You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.11.22 | বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদিত প্রতিনিধিদের একটি তালিকা |  পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় - সংগ্রামের নোটবুক
                   শিরোনাম                    সূত্র             তারিখ
বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদিত প্রতিনিধিদের একটি তালিকা  পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২২ নভেম্বর, ১৯৭১

পররাষ্ট্র দফতর

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার

মুজিবনগর

গোপনীয়

নং.বি-৩/১৬/৭১                                                             ২২ নভেম্বর ২২,১৯৭১.

বিজ্ঞপ্তি

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের তথ্য এবং নির্দেশনার জন্য পূর্ণ ঠিকানা সহ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পদস্থ প্রতিনিধিদের একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।

(আনোয়ারুল করিম চৌধুরী)

বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা.

বিতরনঃ

১.বর্হিবিশ্বে বাংলাদেশের সকল মিশনে।

২.গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার,মুজিবনগর এর ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি এবং ক্যাবিনেট মন্ত্রীদের                                ব্যক্তিগত সহকারীদের।

৩.গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার,মুজিবনগর এর সকল মন্ত্রণালয়ের সচিবদের।

৪.সর্বাধিনায়ক,বাংলাদেশ মুক্তিবাহিনি।

৫.সহ-প্রধান,বাংলাদেশ মুক্তি বাহিনী।

৬.পরিচালক,প্রকাশনা ও তথ্য,বাংলাদেশ সরকার।

৭.দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা,বাংলাদেশ রেডিও

৮.বৈদেশিক প্রকাশনা বিভাগ।

বৈদেশিক মিশনসমূহ

কলকাতা             জনাব এম হোসাইন আলী,                               ফোন: ৪৪-৫২০৮

ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার।                              ৪৪-০৯৪১

৯.সার্কাস এভিনিউ,

কলকাতা-১৭,ভারত।

নিউ দিল্লী             জনাব এইচ.আর.চৌধুরী,                                  ফোন: ৬২-৬৪০৫

বাংলাদেশ প্রতিনিধি,

বাংলাদেশ মিশন,

সি-১১৯,আনন্দ নিকেতন,

নিউ দিল্লি-২১,ভারত.

লন্ডন           জনাব জাস্টিস আবু সাইদ চৌধুরী                          ফোন: ০১-২২৯-০২৮১

বাংলাদেশের বিশেষ প্রতিনিধি।                                      ০১-২২৯-৫৪৩৫

বাংলাদেশ মিশন,                                             কেবল: বাংলাদেশ

২৪, পামব্রিজ গার্ডেনস.                                               লন্ডন ডব্লিউ২

লন্ডন,ডব্লিউ-২ ইউ.কে

স্টকহোম      জনাব এ.রাজ্জাক,                                               ফোন: ৭/০-৬৮-৫৭

বাংলাদেশের প্রতিনিধি.

বাংলাদেশ মিশন.

ডুভহল্মসগ্রান্ড ৩৮.

১২৭৪১ স্কারহোলমেন.

স্টোকহোম.সুইডেন.

নিউ ইয়র্ক      জনাব এস.এ.করিম                                     ফোন: (২১২)৬৮৫-৪৫৩০

বাংলাদেশের প্রতিনিধি.                                         (২১২)৭৩৯-০৩৮৮

বাংলাদেশে মিশন.

রুম নং ১০০২ক.

১০ পূর্ব ৩৯তম রাস্তা.নিউ ইয়র্ক ১০০১৬.

নিউ ইয়র্ক. যুক্তরাষ্ট্র.

ওয়াশিংটন     জনাব এম.আর.সিদ্দিকি                                         ফোন: ৭৩৭-৯৫৩৮

বাংলাদেশের প্রতিনিধি .                                                  ৭৩৭-৯১৯৬

বাংলাদেশ মিশন,

১২২৩ কানেকটিকাট এভিনিউ,                             কেবল:বাংলাদেশ মিশন

উত্তর-পশ্চিম (ফোর্থ ফ্লোর),                                   ওয়াশিংটন ডি.সি.

ওয়াশিংটন.ডি.সি. ২০০৩৬ যুক্তরাষ্ট্র.

হংকং        জনাব মহিউদ্দিন আহমেদ,                                         ফোন: ৭৬৯৬১০

বাংলাদেশের প্রতিনিধি,

বাংলাদেশ মিশন,

ফার্স্ট ফ্লোর,

৩১ ব্রড উড রোড,

হ্যাপি ভিউ টেরেস,

হ্যাপি ভ্যালি,হংকং.

মানিলা        জনাব কে.কে.পন্নি,                                               ফোন:৮৯-৫৬-২৭

বাংলাদেশ প্রতিনিধি,

বাংলাদেশ মিশন,

১৩৩৯ কামিয়াস স্ট্রীট,

ডাস মারিনাস ভিলেজ,

মাকাটি রিযাল,

মানিলা,ফিলিপাইন.

কাঠমুন্ডু           জনাব এ.এম.মুস্তাফিজুর রহমান,

বাংলাদেশ প্রতিনিধি,

বাংলাদেশ হাউস,

মাহারাজগানি-বানসবাড়ি,

(ব্রহ্মা কটেজের বিপরীতে),

জি.পি.ও. বক্স নং ৭৮৯,

কাঠমুন্ডু,নেপাল.

বার্ন                জনাব ওয়ালিয়ুর রহমান,                                        ফোন:৪৪৮২৬৫

বাংলাদেশ প্রতিনিধি,

হেল্ভিটিয়াস্ত্র ২১,

৩০০৫ বার্ন,সুইজারল্যান্ড.

টোকিও            জনাব এস এম মাসউদ,

বাংলাদেশ প্রতিনিধি,

১৭,ইছিবাঞ্চ,চিয়দা-কু,

কজিমাছি,

টোকিও,জাপান.

বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে চিঠি।

নভেম্বর ২৩, ১৯৭১

(বাংলাদেশ সরকারের সীল)

 
মুজিবনগর,
নভেম্বর ২৩, ১৯৭১
মান্যবর,
আপনার ইউরোপ ও আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র এর জন্য প্রস্থানের প্রাক্কালে আমরা ১৫ অক্টোবর যে চিঠিটি লিখছি তাতে আপনার সদয় দৃষ্টি আমন্ত্রণ জানাতে পারি কি? আমাদের আশা ছিল যে, পৃথক গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ এবং তার সরকারের স্বীকৃতির জন্য আমাদের মৌলিক অনুরোধ বিবেচনা থেকে , আমাদের চিঠি আপনাদের কাছে স্বাধীনতার জন্য আমাদের অনুভূতির গভীরতা এবং আমাদের সংগ্রামের বৃদ্ধি ভরবেগ বহনে সহায়তা করবে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ যাদের সাথে আপনার দেখা করার কথা ছিল। আমরা আপনার আলোচনা সম্পর্কে যে প্রতিবেদনগুলি পেয়েছিতা আশা তৈরি করেছে যে , রাষ্ট্রনায়ক প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান যার সাথে আপনি দেখা করবেন এবং আমাদের অবিসংবাদিত নেতার সহিত পরামর্শক্রমে বাংলাদেশের সমস্যার একটি রাজনৈতিক সমাধান বিকশিত করতে সক্ষম হবে/ শেখ মুজিবুর রহমান এবং আমাদের ইতিমধ্যে নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ।
২. এমনকি যখন আপনি বিদেশে পরিস্থিতির বাস্তবতার বর্ণনা করছিলেন এবং বাংলাদেশের জনগণের পচ্ছন্দমাফিক একটি রাজনৈতিক সমাধান অনুজ্ঞাসূচক অপরিহার্যতায় জোর দেওয়া হয়, আমাদের কাছে নির্দিষ্ট ইঙ্গিতও রয়েছে যে পশ্চিম পাকিস্তানের সামরিক নিয়ম তাদের নীতিতে অবিচল থাকার এবং আমাদের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে নিপীড়ন ও নিষ্ঠুরতা অব্যাহত রয়েছে। ১২ অক্টোবর রাষ্ট্রপতি ইয়াহিয়া খানের বক্তব্যে প্রকাশ পায় যে বাংলাদেশের বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে পশ্চিম পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর বর্ধিত কার্যক্রম এবং পৃথিবীর বিভিন্ন রাষ্ট্রনায়ক দ্বারা তৈরি প্রস্তাবে তার জনবলকে ফিরিয়ে তাঁকে একটা যৌক্তিক রাজনৈতিক সমাধান প্রতি আহ্বান জানান, আমাদের মূল্যায়ন নিশ্চিত।
৩. বিশেষ করে গত দুই সপ্তাহ ধরে উন্নয়ন পরিষ্কারভাবে দেখায় যে, পশ্চিম পাকিস্তানের সামরিক শাসকেরা এই পথ থেকে ফিরে আসতে এবং পরিস্থিতি বাস্তবতার মুখোমুখি হতে চাচ্ছিলোনা। এদিকে, ভারতে আমাদের দেশের দেশত্যাগ নির্বিঘ্নে চলতে থাকে, যা পশ্চিম পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর হাতে আমাদের জনগনের উপর অব্যাহত দমনের একটি সরাসরি ফল। পশ্চিম পাকিস্তানের সামরিক জান্তা আমাদের জনগণের নিপীড়ন দ্বারা প্রারব্ধ তথাকথিত নিয়মমাফিক করণ একটি শঠ নীতি দ্বারা সংসর্গী হয়। পরাজিত ও প্রতারক, যারা পূর্ব পাকিস্তানের তথাকথিত বেসামরিক সরকার গঠন করে, একটি দমনমূলক সামরিক আইনের শাসন সার্বজনীনভাবে বাংলাদেশের জনগণের ঘৃণা দ্বারা টেকসই হয। বাংলাদেশে পশ্চিম পাকিস্তানী
সেনাবাহিনী কর্তৃক তাদের নৃশংসতার ত্রাস এবং সাম্প্রতিক দিনগুলোতে আমাদের মানুষ হত্যা নতুন এবং অকল্পনীয় মাত্রায় পৌঁছেছে। কারফিউ এবং গ্রেপ্তার, ঝলসিত পৃথিবী এবং ভরউন্মূলন সম্পর্কে মধ্যে গত পনেরো দিন ধরে । সমগ্র গ্রাম মাটিতে মিশিয়ে দেয়া হয়েছে এবং তাদের জনসংখ্যা অগনিত। পশ্চিম পাকিস্তানি সেনাবাহিনী অভিনয় করেছে|

পশ্চিম পাকিস্তানী আর্মি নৃশংসতার এমন ষড়যন্ত্র করেছিল যে বাংলাদেশের লক্ষাধিক মানুষ আশ্রয় ও খাবারের অভাবে রাস্তায় ঘুরে বেরিয়েছে। আমাদের মূল্যায়ন অনুসারে, আনুমানিক পাঁচ মিলিয়ন বাংলাদেশি কোনো সাহায্য কিংবা ত্রাণ ছাড়া এই দুঃখ-ভারাক্রান্ত ও হৃদয় বিদারক অবস্থায় আছে। এছাড়া ১০ মিলিয়ন বাংলাদেশি ইতোমধ্যে ভারতে চলে গিয়েছে এবং দিনকে দিন এই সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। পূর্বোক্ত তথ্যাদি আমাদের সন্দেহাতীত উপসংহারে পৌঁছে দিয়েছে যে পাকিস্তানি সামরিক শাসন আমাদের জাতিকে নিশ্চিহ্ন করতে একটি প্রাক-ধ্যানে ও পরিকল্পনায় মগ্ন।

৪. পশ্চিম পাকিস্তানের সামরিক শাসকেরা এখনো শেখ মুজিবুর রহমান এবং বাংলাদেশ সরকারের সাথে মধ্যস্থতায় আস্তে অস্বীকার করেছে। এতে করে যে বাংলাদেশের মানুষের সাথে রাষ্ট্রপতি ইয়াহিয়া খানের মধ্যকার সম্পর্ক খাপ হয়েছে শুধু তাই নয় বরং পাকিস্তানের অন্য অংশের জনগণের সাথে বিচ্ছিন্নতা তৈরী হয়েছে। উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ এবং বেলুচিস্তানের মানুষ এমন পন্থায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছে যে পশ্চিম পাকিস্তান সরকার জাতীয় আওয়ামী পার্টিকে নিষেধাজ্ঞা জানাতে বাধ্য হয়েছে যারা কিনা এই দুই প্রদেশে অনুষ্ঠিত প্রাদেশিক নির্বাচনে বিপুলভাবে জয়ী হয়েছিল।

৫. এসবকিছুই কেবলমাত্র আমাদের প্রকৃত মূল্যায়নকে নিশ্চিত করে যে পশ্চিম পাকিস্তানের সাধারণ জনগণ কখনোই ইয়াহিয়া খান সহ কিছু সংখ্যক জেনারেল গোষ্ঠীর সমন্বয়ে সৃষ্ট সামরিক শাসনের সাথে জড়িত ছিল না। রাষ্ট্রপতি ইয়াহিয়া খানের বিগত মাসের বক্তব্য এবং কার্যক্রম একটি সুস্পষ্ঠ ইঙ্গিত দেয় যে তার লক্ষ্য শুধুমাত্র বাংলাদেশের প্রজাতান্ত্রিক প্রেরণা ধ্বংস করাই নয় বরং তা সমগ্র পাকিস্তানের মানুষের জন্য।

৬. আমাদের ১৫ই অক্টোবরের চিঠিতে আমরা আপনাকে জানিয়েছি যে মুক্তিবাহিনীর কার্যক্রম গতিশীলতা পেয়েছে। বাংলাদেশের সমগ্র মানুষের সার্বজনীন সহযোগিতায় মুক্তিবাহিনী আমাদের মাতৃভূমির বিশাল অঞ্চলে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে সক্রিয় প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ পেয়েছে। আমরা ১৫ই অক্টোবরের চিঠিতে এটাও জানিয়েছি যে আমরা বাংলাদেশের অর্ধেক অঞ্চল নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছি। আমরা আনন্দের সাথে জানাচ্ছি আমাদের কার্যকর অধিক্ষেত্র দেশের দুই-তৃতীয়াংশ জায়গা জুড়ে বর্ধিত হয়েছে। আমরা শুধু এসব জায়গা স্বাধীনই করিনি বরং আমাদের কর্তৃপক্ষকে দৃঢ় করেছি এবং আমাদের কর্তৃত্বাধীন এলাকায় ক্রমাগত সক্রিয় বেসামরিক প্রশাসন প্রতিষ্ঠা করেছি। এমনকি অবশিষ্ট অঞ্চলে জনগণের সহযোগিতায় মুক্তি সংগ্রামীরা পশ্চিম পাকিস্তানী বাহিনীকে ধরাশায়ী করেছে এবং তাদেরকে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যায় গণ্ডিভূত করেছে। সময়ের সাথে সাথে পশ্চিম পাকিস্তানে আমাদের সাফল্যে সেখানকার জনগণকে আমাদের বৈধতা নিয়ে উপলব্ধি করানো গিয়েছে। পশ্চিম পাকিস্তানী শাসকদের একগুঁয়েমি এবং আমাদের মানুষের বিরুদ্ধে তাদের পরিচালিত কার্যক্রম নিরর্থক আশার নির্দেশক হয়েছে যা কিনা রাষ্ট্রপতি ইয়াহিয়া খানকে কিছুটা আমোদিত করবে যে তার কাছে বাংলাদেশকে দমন করার জন্য সামান্য কিছু নিয়ন্ত্রণ এখনো আছে। এটি আমাদের মাতৃভূমিকে পূর্ণাঙ্গভাবে স্বাধীন করার লক্ষকে তীক্ষ্ণ করেছে এবং আমরা আমাদের লক্ষ্য অর্জনে আত্মবিশ্বাসী। আমরা উত্তমভাবে সংগঠিত আছি এবং আমাদের সশস্ত্র বাহিনী নিয়ম ও সংকল্পবদ্ধ হয়ে দায়িত্ব পালন করছে। মুক্তিবাহিনীর নানান পদমর্যাদা হাজারো দেশপ্রেমিক তরুণ কর্তৃক উচ্ছ্বসিত হচ্ছে , তারা বাংলাদেশের মানুষকে ঔপনিবেশিক দাসত্ব থেকে মুক্তি দিতে নিবেদিত। এটা আমাদের স্থির অভিপ্রায় যে শোষণের মুলকে উপরে ফেলবো যা আমাদেরকে আনুমানিক দুই দশক ধরে শোষিত করেছে এবং ২৫শে মার্চের মতো নানান হত্যাকাণ্ডমূলক ঘটনার চূড়ান্ত পরিণতি আসবে। এটি একদল শোষকদের বিরুদ্ধে তাঁদের দাসত্বধীন জাতির সংগ্রাম মাত্র।

৭। আমাদের সংগ্রামে যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিশেষ করে আমাদের মহান প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত থেকে যে তৎক্ষণাৎ এবং সুস্পষ্ট সমর্থন পাওয়া যাবে সেটা আশার অতীত ছিল। আমাদের ধারণার একটা ভিত্তি ছিল কেননা ১৯৭১ এর ৩১ মার্চ তারিখে ভারতীয় সরকারের পাস করা একটি সুচতুর অনুবন্ধে উল্লেখ ছিল বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক জীবনধারা অর্জনের লক্ষ্যে চালিয়ে যাওয়ায় সমবেদনা জ্ঞাপন করে এবং তাদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে। ইতোমধ্যে আট মাস পেরিয়ে গেছে, তারপরও না কোন আন্তর্জাতিক চাপ না কোন রাষ্ট্র প্রতিনিধির কৌঁসুলির দ্বারাই পশ্চিম পাকিস্তানের সামরিক রাজত্বকে একমত করানো যাচ্ছিল না বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এরই মধ্যে নির্বাচিত এবং স্বীকৃত নেতাদের সাথে কোন সমঝোতায় আসতে। আমাদের সহ্যশক্তি এবং বাধাও এমনকি পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকদের উপর কোন গঠনমূলক প্রভাব ফেলেনি। অপরদিকে শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে গণহত্যা চালিয়ে যাওয়া, মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং নিপীড়ন ছাড়াও পশ্চিম পাকিস্তানি সামরিক রাজত্ব এই ব্যপারটার মূল কারণটাকে বহির্বিশ্বের কাছে আড়াল করতে তৎপর ছিল একে ইন্দো-পাকিস্তানি মতভেদ বলে প্রচার করার মাধ্যমে। এই বিষয়টার সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ পরিস্থিতির বাস্তবতার দিকে ঘুরিয়ে আনতে আমাদের সরকারের নিরলস প্রচেষ্টা সম্পর্কে আমরা অবগত আছি। বাংলাদেশের জনগণ এবং পশ্চিম পাকিস্তানি সামরিক শাসকদের মধ্যে বিবাদ মেটানোর এ প্রচেষ্টাগুলো ব্যর্থ হয়েছে এবং সম্প্রতি রাষ্ট্রপতি ইয়াহিয়া খানের বিবৃতি এবং কর্মকান্ড থেকে রাজনৈতিক একটি সমধানের ইঙ্গিত পাওয়া যায়। এই প্রসঙ্গে, ভারত যে তার সতর্ক এবং বাধার নীতি মেনে চলবে তাতে আমরা বিস্মিত এবং হতভম্ব হয়েছি।

(৮) বাংলাদেশের মানুষ এই আফ্রো-এশিয়ান এলাকা থেকে সাম্রাজ্যবাদ নির্মূলে ভারতের অগ্রণী ভূমিকা সম্পর্কে অবগত। ভারতের সুকৌশলী প্রচারণা এবং পৃথিবীর অত্যাচারিত মানুষের পক্ষে নিরলস অবস্থান নেয়ার জন্যই প্রথম সারির রাজনৈতিক শক্তি বিসাম্রাজ্যকরনের প্রক্রিয়া দ্রুত করেছিল। তোমাদের সরকার এবং জনগণ সবসময়ই আওয়াজ তুলেছিল যখন মানুষের সম্মান বিপর্যয়ে পড়েছে এবং মানুষের স্বাধীনতা ও মুক্তি যখন বাধা পেয়েছে। তোমাদের স্বাধিনতা আর মুক্তির সংগ্রামে যথাযথ সংগ্রামীদের প্রতি অনবরত সমর্থন বিশ্ববিদিত। অত্যাচারিত এবং মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিতদের মুক্তির ধারক এবং স্বাধীনতার পথে অগ্রগামী নজির এই ভারত। তোমরা গনতন্ত্রের নিয়ম নীতি, ধর্মনিরপেক্ষতা, সামাজিকতা এবং একটি অপক্ষপাতদুষ্ট বিজাতীয় নীতির প্রতি অটল সমর্থন জানিয়ে এসেছ। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বাধীনতা ঘোষণা এবং আমাদের দেশের সরকারের পরবর্তী বিবৃতি থেকে থেকে এটা বুঝা যায় যে আমরা সেই একই আদর্শ এবং আকাংক্ষা পোষণ করি। আমাদের রাজ্যনীতির মৌলিক বিষয়গুলো এখানে আবার উল্লেখ করতে চাই – যেমনঃ গনতন্ত্র, সমাজবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা এবং একটি সমবাদী সমাজ প্রতিষ্ঠা যেখানে জাতি, ধর্ম, লিঙ্গ এবং গোত্রে কোন ভেদাভেদ থাকবে না। আমাদের বৈদেশিক সম্পর্কে আমরা অপক্ষপাতদুষ্ট নীতি, শান্তিপ্রিয় সহাবস্থান এবং সাম্রাজ্যবাদ, স্বাজাতিকতা ও উপনিবেশনের যাবতীয় রূপের প্রতি বিরোধী অবস্থান নিতে বদ্ধ পরিকর। এই আদর্শ এবং নীতির জাতির এহেন পটভূমিতে কেন ভারত আমাদের স্বীকৃতি লাভের আবেদনে সাড়া দিচ্ছে না তা আমাদের বোধগম্য নয়।
(৯) আরো বাস্তবিক ক্ষেত্রে, বাংলাদেশের জনগণের আতংকের মুখে তোমাদের দেশে আশ্রয় নিয়ে যে বোঝা তোমাদের উপর আরোপিত হচ্ছে তা আমরা বুঝি।
০৯. আরও একটি ব্যবহারিক পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে আপনাদের দেশের নাগরিকদের মাঝে যে তথ্যটি পৌঁছাতে চাই তা হলো আমাদের নাগরিকরা নিজেদের দেশে সন্ত্রাসবাদের শিকার। আমরা আমাদের লক্ষ লক্ষ মানুষের দুঃশ্চিন্তার বিষয়টি আপনাদের কাছে তুলে ধরতে চাই। ভারতে অবস্থান করা আমাদের বিপুল সংখ্যক শরণার্থীদের কারণে তাদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক-রাজনৈতিক নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারে, যা বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশের জন্যই দুশ্চিন্তার। আমরা আমাদের দেশে একটি জনপ্রশাসন তৈরি করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি, যাতে ১৯৭১ এর ২৫ মার্চ এর পর যারা বর্তমানে আপনাদের দেশে বাধ্য হয়ে বসবাস করছে তাদের যত দ্রুত সম্ভব স্বভূমে ফিরে আসতে পারে। আমরা তাদের পুনর্বাসনের জন্যও একটি ব্যবস্থা করতে চাই, যাতে করে তারা নীরাপত্তা ও আত্মমর্যাদা নিয়ে নিজেদের বাড়িতে বসবাস করতে পারে। শীতকাল আসিতেছে, এ অবস্থায় ভাবনা আরও একটি দিকে সম্প্রসারণ করা উচিত। শিশু, নারী ও বৃদ্ধদের স্বাস্থ্য ও জনসেবার কথা ভেবেও তাদের দ্রুত বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো উচিত। আমরা নিশ্চিত করতে চাই যে, শরণার্থীদের দেশে ফিরে যেতে আমাদের সরকার সর্বোচ্চ সাংগঠনিক সহায়তা দিতে প্রস্তুত। প্রয়োজনের সময় আমাদের পাওয়া যায় নি এ কথা যেন বলা না যায়।

১০. বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আপনাদের অব্যাহত সমর্থন বিগত আট মাসের সংগ্রামের মাঝে অনেক দুশ্চিন্তা মুক্তিতে দারুণ অনুপ্রেরণা দিয়েছে, আমরা সে জন্য কৃতজ্ঞ। আপনাদের রাজনৈতিক ও মানসিক সমর্থন অর্জন আমাদের পাথেয়, যা স্বাধীনতা যুদ্ধে আমাদের জন্য প্রয়োজনিও বটে। আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের প্রতিটি ক্ষেত্রকে আমরা শ্রদ্ধা করি, আর একে আরো জোরদার করার মাধ্যমে বাংলাদেশের বর্তমান সমস্যাগুলোকে মোকাবেলা করতে হবে।

১১. আন্তজার্তিক পরিমন্ডলে আপনাদের অব্যাহত সমর্থনের ফলে আমাদের যে গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয়েছে তার জন্য আমরা আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামকে বেগবান করতে ও বিশ্বের বৃহত্তর সমাজের প্রতি আমাদের বার্তা পৌঁছে দিতে এই মুহূর্তে আপনাদের প্রাতিষ্ঠানিক রাজনৈতিক সমর্থন জরুরী। আপনাদের দেয়া সম্মান আমাদের স্বাধীন চলাচল ও অবস্থানে শক্তিশালী ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশকে ভারতের স্বীকৃতি দেয়া উপমহাদেশের বর্তমান অবস্থাকে শুধুমাত্র স্থিতিশীলই করবে না, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় শান্তি সমৃদ্ধিকে আরো জোরদার করবে। May we, therefore, reiterate the request which we made in our letter of 15th October that you accord immediate recognition to the sovereign People’s, Republic of Bangladesh?

Please accept, Excellency, the assurance of our highest esteem.

(Sd.) SYED NAZRUL ISLAM (Sd.) TAJUDDIN AHMED

মাননীয় ইন্দিরা গান্ধী

ভারতের প্রধানমন্ত্রী
নয়া দিল্লি

২৭ নভেম্বর ১৯৭১
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রচারণার ধরণ গত সাত দিনে চক্রাকারে বদলে গেছে। আন্তর্জাতিক সংবাদপত্র ও গণমাধ্যমের ভাবনায় ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথ স্পষ্ট হয়ে এসেছে যার মাধ্যমে সামনে উঠে এসেছে মুক্তি বাহিনীকে গ্রহণ বিষয়ক বিতর্কও। এখানে আমার প্রধান ও বাস্তব বিষয়টিই প্রধান্য দেয়া উচিত। আমাদের চেষ্টাগুলো আগের তুলনায় আরও বেশী সুনির্দিষ্ট হওয়ায় বাংলাদেশের লড়াইয়ের বিষয়টি বিশ্বের সামনে উঠে এসেছে। এখানে ১শ জনেরও বেশী বিদেশী সংবাদ প্রতিনিধি, আলোকচিত্রি (ফটোগ্রাফারা), টিভি স্টেশনের দল ও সংবাদ সংস্থাগুলো কলকাতায় থেকে এসে যুদ্ধের অবস্থা দেখেছে। আমরা লক্ষ্য হলো তাদেরকে মুক্তিবাহিনীর প্রকৃত কাজের সক্ষমতা দেখানো ও সমস্যার দিকে দৃষ্টি ফেরানো। আবার একই সাথে সব সাংবাদিক একই রকম সংবাদ প্রকাশ করবে এটা ভাবাও বোকামি হবে। অনেকেই ভালোভাবে জানবেও না, আবার অনেকেই আমাদের পক্ষে ঠিকমত লিখবেও না, কেউ আবার কেবল তথ্য সংগ্রহ করবে। আমার অভিজ্ঞতা মতে আমি মনে করি নির্দিষ্ট কোনও দেশের সর্বোচ্চ ছয় থেকে আট জনের একটি দলকে বিশেষ ব্যবস্থায় মুক্তিবাহিনীর কর্মকাণ্ড ও তাদের সফলতা পর্যবেক্ষণ করার সুযোগ দেয়া ভালো। নিচে তাদের কয়েকজনের নাম উল্লেখ করা হলো, যারা এখনি মুক্তিবাহিনীর সংবাদ প্রকাশে সক্ষম।
(১) জন পিলজার, প্রধান আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি, ডেইলি মিরর এবং তার আলোকচিত্রি জন গ্যারেট।
(২) সাইমন ড্রিং, নিউজ উইক যুক্তরাষ্ট্র এবং তার আলোকচিত্রি বব হোয়াইটকার
(৩) জেরার্ড ভেরাটেল্লে, অফ লেও মনডে, ফ্রান্স
(৪) মিস পেনি টুইডার, আলোকচিত্রি, সানডে টাইমস
(৫) ডেভিস সিল, বিবিসি টেলিভিশন দল
(৬) ফ্রান্সিস গ্ল্যাব, সিবিএস টেলিভিশন দল
(৭) দ্যা কানাডিয়ান টেলিভিশন দল
(৮) দ্যা অস্ট্রেলিয়ান টেলিভিশন দল
(৯) একটি সুইডিশ টেলিভিশন কর্পোরেশন
প্রেস বিজ্ঞপ্তি
বাংলাদেশ সরকারের মুখপাত্র জানান যে ইয়াহিয়া সরকার মুক্তিবাহিনীর বীরত্ব চাপা দেয়ার জন্য এখন ভারতের আক্রমনের কথা তুলে ধরছে । তিনি উল্লেখ করেন যে মুক্তিবাহিনী একটি বিশাল অংশ সাধীন করে ফেলেছে, বিষেষ করে গ্রামাঞ্চল এখন প্রায় পুরোটাই তাদের আওতায়।
ঢাকা ও মুক্তিবাহিনী গেরিলা দের দখলে চলে আসছিল। সেই মুখপাত্রের মতে ইয়াহিয়া সরকারের মূল লক্ষ্য ছিল সারা দুনিয়ার কাছে মুক্তিবাহিনীর বীরত্তের কাহিনি ধামাচাপা দিয়ে তাদের ভুল ভাবে উপস্থাপন করা।
মুজিবনগর
৩০-১১-৭১

ভারতীয় প্রধান্মন্ত্রী কে বাংলাদেশের সরকারের চিঠি
৪ ডিসেম্বর , ১৯৭১
প্রেরক
সৈয়দ নজরুল ইসলাম
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি
ও তাজউদ্দীন আহমেদ
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশে সরকারের প্রধানমন্ত্রী
প্রাপক
মাননীয়া ইন্দিরা গান্ধী
ভারতের প্রধানমন্ত্রী , দিল্লী।

মাননীয়া,

৩ ডিসেম্বর আপনাদের দেশে পাকিস্তান সামরিক জান্তার অতর্কিত আক্রমনের কথা শুনে আমরা গভীর ভাবে শোকাহত। সাম্প্রতিককালে ইয়াহিয়া খানের আন্তর্জাতিক চুক্তির বেপরোয়া লঙ্ঘন এটাই চূড়ান্তভাবে প্রমান করে যে তিনি এই উপমহাদেশের দেশগুলোতে অশান্তি, ধ্বংস এবং আর্থ-সামাজিক অস্থিরতার পরিস্থিতি তৈরি করতে চান ।
পশিচম পাকিস্তান সরকারের উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে বাঙ্গালীরা তাদের বিরুদ্ধে ৯ মাস সংগ্রাম চালায়। ১৫ অক্টোবর ও ২৩ নভেম্বর আমরা বার্তা পাঠিয়েছিলাম যে সামরিক জান্তা কে পুরাপুরি পরাস্ত না করা পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।
ইয়াহিয়া ও তার জেনারেল দেরমাধ্যমে আপনার দেশে যে ধ্বংস সঙ্ঘটিত হয়েছ এখন আমাদের উচিত এই আগ্রাসন দমন করতে কাঁধে কাধ মিলিয়ে এর প্রতিবাদ করা ও স্বাধীনতা লাভের জন্য একজোট হওয়া ।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমরা জানাতে চাই ৩ ডিসেমবর পাকিস্তানী বাহিনি আপনাদের দেশে যে আগ্রাসী হামলা চালিয়েছে , মুক্তিবাহিনী তার বিরুদ্ধে লড়াই করতে প্রস্তুত। তাই আমি অনুরোধ করতে চাই, আমরা যদি কূটনৈতিক ভাবে একজোট হই তাহলে সহজেই আমাদের কাঙ্ক্ষিত সাধীনতা লাভ করতে পারব ।
আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই যে বাংলাদেশের মানুষ ও বাংলাদেশ সরকার এই দুর্যোগ ময় পরিস্থিতিতে যেকোনো বিপদেই দুই দেশের পাশে সমানভাবে দাঁড়াবে। আমরা আশাবাদী যে আমাদের এই একতা ইয়াহিয়া বাহিনীর ঘৃণ্য চক্রান্ত কে প্রতিহত করবে ও আমাদের কে একটি আশাব্যাঞ্জক ফলাফল দিবে।
আমরা যেকোন বিপদেই আপনাদের পাশে দাঁড়াব ও পূর্ণ সহযোগিতা করব।
ডিসেমবর ৪। ১৯৭১

বাংলাদেশের প্রেস মুক্তিলাভ

(স্বীকারোক্তি সহ কিংবা ছাড়া পুনর্গঠন করা যেতে পারে )
নং. পি আর/৭৯
কলকাতা
ডিসেম্বর ৬, ১৯৭১

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্বীকৃতি
নিম্নলিখিত বিবৃতি উনুযায়ী খন্দকার মোশতাক আহমেদ, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে ভারত বাংলাদেশের হাই কমিশনার হতে স্বীকৃতি পেয়েছে
অপ্রতিরোধ্য হৃদয় কৃতজ্ঞতার গভীর অনুভূতি দিয়ে ত্বরান্বিত ,আমরা বাংলাদেশের সাড়ে ৭ কোটি মানুষের ইতিহাসের আবার এই যুগান্তকারী মুহূর্তের জন্য সরকার ও ভারতের জনগণের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। ভারত আজ আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ গণপ্রজাতন্ত্রী সরকার অনুযায়ী আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দ্বারা, অঙ্গীকার এবং মানব সভ্যতার, শান্তি ও প্রগতির বর্ধিতকরণ প্রতিশ্রুতি তার আদর্শে মুক্ত করেছে।
এই ঐতিহাসিক দিনে, আমরা অঙ্গীকার করি নিখুঁতভাবে নতুন অর্থনৈতিক ও সামাজিক শৃঙ্খলা নিয়ে আসার জন্য ,যা আমাদের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জাতীয় বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার। আসুন আশা করি যে, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বন্ধুত্বের বন্ধন বৃহত্তর এবং বৃহত্তর বোঝার অনন্ত ও শাশ্বত মহিমা থাকবে।The great nation of India and emerging nation of Bangladesh can supplement and complement each other according to their capabilities to put up a monumental example of peaceful co-existence under the principle of panchshill
আমরা বীরত্বপূর্ণ পুরুষ ও মুক্তিবাহিনীর অফিসারদের এবং ভারতীয় বাহিনীকে আমাদের ধন্যবাদ এবং অভিনন্দন , যারা ইতিহাসের এই নতুন পাতা লিখিয়েছে সুবর্ণ শব্দ হিসেবে কিন্তু কথাগুলো তাদের রক্তে রঞ্জিত। গৌরব তাদের জন্য ।
আমাদের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন, বাংলাদেশকে ইসলামাবাদের বর্বর সামরিক জান্তার কারাগার থেকে উদ্ধার করা করতে হবে।রক্ত যদি স্বাধীনতা আনতে পারে , রক্ত তার স্বপ্নের বাংলাদেশকেও ফিরিয়ে দিতে পারে।
স্বাধীন এবং বিশ্বের শান্তিকামী সরকারের কাছে আমাদের ঐকান্তিক আবেদন , অবিলম্বে বাংলাদেশকে গণপ্রজাতন্ত্রী সরকার স্বীকৃতি উচ্চ গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্রের ব্যানার আপ অধিষ্ঠিত করতে সাহায্য করা
জয় বাংলা