শিরোনামঃ জল্লাদরা ত্রাণ সামগ্রী যুদ্ধের কাজে লাগাচ্ছে
সংবাদপত্রঃ জয় বাংলা(১ম বর্ষঃ ১৯শ সংখ্যা )
তারিখঃ ১৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১
পশ্চিম পাকিস্তানী সামরিক শাসক গোষ্ঠী ইউনিসেফ এবং জাতিসংঘের অপরাপর ত্রাণ প্রতিষ্ঠানসমূহের যাবতীয় গাড়ি ও যানবাহন যুদ্ধের কাজে ব্যাবহার করছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকার লন্ডনস্থ মিশনের মাধ্যমে জাতিসংঘকে একথা জানিয়ে দিয়েছে।
জাতিসংঘের সাহায্য সংস্থা ইউনিসেফ এর একটি জীপে টিক্কা খানকে দেখা গেছে।
১৯৭০ সালের ভয়াবহ বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের সাহায্যের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্র বিপন্ন মানবতার সেবায় যেসব ত্রাণ সামগ্রী পাঠিয়েছিল, সেগুলোও সামরিক শাসকেরা যুদ্ধের কাজে ব্যবহার করছে। দ্রুত রিলিফ প্রেরণের জন্য যাতায়াতের সুবিধার্থে নরওয়ে এবং স্ক্যান্ডিনেভিয়ার অন্যান্য রাষ্ট্র যে সব রবারের নৌকা, দ্রুতগামী লঞ্চ পাঠিয়েছিল, সেগুলোও ঐ একই কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
সম্প্রতি খুলনার নিকটে একটি সংঘর্ষে মুক্তিবাহিনী পাক সেনাবাহিনীর কাছ একটি গানবোট দখল করেন। পরে মুক্তিবাহিনী দেখে আশ্চর্য হন যে ওটা ঘুর্ণিদুর্গতদের সাহায্যে বিতরণের কাজে ব্যবহারের জন্য নরওয়ে প্রেরিত নৌ যানগুলোর অন্যতম। শুধু যানবাহনই নয়, ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাঙ্গালীর জন্য প্রেরিত খাদ্যদ্রব্য এবং কাপড়-চোপড় পাক সেনাবাহিনী নিজেরাই ব্যবহার করছে। সম্প্রতি পশ্চিম রণাঙ্গনে নিহত শত্রুসেনাদের কাছে টিনে ভর্তি খাবার পাওয়া গেছে। টিনের উপরের ছাপ এবং লেখা থেকে দেখা যায় যে, এগুলোও বন্যা ও ঘূর্ণিঝড় দুর্গতদের রিলিফের জন্য প্রেরিত জিনিস। এমনকি, শরণার্থীদের জন্য প্রেরিত খাদ্যদ্রব্যও হানাদার বাহিনীর ‘রেশন’ দ্রব্যে পরিণত হয়েছে।
জানা গেছে, ভারতসহ ইউরোপের তিনটি রাষ্ট্র জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল উথাল্টকে পাকিস্তানে জাতিসংঘের সাহায্য বন্ধ করে দেয়ার জন্য অনুরোধ করেছে।