শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
বাংলাদেশের সরকার ও জাতিসংঘের মধ্যে বিনিময়কৃত চিঠি ও আনুষঙ্গিক তথ্য | পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় | ৪ সেপ্টেম্বর,১৯৭১ |
প্রদত্ত তারিখ,৪সেপ্টেম্বর,১৯৭১
প্রেরক :জনাব মউদুদ আহমেদ,
৪-এ পাম এভিনিউ,বালিগঞ্জ,
মেফেয়ার রোড,কলকাতা-১৯.
প্রাপক : জনাব ব্রায়ান ই. উরকহার্ট,
পরিচালক,
বিশেষ রাজনৈতিক সম্পর্ক বিষয়ক সহকারী মহাসচিবের কার্যালয়,
নিউইয়র্ক.
জনাব,
২৭শে অগাস্টের আপনার চিঠির জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আমি খুশি যে মহাসচিব শেখ মুজিবর রহমানের পরিণতি কে উদ্বেগের বিষয় বলে বিবেচনা করেন যেমনটা তিনি অগাস্টের ১০ তারিখে দেয়া বিবৃতিতে প্রকাশ করেছিলেন।
তারবার্তা পাঠানোর প্রধান কারণ ছিল জাতিসংঘের মহাসচিব কে এই মর্মে পাকিস্তান সরকারের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানানো যে,ঢাকায় তার একজন পরামর্শদাতা হিসেবে আমি এখনো,শেখ মুজিবর রহমান যে আমাকে পরামর্শ দিতে ইচ্ছুক সেটা জানার সুযোগের জন্য তৈরি,যাতে করে পাকিস্তানে প্র্যাকটিস করতে যোগ্যতা সম্পন্ন তার পছন্দের আইনজীবীগণ তার পক্ষে মামলা পরিচালনা করতে পারেন।পাকিস্তান সরকার কতৃক নিয়োজিত জনাব এ কে ব্রহি তার নিজের পছন্দের আইনজীবী নন।আমি সম্পূর্ণ নিশ্চিত যদি আপনার অফিসের মাধ্যমে শেখ মুজিবর রহমান কে এটা জানানো যায় তাহলে তিনি তৎক্ষণাৎ আমার সাথে সাক্ষাৎ করতে চাইবেন।
মহাসচিবের দক্ষতা ও এখতিয়ার সম্পর্কে আমি সচেতন কিন্তু আপনাকেও উপলব্ধি করতে হবে যে আমার ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য আমি সরাসরি পাকিস্তান সরকারের নিকট প্রস্তাব দিতে পারছি না।
যদি এটা কোনভাবে ব্যবস্থা করা সম্ভব হয় তাহলে এই অঞ্চলে শান্তি আনার উদ্দ্যেশের ক্ষেত্রে সেটা খুবই উপকারী হবে।আমি আপনাকে আশ্বস্ত করছি যে ভালো কিছু অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত এই বিষয়টি গোপন থাকবে।
দ্রুত উত্তর অত্যন্ত প্রশংসনীয় হবে।
আপনার বিশ্বস্ত
(মউদুদ আহমেদ)
জাতিসংঘ
নিউইয়র্ক
২৭ই আগস্ট, ১৯৭১
প্রিয় জনাব আহমেদ,
জাতিসংঘের মহাসচিবের পক্ষে আমি,শেখ মুজিবর রহমানের বিচার প্রসঙ্গে ১৮ আগস্ট, ১৯৭১ তারিখে আপনার প্রেরিত তারবার্তার প্রাপ্তি স্বীকার করছি।
শেখ মুজিবর রহমানের পরিণতি মহাসচিবের জন্য উদ্বেগের বিষয়,তার আসন্ন বিচার সংক্রান্ত রিপোর্টের প্রেক্ষিতে ১০ আগস্ট ১৯৭১ তারিখের সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘের মুখপাত্র মহাসচিবের প্রতিক্রিয়া ব্যাখ্যা করেছেন।আপনার অবগতির জন্য ঐ বিবৃতির একটি অনুলিপি সংযুক্ত করা হল।
যাই হোক,মহাসচিব দুঃখের সাথে এই নির্দিষ্ট বিষয়ে আপনার অনুরোধে রাজি হতে পারছেন না।বর্তমান পরিস্থিতির বাড়াবাড়ি রোধ করার লক্ষ্যে তিনি তার দক্ষতা ও ক্ষমতার মধ্যে থেকে কাজ করছেন এবং যতদূর সম্ভব তিনি কাজ করে যাবেন।আমি নিশ্চিত যে আপনি বুঝবেন এই কাজ প্রয়োজনীয় সতর্কতা এবং প্রচার ছাড়াই করতে হবে।
আন্তরিকভাবে আপনার
ব্রায়ান ই. উরকহার্ট
পরিচালক
বিশেষ রাজনৈতিক সম্পর্ক বিষয়ক
সহকারী মহাসচিবের কার্যালয়,
জনাব মউদুদ আহমেদ
৪-এ পাম এভিনিউ
মেফেয়ার রোড,কলকাতা
ভারত
—————————
জাতিসংঘ
প্রকাশনা বিভাগ
সাধারন তথ্য সংক্রান্ত অফিস
জাতিসংঘ,নিউইয়র্ক.
(মিডিয়ায় ব্যবহারের জন্য-অফিসিয়াল রেকর্ড নয়)
নোট নং. ৩৬৭৮
১০ অগাস্ট ১৯৭১
সংবাদদাতাদের প্রতি নোট
শেখ মুজিবর রহমানের আসন্ন বিচার সম্পর্কে পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্ট সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে জাতিসংঘের একজন মুখপাত্র জানান যে,
“মহাসচিব মনে করেন যে এটি খুবই স্পর্শকাতর এবং সংবেদনশীল বিষয় যা একটি সদস্য দেশের – এই ক্ষেত্রে পাকিস্তানের বিচার ব্যবস্থার এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে। মানবিক দৃষ্টিকোন সেই সাথে রাজনৈতিক দৃষ্টিকোন থেকেও এই বিষয়টি অনেক পক্ষের জন্য বিশেষ আগ্রহ ও উদ্বেগের। প্রায় প্রতিদিনই পূর্ব পাকিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন সকারের প্রতিনিধিগণ মহাসচিবের নিকট গভীর উদ্দেগ প্রকাশ করেছেন এবং এখানে একটা সাধারণ ধারণা রয়েছে যে এক ধরনের বোঝাপড়ায় না পৌঁছালে এই অঞ্চলে শান্তি ও স্বাভাবিক অবস্থা প্রত্যপর্ণ করা কঠিন হবে। অনেক প্রতিনিধির মত মহাসচিবও মনে করেন যে শেখ মুজিবর রহমানের পরিণতি সম্পর্কিত যে কোন সিদ্ধান্তে অবধারিত ভাবে পাকিস্তানের সীমার বাইরে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে।”