You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.11.17 | বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সভাপতি নূরে আলম সিদ্দীকির বক্তব্য | বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ - সংগ্রামের নোটবুক
শিরোনাম সূত্র তারিখ
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সভাপতি নূরে আলম সিদ্দীকির বক্তব্য বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ১৭ নভেম্বর, ১৯৭১

স্বাধীনতার অগ্নিমন্ত্রে শুচিশুদ্ধ অনির্বাণ মুক্তিবাহিনী, অকুতোভয় ছাত্র-শ্রমিক ও আমার সংগ্রামী অভিভাবকমন্ডলী।

বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদের মহানায়ক মুক্তিপাগল জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর মহান আদর্শে উজ্জীবিত, তার অবিস্মরণীয় প্রেরণায় অনুপ্রাণিত ও তাঁর অমোফহ নির্দেশ পরিচালিত স্বাধীনতা সংগ্রামের ৭ মাস অতিক্রান্ত হয়েছে। এই সংগ্রামের প্রারম্ভ বাংলার নৃশংস আক্রমণের মুখে এক দুর্ভেদ্য প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তুলেছিল। হত্যা, ব্যাভিচার, নৃশংসতা ও পাশবিকতার কাছে বাংলার গণদেবতা মাথা নত করে নাই, আর তাই, আমাদের আন্দোলন ক্রমে ক্রমে প্রতিরোধের মোহনা হতে প্রতিঘাতের প্রচণ্ড উন্মাত্ততায় মোড় নেয়। বাংলার প্রতিটি তরুণ বঙ্গবন্ধুর মহান আদর্শকে সামনে রেহে মায়ের কোল ছেড়ে বেড়িয়ে আসে বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে। তাঁরা সামরিক শিক্ষা নিতে থাকে শত্রুর বিষদাঁতগুলো উপড়ে ফেলা আর জননী বাংলাকে মুক্ত করার দৃপাত মানসে। তাই আজ আমরা দেখতে পাই, ২৪ ঘন্টায় বাংলাকে পর্যদুস্ত করার দুঃস্বপ্ন তাদের ভেঙ্গে চৌচির হয়ে গেছে, আমরা দেখতে পাই সূর্যসেনাদের তীক্ষ্ম আঘাতের বিপর্যস্ত পশ্চিমা পশুদের শায়িত লাশের স্তুপ। ঐক্যবদ্ধ বাঙ্গালীর সংগ্রামের ফলে শুধু পশ্চিমা ষড়যন্ত্রের প্রাসাদ প্রকম্পিত হয়ে উঠে নাই, সারাবিশ্ব বুঝতে পেরেছে যে, বাঙ্গালী নিঃস্ব নয়। বাঙ্গালীরা পরাধীনতা মানে না।

আজ সারা বাংলার একটি পথ- সে পথ মুক্তির, সে পথ স্বাধীনতার। তাই মৃত্যুর ভ্রুকুটি নির্যাতনের খড়গাঘাত আমাদেরকে বিপর্যস্ত করতে পারেনি; বরং শত্রুর পাশবিকতা শত্রু হননের প্রতিহিংসায় আমাদের প্রজ্জ্বলিত করেছে। বাংলার মাটি আজ অপরাজেয়, বাঙ্গালীর প্রতিটি ঘর দুর্ভেদ্য দুর্গ। সমঝোতার প্রলোভন তাদের কাছে প্রহসন ছাড়া কিছুই নয়। আন্দোলনের অনির্বাণ আদর্শ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব, আর আন্দোলনের সম্পূর্ণ পরিচালনার দ্বায়িত্ব আওয়ামী লীগের। বাংলার সংগ্রামী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে গণম্যান্ডেন্টকে উপেক্ষা করার ঔদ্ধত্যের চ্যালেঞ্জ করে যখন স্বাধীনতার উদাত্ত আহবান ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ জানায়, তখন তাঁরা বঙ্গবন্ধুকে মহান জাতির নেতা হিসেবে সামনে রেখেই এ আন্দোলনের ডাক দিয়েছিল এবং দালাল ছাড়া বাংলার প্রতিটি মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে এ আন্দোলনের পাশে সে দাঁড়িয়েছিল দলমত নির্বিশেষে। আজ স্বাধীনতা আন্দোলনের ৭ মাস অতিক্রান্ত হয়েছে। বাংলাদেশের মাটিতে মুখচেনা দালাল, ডাস্টবিনের আবর্জনাকে তুলে এনে বিশ্বকে যখন বিভ্রান্ত করার প্রচেষ্টা করা হচ্ছে, তখন বাংলার প্রতিটি প্রগতিশীল মহলের সম্মিলিত পতাকার নিচে দাঁড়িয়ে এ দূরভিসন্ধির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা উচিত। বিশ্বের মানুষ জানে বাংলার প্রগতিশীল রাজনৈতিক মহল দ্বিধাহীনচিত্তে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আস্থা প্রকাশ করে এবং গণপ্রজাতান্ত্রিক বাংলাদেশ সরকারকে সমর্থন জানিয়ে অনুতোভয় সে চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করেছেন। এছাড়া আমি গর্বিত এবং আনন্দিত বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন আমাদের সাথে এক যুক্ত বিবৃতিত মাধ্যমে বাঙ্গালী জাতির মহান্যক বঙ্গবন্ধুর আদর্শে, অনুপ্রেরণায় ও নির্দেশে পরিচালিত স্বাধীনতা সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ মুক্তি আন্দোলনের আহবান জানিয়েছে। তাঁরা সর্বক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের প্রশাসন গড়ে তোলার দ্বিধাহীন ডাক দিয়ে বিশ্বকে পুনর্বার জানিয়ে দিলেন সমস্ত প্ররোচনার মুখে বাঙ্গালী জাতি এক ও অভিন্ন। স্বাধীনতার প্রশ্নে তাঁরা হিমাচলের মত অটল। আসুন, আমরা রাত্রির বৃন্ত হতে ছিঁড়ে আনি ফুটন্ত সকাল।

সংগ্রামী ভাইয়েরা, দখলকৃত বাংলায় সম্প্রতি উপ-নির্বাচনের নামে বিশ্বে প্রচন্ডতম হাস্যকর প্রহসন সৃষ্টি করা হয়েছে। ২৪ বছরের ইতিহাসে যাদের কুষ্ঠরোগীর মত দালালীর ক্ষতচিহ্নে ভরা, গত নির্বাচনে ঐকবদ্ধ গণচেতনার ভরে যারা রণভঙ্গ দিয়ে বিবি সাহেবের আঁচলের তলায় আশ্রয় নিয়েছিলো, এমন কি বিশ্বাসঘাতক সবুর ও নির্লজ্জ ফ-কা চৌধুরীর মত যারা তওবা করে ক্ষমা ভিক্ষা করে বিবৃতি দিয়ে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আস্থা স্থাপন করেছিলো- তাদের মত প্রায় ৬৭ জন দালালকে বিনাপ্রতিদ্বন্দিত্তায় নির্বাচিত ঘোষণার স্পর্ধা দেখিয়েছে বিশ্বাসঘাতক জালেম। আমরা জানি জালেম প্রায় সব জায়গায় নির্বাচন এড়িয়ে গেছে। কারণ কালবৈশাখীর ঝড়ের প্রচন্ডতায় বিক্ষুদ্ধ বাংলাকে সে চিনেছে। সে জানত নির্বাচনের ঝুঁকি নেওয়ার শক্তি আর দুঃসাহস তাঁর নাই, তবুও স্বাধীন সার্বভৌম বাংলায় নাক গলিয়ে যে অপরাধ ইয়াহিয়া করেছে তাঁর প্রতিশোধ হিটলারের দোসব আইকম্যানের মৃদ্যুদন্ডের মতই নেওয়া হবে। আমরা নিঃসংশয় রণাঙ্গনের বুলেট এ প্রশ্নের উত্তর দেব।

গণতন্ত্রমনা বাঙ্গালীর হৃদয়ের ঔদার্যকে এরা কাপুরুষতা ভেবেছিল। গত নির্বাচনের পর প্রচণ্ড গণবিস্ফোরণের মুখে এদের পিষে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে আমরা পারতাম। এদের জন্য বাংলার আলো-বাতাস-মাটি আজ হারাম। আজ এদের জন্য কোন মায়া নাই, মমতা নাই, দয়া-দক্ষিণ্য নাই, ক্ষমা নাই। আজ এদের একমাত্র প্রাপ্য হল মৃত্যু। মোনেম আর মোএম ঘোষিত এমপিএ আমির হোসেনের পথ ধরেই এদেরকে বাংলার বুক হতে বিদায় নিতে হবে। মাটির বুকেও যদি এরা লুকাতে চায়, মাটি খুঁড়ে এদের বের করে টুকরো টুকরো করে কেটে গাঁয়ে লবণ ছিটিয়ে উন্মুক্ত স্থানে টাঙ্গিয়ে রাখতে হবে। ভবিষ্যতে প্রতিটি দালাল যেন এদের পরিণতির দৃষ্টান্ত দেখে শিউরে কেঁপে ওঠে।

সংগামী ভাইয়েরা আমার,
যেখানে যখন যে অবস্থায় এদের পাওয়া যাবে, মৃত্যুই এদের পাওনা। এদেরকে করায়-গন্ডায় পাওনা বুঝিয়ে দিতে হবে। আমাদের ধারণা, ভারতের বিরুদ্ধে এরা যুদ্ধের পাঁয়তারা করছে, এর দাঁতভাঙ্গা জবাব দেয়ার জন্য আপনারা প্রস্তুত হোন।

সংগ্রামী ভাই-বোনেরা আমার, আপনারা নিশ্চয়ই উপলব্ধি করেছেন, আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম যতই তীব্রতর হচ্ছে বিশ্ববিবেক আজ ততি স্পষ্ট আমাদের সপক্ষে। বিশ্বের পথে-প্রান্তরে আজ স্বাধীনতার সপক্ষে অশান্ত মিছিল। গণতন্ত্রের পাদপীঠ আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী ভারত প্রথম হতেই সাড়ে সাত কোটি মানুষের পক্ষে কার হৃদয়মথিত সহানুভূতির উজার করে দিয়েছ। আমি আনন্দিত রাশিয়াও আমাদের সমর্থনে এগিয়ে এসেছে। কিন্তু সংগ্রামী বাংলা এখন মুক্তির সুতীক্ষ্ম আকাংক্ষায় উদগ্রীব। সারা বাংলা এখন প্রচণ্ড শক্তিতে শত্রকে আঘাত হানছে। আর বিশ্ববিবেক যখন চিৎকার করে বলছে বিচারের বাণী নিরবে-নিভৃতে কাঁদতে দেব না, তখন আন্তর্জাতিক রাজনীতির চোরাগলিতে সমঝোতায় কানাঘুষা আমাদের কানে আসছে। আমরা এই ব্যর্থ প্রয়াসে কেবল মর্মাহতই নই, বিস্ময়াভিভূতও হয়েছি। মানবতার আর্তনাদ তাদের কর্ণকুহরে পৌঁছে না, অসহায় মানুষের আকুতি এদের হৃদয়কে নাড়া দেয় না। বাৎকে বাৎ এরা গণতন্ত্রের কথা বলে, কিন্তু গণতন্ত্রের অমোঘ মন্ত্র এদেরকে আকর্ষণ করে নেই, আর তাই ক্ষমতার সতরঞ্জে এরা ষড়যন্ত্রের গুটি চেলে বাজিমাৎ করতে চান। বিশ্ববিবেকের কণ্ঠস্বর হয়ে দৃঢ়চিত্তে সত্যের প্রতিধ্বনি করার কথা ছিল- রাহুচক্রে তিনিও আজ দিশেহারা হয়ে ঘুরপাক খাচ্ছেন, নইলে সেলসবারীতে ২৫ জন শ্বেতাঙ্গ হত্যা করার জন্যে যখন জাতিসংঘে মানবতা রক্ষা দিবস পালন করা হয়, তখন পৃথিবীর জঘন্যতম নৃশংসতা, জঘন্যতম পাশবিকতা, ১০ লক্ষ মানুষ হত্যার পরও তাঁরা স্পন্দনহীন নির্বিকার থাকেন কেমন করে। ভাবতে আমি অবাক হয়ে যাই বিশ্বের নির্মমতম নৃশংসতার পরও সমঝোতা, কবরের শান্তি আর ধৈর্য ধারণের স্তূতিবাক্য আওড়ান তাঁরা কোন লজ্জার মাথা খেয়ে। শক্তির প্রচন্ড দাম্ভিকতায় উন্মাদ বলেই কোরিয়া, আলজেরিয়া, কিউবার ইতিহাস এদের চক্ষুকে উন্মোচিত করে নাই। এই সব মূক, ম্লান, বধির শক্তিবর্গকে আমরা নিঃসংশয়চিত্তে জানিয়ে দিতে চাই, এবার আমরা শেষ সমঝোতার জন্যই বৈঠকে বসেছি, তবে সে বৈঠক আন্তর্জাতিক প্রাসাদ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত দরবার কক্ষের গোলটেবিলে ঘিরে বসে নাই, বসেছি জননী বাংলার চতুস্পার্শেবর রণাঙ্গনের ট্রেঞ্চে- সে বৈঠকের আলোচনা চালাচ্ছে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত সূর্যসেনা মুক্তিবাহিনীর নির্ভীক সেনানীরা। সে বৈঠকের ভাষা স্বার্থের রাজনীতির পরিভাষায় অনুলিপি নয়- তার ভাষা হল ব্যারেলের অগ্নিবর্ষী বুলেট। সে বৈঠকে সমঝোতা বা আপোষ-মীমাংসা হবে না- স্বাধীনতার চূড়ান্ত সনড লিখিত হবে। আর সে সনদ আমরা কলমের কালো কালিতে লিখতে চাই না, লিখব শত্রুর বুকের তাজা লাল টকটকে উত্তপ্ত রক্তে। আপনারা শুনে রাখুন, শত্রুর রক্ত নিক্তিতে মেপে আমরা পাওনা বুঝে নিতেই বৈঠকে বসেছি। এখানে রাজনৈতিক সওদাগরী ব্যররথতার বেলাভূমিতে গুমরে মরবে।

আজও অসত্যের বুকে বিদীর্ণ করে সত্যের উদ্ভাসিত আলোকরশ্মি যেসব উপনিবেশবাদী শক্তি অবলোকন করতে পারেননি, শোষণ ও অবিচারকে যারা প্রতিবাদ করতে পারেননি, আজও দশ লক্ষ শহীদের আর্তনাদ যারা শোনেননি, সেইসব শক্তির প্রতিভূকে আমি একটিবার জিজ্ঞাস করতে চাই- এই শোষণের কষাঘাতে জর্জরিত হয়ে নিজের দেশ হইতে হিজরত করে আপনাদের জাতির কি জন্ম হয় নি?
বৃহৎ শক্তির প্রতিভূ আপনাকে একটি বার জিজ্ঞাস করতে চাই- দশ লক্ষ মানুষের মৃত্যু নয়, একটিবার আপনার সামনে যদি আমার জওয়ান ছেলেকে বুলেটের নির্মম আঘাতে শত্রুরা খুন করত। একটিবার আপনার চোখের সামনে আপনার অশীতিপর বৃদ্ধের বুক, বেয়নেটের খোঁচায় চৌচির করে দিত, যদি একটিবারের জন্য আপনার চোখের সামনে আপনার মেয়েকে সম্পূর্ণ উলঙ্গ করে পাশবিক অত্যাচার করত, যদি আপনার সম্মুখে আপনার গর্ভবতী স্ত্রীর পেট চিরে তার গর্ভজাত সন্তানকে বেয়নেটের খোঁচায় বের করত, যদি আপনার বোনের কোল হতে তার তিন মাসের কচি শিশুলে কেড়ে নিয়ে তার সম্মুখেই টুকরো টুকরো করে খুন করত, যদি আপনার ঘর পুড়িয়ে ঘরছাড়া করে জোর করে পরের দেশে পরবাসী করত- তবে আপনি কি প্রতিহিংসার আগুনে জ্বলে উঠতেন না? আপনি মি ঐ জালেম জল্লাদের কবল হতে মুক্তি চাইতেন না? আপনার স্ত্রীর অঝোরে কেঁদে বলত কিনা- ওগো এর প্রতিশোধ চাই। স্বজন হারানো শ্মশানে ওদের চিতা জ্বালাতে আপনি কি একটিবার চাইতেন না? শিশুর মৃত্যুকান্না ভেদ করে সমঝোতার সস্তা স্তূতিবাক্য কি আপনাকে সান্ত্বনা দিতে পারত? নিশ্চুপ কেন? উত্তর দিন। আপনি কি পারতেন শত্রুর রক্তে না রাঙিয়ে আপনার নিষ্পাপ সতীত্বহারা মেয়ের সামনে পিতৃত্বের অধিকার নিয়ে দাঁড়াতে। বৃহৎশক্তির প্রতিভূ! আপনি যদি না পারেন তবে আমাদের পারতে বলবেন কোন লজ্জায়? কোন স্বার্থের তাগিদে? আজ আমি বিশ্বের উপনিবেশবাদী শক্তিসমূহের কাছে পরিষ্কার জানিয়ে দিতে চাই- আমরা আজ কেবল স্বাধীনতার জন্য লড়ছি না, লড়ছি মায়ের অশ্রু, পিতার আর্তনাদ, ভায়ের রক্ত, শিশুরকান্না, বোনের সতীত্ব হননের প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য- লড়ছি শত্রুর রক্ত নিক্তিতে মেপে সব পাওনা বুঝে নেয়ার জন্য। এ যুদ্ধ সমঝোতার নয়, এ যুদ্ধ স্বাধীনতার। এ অস্ত্র কেবল বুলেটেই নয়, ন্যায় ও সত্যের মহান আদর্শ এর সঞ্জীবনী শক্তি। এর সেনা কেবল রণাঙ্গনে যোদ্ধারাই নয়, বাংলার সাড়ে সাত কোটি মানুষ।

আমি জানি, শক্তির দাম্ভিকতা যত প্রচন্ড হোক না কেন তারপরাজয় অবশ্যম্ভাবী। নইলে গত বিশ্বযুদ্ধে হিটলার পরাজিত হত না, মুসোলিনী হার মানত না। কোরিয়া, আলজেরিয়া, কিউবা মুক্ত হত না। সর্বশেষ দৃষ্টান্ত আজকের চীন। আজ চীনের যে বিজয় তা পারমানবিক শক্তির বিজয় নয়, সর্বহারা মানুষের বিজয়। তাই চীন স্বস্তি পরিষদে সর্বহারা ও স্বাধীনতাকামী মানুষেরর সমর্থনে এগিয়ে আসবে আমরা আশা করি।

ইতিহাস তুমি সাক্ষী রবে সাড়ে সাত কোটি মানুষের এই ন্যায়, সত্য ও স্বাধীনতার সংগ্রাম ব্যর্থ হবে না- হতে পারে না। ইনশাল্লাহ আমরা বিজয়ী হবই।