পাকিস্তানী লুণ্ঠনে হৃতসর্বস্ব এ সব অঞ্চলে তীব্র খাদ্যাভাব দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ সরকার এ ব্যাপারে যথাবিহীত ব্যবস্থা করেছেন এবং টেষ্ট রিলিফের জন্য কিছু অর্থ বরাদ্দ করছেন।
সমগ্র মুক্তাঞ্চলটিতে এখন করে প্রাণের স্পন্দন জাগছে। সম্প্রতি পূর্বাঞ্চলীয় জোনাল কাউন্সিলের চেয়ারম্যান জনাব মতিউর রহমান এম, এস, এ, অন্যান্য নেতৃবৃন্দ সহকারে পাটগ্রাম, ফুলবাড়ি, সোনাহাট, হাতিবান্ধা প্রভৃতি থানা সদর সফর করেন। সর্বত্রই তারা বিরাট জনসভায় ভাষণ দেন এবং সর্বশ্রেণীর জনসাধারণ ও মুক্তিবাহিনীর সদস্যদের সাথে আলাপ আলোচনা করেন।