শিরোনামঃ মুজিবের প্রাণনাশের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি
সংবাদপত্রঃ সোনার বাংলা (১ম বর্ষ ৬ষ্ঠ সংখ্যা)
তারিখঃ আগষ্ট, ১৯৭১
মুজিবের প্রাণনাশের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি
রাশিয়া
সোভিয়েত সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে পাকিস্তানের জঙ্গী শাসক ইয়াহিয়া খাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের প্রাণপ্রিয় নেতা শেখ মুজিবকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করলে তার পরিণাম মারাত্নক হবে। তাই অবিলম্বে শেখ মুজিবকে মুক্তি দিয়ে আলাপ আলোচনার মধ্যমে বাংলাদেশ সমস্যার একটি রাজনৈতিক সমাধান করার জন্য সোভিয়েত সরকারের পক্ষে থেকে আহবান জানান হয়েছে।
অষ্ট্রেলিয়া
পাকিস্তানের জঙ্গী শাসকগোষ্ঠী রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ এনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের যে বিচার প্রহসনের ব্যবস্থা করেছেন তার প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করে অষ্ট্রেলিয়ার সরকার পাকিস্তানকে একটি নোট দিয়েছেন। অষ্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী মিঃ উইলিয়াম ম্যাকমোহন প্রেসিডেন্টে ইয়াহিয়ার নিকট একটি ব্যক্তিগত বার্তা পাঠিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
মার্কিন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রগতিশীল রাজনীতির অন্যতম প্রবক্তা সিনেটর এডওয়ার্ড কেনেডী ও সিনেটর চার্লস পার্সি বলেন- শেখ মুজিবের বিচারের ব্যাপারে মার্কিন সরকার পাকিস্তান সরকারের উপর প্রবল প্রভাব বিস্তার করবে। বঙ্গবন্ধুর প্রাণনাশ হলে পরিস্থিতির বিষ্ফোরণ ঘটবে বলেও তারা মন্তব্য করেন।
বৃটিশ সংবাদপত্র
বৃটিশ সংবাদপত্র ইয়র্কশায়ার পোষ্ট মন্তব্য করেছে, শেখ মুজিবের গোপন বিচার সম্পর্কে সারা বিশ্বে যে আলোড়ন সৃষ্টি করে পাকিস্তান সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে যে ধিক্কার তুলেছে তার প্রতি জঙ্গীশাহী কর্ণপাত করলে সুবিবেচনারই পরিচয় দিতেন। পত্রিকাটিতে তীব্র প্রশ্ন তুলে বলা হয়েছে শেখ যদি মানুষ হিসেবে এতই ভয়ংকর ও খারাপ হয় তবে প্রকাশ্য আদালতে বিচার করতে সামরিক কর্তৃপক্ষ কুণ্ঠিত কেন?
ভারত
ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী পাকিস্তান সামরিক জান্তার প্রতি এই মর্মে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন যে, পাকিস্তান সামরিক কর্তৃপক্ষ যদি শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে তবে ‘শুধু বাংলাদেশ নয়, তার প্রতিক্রিয়া সারা বিশ্বে গিয়ে পড়বে।‘