শিরোনামঃ ১০২। ন্যাপের সকল গ্রুপ নিষিদ্ধ ঘোষণা
সূত্রঃ দৈনিক পাকিস্তান
তারিখঃ ২৭ নভেম্বর, ১৯৭১
.
ন্যাপের সকল গ্রুপ নিষিদ্ধ ঘোষণা
কতিপয় নেতাকে আটকের আদেশ
দলের পরিষদ সদস্যদের আসন থাকবে- প্রেসিডেন্ট
রাওয়ালপিন্ডি, ২৬শে নভেম্বর (এপিপি)।- প্রেসিডেন্ট আজ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির সকল উপদল ও গ্রুপকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। আজ এখানে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট বলেন যে, তিনি ইতিমধ্যে ন্যাপের কতিপয় নেতাকে আটক করার আদেশ দিয়েছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, তবে ন্যাপের টিকিটে জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদে নির্বাচিত ব্যক্তিদের আসন বহাল থাকবে। বিবৃতিতে বলা হয়, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি দীর্ঘদিন যাবৎ পাকিস্তানের স্বার্থ ও নিরাপত্তার বিরুদ্ধে কাজ করছিল। এর কতিপয় নেতা এই দেশ সৃষ্টির বিরুদ্ধে জোর তৎপরতা চালিয়েছিল এবং এর অস্তিত্ব মেনে নিতে পারেনি।
তারা এর ক্ষতি করার কোন সুযোগই নষ্ট করেননি। এখন যখন তারা পূর্ব অংশে অভ্যন্তরীণ নাশকতামূলক তৎপরতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে এবং যখন ভারতীয় বাহিনী পাকিস্তানের এলাকা আক্রমণ করেছে এবং যখন তার (ভারতের) নেতৃবৃন্দ আমাদের এলাকা দখল ও তা নিয়ন্ত্রণে রাখার কথা বলছেন, তখন উক্ত দলের কতিপয় নেতা এ দেশের শত্রুদের সঙ্গে যোগসাজশে পাকিস্তানকে খণ্ডবিখণ্ড ও ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পনা করছেন। প্রেসিডেন্ট বলেন, অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমদ এখন দেশের বিরুদ্ধে এক বিদ্রোহে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। যারা প্রথমেই পূর্ব পাকিস্তানের বিচ্ছিন্নতা দাবী করেছিলেন মওলানা ভাসানী তাদের অন্যতম, এবং এখন তিনি আমাদের শত্রুদের মধ্যে বসবাস করছেন।
এছাড়া সবচেয়ে ঘোরতর পাকিস্তানবিরোধী আব্দুল গাফফার খান এই দেশের প্রতি শত্রুতায় কখনো ক্ষান্ত হননি এবং এখন তিনি এর শত্রুদের সঙ্গে প্রকাশ্যে যোগসাজশে কাজ করে যাচ্ছেন। এই দলের অন্যান্য কতিপয় নেতা পাকিস্তানের কোন কোন অংশে বিদ্রোহ শুরু করার ষড়যন্ত্র করছেন। প্রেসিডেন্ট তাঁর বিবৃতিতে বলেন, আমি ধৈর্যের সঙ্গে আশা করেছিলাম যে, এই সংকটপূর্ণ সময়ে আমরা আমাদের অস্তিত্বের জন্য সংগ্রাম করছি। তখন শুভবুদ্ধির উদয় হবে এবং এই দলের নেতৃবৃন্দের মধ্যে এখনো যারা পাকিস্তানে আছেন তারা এক সাধারণ শত্রুর মোকাবিলায় আমাদের সঙ্গে শরীক হবেন অথবা কমপক্ষে সক্রিয় শত্রুতা থেকে বিরত থাকবেন।
প্রেসিডেন্ট বলেন, কিন্তু যখন বৈদেশিক হামলা হয়েছে তখন আমরা আমাদের শত্রুদের অনুরুপ লক্ষ্যসম্পন্ন ও তাদের সঙ্গে সর্বদা যোগাযোগ রক্ষাকারী এবং উক্ত লক্ষ্যসমূহ অর্জনে তাদের (আমাদের শত্রুদের) সক্রিয়ভাবে সাহায্য করার উদ্দেশ্যে পরিকল্পনা প্রণয়নকারী একটি রাজনৈতিক দলের অব্যাহত অস্তিত্ব থাকতে দিতে পারি না। কাজেই দেশের অভ্যন্তর থেকে এই হুমকি দূর করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া বলেন, কাজেই আমি ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির সকল গ্রুপ ও উপদল নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
আমি ইতিমধ্যেই এই দলের কিছু সংখ্যক নেতাকে আটক করার আদেশ দিয়েছি। তিনি বলেন, তবে দলের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা সত্ত্বেও এই দলের টিকিটে যারা জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদগুলোতে নির্বাচিত হয়েছেন, তাদের আসন বহাল থাকবে।
প্রেসিডেন্ট বলেন, আশা করা যাচ্ছে যে, তারা রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত ব্যক্তিদের প্রভাবমুক্ত দলের অন্যান্য সদস্যরা প্রতিরক্ষায় এবং দেশের উন্নতির জন্য পুরোপুরিভাবে এবং অকপটে তাদের ভূমিকা পালন করবে।
—————