শিরোনামঃ ৯০। ভারতের আক্রমণাত্মক তৎপরতার বিরুদ্ধে কড়া হুঁশিয়ারি
সূত্রঃ দৈনিক পাকিস্তান
তারিখঃ ২৮ অক্টোবর, ১৯৭১
.
ভারতের আক্রমণাত্মক তৎপরতার
বিরুদ্ধে কড়া হুশিয়ারি
বেপরোয়া গোলাবর্ষণের প্রতিবাদ
ইসলামাবাদ, ২৭শে অক্টোবর (এপিপি)। – পাকিস্তান সরকার সীমান্তে আচরণবিধি লংঘন করে মর্টার ও ভারী ফিল্ডগানের সাহায্যে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী কর্তৃক পাকিস্তানী এলাকায় বিনা উস্কানিতে অনবরত গোলাবর্ষণ অব্যাহত রাখার বিরুদ্ধে ভারত সরকারের কাছে আর একটি কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
গত ২৩শে অক্টোবর শনিবার এখানকার ভারতীয় হাইকমিশনের নিকট প্রদত্ত এক প্রতিবাদলিপিতে পাকিস্তান ভারতীয় বাহিনী কর্তৃক আক্রমণাত্মক তৎপরতা অব্যাহত রাখার পরিণতি সম্পর্কে ভারতকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছে। ৬ই অক্টোবর থেকে ১২ই অক্টোবর পর্যন্ত বিনা প্ররোচনায় ভারতীয় বাহিনী কর্তৃক পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বেপরোয়া আক্রমণাত্মক কার্যকলাপের ২১টি ঘটনা উক্ত প্রতিবাদলিপিতে তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবাদ জ্ঞাপনকালে প্রতিবাদলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর বেপরোয়া গোলাবর্ষণে পূর্ব পাকিস্তানে জানমানের যে ক্ষয় হয়েছে পাকিস্তান সরকারের সে ক্ষতিপূরণ দাবীর অধিকার রয়েছে।
প্রতিবাদলিপিতে নিম্নোক্ত ঘটনাগুলোর তালিকা রয়েছেঃ
১। ৬ই অক্টোবর বেলা ১টার সময় ভারতীয় বাহিনী যশোর জেলার ছুটিপুর এলাকায় ৩ ইঞ্চি মর্টারের সাহায্যে ১০ রাউণ্ড গোলাবর্ষণ করে।
২। ৬ই অক্টোবর রাত ১টা থেকে ভারতীয় বাহিনী নোয়াখালী জেলার পরশুরাম এলাকায় ভারী মর্টার থেকে গোলাবর্ষণ শুরু করে। এই গোলাবর্ষণ দীর্ঘসময় অব্যাহত থাকে এবং এই সময়ে ২০১ রাউণ্ড গোলাবর্ষণ করে।
৩। ৬ই অক্টোবর বিকাল ৫টা ৪০ মিনিটে ভারতীয় বাহিনী দিনাজপুর জেলার ডিঙ্গাপাড়া এলাকায় ফিল্ডগান থেকে ৩০ রাউণ্ড গোলাবর্ষণ করে।
৪। ৬ই অক্টোবর ৫টার সময় খুলনা জেলার ভোমরা এলাকায় ভারতীয় সৈন্যরা ফিল্ডগান থেকে ৭ রাউণ্ড গোলাবর্ষণ করে।
৫। ৬ই অক্টোবর রাত ১০টায় খুলনা জেলার কাকডাঙ্গা এলাকায় ভারতীয় বাহিনী ফিল্ডগান থেকে ৮ রাউণ্ড ও ৩ ইঞ্চি মর্টার থেকে ১২ রাউণ্ড গোলাবর্ষণ করে।
৬। ৭ই অক্টোবর ভোর সারে ৪টার দিকে ভারতীয় বাহিনী যশোর জেলার বেনাপোল এলাকায় ফিল্ডগানের সাহায্যে ২৯ রাউণ্ড গোলাবর্ষণ করে।
৭। ৭ই অক্টোবর বিকাল সাড়ে ৫টায় ভারতীয় সেনাবাহিনী বিনা উস্কানিতে কুষ্টিয়া জেলার দর্শনা এলাকায় ২২০ এম এম মর্টারের সাহায্যে গোলাবর্ষণ করে।
৮। ৮ই অক্টোবর ভোর ৩টা ১৫ মিনিটে কুষ্টিয়া জেলার ইছাখালী সীমান্ত ফাঁড়ির উপর ভারতীয় বাহিনী বিনা উস্কানিতে ফিল্ডগানের সাহায্যে ২ রাউণ্ড গোলাবর্ষণ করে।
৯। ৮ই অক্টোবর বেলা ১২টা ২৫ মিনিটে ভারতীয় সৈন্যরা বিনা প্ররোচনায় কুমিল্লা জেলার শালদা ও নয়নপুর এলাকায় ভারী মর্টার থেকে ৮ রাউণ্ড ও রিকয়েললেস রাইফেল থেকে ৭৫ রাউণ্ড গোলাবর্ষণ করেছে।
১০। একই দিনে বেলা ১১টায় ভারতীয় বাহিনী বিনা প্ররোচনায় সিলেট সীমান্ত এলাকায় মর্টারের সাহায্যে গোলাবর্ষণ করে। এই গোলাবর্ষণে একজন পাকিস্তানী মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে।
১১। ৯ই অক্টোবর বেলা ১২টার সময় ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী খুলনা জেলার কাকডাঙ্গা এলাকায় ফিল্ডগান থেকে ৮০ রাউণ্ড গোলাবর্ষণ করে।
১২। ৮ই অক্টোবর বিকাল ৬টায় ভারতীয় বাহিনী যশোর জেলার বেনাপোল এলাকায় ফিল্ডগানের ৫০ রাউণ্ড গোলাবর্ষণ করে।
১৩। ৮ই অক্টোবর সকাল ৭টায় ভারতীয় বাহিনী বিনা উস্কানিতে খুলনা জেলার ভোমরা এলাকায় ফিল্ডগান থেকে ১৭০ রাউণ্ড গোলাবর্ষণ করে।
১৪। ৮ই অক্টোবর রাত ৩টা ২৫ মিনিটের সময় ভারতীয় বাহিনী বিনা প্ররোচনায় কুষ্টিয়া জেলার ইছাখালি এলাকায় ১২০ এম এম মর্টারের সাহায্যে ৮৭ রাউণ্ড গোলাবর্ষণ করে।
১৫। ৮ই অক্টোবর বিকাল ৩টায় যশোর জেলার বেনাপোল এলাকায় ভারতীয় বাহিনী ফিল্ডগান থেকে ৭০ রাউণ্ড গোলাবর্ষণ করে।
১৬। ৯ই অক্টোবর বিকাল সাড়ে ৬টায় ভারতীয় বাহিনী কুষ্টিয়া জেলার মহেশকান্দি এলাকায় ফিল্ডগান থেকে ৩২ রাউণ্ড গোলাবর্ষণ করে।
১৭। ১০ই অক্টোবর সকাল ৬টায় ভারতীয় বাহিনী বিনা উস্কানিতে যশোর জেলার বেনাপোল এলাকায় ভারতীয় বাহিনী ফিল্ডগান থেকে ২৫ রাউণ্ড গোলাবর্ষণ করে।
১৮। ১০ই অক্টোবর বেলা ২টায় ভারতীয় বাহিনী যশোর মসলিয়া ছুটিপুর এলাকায় ৬ ইঞ্চি মর্টার থেকে ২১ রাউণ্ড গোলাবর্ষণ করে।
১৯। ১১ই অক্টোবর রাত ৯টায় ভারতীয় বাহিনী খুলনা জেলার কাকডাঙ্গা এলাকায় ফিল্ডগান থেকে ১৫ রাউণ্ড গোলাবর্ষণ করে।
২০। ১১ই অক্টোবর সকাল ১১টার সময় ভারতীয় বাহিনী কুমিল্লা জেলার রিও এলাকায় ভারী মর্টার থেকে প্রচণ্ড গোলাবর্ষণ করে। এতে ৫ ব্যক্তি নিহত ও ৩৯ জন আহত হয়েছে।
২১। ১২ই অক্টোবর সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে যশোর জেলার মসলিয়া এলাকায় ভারতীয় বাহিনী বিনা উস্কানিতে ফিল্ডগান থেকে ২০ রাউণ্ড গোলাবর্ষণ করে। এতে ৩জন নিরীহ লোক আহত হয়।