শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
বাংলাদেশের ঘটনায় ইন্ডিয়ানা মিডওয়েষ্টার্ন কম্যুনিটির উদ্বেগ ও তৎপরতা সম্পর্কে প্রতিবেদন | জনাব মুহিতকে ইন্ডিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা এক বাড়ী মালিকের চিঠি | ২৬জুলাই,১৯৭১ |
ইন্ডিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয়
পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগ
সোয়ের্হন হল, পশ্চিম ১১৭
ব্লুমিংটন, ইন্ডিয়ানা ৪৭৪০১
জুলাই ২৬, ১৯৭১
প্রিয় মুহিত,
টেলি নংঃ
৮১২-৩৩৭-৩৭০৯
আশা করি পূর্ব পাকিস্তানে যে নজির বিহীন ঘটনা ঘটেছে তা সম্পর্কে আপনি সন্দেহাতীতভাবে অবগত আছেন। আক্ষরিক অর্থে বহুলোক বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং হাজার হাজার গ্রাম ভূমিস্যাৎ হয়ে গিয়েছে। প্রায় ৭ লক্ষ শরণার্থী ভারতে চলে গেছে এবং এদের অনেকে কলেরায় আক্রান্ত হয়ে ইতিমধ্যে মৃত্যুবরণ করেছে। ১০ থেকে ৩০ লক্ষ মানুষ অনাহারে জীবনযাওইন করছে। এমন কি মধ্যপাশ্চত্য সম্প্রদায়গুলো এ ব্যাপারে উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছে এবং স্থানীয়সম্প্রদায় যা চ্যান্সেলর, ডিন ও তিন থেকে চারটি বিভাগীয় চেয়ারম্যান দ্বারা গঠিত তারা বিভিন্ন সম্প্রদায় শিক্ষার্থী ও অনুষদ থেকে ইতিমধ্যেই বড় ধরনের অর্থ সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে । সাহায্যের আবেদন করে লেখা আমাদের চিঠি এবং পুস্তকেরর বিবরণ ৪টি সংবাদপত্র দ্বারা গৃহিত হয়েছে। সংবাদপত্রগুলো-তা ছাপাতে সম্মত হয়েছে।
আমি জানাতে খুবই আগ্রহী যদি, এটা সম্ভব কিনা, একই ধরনের একটি কমিটি গঠন করে আমাদের সম্প্রদায়ের কাছে থেকে অর্থ সংগ্রহ করা। এই বিশাল আকারের জনগোষ্ঠীর খুধা নিবারণ ও বস্ত্রের জন্য প্রচুর পরিমাণ অর্থ সহায়তা দরকার।
যদি আপনি সাহায্য করতে চান তবে ব্যাখ্যা দিন, নিঃসংকোচে আমাদের আবেদন চেয়ে লেখা চিঠিটা ব্যবহার করতে পারেন এবং মেইল সংবাদপত্র ও চার্চের যে সংগঠনগুলো আছে তাদের মাধ্যমে অনুরোধ করতে পারেন।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশান একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান যা আমেরিকা সরকারের অভ্যন্তরীণ রাজস্ব বিভাগ দ্বারা রেজিস্টার্ড হয়েছে। এটির সরাসরি সংযোগ রয়েছে-
১। অক্সফাম, দ্যা ব্রিটিশ রিলিফ অরগানাইজেশন।
২। ভারত সরকার।
৩। বাংলাদেশের প্রাদেশিক সরকার, যে কিনা পূর্ব পাকিস্তানে সরাসরি সহায়তা প্রদানের বিষয়টি অনুসন্ধান করেছিল। এর সঞ্চয়ী হিসাব বৈধভাবে চালু করা হয়েছিল তদারকির জন্য। যদি আপনি অর্থ সংগ্রহের জন্য প্রচারাভিযান শুরু করতে পারেন এই অ্যাসোসিয়েশান তোমাকে একটি প্রাপ্তি রশিদ সরবরাহ করবে। আমি ব্যক্তিগত ভাবে এই প্রতিষ্ঠানটিকে খুব ভালো ভাবে জানি।
একান্ত আন্তরিকতায়
স্বাক্ষরে
(এফ. বারি. মালিক)
দ্রষ্টব্য – আমি অবশ্যই ২২ আগস্ট ওয়াশিংটন আসবো এবং ২৩ আগস্ট চলে যাবো। আমি তোমার সাথে ১০ই আগস্ট থাকবো। আমার টেলিফোন (৮১২) ৩৩২-৫৯৮৫। আমি এখানে ১৯৭১ সালের ১৬ই আগস্ট পর্যন্ত থাকবো।
সাহায্যের জন্য আবেদন
*ওয়াশিংটন পোস্টঃ “পূর্ব পাকিস্তানের গত নভেম্বরে হওয়া সাইক্লোন এবং সামুদ্রিক জোয়ারের কারণে এবং গৃহযুদ্ধের ফলে খাদ্য বন্টন সাময়িকভাবে বন্ধ ছিল। এটি আজ স্থানীয় কর্মকর্তারা বলছে। প্যারিসে ১১ জাতি ত্রান কার্যক্রমের সাথে যুক্ত প্রতিনিধি দল আশঙ্কা করেছিল যে, প্রায় ৭৪ লক্ষ বাসিন্দা যার ৩০ থেকে ৬০ লক্ষ পূর্ব পাকিস্তানি ক্ষুধায় মারা যেতে পারে। ( মে ১, ১৯৭১)।
তখন পর্যন্ত ভারতের মোট জনসংখ্যার ৭ লক্ষ উদ্বাস্তু ছিল যার হাজার হাজার লোক কলেরাতে মারা গিয়েছিল এবং যদি ছড়িয়ে পড়ে তবে তবে ১০ হজারেরও অধিক লোক মারা যেতে পারে। কংগ্রেশনাল জরিপ নির্দেশ করেছে যে, দুর্ভিক্ষের একটি সুস্পষ্ট সম্ভবনা যাতে ১০ থেকে ২০ লক্ষ মানুষ মারা যেতে পারে।
*”লাইফ ম্যাগাজিনের শিরোনাম”
তারা এত দ্রুত মারা যাচ্ছে যে আমরা গণনা করতে পারছি না। (জুন ১৬,১৯৭১)।
*”নিউজ উইক প্রতিবেদন”
“সেখানে যা ঘটেছিল তা সম্পর্কে আমার কোন সন্দেহ ছিল না” (জুন ২৮,১৯৭১)।
*কংগ্রেস্ম্যান গ্যালাঘেরঃ চেয়ারম্যান (হাউজ সাবকমিটি অন এশিয়ান এফোয়ারিস)।
১৯৭১ সালের ১০ই জুন, ঐ অঞ্চল পরিদরশন করে আসার পর কংগ্রেস্ম্যান গ্যালাঘের (চেয়ারম্যান, হাউজ সাব কমিটি অন এশিয়ান এফোয়ারিস) তার হাউজে বলেন-
“আমাকে বলতে দিন যে, খুবই খারাপ যা আমি দেখেছি। বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক হাউজ কমিটিতে ১২ বছর চাকুরির অভিজ্ঞতায় আমি ভেবেছিলাম যে, গণহত্যা, নৃশংসতা ও অবর্ণনীয় মানসিক ভোগান্তির বর্ননা তুলে ধরা হয়েছিল তা অতিরঞ্জিত কিন্তু এখন আমি সহকর্মীদেরকে বলতে পারি, যদি সে রকম কিছু হয়ে থাকে তা ঐ রিপোর্টে ছিল অস্পষ্ট”।
তিনি শেষ করেন “বন্যা, সাইক্লোন এবং বর্বর নিষ্ঠুরতা যে লাশের স্তুপ ইতিমধ্যে পূর্ব পাকিস্তানে তৈরি করেছে তা দীর্ঘ হওয়ার আগেই বিশ্ববাসীকে আরেকটি বড় ধরনের দুর্যোগ প্রতিহত করার উদ্যোগ নিতে হবে”।
বিশ্বব্যাংকের অফিসিয়াল প্রতিনিধির প্রতিবেদনে বর্ণনা করা হয়েছে, “ কুষ্টিয়া শহরটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মত জার্মানির কোন শহরের ন্যায় মনে হচ্ছিল যেখানে বোমা বিস্ফোরণের কারণে প্রায় ৯০ শপ্তাংশ ঘর, দোকান, ব্যাঙ্ক এবং অন্যান্য দালান সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল এবং ৪ থেকে ৪০ হাজার লোক চরম দূর্দশার মধ্যে পড়েছিল। বস্তুত ঘর বাড়ি এবং দালানকোঠার যে ধ্বংস সেটি ১৯৪৪ সালের আরেকটি আরহেম শহরের কথা মনে করিয়ে দেয়।
(নিউইয়র্ক টাইমস, জুলাই ১৩, ১৯৭১)
*দ্যা ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অন ইউনিভার্সিটি ইমারজেন্সি এপিলসঃ
আমরা চুপ থাকতে পারছি ন যখন “কিছু পণ্ডিতদের মন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাচ্ছে রক্তাক্ত গণহত্যার কারণে এবং তাদের স্বতন্ত্র যে সংস্কৃতি তা ধ্বংসের হুমকির সম্মুখীন”।
এ আবেদনটি সাক্ষরিত হয়েছিল ১০০ জনেরও অধিক পন্ডিত যারা বিভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শে বিশ্বাসী (ই.জি মিল্টন ফ্রিডম্যান, বিগনিট ব্রিজিজনস কি, রিচার্ভ গার্নার, এডউইন রইচারসার সাবেক জাপানি রাষ্ট্রদূত, যুক্তরাষ্ট্র) এবং সাতজন নোবেল বিজয়ী দ্বারা (এইচ.এ বিথা ডব্লিউ হেইসেনবার্গ, টি.ডি লি, আই.আই রবি, সি. টোয়েনস, এইচ. সি ঊড়ি এবং হি.পি উইংগার)
# ব্রিটিশ পার্লামেন্টে আনুষ্ঠানিক দ্বিপাক্ষীয় প্রতিনিধি বলেছিলেন “আমরা দেখেছি শিশুদের যাদেরকে গুলি করা হচ্ছে এবং আমরা দেখেছি রাস্তার ধারে লোকজন অনাহারে মরে পড়ে আছে”। (দ্যা টাইমস, লন্ডন, জুলাই ২, ১৯৭১)
# সিনেটর কেনেডী হাউস কমিটির সামনে উল্লেখ করেছে, “পরিস্থিতি এতটাই বিপজ্জনক যা আজ লক্ষাধিক মানুষের বেঁচে থাকার আশা ব্যক্ত করা কে মৃত্যুর ভিড়ে দুঃস্বপ্নে পরিণত করবে যদি না তাৎক্ষণিক ভাবে এসকল লোকেদের সাথে মিলিত হয়ে তাদের প্রয়োজনীয় সামগ্রীর ব্যবস্থা করা হয়”।
যখন আমরা ৭ লক্ষ শরণার্থী কে সাহায্য করতে পারছি না অথবা গণনাকৃত ১০ থেকে ৩০ লক্ষ ক্ষুধার্ত কে, আমরা তখন কিছু সংখ্যক জীবনকে বাচাতে পারি।
আমরা আপনাদের নিকট উদার হয়ে সহায়তার আবেদন জানাচ্ছি।
জর্জ বুলেট জর্জ নেকমিকিয়াম
রজার সি.বাক রজার নিউটন
বিরাম কার্টার স্কুইলার অটসন
জেমস্ কাউন্সিলমান জাম্মালামাদাকো রাও
ক্র্যাঙ্ক ফ্রেঞ্জ ডেভিড রজার্স
ডিন ফ্রেসার মেরি সেসফ্রিস
জুলিয়াস জেটম্যান ফিলিপ স্মিথ
এ্যালেন গ্রাইমকো লিও সল্ট
হারম্যান হার্ডসন জর্জ স্প্রিংগার
রালফ জনসন জেমস্ সুইটহার্ট
বাড়ী মালিক রিচার্ড ইয়ং
ফ্র্যাউক ম্যাককোলেকি
আপনার অনুদান শুল্কমুক্ত
দয়া করে চেকটি বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন মধ্যপ্রাচ্যের সাথে মিলিয়ে নিন।
উল্লেখ করুন যদি এটি এককালীন বা মাসিক হয়ে থাকে।
বন্ধকদাতাও মেইলঃ
ড. জুলিয়াস জারম্যান
স্কুল অফ ল (আইন বিভাগ)
ল বিল্ডিং (আইন ভবন)
ইন্ডিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয়
ব্লুমিংটন, ইন্ডিয়ানা ৪৭৪০১