You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.08.13 | দিল্লী-মস্কো চুক্তির মর্মার্থ ও যুক্ত বিবৃতি পরীক্ষা করা হচ্ছে: সরকারী মুখপাত্রের ঘোষনা | দৈনিক পাকিস্তান - সংগ্রামের নোটবুক

শিরোনামঃ দিল্লী-মস্কো চুক্তির মর্মার্থ ও যুক্ত বিবৃতি পরীক্ষা করা হচ্ছে: সরকারী মুখপাত্রের ঘোষনা
সূত্রঃ দৈনিক পাকিস্তান
তারিখঃ ১৩ আগষ্ট, ১৯৭১

দিল্লী-মস্কো চুক্তির মর্মার্থ ও যুক্ত বিবৃতি পরীক্ষা করা হচ্ছে: সরকারী মুখপাত্রের ঘোষনা
ইশতেহারে রাজনৈতিক সমাধানের উল্লেখ অপ্রয়োজনীয়।
অকারণ উপদেশ
ইসলামাবাদ, ১২ আগষ্ট (এ পি পি)।–পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দফতর ভারত সোভিয়েত প্রতিরক্ষা চুক্তির মর্মার্থ এবং ভারতীয় নেতাদের সাথে সোভিয়েত পররাষ্ট্র মন্ত্রী গ্রোমিকোর আলোচনা শেষে প্রকাশিত ইশতেহার পরীক্ষা করে দেখছেন। আজ একজন সরকারী মুখপাত্র বলেন, আমরা এসব দলিল পরীক্ষা করে দেখছি। ভারত-সোভিয়েত যুক্ত ইশতেহারে পূর্ব পাকিস্তানে একটি রাজনৈতিক সমাধানের যে কথা বলা হয়েছে সে সম্পর্কে তার অভিমত জানতে চাওয়া হলে মুখপাত্রটি বলেন, এটা হলো অপ্রয়োজনীয় ও অকারণ উপদেশ।পাকিস্তানের কেউই পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক সমস্যার সামরিক সমাধান চায়নি বা চাচ্ছে না।

প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান এর মধ্যেই একটি রাজনৈতিক কর্মসূচী ঘোষনা করেছেন যা বাস্তবায়িত হচ্ছে। মুখপাত্র বলেন, যে বিচ্ছিন্নবাদীরা ভারতের উৎসাহ এবং সক্রিয় সাহায্য নিয়ে পাকিস্তানকে খন্ডবিখন্ড করার পরিকল্পনা করছে পাকিস্তান সরকার তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। পাকিস্তানের অধিকাংশ মানুষ সব সময়েই পাকিস্তানের ঐক্য ও অখন্ডতা চেয়েছে এবং এখনো তাই চাচ্ছে।
তিনি অবশ্য একথা স্পষ্ট করেই বলেছেন যে, ভারতীয় চর ও অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেননা পূর্ব পাকিস্তানের শান্তিপূর্ণ অবস্থার ব্যাঘাত সৃষ্টি করাই তাদের লক্ষ্য। এটা পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। পাকিস্তান কিভাবে বিদ্রোহীদের দমন করবে কিংবা আইন-শৃংখলা রক্ষা করবে সে ব্যাপারে পাকিস্তানকে উপদেশ দেওয়ার অধিকার কারো নেই।
মুখপাত্রটি বলেন, তার মনমত একটি সমাধান পাকিস্তানের উপর চাপিয়ে দেওয়ার জন্য ভারতই সামরিক শক্তি ব্যবহারের চেষ্টা করছে। ভারত সরকার এবং এর নেতারা স্বীকার করছেন যে, পাকিস্তানকে খন্ডিত করার জন্য বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনকে সম্ভাব্য সব রকম সাহায্যে দেওয়া হচ্ছে। ভারত নানা সুবিধা দিয়ে গেরিলাদের পূর্ব পাকিস্তানী উদ্বাস্ত্তদের জন্য সাহায্যের নামে ভারত অন্যান্য দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করেছে সেই অর্থ বিচ্ছিন্নবাদী আন্দোলনের প্রচার ও সাহয্যে অকাতরে বিলানো হচ্ছে।
মুখপাত্রটি আরো বলেন, কাজেই পূর্ব পাকিস্তান সংকটের সামরিক সমাধান এড়ানোর যে উপদেশ ভারত আমাদের দিচ্ছে তা প্রকৃতপক্ষে ভারতের বেলাতেই প্রযোজ্য।
জাতীয় রাজনৈতিক নেতারা জোরের সাথে ভারত-সোভিয়েত চুক্তির নিন্দা করছে। পিপলস পার্টি প্রধান বুট্টো, কাউন্সিল লীগ প্রধান মিয়া মমতাজ দৌলতানা, জামাতে ইসলামীর আমীর মওলানা মওদুদী এই চুক্তির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেছেন, এই চুক্তি পাকিস্তানের বিরুদ্ধেই পরিচালিত।