শিরোনাম | সংবাদপত্র | তারিখ |
জনসভা | জাগ্রত বাংলা
১ম বর্ষঃ ৫ম সংখ্যা |
৩০ অক্টোবর, ১৯৭১ |
জনসভা
টাঙ্গাইল, ২৩শে অক্টোবর। অদ্য টাঙ্গাইল জেলার মুক্তাঞ্চলে এক বিরাট জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথির আসন গ্রহন করেন ঢাকা, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, পাবানা জেলার মুক্তিবাহিনীর প্রধান তত্ত্বাবধায়ক বাংলার বীর সন্তান জনাব আবদুল কাদের সিদ্দিকী সাহেব। সভায় বক্তৃতা করেন টাঙ্গাইলের বেসামরিক প্রধান ও ছাত্রনেতা জনাব আনোয়ার উল আলম শহীদ ভাই। শহীদ ভাই তার বক্তৃতায় বলেন, যে ত্যাগ তিতিক্ষা স্বীকার করে আমরা জাতীয় মুক্তিযুদ্ধে লিপ্ত হয়েছি এ মুক্তিযুদ্ধকে সাফল্যমন্ডিত করতে এর চেয়ে বেশী ত্যাগ তিতিক্ষার প্রয়োজন। তিনি তাঁর বক্তৃতায় টাঙ্গাইলের মুক্তিযুদ্ধের অগ্রগতির কথাও উল্লেখ করেন। শহীদ ভাইয়ের ভাষণের পর প্রধান অতিথি তাঁর ভাষণ দেন। প্রধান অতিথি তাঁর ভাষণে বিভিন্ন সহকর্মীদের নাম উল্লেখ করে বলেন, আমি জীবনে যা চেয়েছি তার চেয়ে অনেক বেশী পেয়েছি। তিনি দৃঢ়কন্ঠে ঘোষণা করেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য আমি আমার জীবনের শেষ রক্তবিন্দুটি পর্যন্ত দান করবো। তিনি বলেন, স্বাধীনতা অর্জনের জন্য আমাদের সকলকেই অস্ত্র হাতে নিতে হবে। এখনও আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। অল্প দিনের মাঝেই আমাদের মার শুরু হয়ে যাবে। পাক সরকারের অত্যাচারের কথা উল্লেখ করে কাদের সাহেব বলেন, অত্যাচারীরা অত্যাচারের প্রতিফল পাবেই। তিনি বলেন, বাঙ্গালীরা পূর্বের কোন ইতিহাসে হারেননি, জাতীয় স্বাধীনতা অর্জনের ইতিহাসেও আমরা হারব না, ৭০ হাত মাটির নীচেও যদি জঙ্গী চক্রেরা বঙ্গবন্ধুকে লুকিয়ে রাখে তবে সেই ৭০ হাত মাটির নীচ হতেও আমরা বঙ্গবন্ধুকে উদ্ধার করব; তাঁকে না উদ্ধার করে হাতিয়ার ছাড়বো না। যেদিন আমরা স্বাধীন হব, সেদিন মুজিব আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন সেদিন আমারা অস্ত্র ছাড়ব।
পরিশেষে তিনি রাজাকারদেরকে অচিরেই আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেন। যদি আত্মসমর্পণ না করে তবে তাদেরকে সমূলে উৎখাত করা হবে এ মর্মে হুঁশিয়ারী জানান।