You dont have javascript enabled! Please enable it!

শিরোনামঃ ১৩৮। প্রত্যাবর্তনকারী নাগরিকদের প্রতি পাকিস্তানের স্বাগতম
সূত্রঃ সরকারী প্রচার পুস্তিকা
তারিখঃ জুলাই, ১৯৭১
.
প্রত্যাবর্তনকারী নাগরিকদের প্রতি পাকিস্তানের স্বাগতম
বরাবরের মতো উপমহাদেশের বিভাগ, যেখানে নব্য স্বাধীন রাষ্ট্র ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ গতিবিধি আছে। এই ক্ষেত্রে, তরুণ রাষ্ট্রের খুব শৈশবে একটি আদেশ ভেদে ১৯৪৭ সালে ভারত কতৃক প্রায় ১০ মিলিয়ন মুসলিম শরণার্থীকে পাকিস্তানে প্রেরণ করা হয়েছিল। এরমধ্যে বিপরীত চলাচলে, কোনভাবেই তা লক্ষ নয় মুসলিম ভারতে গিয়েছিল এবং এই অন্তঃপ্রবাহ ও বহিঃপ্রবাহ অব্যাহত ছিল বরাবরের মতো : পূর্ব পাকিস্তান গ্রহণ করেছিল এক মিলিয়নেরও বেশি এবং অর্ধেক ব্যক্তিই পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও ত্রিপুরার। প্রতিবার একটি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ভারতে সহসা আবির্ভূত হয়(ভারতীয় পত্রিকাসমূহ অনুযায়ী, ১৯৫১ সাল পর্যন্ত ভারতে ৩,৪৭৭ টি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয় যেখানে ৭,৪৭৬ ব্যাক্তি নিহত এবং ৩২.৪৪ জন আহত হয়) হাজার হাজার মুসলিম পাকিস্তানে অভিগমনে বাধ্য হয়, অধিকাংশ ক্ষেত্রে, অসতর্ক বেসরকারি গমনপথ এড়ানো দ্বারা পাকিস্তান সরকারের ভারতের উদ্বাস্তুদের প্রবেশে সাধারণ নিষেধাজ্ঞা। ভারতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাসমূহ যেমন বারংবারের ঘটনা – যেখানে ৫১৯ ছিল এই সময়ে, কেবল ১৯৭০-৭১ সালে, ভারতীয় আইনসভার নিজস্ব বিবৃতি অনুযায়ী ভারত হতে উদ্বাস্তু অন্তঃপ্রবাহ অধিক অথবা অব্যাহত প্রক্রিয়া থেকে কম। সেই বৃহত্তর সেই বিশাল হত্যাকাণ্ডের যে সবচেয়ে সাম্প্রতিক দৃষ্টান্ত ছিল যেটা আহমেদাবাদে, মহারাষ্ট্রে হয়েছিল ভারতের উদ্বাস্তুদের বৃহত্তর বন্যা। *যাত্রা উৎসাহিতকরণে ভারতের নীতি* পাকিস্তানের উদ্বাস্তুদের অন্তঃপ্রবাহ নিরুৎসাহিতকরণ নীতির প্রতি তীব্র বৈষম্য প্রদর্শন করে, ভারত সরকার পূর্ব পাকিস্তান হতে হিন্দুদের আমন্ত্রণ জানানোর একটি ইচ্ছাকৃত নীতি অনুসরণ করেছিল। একক সমষ্টিগত অর্থ, জমি এবং শিল্পসংক্রান্ত একক প্রদানের প্রতিশ্রুতি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল এ প্রলোভনে। অর্থনেতিক বিশেষজ্ঞদের বিশ্বাস যে সংখ্যালঘু সমষ্টির সদস্যদের দ্বারা স্বর্ণ ও অন্যান্য অস্থাবর সম্পত্তি চোরাচালান পূর্ব পাকিস্থান হতে ভারতে সম্পদ হস্তান্তরে বৃহৎ মাপনী প্রসূত হয় এবং পূর্ব পাকিস্তানের অর্থনেতিক উন্নতিতে বাঁধা প্রদানকারী অনেকগুলো বৃহৎ কারণের একটাতে পরিণত হয়। মূলত সর্বশেষ নির্বাচনী প্রচারণার সময়ে, পূর্ব পাকিস্তানের অনেক রাজনৈতিক দলসমূহ দুঃখ প্রকাশ করে সত্য যখন শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার আওয়ামী লীগ কঠোর সমালোচনা করে পূর্ব পাকিস্তান হতে পশ্চিম পাকিস্তানে সম্পদ হস্তান্তরে, পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে সীমান্তে সম্মুখীন জাতীয় সম্পদের অনেক বৃহত্তর প্রবাহে তারা সন্দেহজনকভাবে নীরব থাকে। এই বছরের প্রথমাংশে এই প্রক্রিয়া শিখর ছুঁয়ে যায় যখন আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী এবং তাদের সহযোগীরা পশ্চিমবঙ্গে বাহিত হয় কেবল বৃহদায়তন খাদ্যশস্য এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সরবরাহের ভাণ্ডার নয় বরং একটি খুব বড় সংখ্যক ট্রাক, বাস, জীপ
.
এবং অন্যান্য যানবাহনসমূহও। তারা এমনকি পূর্ব পাকিস্তান এবং পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যকার বিভাজন থেকে অব্যবহৃত রেললাইন পুনরুদ্ধার করেছিল ইন্জিন এবং ঘূর্ণায়মান স্টক অপসারণ করতে। এই প্রসঙ্গ যেখানে চলমান উদ্বাস্তু সমস্যা, পৃথিবীব্যাপী ভারতের দ্বারা শোষিত, দেখার প্রয়োজন রয়েছে।
অবাধ পরিসংখ্যান
এই সত্য অস্বীকার করার সুযোগ নেই যে বৃহৎ সংখ্যক পাকিস্তানি নাগরিক দেশ ত্যাগ করেছে ১৯৭১ সালের মার্চ এবং এপ্রিলে। সীমান্তের অন্যপাশে কোন যন্ত্রপাতির অস্তিত্ব না থাকায় হিসাব রাখা আর সঠিক সংখ্যা প্রদান করা সম্ভব নয়। সম্প্রতি যখন কানাডার আইনসভার একজন সদস্য উল্লেখ করেছিলেন সংখ্যাটা ৫ অথবা ৬ মিলিয়ন, বিখ্যাত ব্রিটিশ অধ্যাপক রুশব্রুক উইলিয়ামসের স্ত্রী তাকে রূঢ়ভাবে জিজ্ঞাসা করেন, “তুমি কিভাবে জানো, তুমি গণনা করেছিলে?” এই স্থানচ্যুত কিছু মানুষের গল্প সম্পর্কে সম্পর্কিত জিজ্ঞাসায় তার সমানভাবে প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন ছিল। “তুমি কি তাদের ভাষা বুঝতে পেরেছিলে?”, সে জিজ্ঞাসা করেছিল। “যদি না হয়, কে দোভাষী সরবরাহ করেছিল? ভারতীয়রা? তারা নয় কি?”, সে জিজ্ঞাসা করেছিল; এবং আইনসভার সদস্যকে স্বীকার করতে হয়েছিল যে, তাদের ভারতীয় কর্তৃপক্ষ সরবরাহকৃত দোভাষীর উপর নির্ভর করতে হয়েছিল। যথাযথ সংখ্যা যাইহোক, সীমান্তের সম্মুখীন সংঘটিত এই আন্দোলনের কারণসমূহ যথেষ্ট কষ্ট স্বীকারের যোগ্য নিরূপক। *পাকিস্তান বিচ্ছিন্নে ভারতের বিদার প্রস্তাব* বহিরাগত চাপ এবং অভ্যন্তরীণ ধ্বংস দ্বারা পাকিস্তান বিচ্ছিন্নে আঁকা ভারতের নকশাসমূহ কারণসমূহ হতে পারে। তার উদ্দেশ্য পরিস্কারভাবে বিশদভাবে ব্যাখ্যা করেছিলেন ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক মি. সুব্রমানয়ম আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী ইনস্টিটিউট এর ঠিকানায় ১৯৭১ সালের ৭এপ্রিল যেখানে তিনি বলেন, “ভারত কে এই সত্য অবশ্যই উপলব্ধি করতে হবে যে, পাকিস্তানের বিচ্ছিন্নতাই আমাদের আগ্রহ, একটি সুযোগ যা একইভাবে কখনোই পুনরায় আসবে না। ” এই উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য যে পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়েছিল তা শুরু হয়েছিল যেইমাত্র সমগ্র ভারতীয় কংগ্রেস এর পশ্চিমবঙ্গ শাখার সাধারণ সম্পাদক মি. কে কে শুক্লা যিনি ১৯৭১ সালের ৪ এপ্রিল ঐ কমিটি সম্ভাষণে স্পষ্টভাবে ঘোষণা করলেন যে, “শেখ মুজিবুর রহমান ভারতের যুদ্ধে লড়ছেন।” পূর্ব পাকিস্তানে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সাথে ভারতের সরাসরি সম্পৃক্ততা বাদে এবং পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের বাঙালি জাতি, ভাষা এবং সংস্কৃতির নামে তার নিরবিচ্ছিন্ন বর্ণবাদী প্রজ্ঞাপন প্ররোচক ছিল এবং ভারতীয় আশ্রয়স্থলে সীমান্ত সম্মুখীন নিরাপদ পরিবহন এবং উষ্ণ সাদর অভ্যর্থনা প্রদানে প্রলুব্ধ করে, যেখানে ছিল নির্দিষ্ট অন্যান্য কারণসমূহ যা কাজে দিয়েছিল। ১৯৭১ সালের ১ মার্চ শুরু, যেখানে ছিল ব্যাপক লুটপাট, জাতিগত সংখ্যালঘু এবং ভারত সাহায্যপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগ এবং তার সহযোগী রাজনৈতিক “অনুগামী ব্যাক্তিদের” জ্বালিয়ে দেওয়া এবং হত্যা। একটি সাধারণ আইন এবং আদেশ অনুসরণ ধ্বংস হয় ফলে বৃহদায়তন আইন অমান্য আন্দোলন চালু হয় আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের দ্বারা।
.
আওয়ামী লীগ এর জেল ভাঙা এবং হত্যাকাণ্ড
সমগ্র প্রশাসন পক্ষঘাতগ্রস্থ হতে থাকে, পূর্ব পাকিস্তানে বহু সংখ্যক জেল ভাঙা হয় ফলে নিশ্চিত অপরাধী যাদের অন্তর্ভুক্ত ছিল খুনী, গলাকাটা এবং না যেয়ে উপায় ছিল না যারা স্বেচ্ছায় দেশব্যাপী ঘুরে বেড়িয়েছিল তাদের মুক্তি, হনন, হরণ এবং ধর্ষণ। হত্যাকাণ্ড সম্পন্ন হয়েছিল ভারত ওরিয়েন্টেড ঝড়সৈনিক দ্বারা সর্বত্র বিভাগে মার্চ – এপ্রিল এই সময়ে, ব্যাপক হত্যা এড়াতে বহুসংখ্যক মানুষকে সীমান্তে হঠাৎ সম্মুখীন হতে বাধ্য করা হয়েছিল। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পরবর্তী সময়ে, সেনাবাহিনী এবং সশস্ত্র বিদ্রোহী এবং দলত্যাগীদের মধ্যে সংঘর্ষ ছিল। এটা নির্দিষ্ট এলাকাসমূহে সাধারণ জনগণকে নিরাপত্তাহীন করে তোলে। সশস্ত্র বিদ্রোহীরা নিজেদের সংখ্যা করে ২০০, ০০০, যুদ্ধে ধ্বংস হয় এবং প্রতিফল এড়াতে পালিয়ে ভারত সীমান্ত সম্মুখীন হয়। সশস্ত্র বিদ্রোহী ব্যতীত, অন্যান্য আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ এবং কর্মীরা, যারা বিচ্ছিন্নতাবাদী নকশার প্রতি প্রতিজ্ঞাবদ্ধতায় অনেক দূরে ছিল, এবং তাদের পলায়নে ভাল প্রস্তুতি নিয়েছিল। সারাক্ষণ, কলকাতা রেডিও থেকে ব্যাধিযুক্ত সুদীর্ঘ বক্তৃতা এবং অধ্যাবসায়ী ভারতীয় প্রজ্ঞাপন ছিল। এই প্রজ্ঞাপন সিদ্ধিলাভ করেছিল আতঙ্ক ব্যাপ্তিতে বিশেষত হিন্দু সংখ্যালঘুদের মধ্যে, এবং যথেষ্ঠ প্রস্থানে যোগ করেছিল যা উৎসাহিত হয়েছিল সীমান্ত উন্মুক্ত রাখা হচ্ছে এমন পুনরাবৃত্ত ভারতীয় ঘোষণা দ্বারা। ভারতীয়দের লক্ষ্য ছিল পূর্ব পাকিস্তানের অর্থনীতিকে আংশিকভাবে চূর্ণ-বিচূর্ণ করতে জনগণের একটি ব্যাপক আন্দোলন উৎসাহিতকরণ, এবং আংশিকভাবে পাকিস্তান সরকারের সম্মানহানি দেখানো যে প্রদেশে নিয়ন্ত্রক পরিবেশের অধীনে বসবাসে বৃহৎ সংখ্যার জনগণ অনিচ্ছুক ছিল। ঠিক সেই সময়ে ভারত বিচ্ছিন্নতাবাদী শাসন নির্বাসন গঠনে সঙ্ঘটিত, এর মধ্যে উদিত হয় তার আগ্রহে মানবীয় উৎপাটনের ব্যপ্তি বিবর্ধিত করে আন্তর্জাতিক মনোযোগ এবং সহানুভূতি উভয়কেই আকর্ষণ করে।
পাকিস্তানের মনোভাব
পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ প্রাথমিকভাবে আচ্ছন্ন ছিল আইন ও আদেশ পুনরুদ্ধারে, প্রশাসনিক কলকব্জা পুনর্বাসনে যা পক্ষঘাতগ্রস্থ হয়েছিল সশস্ত্র বিরুদ্ধাচরণে। শুধুমাত্র প্রদেশসমূহে সর্বত্র তাদের কর্তৃত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠাকরণের পরে যেখানে তারা ব্যবস্থাসমূহ আরম্ভ করতে সক্ষম ছিল নাগরিকদের আকর্ষণ করতে যারা পরিত্যাগ করেছিল তাদের বাড়ি ফিরে আসতে। এইসব ব্যবস্থাসমূহের মধ্যে ছিল নাগরিকদের প্রতি ফিরে আসার আবেদন, তাদের মধ্যে একটি আত্মবিশ্বাসের অনুভূতি পুনরাধিষ্ঠিত করতে একটি রাজক্ষমা। ১৯৭১ সালের ২১মে, পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি একটি আকুল আবেদন তাড়ন করেন প্রকৃত পাকিস্তানি নাগরিকদের কাছে, যারা পূর্ব পাকিস্তানের উপদ্রুত পরিবেশে পরিত্যাগ করেছিল, তাদের বাড়ি ফিরে আসতে। রেডিও পাকিস্তানের সব স্টেশনে সম্প্রচারিত একটি বিবৃতিতে, এবং যা কিছু সংখ্যক বিদেশি সংবাদ মিডিয়া দ্বারা বাহিত হয়, রাষ্ট্রপতি বলেন যে পূর্ব পাকিস্তানে আইন ও আদেশ পুনরুদ্ধার করা হয়েছে, এবং জীবনযাত্রার ধরণ দ্রুত স্বাভাবিক হয়েছে। তিনি জনগণকে রাষ্ট্রবিরোধী উপাদানসমূহ দ্বারা অধ্যাসিত মিথ্যা প্রজ্ঞাপন দ্বারা ভ্রান্ত পথে চালিত না হতে তাড়িত করেন, এবং তাদের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে ফিরে আসতে বলেন। তিনি একটি নিঃশর্ত প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন যে, “পাকিস্তানের আইন মেনে চলা জনগণ তাদের স্ব স্ব বাড়িতে ফিরে আসার জন্য কোন প্রতিসংহার অনুমতির প্রশ্ন নেই।”
.
এটা দুর্ভাগ্য ছিল যে ভারত সরকার একটি অত্যন্ত ক্ষতিকারক এবং বিকৃত ঘটনাবলী বর্ণনার প্রচারক হয়ে গিয়েছিল এসব সীমান্ত লঙ্ঘনে। বহুসংখ্যক মানুষ যারা পূর্ব পাকিস্তান থেকে ভারতে অতিক্রান্ত হয়েছিল তারা একত্রে স্ফীত হয়েছিল বেকার এবং পশ্চিমবঙ্গের ভূমিহীন সংখ্যা দ্বারা যেখানে, কেবল কলকাতাতেই, যারা ফুটপাতের উপরে বসবাস করতো এবং ঘুমাতো তাদের সংখ্যা দুই মিলিয়ন অতিক্রম করেছিল। এটা ছিল সুস্পষ্ট যে ভারত ইচ্ছাকৃতভাবে উদ্বাস্তু প্রশ্নে কেলি করেছিল শুধুমাত্র পাকিস্তানকে শাসানোর জন্য নয়, বরং পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে তার নিজস্ব অব্যাহত হস্তক্ষেপকে সমর্থন করার জন্য। “এটা সর্বোচ্চ অনুশোচনার “, পাকিস্তান রাষ্ট্রপতির হিসেবে, “এটা মানবিক ভিত্তিতে উদ্বাস্তুদের উপরে অকৃত্রিম আচরণের পরিবর্তে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এই ইস্যু কাজে লাগানো ভারতের দ্বারা চালু একটি অনুভূতিহীন প্রচারণা। ” রাষ্ট্রপতি এটা পুনর্ব্যক্ত করেন ৩দিন পরে করাচিতে তার সংবাদ সম্মেলনে, ১৯৭১ সালের ২৪ মে এবং বাস্তুচ্যুত মানুষকে আশ্বস্ত করেন যে তাদের প্রত্যাবর্তন এবং পুনর্বাসনে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা হবে। ১৯৭১ সালের ২৯মে, একজন সরকারী মুখপাত্র পাকিস্তান রাষ্ট্রপতির নিবেদন পুনর্ব্যক্ত করেন এবং বলেন যে সকল খাঁটি পাকিস্তানি, যারা পাকিস্তান পরিত্যাগে বাধ্য হয়েছিল হুমকী বা জবরদস্তিতে, অথবা বলপূর্বক তাদের বাড়ি থেকে চালিত হয়েছিল বিদ্রোহী এবং দুর্বৃত্তদের দ্বারা তারা পাকিস্তান পুনঃপ্রবেশে পুরোপুরিভাবে মুক্ত ছিল, তাদের পাকিস্তানি জাতীয়তা নিশ্চিত করতে সাধারণ রুটিন-চেক অবশ্যই বাধ্য ছিল।
পূর্ব পাকিস্তানে অভ্যর্থনা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা
এইসব ঘোষণা একযোগে, ফিরে আসা পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য বহুসংখ্যক অভ্যর্থনা কেন্দ্র স্থাপিত হয়েছিল ভারত থেকে পাকিস্তান প্রবেশের গুরুত্বপূর্ণ রুটসমূহে, জনগণের মুক্তি এবং তাদের বাড়িতে ফিরে আসার অভ্যর্থনার জন্য পূর্ণ ব্যবস্থা ছিল। প্রাথমিকভাবে, এসব কেন্দ্রসমূহ স্থাপিত হয়েছিল খুলনার সাতক্ষীরা, যশোরের বেনাপোল, কুষ্টিয়ার চুয়াডাঙ্গা এবং মেহেরপুর, রাজশাহীতে গোদাগাড়ী, রোহানপুর এবং ধামৈরহাট, রংপুরে খানপুর, ঠাকুরপুর এবং কালীগঞ্জ, ময়মনসিংহে নলিতাবাড়ি এবং দূর্গাপুর, সিলেটে জৈয়িন্তিয়াপুর, কুলাউড়া এবং চুনারুঘাট, কুমিল্লাতে আখাউড়া এবং বিবিবাজার, নোয়াখালীতে ফেনী, এবং চট্টগ্রামের টেকনাফে। ফিরে আসা পাকিস্তানিদের ফরিয়াদ সুবিধার জন্য পরবর্তীতে অতিরিক্ত কেন্দ্রসমূহ স্থাপন করা হয়েছিল। পলাতকদের তাদের পরিবারে যোগদানে অনুমতি প্রদান ১৯৭১ সালের ৪জুন, ঢাকা থেকে তৈরীকৃত একটি সরকারি ঘোষণায়, পাকিস্তান আশ্বাস প্রদান করে যে সশস্ত্র বাহিনী এবং পুলিশ থেকে পলাতকরা তাদের পরিবারে যোগদান করতে পারবে যদি তারা স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করে। এই ঘোষণা অনুবর্তী কর্মৃবৃন্দের একটি সংখ্যা ব্যাখ্যা করেছিল, যা ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের কিছু অর্ন্তভুক্ত করেছিল। পূর্ব পাকিস্তান পরিত্রাণ এবং চরমপন্থী এবং রাজদ্রোহী নেতৃবৃন্দ পুলিশকে ইউনিট থেকে পরিত্যক্ত করেছিল বিপথে চালিত হতে, আউটপোস্ট সীমান্তে এবং থানাসমূহে ১৯৭১ এর মার্চ – এপ্রিল সময়ে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড অংশগ্রহণে। এই ধরণের ব্যাক্তিরা অধিকাংশ, যেমন তাদের চাকুরী নথিতে টানা, বিশ্বস্ত এবং স্বদেশপ্রেমী কিন্তু পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল কিছু উচ্চাভিলাষী, লোভী এবং স্ব সচেষ্ট উপাদান দ্বারা যা একটি ভুল পথ নিতে তাদের জোর করেছিল, এবং তারা বিভক্ত হয়েছিল তাদের
.
পরিবার থেকে। এসব পরিস্থিতিতে যেসব উপাদানসমূহ পথভ্রষ্ট করতে তৈরি করা হয়েছিল, স্বেচ্ছায় নিকটবর্তী সামরিক কর্তৃপক্ষ অথবা পুলিশ স্টেশনে তাদের অস্ত্রসহ বা অস্ত্রছাড়া আত্মসমর্পণে তাদের আশ্বস্ত করা হয়েছিল যে তাদের ঘটনাসমূহ সমবেদনার হিসেবে বিবেচিত হবে। বিবৃতিতে যোগ করা হয়েছিল, তাদের মনে রাখা উচিত যে এটা তাদের সাহায্য করবে তাদের বাড়িতে তাদের পরিবারের সাথে যোগ দিতে এবং রাষ্ট্রের মুক্ত নাগরিক হিসেবে বসবাস করতে।
পাকিস্তানি নাগরিকদের তাদের বাড়িতে ফিরে আসা আরম্ভ
এসব ইতিবাচক ঘোষণা এবং ক্রিয়াকলাপসমূহের উপকারী ফলাফল ছিল এবং বৃহৎ সংখ্যায় পাকিস্তানি নাগরিকরা তাদের বাড়ি ফিরে আসতে শুরু করেছিল। ১৯৭১ সালের ৬জুন, প্রায় ১,০০০ পূর্ব পাকিস্তানিরা পাকিস্তান এলাকায় অতিক্রান্ত হয়েছিল নিকটবর্তী কুষ্টিয়া জেলার মেহেরপুরে এবং তাদের দ্রুত পুনর্বাসনে অবিলম্বে প্রস্তুতি হাতে নেওয়া হয়েছিল। ১৯৭১ সালের ৮জুন, আরো ৭০ পরিবার পূর্ব পাকিস্তানে তাদের বাড়িতে ফিরে যায় দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ী এলাকায়। ১৯৭১ সালের ৯জুন, প্রায় ৪,০০০ মানুষ দিনাজপুরে পৌঁছেছিল, যাদের অনুসরণ করেছিল ১৫০ জন রাজশাহী উপরিভাগের নওয়াবগঞ্জে গোদাগাড়ী অভ্যর্থনা কেন্দ্রে, এবং ২০০ জন কুষ্টিয়া জেলার চুয়াডাঙ্গা এবং মেহেরপুর উপরিভাগে। ১৯৭১ সালের ১০জুন, দ্যা পাকিস্তান অবর্জাভার, ঢাকা, রিপোর্ট করেছিল যে, “সীমান্ত থেকে পূর্ব পাকিস্তানের পশ্চিমাংশের জেলাসমূহে বহুসংখ্যক মানুষ ফোঁটায় ফোঁটায় নির্গত হতে শুরু করেছিল। ১৫০ জন রাজশাহীতে রিপোর্ট করেছিল, ৫০০ জন দিনাজপুরে, এবং ১২০ জন সাতক্ষীরাতে। ” এইরকম আঘাতমূলক ঘটনাবলীর পরে ফিরে আসা মানুষের শারীরিক প্রয়োজনীয়তা সেইসাথে মানসিক চাহিদার অভিজ্ঞতা অর্জনে, অভ্যর্থনায় প্রস্তুতি ও সুযোগ সুবিধা ছিল। কেন্দ্রসমূহ পরিদর্শন এবং উপযুক্ত রদবদল এবং উন্নত করা হয়েছিল। এটা নির্ধারণ করা হয়েছিল যে প্রতি অভ্যর্থনা কেন্দ্রে সরবরাহ করা হবে গড়পড়তা দুই থেকে তিন হাজার মানুষের আচ্ছাদিত বাসস্থান, প্রতিদিনের অন্তঃপ্রবাহে ৫০০ থেকে ১০০০ মানুষের খাদ্যাদি পরিবেশন সাথে খাবার সরবরাহে পর্যাপ্ত আয়োজন, এসব ফিরতিদের বাসস্থান এবং ঔষধ সম্পর্কিত আচ্ছাদন। এছাড়াও তাদেরকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যেতে পরিবহন সরবরাহ করা হবে। সীমান্তে গ্রহণ সময় ছিল প্রতিদিন সকাল ৮টা – বিকাল ৪টা, এবং সকল প্রকৃত পাকিস্তানিদের উপদেশ দেওয়া হয়েছিল পাকিস্তান পুনঃপ্রবেশে নির্দিষ্ট পথ নিতে, যাতে অপ্রয়োজনীয় কষ্ট এড়ানো যায়।

সাধারণ রাজক্ষমা ঘোষিত ১৯৭১ সালের ১০জুন, পূর্ব পাকিস্তানের শাসক, জেনারেল টিক্কা খান সাধারণ রাজক্ষমা ঘোষণা করেন সব মানুষের প্রতি যারা তাদের বাড়ি থেকে চলে গিয়েছিল মিথ্যা এবং বিদ্বেষপরায়ন প্রজ্ঞাপনের প্রভাবে এবং তাদের বাড়িতে ফিরে আসতে তাড়িত করেন। রাজক্ষমাটি অন্তর্ভুক্ত করেছিল সব শ্রেণীর মানুষকে, তা ছাত্র, ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, সরকারি কর্মচারী, সশস্ত্র বাহিনী এবং অন্যান্য আইন প্রণয়নকারী সংস্থাসমূহ (ইবিআর, ইপিআর, পুলিশ, মুজাহিদ এবং আনসার ইত্যাদি) আরো যত রাজনৈতিক কর্মীবৃন্দ এবং নেতৃবৃন্দ যারা তাদের পরিবারে যোগদানে এবং তাদের জীবনের সাধারণ বৃত্তি পুনরাম্ভ করাতে সবাই স্বাগত ছিল। “এটা সঠিকভাবে উপলব্ধ “, সাধারণ রাজক্ষমা ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ” যে তারা, অপরিহার্যতা ব্যতীত, অপুষ্টি এবং অসুখের ঝুঁকি সহ্য করছে। তাদের ফিরে আসা উচিত এবং জাতীয় পুনর্গঠনে দেশবাসীর সাথে সমান অংশীদ্বারের ন্যায় অংশগ্রহণে এগিয়ে আসা উচিত।
.
.
. ১০ জুন ১৯৭১ সালে, দিনাজপুরের বিভাগীয় খাদ্য নিয়ন্ত্রক, চৌধুরী মতিউর রহমান গ্রেফতার হয়েছেন বলে খবর পাওয়া যায় । উনাকে পূর্ব পাকিস্তানে ফিরে আসার ব্যাপারে বাঁধা দেয়া হয় ।জনাব রহমান সাম্প্রতিক গোলযোগের কারনে বর্ডার পার হয়ে দেশে ফিরে আসতে চেয়েছিলেন, কিন্তু ইন্ডিয়ান অথরিটি উনাকে তা করার অনুমতি দেন নি।
১৪ জুন, ১৯৭১ এ ফেরত আসা কিছু মানুষ জানায় যে ভারতীয়রা পশ্চিম পাকিস্তানি অফিসিয়াল দের উপর অনেক নির্যাতন চালাচ্ছে যাদের মধ্যে যিনি Swedish Institute of Kaptai এর মহাপরিচালক ডা ফারুক ও ছিলেন যিনি আসলে ভারতীয় অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হয়ে ভারতে প্রবেশ করেন এবং ভারতীয় পুলিশ কর্তৃক গ্রেপ্তার হয়।
১৫ জুন, ১৯৭১ এ সংবাদসংস্থা APP এর ঢাকা প্রতিনিধি জানায়- আমি মেহেরপুর অভ্যর্থনা কেন্দ্র থেকে দুই ঘন্টা ধরে নারী পুরুষের বিশাল ঢল কে ধান ক্ষেতের আঁকাবাঁকা পথের মধ্যে দিয়ে হেঁটে যেতে দেখেছি । ফেরত আসা মানুষ গুলোর চেহারা দেখেই বোঝা যাচ্ছিল, পাকিস্তানীদের সাথে বিশেষ করে মুসলিম দের সাথে ইন্ডিয়ান ক্যাম্প গুলোতে কেমন ব্যাবহার করা হয়েছিল অথচ এই ইন্ডিয়ান সরকার ই বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে থেকে মানবতার নামে ২০ কোটি টাকা জড়ো করেছিল ।

“অসদাচরণ, নির্যাতন. শ্লীলতাহানি “
ফেরত আসা মানুষ দের সাক্ষাৎকার নেয়ার সময় আমি সেচ্ছাসেবী ও হিন্দুদের দ্বারা তাদের উপর করা অবর্ণনীয় অত্যাচারের কথা শুনছিলাম বিশেষ করে সীমান্ত এলাকার পার্শ্ববর্তী তথাকথিত ‘রেফুজি ক্যাম্প’ গুলোতে। মেহেরপুর শহরের মধ্য বয়স্ক বাসিন্দা মীর আইজুদ্দিন বলেন, তিনি তার পরিবারের ১০ জন সদস্য নিয়ে ইন্ডিয়া যান। তিনি আসলে প্রতারনার স্বীকার হয়ে সেখানে যান। অশ্রুসিক্ত নয়নে তিনি জানান, পাকিস্তানী মুসলিম দের জন্য সে ক্যাম্প গুলো ছিল নরক সমতুল্য ।

একই এলাকার বাসিন্দা জিল্লুর রাহমান এর কাছ থেকে জানা যায়- তিনি তেহট্ট থানায় বেটাই ক্যাম্পে দুই মাসের জন্য ছিলেন। তিনি দুঃখের সাথে জানান যে জিনিস্পত্র বা টাকা পয়সা তিনি নিয়ে গিয়েছিলেন তাই তথাকথিত ‘স্বেচ্ছাসেবী ‘ দের দ্বারা লুট হয়ে যায়। তিনি ও তার পরিবারের সদস্য রা বহুদিন না খেয়ে ছিলেন। না তাদের কোনো কাপড় চোপড় দেয়া হয়েছিল না উপযুক্ত মেডিকেল সেবা।

যশোর বিভাগের মনিরাম্পুর থানার অন্তর্ভুক্ত স্রানপুর গ্রামের ২৬ বছর বয়সি শিক্ষক জনাব আব্দুর রহিম ১৯৭১ সালের ১৬ জুন একটি সাক্ষাৎকার দেন। তিনি জানান, দুই মাস Mama Bhanc ক্যাম্পে থেকে তিনি বুঝতে পারেন কিভাবে ইন্ডিয়া সারা বিশ্ব কে এই বুঝিয়ে ধোঁকা দিচ্ছিল ইন্ডিয়ায় অবস্থান কারী পাকিস্তানীদের পিছনে তাদের কি প্রচুর পরিমান অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, ক্যাম্পে বসবাসকারী ৫০ শতাংশ লোক ই ছিল কলকাতার বস্তিবাসী এবং সীমান্ত এলাকার কাছে থাকা বেকার লোকজন।
বরিশাল জেলার উজিরপুর থানা নিবাসী রাম বৈরাগী নামের একজন হিন্দু ব্যাক্তি ও তথ্য গুলোর সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, প্রানভয়ে যশোর ছেড়ে তিনি ইন্ডিয়ার বনগাঁও ক্যাম্পে আশ্রয় নেন। যেখানে শত শত লোক মানবেতর অবস্থায় দিন কাটাত, স্যানিটারি সিস্টেমের দুরব্যাবস্থার কারনে কলেরার প্রকোপ দেখা দিলে বহু মানুষের প্রানহানী ঘটে।অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটিয়ে উনি অবশেষে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন। ফিরে আসার সময় তিনি নিজের সাথে নিয়ে যাওয়া কোনো জিনিস ই সাথে করে নিয়ে আসতে পারেন নি কারন তথাকথিত স্বেচ্ছাসেবী রা তা কেড়ে নেন। তিনি শুধু তার পরনের ময়লা ধুতি পরে ফিরে আসতে বাধ্য হন।
এদিকে , ভারতীয় সূত্রের বরাত দিয়ে বিদেশি সংবাদ প্রতিনিধি জানায় যে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে উদ্বাস্তু আসা বন্ধ হয়ে গেছে। ১৯৭১ সালের ১৪ জুন লন্ডোন টাইমসের সংবাদ প্রতিনিধি বলেন- একজন ইন্ডিয়ান সিনিয়র কর্মকর্তা যিনি প্রায় ই পূর্ব বাংলার দক্ষিনাঞ্চল ভ্রমন করেন তিনি আমাকে আজকে (১৩ জুন ১৯৭১) জানা, হঠাত করেই দেশান্তর হউয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে, তিনি আরো বলেন, সীমান্তবর্তী শহরের উত্তরাঞ্চলের কর্মকর্তারা ও জানান নাটকীয় ভাবেই দেশ ত্যাগের ঘটনাটি বন্ধ হয়ে গিয়েছে ।
সীমান্তবর্তী এলাকায় পাকিস্তানী জনসংখ্যার চাপ বৃদ্ধি পাওয়ার কারনে তাদের পাকিস্তানে ফিরে যাওয়ার আহবান করা হয় এবং যারা পশ্চিম পাকিস্তানের এই ঘটনার কারনে দূরাবস্থার স্বীকার হয়েছে তাদের জন্য ৩.৯ মিলিয়ন ডলার নগদ অনুদান ও বাসস্থান এর জন্য ১.১ মিলিয়ন ডলার অনুদান মঞ্জুর করেন। এর পাশাপাশি ৮০হাজার ঢিবি গম বিনামূল্লে বিতরন করা হয় ।
রাষ্ট্রপতির আশ্বাস , বিশেষ করে সংখ্যা লঘুদের প্রতি-
১৮ জুন ১৯৭১ সালে, রাওয়ালপিন্ডিতে দেয়া এক বিবৃতি তে পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি বলেন, ১৯৭১ সালের ২১ মে তিনি যেসব পাকিস্তানী লোক নানা কারনে ইন্ডিয়া চলে গিয়েছিল তাদের উদ্দেশে বার্তা দিয়েছিলেন যে তারা যন তাদের দেশে ফিরে এসে সাভাবিক কাজকর্ম শুরু করে । তিনি আরো জানান, অনেক লোকের অনেক রকম বাঁধা সত্ত্বেও অনেক পাকিস্তানীরা তাদের ঘরে ফিরে এসেছে এবং অনেকেই এখন ফেরার পথে। আমি নিশ্চিত যে বাকিরাও তাদের অনুসরন করে ফেরত আসবে। এবং পাকিতানী নাগরিক দের তাদের নিজের দেশে ফিরে আসার এই অনুমতি কখনো উঠিয়ে নেয়া হবেনা বরং পূর্ব পাকিস্তান সরকার তাদের ফিরিয়ে আনার জন্য পর্যাপ্ত ব্যাবস্থা গ্রহন করেছেন ও তাদের পুনর্বাসন এর ও ব্যাবস্থা গ্রহন করেছে।
রাষ্ট্রপতির বিশেষ করে সংখ্যালঘুদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আমার এই আবেদন জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকল পাকিস্তানীদের প্রতি। বিশেষ করে সংখ্যা লঘুরা যেন পশ্চিম পাকিস্তানে ফিরে আসতে বিন্দুমাত্র দ্বিধায় না ভুগে। তাদের ও বাকি সব নাগরিক দের মত সমান অধিকার আছে এবং তাদের প্রতি বিন্দুমাত্র বৈষম্য করা হবেনা। তিনি তাদের বহির্বিশ্বের কোনো রকম প্রতারনায় কান না দিতে অনুরোধ করেন।
জাতিসংঘের সহযোগীতা ছাড়াও পাকিস্তান সরকার এই সংকট মোকাবেলায় নানা রকম উপযোগী পদক্ষেপ গ্রহন করেন।
১৯৭১ সালের ১৪ জুলাই, পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি ডা। এ এম মালিক নামক একজন পূর্ব পাকিস্তানী নাগরিক কে রিলিফ ও পূনবাসন ব্যাবস্থার বিশেষ সহকারী হিসেবে নিযুক্ত করেন। বিশেষ সহকারী হিসেবে ডা মালিকের পদমর্যাদা ছিল, একজন কেবিনেট মন্ত্রীর সমান যিনি রিলিফ ও পূনবাসন ব্যাবস্থার উন্নতি ও সব খবরাখবর রাষ্ট্রপতিকে দিতেন।
.
.
ভারতীয় ছলচাতুরী
দুভার্গ্যবসত প্রয়োজনের সময় ভারতের অসহযোগী আচরন শুধু মাত্র পাকিস্তানের প্রতি প্রচন্ড শত্রুতামূলক ছিলো না বরং পাকিস্তানের নাগরিকদের ফেরার মত মানবিক প্রশ্নে নেয়াহেত খলও ছিলো।
একটা ব্যাপার হলো ভারতীয়রা পূর্ব পাকিস্তান থেকে চলে আসা উদ্বাস্তুদের একটা কাল্পনাপ্রসুত সংখ্যা দিয়েছে। তারা বিদেশী সাংবাদিক ও কুটনৈতিক উপস্থিতির সুযোগ নিয়েছে, যাদের তারা এইসব ক্যাম্পের কয়েকটায় নিয়ে গিয়েছে “নমুনা” দেখানোর জন্য, এবং কোথাও একটি দলকে দেখা গেলে তার সংখ্যাকে হাজার গুণ পর্যন্ত বাড়িয়ে এমন একটা সংখ্যায় উপনীত করা হবে যেন তা ভারত দ্বারা বর্ণিত পরিসংখ্যানের কাছাকাছি হয়! আন্তর্জাতিক পৃষ্ঠপোষকতায় উদ্বাস্তুদের এখন পর্যন্ত গননা হয়নি। এবং এই ধরনের কোন গননা ছাড়া ভারতের একতরফা ভাবে দেওয়া সংখ্যাকে খুব খামখেয়ালী বলা যায়। এর একটা ভালো উদাহরণ হিসাবে তিনজন বৃটিশ এমপির কথা বলা যায় তারা যখন জুলাই ৫, ১৯৭১ লন্ডন বিমানবন্দরে সংবাদ সম্মেলনে স্বীকার করেছেন যে তারা অবস্থার সঠিক মূল্যায়ন করেননি এবং তাদের মতামত ছিলো ভারতীয় সরকারের অনুবাদকের মাধ্যমে পশ্চিম বঙ্গের শরনার্থীদের সাথে বলা কথার উপর ভিত্তি করে।
দ্বিতীয়ত, যখন ভারতীয় কর্তৃপক্ষ পূর্ব পাকিস্তানের উদ্বাস্তুদের নিয়ে হইচই করছিলো তারা কাউকেই সন্দেহ করতে দেয়নি যে তাদের আসল উদ্দেশ্য এই উদ্বাস্তুদের পাকিস্তানে তাদের ঘরে ফিরতে না দেওয়া। ৩ জুন, ১৯৭১ ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জগজীবন রাম আসানসোলে এক ভাষণে বলেনঃ “আমরা এই উদ্বাস্তুদের ইয়াহিয়া খানের পাকিস্তানে ফিরতে দেবো না বরং তাদের শেখ মুজিবর রহমানের বাংলাদেশে ফিরতে দিবো।” ভারতের এই পরিকল্পনা আরো সুস্পষ্ট হয়ে উঠে যখন ২০ জুন ১৯৭১, শ্রীনগরের কাছে, হানদুয়ারাতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নিজে বলেন যে তার সরকার চায় “তাদের পাকিস্তান সেনাবাহিনীর শিকার হতে দেবেন না।” “আমরা তাদের কচুকাটা হতে ধাক্কা দেবো না”, যা ছিলো রাজনৈতিক শ্রুতিকটু শব্দের বদলে কোমল শব্দের ব্যবহার, অর্থাৎ তিনি পাকিস্তানীদের ঘরে ফিরতে দেবেন না।
তৃতীয়ত, ভারত বেশী বেশী করে পূর্ব পাকিস্তানি উদ্বাস্তুদের মধ্য প্রদেশের মত ভিতরের দিকে সরিয়ে নিচ্ছে। পর্যবেক্ষকরা বলেন যেহেতু বেশী বিদেশী সাংবাদিক ও কুটনৈতিকরা এই সব শরনার্থী শিবির পরিদর্শন করছে, ভারতীয় প্রচারকদের প্রচার করা কল্পিত সংখক শরনার্থী তাই দেখানো ভারতের জন্যে কঠিনতর হয়ে যাচ্ছিলো। তাই ভালো থাকবার জায়গা দেওয়ার অজুহাতে শরনার্থীদের বিভিন্ন প্রদেশে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছিলো। এই প্রক্রিয়ায়, প্রকৃত পাকিস্তানী নাগরিকদের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে দূরে দূরে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছিলো, যার ফলে তাদের পক্ষে ফিরে আসা প্রায় অসম্ভব হয়ে পরে। এতে আশ্চর্যের কিছু নেই যে, রয়টার্স সংবাদ সংস্থা ১০ জুন,১৯৭১ নয়া দিল্লী থেকে প্রতিবেদন দেয়, “পশ্চিম বঙ্গ স্বাস্থ্য মন্ত্রী বলেছেন রাজ্য সরকার খতিয়ে দেখছে যে কিছু শরনার্থী সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে যেতে অনিচ্ছুক ছিলো এবং কিছু ট্রেনে চড়ানোর পরে ঝাপিয়ে নেমে যায়।”
উদ্বাস্তুদের থেমে যাওয়া অন্তঃপ্রবাহ
পরিশেষে, ভারত পাকিস্তানীদের ফিরে আসা কঠিন থেকে কঠিনতর করে তুলছে। সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে ঢাকায় প্রাপ্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, উদ্বাস্তুদের পূর্ব পাকিস্তানে তাদের ঘরে ফিরে আসা রোধ করতে সকল রকম বাধা দেওয়া হচ্ছে। ২২ জুন একটি দিনাজপুরের প্রতিবেদন বলে যে, ১৭ জুন ১৯৭১, ২৫০ পাকিস্তানী উদ্বাস্তু পাকিস্তানী সীমান্ত অতিক্রম করার চেষ্টা করলে ভারতীয় বিএসএফ তাদের বাধা দেয় এবং তাকে ভারতীয় হিলি ক্যাম্পে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। আগরতলা ফেরত একজন কুমিল্লার আইনজীবী ২২ জুন ১৯৭১ সংবাদ মাধ্যমকে জানান যে, ভারতে থাকা পূর্ব পাকিস্তানী শরনার্থীদের রুদ্ধ করে রাখা হয়েছে এবং যারা ফিরতে চাইছে তাদের বাধা দেওয়া হচ্ছে এমনকি মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হচ্ছে।
ভ্রমনরত অস্ট্রেলীয় সংসদ সদস্য মি. লিওনার্দ স্ট্যানলী রেইড ১৪ জুলাই ১৯৭১, ঢাকায় এক সাক্ষাতকারে বলেন, তিনি সীমান্তের দুই পাশেই অবস্থা পর্যবেক্ষন করেছেন এবং জমাট বাধা দুঃশ্চিন্তা দূর করা ভারতের দ্বায়িত যা সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে আশ্র নেওয়া পাকিস্তানী নাগরিকদের ফিরে আসা থেকে আটকাচ্ছে। মি. রেইড আরো যোগ করেন যে তিনি বহু সংখ্যক পূর্ব পাকিস্তানী সরকারের অভ্যর্থনা কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন এবং দেখেছেন যে বসবাস ও চিকিৎসা সেবার জন্যে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা আছে এবং তাদের দ্রুত পুনর্বাসনের জন্যে সব রকম চেষ্টাই করা হচ্ছে।
ধীরস্থির ভাবে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন এগুচ্ছে
সীমান্তে বিভিন্ন রকম বাধার সম্মুখীন হয়েও, হিন্দু এবং মুসলিম উভয় উদ্বাস্তুরা পরিচিত অপরিচিত বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে বর্ধিত সংখ্যায় পূর্ব পাকিস্তানে ফিরছে। এদের মধ্যে অনেকেই অপরিচিত রাস্তা বেছে নিচ্ছে এবং রাতের বেলা যাত্রা করছে ভারতীয় ও তাদের চরদের দেওয়া বাধা এড়ানোর জন্যে। এটা সরকার ঘোষিত পাকিস্তানে প্রত্যাবর্তনকারী মানুষের সংখ্যা এবং অভ্যর্থনা কেন্দ্রে প্রকৃতপক্ষে নিবন্ধিত মানুষের সংখ্যার পার্থক্যের কারন ব্যাখা করে।
আরো ১৬৫০ জন পাকিস্তানী উদ্বাস্তু সীমান্ত পার হয়ে জুন ১৯৭১ এর শেষ সপ্তাহে তাদের ঘরে ফিরে এসেছে। এদের মধ্যে ১০০ জন সিলেট জেলার কাতালমোড়া সীমান্ত, ৩৬০ জন দিনাজপুর জেলা এবং বাকিরা বিভিন্ন কেন্দ্র দিয়ে ফিরেছে। এদের মধ্যে সাতক্ষীরা দিয়ে ফিরে আসাদের মধ্যে ২৩৮ জন সংখ্যালঘু ছিলো। রংপুরের ৮০ শতাংশ উদ্বাস্তু পাকিস্তানী ইতিমধ্যে তাদের ঘরে ফিরে এসেছে।
অন্যান্য বিভাগেও উদ্বাস্তুদের ফিরে আসা জারি আছে। এমন ৭০০ প্রত্যাবর্তনকারী খুলনা জেলার চুয়াডাঙ্গা মহকুমা দিয়ে ফিরেছে। আরো ৯০০ জন উদ্বাস্তু ফিরেছে, এদের ৬৭০ জন দিনাজপুর জেলার খানপুর, ঠাকুরগাঁও, এবং পঞ্চগড় দিয়ে, ১৭৫ জন ঝিকরগাছা দিয়ে এবং বাকিরা সাতক্ষীরা এবং ছাগাছি দিয়ে ফিরেছে। ফিরে আসা উদ্বাস্তু যারা এই সব কেন্দ্রে নিবন্ধন করেছেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী, পুরুষ এবং শিশু সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের।
ভারতের প্রত্যাবর্তনে বাধা দেওয়ার পিছনের কারন
এই সব পাকিস্তানী নাগরিকদের প্রত্যাবর্তনে বাধা দেওয়ার পিছনে ভারতের কারন কি? এটা মনে রাখা আবশ্যক যে ভারত ইতিমধ্যে ১২ কোটি বৈদেশিক মুদ্রা পূর্ব পাকিস্তানী উদ্বাস্তুদের খাওয়ানোর জন্যে সাহায্য পেয়েছে। এই টাকা ২০ কোটি বৈদেশিক মুদ্রার অংশ যা তারা মানবতার ভিত্তি পেলেও প্রচ্ছন্নভাবে তাদের বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি পুরুন করছে। বিদেশী সংবাদ সংস্থা ইতিমধ্যে প্রতিবেদন করেছে যে ভারত এই সব শরনার্থী শিবিরের লোক সংখ্যা পশ্চিম বঙ্গ ও অন্যান্য প্রতিবেশি প্রদেশের বেকার লোকজন দিয়ে বাড়িয়ে তুলছে। লন্ডন ডেইলি টেলিগ্রাফের সাংবাদিক পিটার গিলের ৬ জুলাই,১৯৭১ ডাকবার্তায় প্রেরিত এবং পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, “পশ্চিম বঙ্গের কলকাতার সর্বস্বান্তদের এই সব শরনার্থী শিবিরে পাঠানো হয়”। এই সাংবাদিক কলকাতার সল্টলেক শহরতলী এলাকার শিবিরের দ্বায়িত্বে থাকা অবসরপ্রাপ্ত ভারতীয় সেনা বাহিনীর কর্মকর্তা মেজর এস.কে. দেবার স্বীকারোক্তির উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, “কপর্দকহীন কলকাতার অস্বাস্থ্যকর রাস্তায় বসবাসরত হাজার হাজার ভারতীয় শহরের উপকণ্ঠে পূর্ব পাকিস্তানী শরনার্থী শিবিরে আশ্রয় চাইছে।” তিনি আরো যোগ করেঃ “তাদের এই শরনার্থী শিবিরে যেতে লোভী করে তুলেছে বিনে পয়সায় খাদ্য, যেহেতু প্রতিজন প্রাপ্তবয়স্ক শরনার্থী রশিদ জমা দিয়ে প্রতিদিন ৪০০ গ্রাম চাল, ১০০ গ্রাম সবজি এবং ৩০০ গ্রাম ডাল পেয়ে থাকে। এটা কলকাতায় বসবাসকারী অনেকের খাদ্য তালিকা থেকে অনেক উন্নত। ”
ভারত তাই দেখছে শরনার্থী জুজু টিকিয়ে রেখে তাদের উভয় রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ফায়দা রয়েছে এবং তাই পাকিস্তানের তাদের নিজের ঘরে পূর্ব পাকিস্তানে ফেরানোর নিরলস প্রচেষ্টায় বাধা দিচ্ছে ও নাশকতা করছে। পাকিস্তানের উপরে বেশী বেশী চাপ তৈরীর জন্যে সম্ভবত ভারত এই ঘটনার সমাধান হতে দিচ্ছে না। এইভাবে হয়তো ভারত তাদের মার্চ-এপ্রিল ১৯৭১-এ ভারতীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে বিদ্রোহ করে পাকিস্তানকে ভাঙ্গবার ব্যর্থ চেষ্টা সফল করার চেষ্টা করছে।
পাকিস্তানের সমাধান
যেখানে পাকিস্তান তার নাগরিকদের সহজে ফেরার জন্য জাতিসংঘের পূর্ন সহযোগীতা ও অংশগ্রহনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ নিচ্ছে সেখানে পাকিস্তান সরকার তাদের অভ্যন্তরীন ব্যাপারে বাইরের কারো হস্তক্ষেপ সমর্থন করবে না। এটা উপলব্ধি করতে হবে যে ভারত একটি মানবিক সমস্যাকে ব্যবহার করে পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ সংস্থাপনার উপর রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের ন্যায্যতা দেখাতে চাইছে। পাকিস্তান সরকার তার নাগরিকদের নিজ বাড়িতে ফিরতে দেখতে অধীর হয়ে আছে এবং তাদের ফিরে আসা ও পুর্নবাসনকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে। কিন্তু সরকার ভারতের নিজস্ব নীতি ও অপপ্রচারের কারনে প্রকট আকার ধারন করা উদ্বাস্তু সমস্যাকে রাজনৈতিক ফাঁদে ফেলার অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার হতে দেবে না।
তৈরীতে
চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর
পাকিস্তান সরকার
জুলাই ১৯৭১

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!