শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর হিসেবে নিয়োগকৃত ডঃ মালিকের নিয়োগ সম্পর্কিত পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রেস বিজ্ঞপ্তি | বাংলাদেশ সরকার, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় | ২ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১ |
বাংলাদেশ প্রেস বিজ্ঞপ্তি
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ মিশন
৯, সার্কাস এভিনিউ
কলিকাতা-১৭
(স্বীকৃতি সহ বা স্বীকৃতি ছাড়া পূর্নগঠন করা যেতে পারে)
_____________________________________________________________________________________________
নং. পি আর /৪৩ মুজিবনগর
২ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১
‘পরাজয়ের স্বীকৃতি’
বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ড. মানিকের সাক্ষাৎকারের উপর
১। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী খন্দকার মোশতাক আহমেদ বাংলাদেশের দখলকৃত অঞ্চলের শাসক হিসেবে ড. মানিকের সাক্ষাৎকার ‘পরাজয়ের
স্বীকৃতি’ হিসেবে আখ্যা দেন।
২। উল্লিখিত তারিখে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, স্বদেশদ্রোহী শ্রমিকসংঘের সমর্থক এবং বাংলাদেশের দখলকৃত অংশের শাসক ড. এ এম মালিকের সাক্ষাৎকারটি ইসলামাবাদের তথাকথিত সামরিক জান্তা বাহিনীর পরাজয়ের স্বীকৃতি। এটা স্পষ্ট যে টিক্কা খানের নির্মম হত্যা, লুটপাট, দহন যন্ত্রণা এবং ধর্ষণ বাংলাদেশের মাটিকে কলঙ্কজনক অধ্যায়ে পরিণত করেছে। হত্যাকারীর পতন হয়েছে এবং তার সাহসের মহীমা ভেঙে টুকরো টুকরো হয়েছে। সে একজন অসার এবং মাথা নিচু হওয়া নিন্দিত ব্যক্তি। জেনারেল ইয়াহিয়া খানের জন্য এটা স্পষ্ট বার্তা।
৩। এই উদ্দ্যেগকে পাকিস্তানি সামরিক জান্তা বেসামরিক শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠার চেষ্টা হিসেবে আখ্যা করে। এটা উল্লেখ্য যে, ইসলামাবাদের হত্যাকারীরা ‘বেসামরিক নিয়ম পুনরুদ্ধার’ জারি করে উপনিবেশে, পশ্চিম পাকিস্তানে নয়। ঔপনিবেশিক শাসন, স্বায়ত্ত্বশাসন থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। বেসামরিক শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা ২৫ মার্চ , ১৯৭১ এর আগের ইস্যু ছিল। জনগন সবাই আওয়ামী লীগকে শাসন এর জন্য নির্বাচন করেছিল। বেসামরিক শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা মানে হলে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের এবং হুকুম ছাড়া মানুষদের নিয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা।
৪। মি: মানিকের সাক্ষাৎকারটি ছিল বর্হিবিশ্বের চোখে ধুলো দেওয়া এবং বিভ্রান্তি সৃষ্টির একটা প্রচেষ্টা মাত্র। বাংলাদেশের জনগন এই ধরনের নাগরিক শাসন পুনর্গঠনের নকশা সম্পর্কে জানে। তারা এমন পুনর্গঠন দেখেছে ১৯৫৮ সালে আইয়্যুবএর অভ্যুত্থানের পর এবং ১৯৬৯ সালে ইয়াহিয়া ক্ষমতায় আরোহণের এরপর। যখন একটি উপনিবেশ সামরিক সরকার দ্বারা শাষিত হয় তখন তা তীব্র দুর্গন্ধযুক্ত হয়।
যখন একজন সামরিক গভর্নরের ঔপনিবেশিক শাসন বিদ্রূপপূর্ণ,দুর্গন্ধযুক্ত এবং লজ্জাজনক হয়ে উঠেছে,তখন সামরিক শাসকগন বাংলাদেশের সুবেদার হিসেবে একজন বেসামরিক মীরজাফর কে রোপণ করার চেষ্টা করছেন।এইবারও সামরিক শাসকগন ঔপনিবেশিক প্রশাসনের মূল নিয়ম ব্যবহার করেছেন।বিদেশী শক্তিগুলোকে সাহায্য ও সহযোগিতা প্রদানের জন্য বোঝানোর এই পরিচিত চেষ্টা এবার ফলপ্রসূ হবে না।
৫. ড. এ এম মালিক একজন বৃদ্ধ ব্যক্তি।তার অতীত সন্দেহজনক এবং কোন ভবিষ্যৎ নেই।এইদিকে তিনি বাংলাদেশের মাটিতে তার প্রভুদেরদ্বারা সংগঠিত সহ্যসীমার বাইরের অপরাধের কথা না শুনতে সম্মত হয়েছেন।তিনি দেয়ালের লিখন পড়তে অক্ষম কারন তিনি অধঃপতিত ও ভীমরতিগ্রস্থ।আমরা শুধু তাকে করুণা করতে পারি ।