শিরোনাম |
সুত্র | তারিখ |
বাংলাদেশের সপক্ষে আনুগত্য প্রকাশের আরো ঘটনা | এশিয়ান রেকর্ডার, নভেম্বর ১৯-২৫, ১৯৭১ | ৩-৭ অক্টোবর, ১৯৭১ |
বাংলাদেশে আরো বিদ্রোহ
কাঠমন্ডুতে পাকিস্তানের প্রথম সচিব, জনাব মুস্তাফিজুর রহমান, ৩রা অক্টোবর বাংলাদেশের প্রতি তার আনুগত্য প্রকাশ করেন।
জনাব রহমান একজন ২৯ বছর বয়সী বাঙ্গালি, যিনি বিশেষ আদালতের প্রধানও ছিলেন, তিনি তার বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন যে, তিনি এই ছয় মাসে ‘তার জীবনের সবচেয়ে বাজে মানসিক যন্ত্রনার পর’ এই ‘সাহসী’ সিদ্ধান্ত নেন।
তিনি বলেন, তিনি নেপালের প্রধান মন্ত্রী জনাব কে. এন. বিশ্তকে তার সিদ্ধান্তের কথা জানান, যার কাছে তিনি বাংলাদেশ সরকার স্বাধীন না হওয়া পর্যন্ত এর বিশেষ দূত হিসেবে নেপালে থাকার অনুমতি চান, তিনি নেপালী সরকারের কাছে নেপালে অবস্থানরত পশ্চিম পাকিস্তানি দ্বারা ‘শারীরিক, মানসিক ও বস্তুগত ক্ষতি’ থেকে তার নিজের, পরিবার-স্ত্রী এবং দুই সন্তানের সুরক্ষাও চেয়েছেন।
মন্ত্রী-পরামর্শক এবং নয়া দিল্লিতে পাকিস্তান হাই কমিশনের বিশেষ আদালতের প্রধান জনাব হুমায়ুন রাশীদ চৌধুরী ৪ঠা অক্টোবর, বাংলাদেশের প্রতি তার আনুগত্য প্রকাশ করেন।
এক বিবৃতিতে জনাব চৌধুরী বলেন যে, ‘ইতিহাস ইয়াহিয়া খানকে শুধুমাত্র নিরপরাধ মানুষের পৈচাশিক গণহত্যার জন্যই অভিযুক্ত করবে না বরং পাকিস্তানের বিভেদকে উস্কানি দেওয়ার জন্যও দোষারোপ করবে। শেখ মুজিবুর রহমান নয়, তার উচিত ছিল শুধুমাত্র পাকিস্তান না বরং মানবতার বিরুদ্ধে অন্যায়ের বিপক্ষে চেষ্টা করা।
তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী পালিয়ে যাওয়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যে তাঁর ঘোষনা আসে যে, জনাব ফকরুদ্দিন আহমেদ তার স্ত্রী ও চার সন্তানসহ স্বাধীনতার জন্য হাইকমিশনের সীমানা পেরিয়ে যান।
জনাব চৌধুরী এবং জনাব আহামেদকে নিয়ে তিন কূটনৈতিকসহ পাকিস্তান হাইকমিশন থেকে বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করা বাঙ্গালী কর্মচারীর সংখ্যা এখন ১৩। হাইকমিশনে এখনো ১ জন বাঙ্গালি কূটনৈতিক এবং ১১ জন বাঙ্গালি কর্মচারী আছেন।
হাইকমিশনের উপদেষ্টা জনাব রিয়াজুল করিম ৭ অক্টোবর লন্ডনে বলেন, তিনি ইসলামাদ সরকারের সাথে সকল সম্পর্ক ছিন্ন করছেন প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্য ঘোষনা করছেন।
জনাব করিম পরবর্তীতে লন্ডনের বাংলাদেশ মিশনে যোগদান করেন।