You dont have javascript enabled! Please enable it!
শিরোনাম সূত্র তারিখ
বাংলাদেশ স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা সেল ১৬-৯-১৯৭১

 

বাংলাদেশ স্বেচ্ছাসেবক দল

১) ভূমিকাঃ
বাংলাদেশ থেকে ভারত যাওয়া বিশাল সংখ্যক শরণার্থীদের খাদ্য, চিকিৎসা এবং বাসস্থান পরিস্থিতি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ভারতীয় সরকারী ত্রাণ সংস্থা পরিস্থিতির সাথে খাপ খাইয়ে নেয়ার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে এবং শরণার্থীদের মৌলিক চাহিদাগুলো মেটাবার প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছে।
শরণার্থী শিবিরের খাদ্য এবং আবাসন পরিস্থিতি যতই সংগঠিত হচ্ছে এবং এর সাথে সম্পর্কিত সমস্যাগুলোকে নিয়ন্ত্রণে আনা হচ্ছে, শরণার্থীদের নৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মান তত দ্রুত নামছে এবং বাসিন্দারা মনে করছে যে তারা একরকমের উদাসীনতার মাঝে পরে রয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ স্বেচ্ছাসেবক দল একটি কার্যক্রম শুরুর জন্য কাজ করে যাচ্ছে শরণার্থী শিবিরের মানুষদের নৈতিকতা পতন থেকে সাহায্য করতে। এমনটা বিশ্বাস করা যাচ্ছে যে, ত্রাণ কার্যক্রম আরও বেশি কার্যকর ও অর্থপূর্ণ হবে যদি এর সাথে নৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং শিক্ষাগত কার্যক্রম সমন্বিত করা যায়।

২) উদ্দেশ্যঃ
ক) এর উদ্দেশ্য হচ্ছে শরণার্থীদের নৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং শিক্ষাগত কার্যক্রমের মাধ্যমে নিশ্চিত পতনের হাত থেকে রক্ষা করা। এই লক্ষ্যে প্রতিটি শরণার্থী শিবিরে স্বেচ্ছাসেবকদের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক দল থাকতে হবে, যারা নিযুক্ত হবে কেন্দ্রীয় সংস্থা দ্বারা। প্রতিটি ক্যাম্পের স্বেচ্ছাসেবকেরা দায়ী থাকবেঃ
(অ) ক্যাম্পের বাসিন্দাদের সুযোগ-সুবিধা দেয়া এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রিতি বজায় রাখা,
(আ) শরণার্থীদেরকে শিক্ষাগত ও কারিগরি সেবাদান,
(ই) শরণার্থীদেরকে নৈতিক, সাংস্কৃতিক, সামাজিক এবং জাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ করা,
(ঈ) নারী কল্যাণে (নারী স্বেচ্ছাসেবকদের তত্ত্বাবধানে)- তরুণীদের নৈতিক, মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্য বিষয়ে শিক্ষাদান। মায়েদের গর্ভকালীন এবং জন্মদান পরবর্তী সেবা, বিনোদন; এবং সেলাই, এম্ব্রয়ডারি প্রশিক্ষণ।
উ) শিবিরের শিশুদের জন্য পুষ্টি সরবরাহ কর্মসূচি পালন করা
খ. স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গঠন করা।
গ. রোগ এবং দুর্ভিক্ষ নিরোধের জন্য ঔষধ ও ত্রাণ সংগ্রহণ।
ঘ. বাংলাদেশ থেকে আগত পরিবারদের জন্য সুবিধা প্রদান।
ঙ. শিবিরে স্বাস্থ্য সেবা প্রদান।

৩) কমিটি ও সভাঃ
ক. স্বেচ্ছাসেবকদের একত্রে দলবদ্ধ হয়ে কাজ করা এবং সকল কার্যক্রমের তথ্য সংরক্ষণ করে রাখা উচিত। বিস্তারিত কর্মসূচি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করে পরে তা সভায় গ্রহণ করা যেতে পারে। কাজের অগ্রগতি মূল্যায়ন করা এবং এই সম্পর্কিত আলোচনা সপ্তাহে একবার অন্তত অনুষ্ঠিত হবে। এধরনের সভা করার কার্যধারা বজায় রাখতে হবে।
খ. সব স্বেচ্ছাসেবকদের বিভিএমসি কমিটির সদস্য বলে অভিহিত করা হবে। স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে শিবিরের বাসিন্দাদের প্রতিনিধিত্ব করবে। কিছু অ-স্বেচ্ছাসেবক বাসিন্দা নির্বাচিত সদস্যদের সাথে কাজ করতে পারবে। শিবিরের স্বেচ্ছাসেবক প্রধান কমিটির সভাপতি হতে পারবেন।
তিনি অন্তত সকল কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত থাকবেন। স্বেচ্ছাসেবকদের ভেতর থেকে যেকোনো একজন সহকারী হিসেবে কাজ করবেন।

৪) আয়োজকঃ
সংগঠক এলাকার কর্মসূচি ইতিমধ্যে শুরু করা যেতে পারে।
৫) স্বেচ্ছাসেবকঃ
ক. শিবিরে বসবাসকারীদের মধ্যে থেকে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করতে হবে। বিভিন্ন জায়গা থেকে অথবা ট্রানজিটের মাধ্যমে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা যাবে। কিন্তু একবার নিয়োগ হয়ে গেলে তাকে অবশ্যই সেই শিবিরে অন্য সবার সাথে থাকতে হবে। খ. প্রয়োজনীয় নির্দেশ সময় সময় কেন্দ্রীয় সংগঠন থেকে জারি করা হবে। কিছু স্বেচ্ছাসেবক চাহিদা অনুযায়ী স্থানীয় শিবিরের প্রয়োজনীতা অনুসারে তাদের কর্মসূচি প্রণয়ন করবে এবং কাজ করবে।
গ. স্বেচ্ছাসেবকদের শিবিরে থাকার ব্যবস্থা দেওয়া হবে। তারা শিবির হতে বিনামূল্যের রান্না খাদ্য গ্রহণ করবে যেখান থেকে খাদ্য বিতরণ করা হয়। অন্যান্য শিবিরে তারা শুষ্ক খাবার বিনামূল্যে পাবে। তারা স্বল্প হাত খরচ পেতে পারেন।
ঘ. স্বেচ্ছাসেবকেরা সামাজিক কাজ এবং পুনর্বাসনের মত গুরুত্বপূর্ণ কাজের প্রশিক্ষণ পাবেন।

৬/ সংগঠন:
কেন্দ্রীয়ঃ
পরিচালন পর্ষদঃ ম্যানেজিং কমিটি পরিচালন পর্ষদের নিয়োগ দিবেন। পরিচালন পর্ষদ সম্পূর্ণ আন্দোলন তদারকির দায়িত্বে থাকবেন। সাধারণত তারা বছরে এক অথবা দুইবার দেখা করবেন।
উপদেষ্টাঃ উপদেষ্টা তারাই হবেন যাদের বিশেষ আগ্রহ এবং অবদান থাকবে। উপদেষ্টা কর্তৃক নিয়োগ দেয়া যেতে পারে।
ম্যানেজিং কমিটিঃ ম্যানেজিং কমিটি সকল পরিকল্পনার দায়িত্বে থাকবেন এবং পরিকল্পনা ও পদ্ধতি প্রয়োগ করবেন। সকল পরিচালন পর্ষদ, সকল উপদেষ্টা এবং সকল সংগঠনের প্রতিনিধি যারা BVSC এর সাথে সম্পর্কিত অথবা একসাথে কাজ করে, তাদের নিয়ে ম্যানেজিং কমিটি গঠিত হবে। ম্যানেজিং কমিটি মাসে একবার দেখা করবে। ম্যানেজিং কমিটি একজন চেয়ারম্যানকে নিয়োগ দিবে।
নির্বাহী কমিটিঃ নির্বাহী কমিটি সংগঠনের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডের দায়িত্বে থাকবে। এটি গঠিত হবে চেয়ারম্যান, কমিটিকে সেবা দিতে ইচ্ছুক পরিচালকবৃন্দ, সাবকমিটির আহবায়ক ও সাবকমিটির অর্থবিষয়ক সদস্যদের দ্বারা। এটি সর্বোচ্চ তিনজনকে সহযোগিতার্থে নিয়োগ দিবে।
সাবকমিটিঃ ম্যানেজিং কমিটি সাবকমিটিকে নিয়োগ দিবে কিছু স্পেশাল কাজের জন্য। তারা নিম্ন বর্ণিত কাজের জন্য নিয়োজিত থাকবে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী তাদেরকে অন্যান্য কাজে নিয়োজিত করা হবে।
1) ক্যাম্প উপকমিটি (শিক্ষা, স্বাস্থ্য, প্রশিক্ষণ ইত্যাদি সহ)
2) ফাইন্যান্স
3) রেডিও প্রোগ্রাম
4) নারী-কল্যাণ

স্থানীয় প্রশাসনঃ ক) স্বেচ্ছাসেবকদের যতগুলো ক্যাম্পে সম্ভব ততগুলো ক্যাম্পে নিয়োগ দেওয়া হবে এবং বিভিন্ন ক্যাম্পে তাদেরকে বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত করা হবে। একজন স্বেচ্ছাসেবককে ইনচার্জ পদবী দেওয়া হবে।
খ) একজন ক্যাম্প সংগঠককে সার্বিক তদারকির জন্য একজনের বেশি(কিন্ত কোনো অবস্থাতেই দশজনের বেশি নয়) লোককে নিয়োগ দিতে পারবে।
গ) অঞ্চল সংগঠকঃ যে সকল ক্যাম্প এলাকায় এরিয়া সংগঠকের প্রয়োজন সেখানে তাদেরকে নিয়োগ দেয়া হবে। তারা ক্যাম্পের স্বাভাবিক কার্যক্রমের বাইরে কিছু হলে তা দেখাশুনা করবেন।

৭)হিসাব নিকাশঃ
এ) উপরের কার্যাবলীর জন্য শুধুমাত্র ফান্ড ও সম্পদ থেকে ব্যয় করা হবে, অন্যথায় নয়।
বি) সকল ব্যয়ের পরিপূর্ণ রেকর্ড রাখা হবে এবং মাস অন্তর তার হিসাব করা হবে।

সহযোগিতার ক্রম ও তার রুপরেখা
1. সহযোগিতার মূলনীতি – স্বেচ্ছাসেবিতা। স্বেচ্ছা আগ্রহের আলোকে নির্ধারিত হবে দলীয় কর্মকাণ্ড।
2. সমবায় আন্দোলনের ইতিহাস-Rochdale Pioneers – জার্মান নাগরিক এর অভিজ্ঞতা। সমাজতান্ত্রিক দেশগুলির মধ্যে সহযোগিতা (রাশিয়া. চীন. যুগোস্লাভিয়া), ভারত ও পাকিস্তান এর মধ্যে সহযোগিতা
3. বাংলাদেশে সমবায় অভিজ্ঞতা – ১) কুমিল্লা প্রস্তাব ২)চট্টগ্রাম আন্দোলন
4. সমবায়ের প্রকারভেদ
a) সমবায় পরিষেবা। b) ভূমি সমবায় (সমষ্টিগত চাষ বনাম যৌথ চাষ) c) বিপণন সমবায় d) ঋণ সমবায় e) শিল্প সমবায় f) হাউজিং সমবায় g) মৎস্যজীবী সমবায় h) সমবায় তাঁতি i) ভোক্তা সমবায় j) অন্যান্য।

5. কৃষি সমবায় -বিশেষ বৈশিষ্ট্য a. গ্রাম থেকে শীর্ষ পর্যন্ত তাদের কাঠামোগত প্যাটার্ন b. বহুমুখী উদ্দেশ্য c. সমবায়ের মাধ্যমে গোষ্ঠীর উন্নয়ন d. সমবায় এবং পঞ্চায়েতের এবং অন্যান্য স্থানীয় সংস্থাগুলোর মধ্যে সম্পর্ক।
6. সমবায়ীদের ম্যানেজমেন্ট i. পরিচালন পর্ষদ বা ব্যবস্থাপনা কমিটি ii. সাধারণ সভা iii. কর্মীদের উপর সদস্যদের নিয়ন্ত্রন iv. হিসাব রক্ষণাবেক্ষণ v. নিয়মিত নিরীক্ষণ.

7. প্রশিক্ষণ a) পরিচালকমণ্ডলী b) সাধারণ সদস্য c) স্টাফ.

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!