You dont have javascript enabled! Please enable it!
শিরোনাম সূত্র তারিখ
উদ্বাস্তুদের প্রত্যাবর্তনের জন্য আরো ব্যবস্থা গ্রহণ দৈনিক পাকিস্তান ৩০ আগস্ট, ১৯৭১

উদ্বাস্তুদের প্রত্যাবর্তনের অধিকতর সুবিধার জন্য আরও ব্যবস্থা গ্রহণ : ভারত সহযোগিতা না দিলে আকাঙ্ক্ষিত ফল হবে না: পররাষ্ট্র সেক্রেটারী
করাচী, ২৯ শে আগষ্ট (এপিপি)। – পূর্ব পাকিস্তানী উদ্বাস্তুদের প্রত্যাবর্তনের ব্যাপারে আরো সুযোগ-সুবিধা দানের জন্য সরকার যে সকল নবতম ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন, পাকিস্তান তা জাতিসংঘ উদ্বাস্তু হাই কমিশনার প্রিন্স সদরুদ্দিনকে অবহিত করেছেন।
পররাষ্ট্র সেক্রেটারী জনাব সুলতান মোহাম্মদ খান আজ এখানে এই তথ্য প্রকাশ করেন। তিনি গত সপ্তাহে জেনেভায় জাতিসংঘ উদ্বাস্তু হাই কমিশনারের সঙ্গে দেখা করেছেন।
তেহরান ও জেনেভায় পাকিস্তানী দুতদের সঙ্গে আলোচনা করে এখানে প্রত্যাবর্তনের পর তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনা করছিলেন। তিনি বলেন, প্রিন্স সদরুদ্দিনের পাকিস্তান সফরের পরবর্তী ঘটনাবলী ও তিনি তাঁকে অবহিত করেছেন।
পররাষ্ট্র সেক্রেটারী বলেন, তিনি জাতিসংঘ উদ্বাস্তু হাই কমিশনারকে অবহিত করেছেন যে, উদ্বাস্তুদের প্রত্যাবর্তন ও পুনর্বাসনের ব্যাপারে পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে বহু ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি প্রিন্স সদরুদ্দিনকে আশ্বাস দিয়েছেন যে, উদ্বাস্তুদের গৃহে ফেরার ব্যাপারে সাহায্য করার জন্য সরকারী প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
প্রিন্স সদরুদ্দিনকে তিনি বলেছেন যে, ভারতের সহযোগিতা ছাড়া উদ্বাস্তু সমস্যার সমাধানের ব্যাপারে পাকিস্তানের একতরফা ব্যবস্থা দ্বারা আকাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া যাবে না। তিনি প্রিন্স সদরুদ্দিনকে আরো বলেছেন যে, উদ্বাস্তুদের প্রত্যাবর্তনের ব্যাপারে ভারত বাধা দিচ্ছে। ভারত সহযোগিতা না করলে এই স্মস্যার সন্তোষজনক সমাধানের জন্য দীর্ঘদিন লাগতে পারে।
জনাব সুলতান মোহাম্মদ খান বলেন যে, পূর্ব পাকিস্তানে প্রিন্স সদরুদ্দিনের প্রতিনিধি মিঃ কেলী প্রদেশের সীমান্ত বরাবর বহু স্থান পরিদর্শন করেছেন এবং এখন কিছুটা যাচাই করতে সক্ষম হয়েছেন।
জনাব খান বলেন যে, প্রয়োজন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনার জন্য তিনি ইসলামাবাদের কয়েকদিনের মধ্যেই কেলীর সঙ্গে আলোচনা করবেন।
বিদেশে অবস্থানকালে সুইজারল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, কলকাতায় পাকিস্তানী ডেপুটি হাই কমিশনের কর্মচারীদের দেশে প্রত্যাবর্তনের ব্যাবস্থা করার গঠনমূলক ভূমিকা গ্রহনের জন্য তিনি সুইজারল্যান্ড সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
পররাষ্ট্র সেক্রেটারী বলেন যে, প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া কর্তৃক এ পর্যন্ত গৃহীত রাজনৈতিক কর্মচারী এবং উদ্বাস্তুদের প্রত্যাবর্তন ও পুনর্বাসনের জন্য গৃহীত ব্যবস্থাবলীও তিনি সুইজারল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রীকে অবহিত করেছেন।
তিনি বলেন, সুইজারল্যান্ডের সরকার পাকিস্তানের প্রতি সহানুভূতিশীল বলে মনে হয়। তারা সম্ভবতঃ আমাদের সমস্যাবলী বুঝতে পারছেন।
ইরান সফর সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে পররাষ্ট্র সেক্রেটারী বলেন যে, পাকিস্তান ও ইরানের পারস্পারিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় তিনি আলোচনা করেছেন।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া ইরানী শাহানশাহের কাছে যে বাণী পাঠিয়েছিলেন সে সম্পর্কে শাহানশাহের জবাব ইতিমধ্যেই প্রেসিডেন্টকে অবহিত করেছেন।
আর সি ডি রাষ্ট্র প্রধানদের সম্মেলন সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, তিনটি রাষ্ট্রের মধ্যে বৈঠকের পর চুড়ান্ত তারিখ ঠিক করা হবে।
তেহরান ও জেনেভায় পাকিস্তানী দূতদের আঞ্চলিক বৈঠক সম্পর্কে তিনি বলেন, মতামত বিনিময় করাই এই সকল সফরের উদ্দেশ্য।
তেহরানের বৈঠকে মধ্যপ্রাচ্য ও পুর্ব আফ্রিকায় নিযুক্ত দূতগণ তেহরান বৈঠকে এবং ইউরোপ, পশ্চিম আফ্রিকা ও আমেরিকায় নিযুক্ত দূতগন জেনেভা বৈঠকে যোগদান করেন। নয়াদিল্লী ও পিকিংয়ে নিযুক্ত দূতগন জেনেভা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
ইরাকে নিযুক্ত পাকিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রদূত জনাব আবুল ফাতেহ- এর বিরুদ্ধে বহিষ্কারমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন এ ব্যাপারে আমরা ইতিমধ্যেই কতিপয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। জনাব আবুল ফাতেহ পাকিস্তানের প্রতি আনুগত্য ত্যাগ করে বৃটেন চলে গেছেন।
পররাষ্ট্র সেক্রেটারী বলেন যে, জনাব ফাতেহ দূতাবাসের অর্থ আত্মসাত করেছেন। রাজনৈতিক অপেক্ষা আর্থিক কারণই তার পলায়নের উদ্দেশ্য।
নয়াদিল্লীতে নিযুক্ত পাকিস্তানী হাই কমিশনার জনাব সাজ্জাদ হায়দারও পররাষ্ট্র সেক্রেটারীর সঙ্গে এখানে আগমন করেন।

—————————– 

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!