সংবাদপত্রঃ জয় বাংলা ১ম বর্ষ, ২৩শ সংখ্যা
তারিখঃ ১৫ অক্টোবর, ১৯৭১
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও অর্থনৈতিক প্রতিশ্রুতি (অর্থনৈতিক ভাষ্যকার)
বাংলাদেশের বীর মুক্তিযোদ্ধারা জীবন বাজি রেখে মরণপণ সংগ্রামে লিপ্ত।তাদের সঙ্গে দেশপ্রেমিক,কৃষক,মজুর ছাত্র,বুদ্ধিজীবী,শিল্পী,সাহিত্যিক-এক কথায় ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষ যার যার নিজের কর্মক্ষেত্রে এই মুক্তি সংগ্রামের অংশভাগী হয়ে দেশ মাতৃকার শৃঙ্খল মোচনের জন্য সর্বস্ব পণ করেছে।অসহ্য দুঃখ-কষ্ট লাঞ্ছনা ও প্রতি মুহূর্তে নিশ্চিত মৃত্যু সম্ভাবনার মুখেও তারা জাতীয় মুক্তির প্রশ্নে আপোষহীন মুক্তির প্রভাতসূর্যের সম্ভাবনা প্রত্যয়শীল।
মাত্র চব্বিশ বছর আগে সাম্প্রদায়িক জাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে যে রাষ্ট্রের পত্তন হয়েছিল,সেই রাষ্ট্রের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ সাম্প্রদায়িকতা পরিহার করে ভাষা,সাহিত্যে,সংস্কৃতি ও ভৌগলিক জাতীয়তার ভিত্তিতে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধভাবে স্বাধীনতার জাতীয় মুক্তির লক্ষ্য অর্জনের জন্যে সশস্ত্র সংগ্রামে কাতারবন্দী হয়েছে।শুধু ময়দানে স্লোগান দেয়া নয়,এক সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে হাতিয়ার হাতে পাকিস্তানের হানাদার বাহিনীকে হত্যা করছে,প্রাণ দিচ্ছে।বাংলাদেশের সকল ধর্মীয় বিশ্বাসের মানুষ,বাঙালী জাতি হিসেবে প্রাণ নেয়া ও দেয়ার মিলিত রক্তধারায় যে জাতীয় ঐক্য তুলেছে,এদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে তা অনন্য।সাম্প্রদায়িকতাবাদের কবর রচনায় ইতিহাসের এই অনন্য অধ্যায়ের ভূমিকা অপরিসীম এবং সুদূরপ্রসারী।বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের এটি প্রাথমিক সাফল্য।শুধু যারা ঔপনিবেশিক শোষণের হাতিয়ার হিসেবে ধর্মীয় জিগির তুলে সাম্প্রদায়িক ভেদবুদ্ধিকে বাঁচিয়ে রাখতে চায়,পশ্চিম পাকিস্তানের ঔপনিবেশিক শক্তির সেইসব দালালরা এই জাতীয়তাবাদের অভ্যুদয়কে ভয় করে।শুধু তারাই এই মুক্তিসংগ্রামের বিরুদ্ধে সামরিক জান্তার সাথে হাত মিলিয়েছে।এই দুটি বিপরীত ধারার কথা যদি আমরা বিচার করি তা হলে অন্যান্য বিষয় বাদ দিলেও শুধু বাঙালী জাতীয়তাবাদের এই অভ্যুদয়কে নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ মৌলিক অগ্রগতি হিসেবে স্বাগত জানাতে হয় বাংলাদেশের জাতীয় এবং রাজনৈতিক জীবনে এই জাতীয়তাবাদী ধারার দুর্জয় শক্তি পশ্চিম পাকিস্তানী সামরিক জান্তা ভালভাবেই উপলব্ধি করতে পেরেছে বলে ইয়াহিয়া খানের খসড়া শাসনতন্ত্রে দখলীকৃত বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ভোটাধিকার হরণের ব্যাবস্থা করা হয়েছে।এর একমাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে সাম্প্রদায়িক বিভেদ জিইয়ে রেখে সাংস্কৃতিক ও ভৌগলিক জাতীয়তাবাদকে প্রতিহত করা।এটাই সাম্প্রদায়িকতাবাদী ঔপনিবেশিক শক্তির লক্ষ্য।জামায়াতে ইসলামী,মুসলিম লীগ প্রভৃতি দালাল দলগুলো পশ্চিম পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শক্তির লক্ষ্য পূরণের কাজে আত্মনিয়োগ করেছে।
কিন্তু এই দালালরা চিহ্নিত ও ধিকৃত।তাদের শক্তি পুরোপুরিভাবে সামরিক জান্তার পশুশক্তির পৃষ্ঠপোষকতার উপর নির্ভরশীল।এরা মুক্তিবাহিনীর গেরিলা যোদ্ধাদের আক্রমণে এখন নিজেরাই সন্ত্রস্ত।তবে সংখ্যায় একেবারে নগণ্য হলেও স্বদেশে ও বিদেশে প্রগতিবাদী এবং বামপন্থী বলে কিছু লোক আছেন যারা এই মুক্তিসংগ্রামকে পশ্চিম পাকিস্তানী বুর্জোয়াদের জায়গায় বাঙালী বুর্জোয়াদের প্রতিষ্ঠিত করার যুদ্ধ বলে অভিহিত করে এই মুক্তিযুদ্ধের যৌক্তিকতা ও সার্থকতার প্রশ্ন উত্থাপন করে থাকেন।অবশ্য এ কথা ঠিক যে, জাতীয় মুক্তি সংগ্রামে প্রতিটি মানুষই কাতারবন্দী হবে এমন আশা সবসময় করা যায় না।কিন্তু তা সত্ত্বেও বলতে হয় যে প্রগতিবাদীদের নাম করে যারা বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের ভূমিকা ও তাৎপর্য সম্পর্কে সংশয়বাদী প্রশ্ন তুলে নিজেদের এই সংগ্রাম থেকে দূরে রাখেন তারা প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের মুক্তি ও সংগ্রামেরই বিরোধিতা করেছেন।সেদিন থেকে পরিণামে জামায়াত বা মুসলিম লীগের ভূমিকা থেকে এদের ভূমিকার আসলে খুব বেশি পার্থক্য নেই।একদল ধর্মের নামে বিরোধিতা করে,অপরদল প্রগতির নামে বিরোধিতা করে।
রাজনৈতিক,অর্থনৈতিক,সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সকল অর্থেই বাংলাদেশকে পশ্চিম পাকিস্তানের কলোনি করে রাখা হয়েছিল।এখন প্রশ্ন হচ্ছে অন্যান্য প্রগতিশীল ও সমাজবাদী অঙ্গীকার যদি অনুপস্থিতও থাকত তা হলে শুধু ঔপনিবেশিক শৃঙ্খল থেকে বেরিয়ে আসার জন্যে যে মুক্তি সংগ্রাম কি ওই একটি কারণেই উপনিবেশবাদ ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী মহলের সমর্থন লাভের দাবীদার হত না? তা না হলে বলতে হয় যে,তাদের নির্দেশিত রাষ্ট্র কাঠামোর অঙ্গীকার যদি না থাকে তাহলে দেশ পরাধীনই থাক।এই নেতিবাচক ভূমিকা আত্মহননেরই সামিল।
কিন্তু এই ধরণের মনোভাব যদি কেউ পোষণ করেন তা হলে বলতে হবে যে তারা নিঃসন্দেহে ভ্রান্ত।বিশেষ করে বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের ব্যাপারে।কারণ তা হলে বুঝতে হবে যে, জিন্না সাহেবের দ্বি-জাতিতত্ত্বের মাথায় পদাঘাত করে বাংলাদেশে যে সাম্প্রদায়িক ক্লেদমুক্ত সাংস্কৃতিক ও ভৌগলিক জাতীয়তার ভিত্তিতে সংগ্রাম চলছে তার সুদূরপ্রসারী গুরুত্ব ও প্রভাব তারা হয় অনুধাবন করতে পারেননি নয়ত হিসেবের মধ্যে আনেননি।তাছাড়া ঔপনিবেশিক শোষণ ও শাসনের বিরুদ্ধে জাতীয় মুক্তির লক্ষ্য অর্জনের জন্যে সশস্ত্র সংগ্রাম যে চরিত্রগতভাবে প্রগতিশীল সংগ্রাম হতে বাধ্য বিশেষ করে বিশ শতকের শেষ পর্যায়ে বিশ্বের সমাজ চেতনার পরিমণ্ডলে অবস্থান করে তাও হয়তো হিসেবের বাইরে রয়ে গিয়েছে।বিশ শতকের শেষ ভাগে বর্তমান যুগের সমাজ চেতনার পরিচিত পরিমণ্ডলের মধ্যে বাংলাদেশের সর্বশ্রেণীর সমর্থনে ও সক্রিয় সহযোগিতায় যে মুক্তি সংগ্রাম চলছে সেই যুদ্ধের সফল পরিণতি কোন দিনই দেশী বাইশ পরিবার গড়ে উঠতে দেবে না।বাংলাদেশের সর্বশ্রেণীর সমন্বয়ে গঠিত মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তক্ষরণের ভেতর দিয়ে যে সমাজ শক্তি ও সমাজ চেতনা দৃঢ়মূল হচ্ছে,সেই শক্তি ও চেতনাই সে ধরণের সম্ভাবনার পথ রুদ্ধ করবে।
এ কথাও বুঝতে হবে যে,মুক্তিযোদ্ধারা ভাড়াটিয়া সৈন্য নয়।দেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষও শুধু শুধু জাতীয় মুক্তিসংগ্রামে উদ্বুদ্ধ হয়নি।এর পেছনে অবশ্যই সামাজিক,সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির সুনিশ্চিত আশ্বাস রয়েছে।বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দ্যার্থহীন ভাষায় ঘোষণা করেছেন যে,পশ্চিম পাকিস্তানী ২২ পরিবারের জায়গায় বাঙালী ২২ পরিবার সৃষ্টি করার জন্য তিনি এই মুক্তি সংগ্রাম শুরু করেননি।শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠাই ছিল তার মুক্তির সংগ্রামের লক্ষ্য।
শুধু বঙ্গবন্ধুর মৌখিক ঘোষণাই নয়, আওয়ামী লীগের ম্যানিফেস্টোতেও সামাজিক ন্যায়বিচার ও অর্থনৈতিক শোষণের হাত থেকে মুক্তির প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে।এই ঘোষণাপত্রের প্রথম দিকেই সংক্ষিপ্ত কয়েকটি কথায় জীবনের মৌলিক চাহিদা পূরণের নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে।তাতে বলা হয়েছে যে অন্ন,বস্ত্র,আশ্রয়,শিক্ষা,চিকিৎসা এবং উপযুক্ত পারিশ্রমিক কর্মসংস্থানের সুযোগসহ প্রতিটি নাগরিকের প্রাথমিক চাহিদা পূরণের মৌলিক দায়িত্ব রাষ্ট্রের এ কথার স্বীকৃতি শাসনতন্ত্রে থাকবে।
রাষ্ট্রকর্তৃক জনগণের প্রাথমিক চাহিদা পূরণের মৌলিক দায়িত্ব রাষ্ট্রের বলে ঘোষণা করার সঙ্গে সঙ্গে উক্ত ঘোষণাকে বাস্তবে রূপায়িত করার জন্যে আওয়ামীলীগ ম্যানিফেস্টোতে অর্থনৈতিক কর্মসূচীর ভিত্তিও ব্যাখ্যা করা হয়েছে।তাতে বলা হয়েছে যে, “শোষণমুক্ত একটি ন্যায় ও সাম্যবাদী সমাজ গঠন করাই এই অর্থনৈতিক কর্মসূচীর মূল লক্ষ্য।এটা একটা সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যাবস্থার রূপকল্প-যাতে অর্থনৈতিক অবিচার দূরীকরণ ও দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নতি সাধন করা হবে এবং দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ও সকল স্তরের মানুষের মধ্যে এই সমৃদ্ধির ফল যথাযথভাবে বণ্টনের বিধান থাকবে।
“শোষণমুক্ত ন্যায় ও সাম্যবাদী সমাজ গঠন ও সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক রূপকল্প” বাস্তবায়িত করার জন্য আওয়ামীলীগের ম্যানিফেস্টোতে ভাবী শাসনতন্ত্রের যে ব্যাবস্থা সংবিধানে সন্নিবদ্ধ করার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে সেই সংবিধানটি জনগণের হাতে উপরোক্ত শোষণমুক্ত ন্যায় ও সাম্যবাদী সমাজ গঠন নির্ভর করবে প্রশাসনিক ব্যাবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে।আওয়ামী লীগের ম্যানিফেস্টোতে উপরোক্ত প্রশাসনিক পদক্ষেপ সম্পর্কেও সুস্পষ্টভাবে পথ নির্দেশ করা হয়েছে।
বাক্তিগত মালিকানাধীন শিল্পের জায়গায় সরকারী খাতের সম্প্রসারণ এবং গুরুত্ব অনুযায়ী অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে বিভিন্ন শিল্প,ব্যাংক,বীমা,বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যাবসা ও আমদানী রফতানী বাণিজ্য জাতীয়করণ,যে পরোক্ষ কর সাধারণ মানুষের কাঁধে চেপে বসে,কর ব্যাবস্থার আমূল পরিবর্তন করে উপরোক্ত পরোক্ষ করের জায়গায় প্রত্যক্ষ কর ব্যাবস্থার মাধ্যমে অধিক পরিমাণ অর্থ আদায়ের ব্যাবস্থা করা প্রভৃতি প্রশাসনিক পদক্ষেপের অঙ্গ।
মূলধন ও ব্যাবস্থাপনায় শ্রমিক অংশীদারিত্ব
মূলধনে শ্রমিক শ্রেণীর অংশীদারিত্ব সম্পর্কে ম্যানিফেস্টোতে বলা হয়েছে যে,সমস্ত শিল্প কারখানা সত্বর জনগণের মালিকানাধীনে আনা হবে না,সরকার ক্রমবর্ধমানহারে তাদের ইকুইটি মূলধন দখল করবে।সরকার যেটুকু ইকুইটি মূলধন আয়ত্ত করবে,সংশ্লিষ্ট শিল্পে নিযুক্ত শ্রমিকগণ যৌথভাবে সেই পরিমাণ অংশের মালিকানা লাভ করবে এবং সেই পরিমাণ অংশের মুনাফার ভাগ পাবে।শ্রমিকরা কেবল ইকুইটি মূলধনের নয়,শিল্প কারখানার ব্যাবস্থাপনায়ও অংশগ্রহণ করবে।এইভাবে শ্রমিক সমাজ যেমন ক্রমান্বয়ে অধিক হারে শিল্পে মালিকানা লাভ করবে তেমনি শিল্প পরিচালনা ও ব্যাবস্থাপনাতেও দক্ষতা অর্জন করতে পারবে।
কৃষি ও গ্রামের জনগণ
বাংলাদেশের জনসংখ্যার ৯০ শতাংশ পল্লী অঞ্চলের অধিবাসী।এদের মধ্যে ৮০ শতাংশ প্রত্যক্ষভাবে কৃষিকর্মের ওপর নির্ভরশীল।কাজেই শোষণমুক্ত এবং ন্যায় ও সাম্যবাদী সমাজ গঠন বা সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির সফল রূপায়ণ কৃষি ও ভূমি ব্যাবস্থার আমূল সংস্কার ছাড়া সম্ভব নয়।তাই আওয়ামী লীগের ম্যানিফেস্টোতে এ সম্পর্কে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।তাতে বলা হয়েছে যে , “কৃষি ও গ্রামের মানুষের অবস্থার উন্নয়নের উপর সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া না হলে আমাদের জাতীয় অর্থনীতির বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধনের সমস্ত পরিকল্পনাই অর্থহীন হয়ে পড়বে।এটা এক দিকে আমাদের গোটা সমাজের সর্বত্র দারিদ্র্য ছড়িয়ে পড়েছে,অন্যদিকে গ্রামে ও শহরের জীবনযাত্রার মানের মধ্যে গুরুতর বৈষম্য রয়েছে।“
.
এ প্রসঙ্গে ম্যানিফেস্টোতে আরো বলা হয়েছে যে এর পিছনে ঐতিহাসিক কারণ থাকলেও নিকট অতীতে সরকারের বৈষম্যমূলক নীতির জন্য এই বৈষম্য আরো বেড়ে গিয়েছে,ফলে গরীব চাষীর হাত থেকে সম্পদ ধনী পুঁজিপতিদের হাতে ব্যাপকভাবে পাচার হয়ে গেছে।আওয়ামী লীগ অবিলম্বে গ্রামাঞ্চলের জনগণকে এইরূপ শোষণের হাত থেকে বাঁচাবার অঙ্গীকার করেছে।আর এটা করতে গেলে কৃষিখাতে সুদূরপ্রসারী বিপ্লবের প্রয়োজন।এই ধরণের বিপ্লবের পূর্বশর্ত হল ভূমি ব্যাবহারের বর্তমান পদ্ধতির আমূল পরিবর্তন এবং বহুমুখী সমবায়ের মত নয়া প্রতিষ্ঠান স্থাপন।
.
কাজেই ঔপনিবেশিক শোষণের নাগপাশ থেকে নিজেদের মুক্ত করার ঐকান্তিক কামনার সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক ন্যায় নীতি ও অর্থনৈতিক সাম্যের প্রতিশ্রুতি বাংলাদেশের সর্বশ্রেণীর মানুষকে একটি শোষণহীন সমাজ গঠনের জন্য ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামে উদ্বুদ্ধ করেছে।বাংলাদেশের সর্বশ্রেণীর মানুষের বর্তমান রক্তমোক্ষণ নিছক ভাববিলাশের ফলশ্রুতি নয়।