শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
সাংগঠনিক বিষয় ও বিভিন্ন এলাকার সমস্যা অবগত করার আহবান জানিয়ে মওলানা ভাসানীর লিফলেট | আওয়ামী মুসলীম লীগ | এপ্রিল, ১৯৫৪ |
জেলা, মহকুমা, থানা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কর্মকর্তাদের নিকট
জরুরী আবেদন
জেলা, মহকুমা, থানা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কৰ্ম্মকর্তাবৃন্দ তাহদের নিজ নিজ এলাকার নিম্নোক্ত তথ্যসমূহ আওয়ামী লীগের ৫৬, সিম্পসন রোড, সদরঘাট, ঢাকা, কেন্দ্রীয় অফিসে অগৌণে প্রেরণ করিবেন। লক্ষ রাখিতে হইবে যে, এই সমস্ত তথ্য যেন ভুল সংবাদের উপর ভিত্তি করিয়া প্রেরিত না হয়।
১। নিজ নিজ এলাকার থানাম সাব-রেজিষ্ট্র অফিস, ফরেষ্ট অফিস, কৃষি অফিস, সেনেটারী অফিস, পাটের লাইসেন্স অফিস, ফিশারী অফিস, ভেটেরিনারী চিকিৎসালয়, ডিষ্ট্রিক্ট বোর্ড বা গভর্ণমেন্ট চিকিৎসালয় ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানসমূহ বৰ্ত্তমানে কিরূপ দুনীতি চলিতেছে তাহা বিস্তৃত রিপোর্ট।
২। যে সমস্ত জমিদারী সরকার নিজ দখলে লইয়াছেন তাহাতে প্রজাদের বকেয়া খাজানার দরুন এখনও সার্টিফিকেট হইতেছে কিনা- হইয়া থাকিলে কোন গ্রামে কত নম্বর হইয়াছে- কৃষি লোন আদায়ের নামে কোন জুলুম হইতেছে কি না- জমিদারী বহাল থাকা অবস্থায়ই প্রজাদের উপর অত্যাচার বেশি হইত- না সরকারী আমলেই বেশী অত্যাচার হইতেছে, জমিদারী আমলে খাজানার সুদ আদায় হইত- কি বৰ্ত্তমানে আদায় হয় ইত্যাদি তথ্য সম্বলিত রিপোর্ট।
৩। হিন্দু-মুসলমান, মাঝি, মাইমন, ডাইটা বা তাঁতী, মাছ ধরার জাল অথবা কাপড় বুনাইবার জন্য সূতা পায় কি না, সূতার ডিলার অথবা পাইকারগণ কালোবাজারী করে কি না তাহার রিপোর্ট।
৪। বৰ্ত্তমান বৎসরের শুরু হইতে স্কুল, কলেজ অথবা মাদ্রাসার ছাত্রগণ অর্থের অভাবে পড়াশুনা ছাড়িতে বাধ্য হইয়াছে কিনা অথবা হইলেও তাহদের সংখ্যা কিরূপ তাহার উল্লেখপূবর্বক বিস্তারিত রিপোর্ট।
৫। যুক্তফ্রন্টের নব-নির্বাচিত পরিষদ সদস্যগণ নিজ নিজ নিবৰ্বাচনী এলাকাসমূহে পাকভারত ভিসা ও পাসপোর্ট সিষ্টেম বহাল থাকা অবস্থায় ও কি প্রকারে কি কি জিনিষ সীমান্তে অপর পারে চালান করিতেছে এবং কি কি জিনিষ আমদানী করিতেছে তাহার বিস্তারিত তথ্য।
৬। যুক্তফ্রন্টের নব-নির্বাচিত পরিষদ সদস্যগণ নিজ নিজ নিবর্বাচনী এলাকা পরিভ্রমণ করিয়া স্থানীয় অভাবঅভিযোগসমূহের নিরসনকল্পে কোন প্রকার সক্রিয় ব্যবস্থা অবলম্বন করিতেছে কিন্তু অথবা এ সম্পর্কে তাহারা ওয়াকিফহাল আছেন কিনা তাহার রিপোর্ট।
৭। সরকার নিয়ন্ত্রিত মূল্যে বস্ত্র বিতরণ করা হইতেছে কিনা অথবা নিয়ন্ত্রিত মূল্যে বস্ত্র বিতরণের কোন সরকারী দোকানে কোন প্রকার কালোবাজারী চলিতেছে কিনা তাহার রিপোর্ট।
৮। নারিকেল তৈল, হন্দী, মরিচ ও অন্যান্য মশলা, কাগজ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় অন্যান্য দ্রব্যের বর্তমান মূল্য কত এবং ধান পাট ও অন্যান্য কৃষিজাত অর্থকরী ফসলের বর্তমানে কি মূল্য এবং কোথাও এই সাবের অত্যাধিক মূল্য হ্রাস ঘটিবার ফলে চাষীদের ক্রয়ক্ষমতা কি পরিমাণে কমিয়াছে এবং ইহাতে তাহদের কি কি সঙ্কটের সম্মুখীন হইতে হইয়াছে তাহার রিপোর্ট।
৯। স্থানীয় সরকারী ও বেসরকারী অফিসসমূহে ব্যাপক ছাঁটাই নীতি কার্যকরী করা হইয়াছে কি না, কোন অফিসে কি পরিমাণ কৰ্ম্মচারী ছাঁটাই হইয়াছে এবং কর্মচ্যুত সেই সব কৰ্ম্মচারীরা বৰ্ত্তমানে কি অবস্থায় কালাতিপাত করিতেছে তাহার রিপোর্ট।
১০। রাস্তা-ঘাট, রেললাইন ও যুদ্ধের ঘাঁটির জন্য কি পরিমাণ জমি সরকার লইয়াছিলেন এবং সেই সব জমির জন্য সরকার কোন ক্ষতিপূরণ দিয়াছেন কি না তাহার হিসাব।
১১। বাত্যাবিধ্বস্ত এলাকার স্কুল, মাদ্রাসা, মসজিদ, মন্দির ইত্যাদি সম্বন্ধে বিস্তারিত তথ্য।
১২। যে সমস্ত কৃষক, যুক্তফ্রন্ট সরকার পাটের লাইসেন্স ফি মওকুফ করার পূবেৰ্বই লাইসেন্স ফি দিয়াছেন তাহদের নাম ও দেয় ট্যাক্সের পরিমাণ সংক্রান্ত তথ্যসমূহ।
১৩। পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, বিহার, প্রভৃতি স্থান হইতে দুদর্শাগ্রস্ত আগত মহাজেরদের সংখ্যা এবং তাহদের বৰ্ত্তমান অবস্থা, পুনর্বসতি ও রোজী-রোজগারের ব্যবস্থার জন্য এ পর্যন্ত সরকার কি কি করিয়াছেন।
১৪। প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষকগণ স্কুল বোর্ড হইতে নিয়মিত ভাবে বেতন পান কি না। না পাইয়া থাকিলে কতদিন হইতে পান না এবং কাহার কত টাকা বাকী।
১৫। কোন কোন স্থানে কি পরিমাণ রাজনৈতিক কৰ্ম্মী এখনও আটক এবং অন্তরীণ আছে তাহদের নামের তালিকা এবং কৰ্ম্মীদের উপর নিবর্বাচনকালীন ফৌজদারী মামলার পূর্ণ বিবরণ।
-মোঃ আব্দুল হামিদ খান (ভাসানী)
———-