শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে অধ্যাপক মোজাফফার আহমেদের বিবৃতি | ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি | ২০শে এপ্রিল ১৯৭১ |
২০শে এপ্রিল ১৯৭১ সালে, বাংলাদেশ জাতীয় আওয়ামী পার্টির সভাপতি, অধ্যাপক মুজাফফার আহমেদ কতৃর্ক জারিকৃত সংবাদ বিবৃতি-
আমরা অত্যন্ত আনন্দের সাথে গণপ্রজাতন্ত্রী অধ্যাপক মুজাফফার আহমেদ সার্বভৌম সরকার প্রধান হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমানকে নামেমাত্র ঘোষণা করতেছি। আমরা আরো বাংলার মুক্তি সেনাদের (মুক্তি ফৌজ) দৃঢ় প্রচেষ্টা এবং পাকিস্তান হানাদার বাহিনীদের আমাদের মাতৃভূমির পবিত্র মাটি থেকে বিতাড়িত করার দুঃসাহসী সংগ্রামকে অভিবাদন জানায়। আমরা স্পষ্টভাবে ঘোষণা করছি যে, শুধুমাত্র শেখ মুজিবর রহমানের নেতৃত্বে আইনগতভাবে বাংলাদেশ সরকার গঠন করা হয়। আর সকল গণতান্ত্রিক এবং প্রগতিশীল জাতির প্রতি সদ্য জন্মানো রাষ্ট্র ও এর সরকারকে স্বীকৃতি এবং সকল প্রকার সাহায্য ও নৈতিক সমর্থন প্রদানের আহ্বান জানায়। এ প্রসংগে, আমরা কৃতজ্ঞচিত্তে বিশ্বের সকল শান্তিপ্রিয় এবং গণতান্ত্রিক মানুষের কাছ থেকে সহানুভূতি প্রাপ্তিস্বীকার করা আমাদের কর্তব্য বলে বিশ্বাস করি, বিশেষত ভারত ও সোভিয়েত ইউনিউনের সরকার ও জনগণ কতৃর্ক প্রদত্ত সমর্থন ও সহযোগিতা।
মানবতার নামে, সভ্যতার মতবাদ ও বিবেক দিয়ে আমরা তীব্রভাবে বিশ্বের সকল গণতান্ত্রিক এবং প্রগতিশীল জাতির প্রতি এবং জাতিসংঘের কাছে আবেদন জানায়, বাংলাদেশের হাজার হাজার নিরস্ত্র পুরুষ, নারী ও শিশুর উপর সংঘটিত গণহত্যা রোধে অবিলম্বে পদক্ষেপ কার্যকরী করার।
এখনকার প্রধানতম কাজ হল স্বাধীনতা সংগ্রাম পরিচালনা এবং একে বয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য গণতান্ত্রিক দলের যুক্তফ্রন্ট ও সেনাদের একটি বোর্ড গঠন করা। আওয়ামী লীগের নেতা এবং বাংলাদেশ সরকারকে আমরা এ নিয়ে তাগদা দিচ্ছি।
আমরা বাংলাদেশের সকল ছেলে ও মেয়েদের উদাত্ত আহ্বান জানায়, বিজয় না হওয়া পর্যন্ত নব প্রাণশক্তি এবং সংকল্প নিয়ে তাদের সশস্ত্র সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার। এই সংগ্রামে নিহত দশ হাজার শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সন্মান জানিয়ে আমরা দৃঢ়ভাবে ঘোষণা করছি যে, শহীদদের রক্ত বৃথা যেতে দিবনা এবং সংগ্রামে জনতার জয় হবেই। পাকিস্তানি সামরিক জান্তার সাম্প্রদায়িক সহিংসতা এবং বর্বরোচিত গণহত্যার বিচার বাংলাদেশের ৭৫ লক্ষ মানুষ নির্ধারণ করবে। বিজয় আমাদের হবেই।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের স্বাধীন জনগণ চিরজীবী হোউক।