You dont have javascript enabled! Please enable it!
শিরোনাম সূত্র তারিখ
১৯৮। রাজাকারদের প্রতি জেনারেল নিয়াজীর আহবান দৈনিক পাকিস্তান ২০ অক্টোবর, ১৯৭১

জেনারেল নিয়াজী- রাজাকারদের প্রতি নিঃস্বার্থ সেবায় আহবান
পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের অধিনায়ক ও ‘খ’ অঞ্চলে সামরিক আইন প্রশাসক লেঃ জেনারেল এ,এ,কে নিয়াজী গতকাল মংগলবার রাজাকারদের প্রতি শৃংখলা ও জাতির প্রতি নিঃস্বার্থ সেবার গুনাবলী অর্জনের আহবান জানান। এপিপির খবরে প্রকাশ, জেনারেল নিয়াজী পাবনায় রাজাকারদের এক সমাবেশে ভাষণ দিচ্ছিলেন। এতে শান্তি কমিটির সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। এর আগে জেনারেল নিয়াজী স্থানীয় ট্রেনিং স্কুলে ট্রেনিং গ্রহণরত রাজাকারদের পরিদর্শন করেন। জিওসি তার সাথে ছিলেন। জেনারেল রাজাকারদের বলেন যে, তাদেরকে দেশ রক্ষার পবিত্র দায়িত্ব মহান সুযোগ দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন যে, এই মহান দায়িত্ব পালনের জন্য গভীর শৃংখলাবোধ ও আদর্শের প্রতি নিঃস্বার্থ নিষ্ঠার প্রয়োজন। জেঃ নিয়াজী বলেন যে, পাকিস্তান রক্ষা করা প্রকৃতভাবে তাদের নিজেদের বাড়ীঘর রক্ষার শামিল। তিনি বলেন যে, মানুষের জন্যে মৃত্যু অনিবার্য। তিনি যুদ্ধক্ষেত্রে মৃত্যু হচ্ছে গৌরবমন্ডিত। তিনি বলেন যে, এর স্বারা তার সমস্ত পাপ মুছে যায় এবং সে আল্লাহর রহমত প্রাপ্ত হয়। এর আগে পাবনায় পৌছলে এক বিরাট উতফুল্ল জনতা জেঃ নিয়াজী কে সংবর্ধনা জানায়। পরে তিনি রাজশাহী যান। সেখানে তিনি ছাত্র ও বিশিষ্ট নাগরিকদের এক বিরাট সমাবেশে ভাষণ দেন। তিনি শান্তি কমিটির সদস্যদের সাথে দেখা করেন। রাজশাহী সমাবেশে ভাষনদানকালে জেনারেল নিয়াজী বলেন যে, অভ্যন্তরীন গোলযোগ বা দেশদ্রোহীদের চক্রান্তের দ্বারা দুর্বল হয়ে পড়া ছাড়া মুসলমানেরা ইতিহাসে আর কখনও পরাজয় বরণ করেনি।
তিনি ভাষাগত ও সংকীর্ণ সংস্কারের উস্কানি দিয়ে জনসাধারনের মধ্যে বভেদ সৃষ্টি করতে চায় এমন ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার জন্যে জনগনের প্রতি আহবান জানান। প্রেসিডেন্ট যে সাধারন ক্ষমা প্রদর্শন করেছেন সে সম্পর্কে জেঃ নিয়াজী বলেন যে, যারা ফিরে এসেছে তাদের সবাই ক্ষমা ও পূনর্বাসন করা হয়েছে।
তিনি দেশপ্রেমিক নাগরিকদের প্রতি শত্রুর ঘৃণ্য উদ্দ্যেশ্য নস্যাত করে জাতিগঠনের কাজে আত্মনিয়োগের উদ্দ্যেশ্যে দেশে ফিরে আসার ব্যাপারে আহবান জানান। তিনি বলেন যে, যে কোন ঘরোয়া বিরোধ থাকলে তাতে প্রতিবেশীদের অযথা হস্তক্ষেপের সুযোগ না দিয়ে ঘরের মধ্যেই তার সমাধান করা উচিৎ। পুল উড়িয়ে দিয়ে বা খাদ্যশস্য পরিবহনে বা শিল্প উতপাদনে বাধা দিয়ে যারা সাধারন মানুশের জন্যে অর্থনৈতিকভাবে অসুবিধার সৃষ্টি করতে চাচ্ছে তাদের সনাক্ত ও নির্মুল করার জন্যে তিনি জনসাধারনের আহবান জানান। জেনারেল নিয়াজী ভাষনের পুর্বে স্থানীয় জনগন সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি শ্রদ্ধা বক্তৃতা ও কবিতা পাঠ করেন।
তারা মাতৃভূমির প্রতিরক্ষার জন্য তাদের শেষ রক্তবিন্দু বিসর্জনের শপথ গ্রহণ করে। সবার শেষে জেনারেল নিয়াজী গারীতে রাজশাহী বাজারের মধ্যে দিয়ে স্থানীয় সেনাবাহিনীর দফতরে যান। সেখানে তাকে রাজশাহী জেলার সীমান্ত এলাকা থেকে সম্প্রতি উদ্ধারকৃত বিপুল পরিমান অস্ত্র, গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক দ্রব্য দেখানো হয়।
স্থানীয় কমান্ডার জেনারেল নিয়াজীকে জানান যে, বর্ষা শেষ হবার সাথে সাথে দুস্কৃতিকারীদের তৎপরতা ক্রমশ কমে আসছে। জেনারেল নিয়াজী সৈন্যদের পরিদর্শন করেন এবং তাদের সাথে ঘরোয়াভাবে আলাপ করে। তিনি দেশ রক্ষার জন্য তাদের পুরোপুরি প্রস্তুত ও তাদের উচ্চ মনোবল লক্ষ্য করেন।
 

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!