শিরোনাম | সংবাদপত্র | তারিখ |
বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করেই হাতিয়ার ছাড়বো | রণাঙ্গন
৬ষষ্ঠ সংখ্যা |
২৪ অক্টোবর, ১৯৭১ |
বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করেই হাতিয়ার ছাড়বো
টাঙ্গাইলের মুক্ত এলাকার জনসভায় বীর কাদেরের ভাষণ
মুজিবনগর থেকে ফেরার পর মুক্ত এলাকার কোন এক অঞ্চলে প্রথম জনসভায় জনাব কাদেরের ভাষণ দিচ্ছিলেন । ২২ অক্টোবার মাহে রমজানের প্রথম দিনে বেলা ৩-১০ মিনিটে মাওলানা জয়নুল আবেদীন হাদীর কোরআন তেলয়াতের মাধ্যমে এই জনসভার শুভ সূচনা হয় ।
যুদ্ধ এখনও শুরু হয়নিঃ
জনাব সিদ্দিকী তার ভাষণে বলেন – বাংলাদেশ মুক্তি সংগ্রামের প্রায় সাত মাস অতিবাহিত হতে চলছে । এ যুদ্ধ নয়-প্রস্তুতি মাত্র। ২৩ বৎসর প্রস্তুতি নিয়ে ২৫ মার্চের রাত্রে ওরা আমাদের উপর ঝাপিয়ে পড়েছে । আমরা ৭ মাসের প্রস্তুতিতে এখন যুদ্ধ করবো।
জনসাধারন করিয়ে দেয়ঃ
মুজিব নগরে বিভিন্ন সময় আমাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে – যোগাযোগ এবং খাদ্য কে দেয়? আমি বলেছি যখন দুরালপনী ছিল না, তখন জনসাধারন যেভাবে যোগাযোগ করিয়ে দিত, আমাদের বেলায় তাই-ই হইতেছে । সাধারন মানুষের খাবার আমার খাবার।
আপোষ হতে পারে নাঃ
বাংলার সাড়ে সাত কোটি মানুষ যাকে নেতা বলে স্বীকার করেছেন, তাকে কারাগারে রেখে জালিমের হাতে কামান রেখে কোন আপোষ হতে পারে না ।
বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করেই হাতিয়ার ছাড়বোঃ
জনাব সিদ্দিকী বলেন- ৫২র ভাষা আন্দোলন, ৬২র শিক্ষা কমিশন আন্দোলনের ৬৯র গণজোয়ারে ‘ ৭০-র নির্বাচনে আমরা জয়ী হয়েছি। ৭১-র এ যুদ্ধেও আমরা জয়ী হব । বঙ্গবন্ধু কে যে কোন কারাগারেই রাখা হোক না কেন , তাকে মুক্ত করেই ছাড়বো ।
এখনো সময় আছেঃ
সাধারন ক্ষমা ঘোষণা করে তিনি বলেন- আত্মসমর্পণ করা হলে দালাল এবং রাজাকারদের এখনও ক্ষমা করা হবে ।
ধৈর্যশীল হতে হবেঃ
জনগণকে আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন – আপনারা ধৈর্য ধরেন । দেশ স্বাধীন হতে আর বেশী বিলম্ব নেই । আপনারা পাট বিক্রি করতে পারবেন । তবে পাট ক্রেতাকে মণপ্রতি এক টাকা করে মুক্তিবাহিনীকে চাঁদা দিতে হবে ।
ঢাকা টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ ও পাবনার বেসামরিক প্রধান তার জ্ঞান গম্ভীর ভাষণে বলেন- বাংলাদেশের বুক থেকে হানাদারদের খতম করা পর্যন্ত এ যুদ্ধ চলবে । ত্যাগ-তিতিক্ষা স্বীকার করেই আমরা যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছি । কারো ধার করা স্বাধীনতা আমরা চাই না । আমরা গাজী হয়ে যুদ্ধ শুরু করেছি গাজী হয়েই যুদ্ধ শেষ করবো । বঙ্গবন্ধুকে হানাদার গোষ্ঠীর কারাগার থেকে ছিনিয়ে আনবই আনব ।