শিরোনামঃ জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে জাতিসংঘে পাকিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধির চিঠি
সূত্রঃ জাতিসংঘ দলিলপত্র উদ্ধৃতিঃবাংলাদেশ ডকুমেন্টস
তারিখঃ ৯ ডিসেম্বর,১৯৭১
.
জাতিসংঘ এবং জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে জাতিসংঘে পাকিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধির চিঠি
A/8567 S/10440,
ডিসেম্বর ৯,১৯৭১
.
সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী আমি আপনাদের জানাতে যাচ্ছি যে, ৭ ডিসেম্বর,১৯৭১ তারিখে অনুষ্ঠিত সভায় অনুমোদনকৃত রেজোলিউশন ২৭৯০(XXIV) এ ভারত কর্তৃক পাকিস্তানে যে আগ্রাসন চালানো হয়েছিল তার কথা উল্লেখ করা হয়নি(আগ্রাসনের কথা ভারত স্বীকার করা সত্ত্বেও)। তার পরওপাকিস্তান সরকার উক্ত রেজোলিউশন এর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অবিলম্বে অস্ত্র বিরতি এবং সৈন্য প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রেজোলিউশনে বলা হয়েছে অবিলম্বে দুই পক্ষকেই যার যার সীমান্ত থেকে সৈন্য প্রত্যাহার এর জন্য। যদিও পাকিস্তানের হাতে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য যথেষ্ট সময় নেই তারপরও অযথা রক্তপাত এড়ানোর স্বার্থে সময়স্বল্পতার সমস্যা আমরা উপেক্ষা করতে প্রস্তুত।
সাধারণ সভা,
৪. সম্পূর্ণ নিশ্চয়তা দেয় যে, যে কোন রাষ্ট্রকে সর্বদাই অন্য রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মান দেখাতে হবে এবং সেই সাথে সে দেশের জনগণকে তার নিজের ভাগ্য নিজে গড়ে নেয়ার সুযোগ দিতে হবে। তাদের উপর বাইরে থেকে কোন প্রকার হস্তক্ষেপ করা যাবে না, কোন কিছুতে বাধ্য করা যাবে না, প্রকাশ্য বা গোপনে কোন প্রকার বা বলপ্রয়োগ করা যাবে না । এমনকি কোন দেশের জাতীয় ঐক্য এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা ক্ষুণ্ণ হয় এমন কোন পদক্ষেপও নেয়া যাবে না।
৫. সম্পূর্ণ নিশ্চয়তা দেয় যে, কোন রাষ্ট্রের আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং রাজনৈতিক স্বাধীনতার উপর অপর কোন রাষ্ট্র কর্তৃক কোন প্রকার হুমকি বা বলপ্রয়োগ করা যাবে না। জাতিসংঘ সনদেএকটি নীতির উল্লেখ আছে-বলপ্রয়োগের মাধ্যমে অন্য কোন রাষ্ট্রের ভূখণ্ড দখল করে নেয়া যাবে না এবং এই উপায়ে দখল অভিযান চালানোকে এবং দখলকৃত ভূখণ্ডকে কোনভাবেই বৈধতা দেয়া হবেনা,সেই সাথে কোন রাষ্ট্রের ভিতরে অন্তর্দ্বন্দ্ব তৈরি হয় এমন কোন কাজ করা বা কোন রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কোন প্রকার সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালানো বা তাতে সহায়তা করা থেকেও বিরত থাকতে হবে। উক্ত নীতিমালা লঙ্ঘন করেকোন ভাবেই কোন রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে জোরপূর্বক সেনা অভিযান চালিয়ে তা দখল করা যাবে না।
৬. বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি হুমকি হতে পারে এমন যে কোন বিরোধ বা ঘটনা জাতিসংঘ সনদের সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে নিষ্পত্তির জন্য সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতি জোর আহ্বান জানাচ্ছে জাতিসংঘ। সেটা আলোচনা,অনুসন্ধান,মীমাংসা বা ওই অঞ্চলে স্থানীয় ভাবে আইনি প্রক্রিয়ায় সমাধান,অন্যান্য যে কোন স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান এর প্রধান যেমন জাতিসংঘের মহাসচিব এর মধ্যস্থতায় অথবা নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী যে কোন শান্তিপূর্ন উপায়েওসমাধান করা যেতে পারে।তবে নিরাপত্তা পরিষদ যখন এসব বিষয় নিয়ে কাজ করবে তখনতাদের উচিৎ হবে আইনি বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহআন্তর্জাতিক আদালতের বিধান অনুযায়ী আন্তর্জাতিক আদালতের কাছে পাঠিয়ে দেয়া।
সম্প্রতি জাতিসংঘের পক্ষ থেকে একটি ঘোষণা এসেছে যে শীঘ্রই জাতিসংঘ সীমান্তের সশস্ত্র সৈন্য প্রত্যাহার করবে এবং পর্যবেক্ষক নিয়োগের মাধ্যমে সীমান্তের উভয় পাশে অস্ত্রবিরতি এবং সৈন্য প্রত্যাহারের বিষয়টি তত্ত্বাবধান করবে। শত্রুতার অবসান এবং নিরাপত্তা রক্ষায় জাতিসংঘের ভূমিকা এবং এর প্রতি সিংহভাগ সদস্যদের অকুণ্ঠ সমর্থন দেখতে পেয়েপাকিস্তান অত্যন্ত আশাবাদী।
চিঠিখানা সাধারণ সভা এবং নিরাপত্তা পরিষদে দলিল হিসেবে সকলের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য অনুরোধ রইল।