শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
শীতবস্ত্র সংগ্রহ সম্পর্কে একটি আন্তর্জাতিক প্রতিবেদন | পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় | ৯ অক্টোবর, ১৯৭১ |
বাংলাদেশ প্রেস বিজ্ঞপ্তি
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ মিশন
৯, সার্কাস এভিনিউ
কলিকাতা-১৭
(অনুমতি নিয়ে কিংবা ছাড়া কপি করা যেতে পারে)
_______________________________________________________________________________
নং. পিআর/৬১. অক্টোবর ৯, ১৯৭১
শীতবস্ত্রের জন্য আবেদন
শীতের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধা ও লক্ষাধিক তৃণমূল দুঃখীদের তীব্র সংগ্রামের জন্য বাংলাদেশে পশমি এবং অন্যান্য শীতকালীন পোশাক দেবার জন্য জোর দিতে হবে। মাতৃভূমিকে স্বাধীন করবার জন্য বাংলাদেশ মুক্তিবাহিনী পশ্চিম পাকিস্তানের শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। মুক্তিবাহিনীকে সাহায্য করার কারণ শুধু বাংলাদেশের জন্যই না বরং তা মানবতা এবং স্বাধীনতার জন্য। ঠাণ্ডার বিরুদ্ধে এবং আসন্ন শীতকালে মুক্তিবাহিনী সদস্যদের রক্ষার জন্য, জনাব এম. হোসেন আলী, ইন্ডিয়াস্থ বাংলাদেশের হাই কমিশনার ফিলানথ্রোপিক অর্গানাইজেশনের কাছে আবেদন করেছেন। উপরি উল্লেখিত
জিনিসপত্র দান করে সাহায্য করার জন্যে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, উৎপাদন প্রতিষ্ঠান ও বিক্রেতাদের এগিয়ে আসার জন্যে অনুরোধ করেছেন।
৯, সার্কাস এভিনিউ, কলকাতা-১৭’তে অবস্থিত ইন্ডিয়ার বাংলাদেশ হাই কমিশনার দফতরে প্রদত্ত অনুদান আনন্দের সহিত গৃহীত হবে।
নং জনসংযোগ / 64. অক্টোবর ১৩,১৯৭১.
বাংলাদেশ সরকার মুখপাত্রের ‘ ইয়াহিয়ার ব্রডকাস্টের প্রতিক্রিয়া
গত ১২ অক্টোবর, ১৯৭১ এ ইয়াহিয়া খানের সম্প্রচারের ওপর মন্তব্য করার সময়, বাংলাদেশ সরকারের একজন মুখপাত্র মুজিবনগরে আজ বলেন যে ‘ ইয়াহিয়ার এই সম্সপ্ম্প্ররচারিত বক্তব্য পুর্ব পাকিস্তানে তার নিজের হতাশাজনক পরিস্থিতির একটি কোনোরকম ব্যাখ্যা প্রদানের চেষ্টা মাত্র। এই বক্তৃতায় তিনি পুর্ব পাকিস্তানি জনগনের যুদ্ধ মধ্যবর্তি অবস্থার জন্য যে ব্যাথিত সেইটা বরাবরের মতো মেকি ছলনার অনুশিলন করেন। তিনি তাদের আন্দোলনে কে এর পিছনে দায়ী করেন। যদিও এর সাথে বাংলাদেশের সাধারন মানুষের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। .তার ক্ষমতা হস্তান্তরের পরিকল্পনা শুধুমাত্র সারা বিশ্বকে একটা ভাওতা দেয়া ছাড়া আর কিছুই নয়। তার ভারতবিদ্বেষি অভিযোগ, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহের একটা অপচেষ্টা মাত্র। তার উদ্দেশ্য ভারতীয়দের সাথে যুদ্ধ নয় ,বরং ৭৫ মিলিয়ন মুক্তিকামি মানুষের বিপক্ষে।
২৮ জুন তার বক্তৃটায় ইয়াহিয়া খান বলেন, চার মাসের মধ্যে তিনি রাষ্ট্রক্ষমতা হস্তান্তর করবেন। কিন্তু তার গতকালকের সম্প্রচার শুধুমাত্র সামরিকজান্তার নকশায় শেষ পর্যন্ত ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার বিষয়টিই প্রকাশ করে। কিন্তু একজন বাংলাদেশি হিসেবে বলতে পারি তার এই ধরনের পরিকল্পনায় বাংলাদেশের জনগনের সাহায্য সে পাবেনা। তার তথাকথিত ‘সংবিধান’ ও এখানে প্রযোজ্য হবার নয়। তার আসল পরিকল্পনা হলো, তার এইসব অত্যাচার,নীপিড়ন এর উপর প্রলেপ দেওয়া এবং ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা বলে মানুশকে বুঝ দেওয়া। আর এইসব সে করছে বহির্বিশ্বে নিজের ভাবমুর্তি উজ্জ্বল করার জন্য এবং তাদের থেকে প্রয়োজনীয় সমর্থন পাবার জন্য।
ইয়াহিয়া খান একবার এই মুক্তিযুদ্ধ কে ইন্দো-পাকিস্তান যুদ্ধ বলে চালিয়ে যাবার একটা অপচেষ্টা করেছিল। কিন্তু, সারা দুনিয়া জানে যে, এই যুদ্ধ বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের যুদ্ধ যারা ইয়াহিয়া আর তার বাহিনীকে তাদের মাটি থেকে সমুলে উৎপাটন করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। ভারতের সরকারের এতে কোনো সার্থ নেই।
তার পুরো বক্তব্যই ছিল পুর্ব পাকিস্তানিদের মধ্যে একটা ওয়ার হিস্টিরিয়া তৈরি করা। . তিনি তার সব সমস্যার জন্য ভারতকে দায়ী করেন এবং নিজেকে একজন মিষ্টি যুক্তিবাদি হিসেবে উপ্সথাপন করবার চেষ্টা করেন।. এভাবে তিনি তার নিজের অপরাধের জন্য ভারতকে দায়ি করার চেষ্টা করেন।
ইয়াহিয়া খান এইভাবে বাংলাদেশের বাস্তবতার উপেক্ষা করেছে এবং আমাদের যা করার এখনি করতে হবে তাকে বুঝিয়ে দিতে হবে যে বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনিরা তাদের মাটিকে স্বাধীন করতে ইয়াহিয়ার ভারি অস্ত্র সস্রে সজ্জিত হানাদার বাহিনী উৎখাতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। এই সামরিক জান্তার অস্তিত্ত শেখ মুজিবের মুক্তির পড়েই শেষ। তাদের তিরোধানের মধ্য দিয়েই বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে গ্রহনযোগ্যতা লাভ করতে পারবে।
………………………