You dont have javascript enabled! Please enable it!
শিরোনাম সূত্র তারিখ
গ্রামীন প্রতিষ্ঠানসমূহ সাংগঠনিক কাঠামো ও প্রশিক্ষন সিলেবাস বাংলাদেশ সরকার, পরিকল্পনা সেল …………..১৯৭১

 

১…সাংগঠনিক অবকাঠামো

১) গ্রাম পঞ্চায়েত
এই অংশটি পল্লী অঞ্চলের সাথে যোগাযোগ রাখবে এবং কমিটির নাম সাধারণভাবে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য অনুসারে পঞ্চায়েত রাখা হবে।
গঠনঃ সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে সভাপতি এবং সদস্যদল নির্বাচন করা হবে, জনসংখ্যা অনুযায়ী ৩ থেকে ৭ জন।
ভূমিকাঃ পঞ্চায়েত গ্রাম সম্পর্কিত সকল প্রশাসনিক বিষয়ে মুখ্য ভূমিকা রাখবে। তদুপরি পঞ্চায়েত জাতীয় নীতিমালার বাধ্যবাধকতার ভেতর বিচারিক ভূমিকা রাখবে।
কার্যক্রমঃ ………
২) ইউনিয়ন পরিষদ
গঠনঃ পরোক্ষ। গ্রাম পঞ্চায়েত সভাপতিগণ একজন পঞ্চায়েত নেতাকে সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করবেন যিনি গ্রাম পঞ্চায়েতের দায়িত্ব ছেড়ে দেবেন।
ভূমিকাঃ জেলা বোর্ডের নির্বাহী বিভাগ হিসেবে ইউনিয়ন পরিষদের আওতাভুক্ত একাধিক গ্রামের ভেতর ব্যবস্থাপনা এবং তদারকির কাজ করবে।
কার্যক্রমঃ ………
৩) থানা বোর্ড
গঠনঃ পরোক্ষ। ইউনিয়ন পরিষদ সভাপতি একজন থানা বোর্ড চেয়ারম্যান নির্বাচন করবেন।
ভূমিকা ও কার্যক্রমঃ জেলা বোর্ডের নির্বাহী বিভাগ হিসেবে থানা বোর্ডের আওতাভুক্ত একাধিক ইউনিয়নের ভেতর ব্যবস্থাপনা এবং তদারকির কাজ করবে।
৪) জেলা বোর্ড
গঠনঃ সদস্যগণ সরাসরি নির্বাচিত হবেন এবং তারা একজন সভাপতি নির্বাচন করবেন।
ভূমিকা ও কার্যক্রমঃ স্থানীয় সরকারের আওতায় জেলাভুক্ত গ্রাম সমূহের সকল পরিকল্পনা, নির্বাহী, এবং প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

২…পল্লী ক্যাডার পুনর্গঠন

১) চাহিদাঃ প্রশিক্ষিত মাঠ পর্যায়ের কর্মীগণের মূল লক্ষ্য যুদ্ধের সময় গেরিলা বাহিনীর আর্থ-সামাজিক ‘নিরাপদ ভিত্তি’ নিশ্চিত করা হলেও যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশে আর্থ-সামাজিক পুনর্গঠনে তাদের ভূমিকা আরো বহুল ও ব্যাপক হবে। যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশের পুনর্গঠনকে সামনে রেখে তৃণমূল পর্যায়ের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, প্রশিক্ষিত তৃণমূল পর্যায়ের কর্মীরা পল্লী পুনর্গঠনের মূল চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করবে।
২) পাঠ্যসুচীঃ তৃণমূল কর্মীদের বর্তমান পাঠ্যসুচী (সংযোজিত) তাই চালিয়ে যাওয়া যেতে পারে এবং ক্রমান্বয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে উপস্থিত হলে পাঠ্যসুচীতে যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। পাঠ্যসুচী প্রয়োজন অনুযায়ী বোর্ডের দ্বারা পর্যবেক্ষণ করা হবে।
৩) প্রশিক্ষণ শিবিরঃ বর্তমান ধাঁচের স্থায়ী প্রশিক্ষণ শিবির গ্রহনযোগ্য। তাদের অনুপস্থিতিতে মুক্তাঞ্চলের স্কুল/কলেজ প্রাঙ্গণে সাময়িকভাবে ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
৪) অর্থায়নঃ বর্তমান বাজেটের প্রতি মাসে প্রশিক্ষণ কর্মী প্রতি ২০০ শত টাকা ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে।
৫) ভর্তিঃ
ক) তাৎক্ষণিকঃ ষষ্ঠ শ্রেনী এবং তধোর্ধ্ব যুবক, গ্রামে স্থায়ী, অন্তত পল্লী অঞ্চলে সাময়িকভাবে কাজ করতে আগ্রহী স্বেচ্ছাসেবীগণ প্রার্থনীয়।
খ) দীর্ঘমেয়াদঃ মেট্রিক পরীক্ষার্থীগণ যারা পরীক্ষা দেবার পর ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করবে এবং যারা গ্রামে স্থায়ীয়ভাবে বা অন্ততপক্ষে প্রশিক্ষণের পর দুই মাস থাকবে তাদের নিয়মিত ভিত্তিতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
৬) ক্যাডার শ্রেনীবিন্যাসঃ
(i) তৃণমূল কর্মী, অস্থায়ী কর্মী, অথবা যাদের গভীর চেতনাবোধ জাগ্রত হবে না তাদের প্রশিক্ষণ শেষে পরীক্ষা নেওয়া হবে।
(ii) (ক)পুনর্গঠন দলঃ শিক্ষানবীশ (এবং প্রশিক্ষণ শেষে নির্বাচিত সম্ভাব্য ‘দলনেতা’), মেট্রিক সমানের পরীক্ষা উত্তীর্ণ, গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দাদের গভীর চেতনাবোধ পরখ করা হবে।
(খ)পুনর্গঠন দল – সদস্যঃ এক বছর পল্লী বা মুক্তাঞ্চলে কাজ করার পর কার্যকরী জরিপের ভিত্তিতে (নীচে দেখুন)।
(গ) পুনর্গঠন দল – জ্যেষ্ঠ্যঃ পুনর্গঠন সদস্যদের ভেতর থেকে শ্রেষ্ঠ হিসেবে নির্বাচিত, থানা পর্যায়ের সম্ভাব্য সংগঠক।

৩…পল্লী পুনর্গঠন বোর্ড

(ক) বোর্ডঃ
একটি উচ্চ পর্যায়ের এবং উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কমিটি প্রয়োজন যারা প্রকল্পের কাজ শুরু এবং তত্ত্বাবধানের কাজ করবে, সাথে গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন প্রকল্পের পরিকল্পনাকারীগণ পরিকল্পনা সফলভাবে কার্যকর করার দায়িত্ব পালন করবেন। বোর্ড নিম্নলিখিত বিন্যাসে সাজানো যেতে পারেঃ
১) সভাপতিঃ ড মোজাফফর আহমদ চৌধূরী
২) সদস্যগণঃ ৩ জন এম, এন, এ, এমপি
১ জন সদস্য, প্রশিক্ষণ
১ জন সদস্য, জরিপ এবং স্থানীয় কমিটির কার্যকর নিরীক্ষক
১ জন সদস্য সচিব

(খ) প্রারম্ভঃ জেলা এবং থানা সংগঠকগণ (তদসংগে কৃষিবিদ, চিকিৎসক, এবং প্রকৌশলীগণ) প্রাথমিকভাবে সদস্য সচিবের অধীনে মিডিয়ার সাহায্যে ব্যাপক প্রচারের মাধ্যমে প্রকল্প শুরু করবেন এবং একই সাথে স্থানীয় সমিতি সমূহের (গ্রাম পঞ্চায়েত এবং জেলা পরিষদ) নির্বাচনে নির্বাচনী অফিসারের দায়িত্ব পালন করবেন। জেলা সংগঠক সদস্য সচিবের অধীনে কেন্দ্রীয় পাবলিক সার্ভিসের সদস্য হিসেবে কাজ করতে পারেন, থানা সংগঠক এবং অন্যান্যরা জেলা পাবলিক সার্ভিসে একীভূত হতে পারেন।

(গ) প্রশিক্ষণঃ শিবির প্রশাসক এবং প্রশিক্ষণ কর্মীরা সদস্য প্রশিক্ষণের অধীনে কাজ করবেন।

(ঘ) জরিপ নিরীক্ষণঃ থানা জরিপ এবং নিরীক্ষণ কর্মীগণ সদস্য জরিপ নিরীক্ষণের অধীনে কাজ করবেন এবং নিয়মিত রিপোর্ট পেশ করবেন।

পাঠক্রমঃ
১) স্থানীয় সম্প্রদায় কি? স্থানীয় সম্প্রদায় উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব – উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য। স্থানীয় বাসিন্দাদের সম্পর্কে সাধারন তথ্য।
২) স্থানীয় সম্প্রদায় পরিবর্তনের বর্তমান সংগঠন – ভবিষ্যত বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির সংগঠন। স্থানীয় সম্প্রদায় উন্নয়ন জাতীয় উন্নয়নের চাবিকাঠি।
iii) উন্নয়নকাজ, কৃষিকাজ, পশুপালন, বন, মৎস্য, কৃষি বাজারজাত, উন্নয়নমূলক সমবায়, সংরক্ষণ সমবায় এবং মৎস্য বিপণন সমবায়- প্রাথমিক ঋণদান সমিতি। i) শিল্প, শিক্ষা, সামাজিক শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পানি সরবরাহ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, আবাসিক নির্মাণ, সড়ক উন্নয়ন, অনগ্রসর শ্রেণীর মঙ্গল ইত্যাদি। v) পৃথক ভাবে না হয়ে পুরো গ্রাম সম্প্রদায়ের অর্থনৈতিক ও সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক উন্নয়ন সাধনসহ সুসংহত উন্নয়ন সাধন। vi) স্ব-নির্ভরতা এবং সমবায় হবে একটি পদ্ধতি- সম্প্রদায়ের উন্নয়ন, সাধারণ কল্যাণ ও জীবনধারণের। vii) বাঙালি জাতীয়তাবাদ, তার লক্ষ্য এবং বিষয়বস্তু ও সমষ্টিগত উন্নয়ন, বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতা। viii) জাতীয় সম্পদ সৃষ্টির সুরক্ষা এবং উৎপাদনশীল শ্রমের সদ্ব্যবহার, অলস শ্রম বর্জন, বেকার সমস্যার সমাধান। ix) নিরাপত্তা ও সম্প্রদায় আনুগত্য, সংহতি, ঐক্য, বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক- শান্তি ও শৃংখলার জন্য। X) নারী ও সমাজ- সমাজ এবং গৃহায়ন, গৃহস্থালি বিষয়াবলী, ও নারী এবং অক্ষমদের জ্ঞানের অভাব, স্বল্প অবসর এবং শিক্ষা ইত্যাদি। xi) জনপদ এবং নতুন জাতি- মন, শান্তি ও সমৃদ্ধ জীবন। প্রশিক্ষক কোর্সের জন্য পাঠ্যক্রম সাধারণ সিলেবাস এ) জাতীয় অর্থনীতিতে গ্রাম এবং গ্রামের জনসাধারনের উন্নয়নের গুরুত্ব। গ্রামবাসীর সংখ্যা, জনসংখ্যা, এলাকা, জনসংখ্যার ঘনত্ব, কৃষিকাজ, কুটিরশিল্প গ্রামের তথা জাতীয় আয়ের উৎস ও গ্রাম ও শহরের জনসংখ্যার মাথাপিছু আয় নিয়ে তুলনামূলক গবেষণা। বি) জাতীয় অর্থনীতির উন্নয়নে গ্রাম্য শ্রমের প্রতুলতা- শ্রমের সদ্ব্যবহার, শ্রম সমন্বয়, শিক্ষা এবং শ্রমের প্রশিক্ষণ। সি) গ্রামবাসীদের সমবায়, সমবায় সমিতি প্রত্যয়ন। ডি) গ্রাম পঞ্চায়েত স্থানীয় সরকার হিসেবে। গণতান্ত্রিক উপায়ে পঞ্চায়েত প্রত্যয়ন, পঞ্চায়েতের ভূমিকা শান্তি এবং শৃঙ্খলা বজায় রাখতে, পঞ্চায়েতের সুবিধা এবং লাভ, ন্যায় বিচার এবং উন্নয়নমূলক কার্যক্রমে সহযোগিতা, পঞ্চায়েত জীবনের একটি সুশৃঙ্খল পদ্ধতি। ই) পঞ্চায়েতের কার্যাবলীঃ চোর, ডাকাত, দলত্যাগী এবং প্রতারক প্রতিরোধ ও দমন করতে গ্রাম বা প্রতিরক্ষাবাহিনী কঠোর সুশৃঙ্খলায় ব্যবহার করুন।
(ii) আইন, আদেশ ও ন্যায়- বিচার এর জন্য বাইরের সংস্থার উপর নির্ভরশীলতা বর্জন করতে সকল বিরোধ পরিষ্কার ও যথাযথ নিষ্পত্তি ও সমাধান করতে হবে। (iii) মালিক-শ্রমিক উৎপাদন বণ্টন, অনুশীলন, পর্যালোচনা করতে হবে সবক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতামূলক সম্মান প্রদর্শনে গুরুত্বারোপের জন্য (iv) গ্রামের সব জমি, পানি, শাকসবজি ও পশুসম্পদ ব্যবহার করে সমবেত শ্রমের মাধ্যমে সর্বোচ্চ খাদ্য উৎপাদন। (v) পাওয়া উৎসের দ্বারা স্থানীয়ভাবে প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন।

২. বেজ ওয়ার্কার্সঃ ——————— (i) বেজ কর্মীর সংস্থা এবং পরিচিতি- বেজ কর্মীর গুরুত্ব- গ্রাম উন্নয়ন- স্বনির্ভর গ্রামীণ অর্থনীতি ‘দূর্গ’ বাংলাদেশের গ্রামে এবং মাঠ পর্যায়ে বেজ কর্মীর ভূমিকা। (iii) বেজ কর্মীদের প্রকৃতি, জ্ঞান,চরিত্র, কঠোর শ্রমাভ্যাস, সক্রিয়করণ ক্ষমতা এবং কর্ম প্রক্রিয়া- বেস কর্মীদেরকে গ্রামবাসীর আস্থা অর্জন করতে হবে তাদেরকে সক্রিয় করার পূর্বে। (iii) যতটা সম্ভব কল্যাণ ও শক্তির নিমিত্তে সহজপ্রাপ্ত স্বাধীনতার রক্ষণাবেক্ষণ- অন্যথায় কল্যাণ, শক্তি এবং স্বাধীনতা নিজেরাই কলুষিত হবে। (iv) কল্যাণের পথ হিসেবে শেখ মুজিবের গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রের আদর্শ বুঝাতে বেস কর্মীরা জনগনকে উদ্বুদ্ধ করবে। ‘ইজম’ নিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্র হবে জনগনের স্থায়ী কল্যাণে আমাদের মৌলিক পদক্ষেপ- সামাজিক সহযোগিতা এবং গণতান্ত্রিক সরকার হবে সমাজের মূল ভিত্তি- জোচ্চুরদের দ্বারা কোন প্রতারণা এবং কলুষিত হওয়া নয়। (v) আত্মনির্ভরশীলতা- শ্রম- সমবায় ভিত্তিক গ্রাম পঞ্চায়েতের মাধ্যমে বেস কর্মীর সহায়তায় জনগনের মৌল পদক্ষেপ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে জোরদার করবে। গ্রামবাসী কল্যাণের এক মজবুত ভিত্তির উপর দাঁড়াবে। সকলে শান্তিতে বসবাস করবে। স্ব-রিযিক অর্থনীতিঃ ——————- (i) খাদ্য ও কৃষি চর্চা এবং আদিবাসী সম্ভাবনার বাংলাদেশের গ্রামে উন্নয়ন। খাদ্য নিয়ন্ত্রণ, বাঁধ, সেচ, সবুজ সার, গভীর চাষ, বীজ বপন, ফসল, ফল, শাকসবজি, হাঁস-মুরগী, দুগ্ধ, মাছধরা, ভূমি ও পানি প্রতিটি ইঞ্চি ব্যবহার। গ্রামে পোষাক ও আবাসন। গ্রাম স্বাস্থ্য পরিচ্ছন্নতা, নিষ্কাশন, স্বাস্থ্যবিধি, পানি পরিশোধন, মহামারী প্রতিরোধ হিসেবে মশা ও মাছি নির্মূল, প্রতিরোধক হিসেবে আদিবাসীদের প্রাথমিক চিকিৎসা ও নিরপেক্ষ ঔষধ প্রদানসহ অন্যান্য প্রবেশযোগ্য চিকিৎসা।
গ্রাম্য শিক্ষা –
গ্রাম্য যোগাযোগ-রাস্তা , পথ, ব্রিজ, জলপথ – তৈরী ও ব্যবস্থাপনা এবং শত্রুদের বিরূদ্ধে সেগুলোর ব্যবহার ।
গ্রাম্য সৌন্দর্য-সংস্কৃতি এবং বিনোদনমূলক কার্যক্রম – গ্রামীণ শিল্পকলা, কারুশিল্প, কুশলতা এবং শিল্প.

প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে প্রশিক্ষণার্থীদের অধ্যয়নের দিক নির্দেশনাঃ

১। কৃষিঃ
ক। বাংলাদেশের জাতীয় উন্নয়নে কৃষি বিষয়ে পরিচিতি – দেশ ও কৃষি অর্থনীতি – কৃষিজ প্রয়োজনীয়তা – মোট জনসংখ্যায় কৃষি নির্ভরশীলদের শতকরা হার – জাতীয় আয় , জিডিপি , এনএনপি এর উৎস হিশেবে প্রাথমিক ইন্ডাস্ট্রিসমূহ

খ। চাষাবাদের সনাতন পদ্ধতি এবং আধুনিক উন্নত চাষাবাদ – চাষাবাদের প্রাচীন পদ্ধতির ত্রুটি এবং আধুনিক বিজ্ঞানভিত্তিক চাষাবাদের সুবিধা – বিস্তৃত এবং নিবিড় চাষাবাদ ইত্যাদি

গ। সেচ – সারের প্রয়োগ – কীটনাশক এবং উন্নত প্রচলিত অনুশীলন – উন্নত বীজ – উন্নত চাষ এবং চারার পরিচর্যা ইত্যাদি

ঘ। বিভিন্ন খাদ্য শস্য- যেমন ধান , বোরো ধান আটা এর উৎপাদনের জন্য নির্দেশনা – ডাল, সবজী, উঠোনে চাষ ইত্যাদি

ঙ। উৎপাদিত পণ্যের গুদামজাত সংরক্ষণ – বাজারজাতকরণ – পণ্যের পরিবহন ও বিতরন – পোলট্রি, ডেইরি এবং এই সম্পর্কিত বিষয়াদি ।
চ। বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে আলোচনা এবং তার সমাধান – আমন্ত্রিত সব পরামর্শ-মতামত এর সঙ্গে সহযোগিতা

২। বুনন-শিল্প:
ক। কুটির শিল্পের গুরুত্ব – খাদ্যের পরেই কাপড়ের প্রয়োজনীয়তা – কাপড়ের মান – রঙ – নকশা ইত্যাদি
খ। সুতার সরবরাহ – রঙের সরবরাহ – রঞ্জক – কাপড়ের বিভিন্ন ধরনের পন্য যেমন শাড়ি , লুঙ্গী , গামছা ইত্যাদি
গ। তুলাজাত পণ্যের দাম – বাজারজাতকরণের সুবিধা ইত্যাদি
ঘ। সমস্যাসমূহ – সমস্যাসমূহ নিয়ে আলোচনা – মতামত এবং পরামর্শ ইত্যাদি

৩। মৎস্য শিকারঃ
ক। মৎস্য এবং মৎস্য শিকার বিষয়ে পরিচিতি – মৎস্য বাংলাদেশের মানুষের খাদ্যাভ্যাসে অতি প্রয়োজনীয় প্রোটিন যোগান দেয় – মৎস্য শিকারের কলাকৌশল ইত্যাদি
খ। মাছ ধরার জাল সরবরাহ করা-নৌকার জন্য আলকাতরা সরবরাহ করা- নদ নদী থেকে বিভিন্ন ধরনের মিঠা পানির মাছ উৎপাদন করা- মৎস্যচাষের গুরুত্ব ইত্যাদি।
গ। মাছ সংরক্ষণ এবং গুদামজাতকরণ। মাছ বরফজাতকরণ- বাছাইকরণ- বাজারজাতকরণ। প্রয়োজনীয় মূলধন- ঋণপ্রদান- ঋণ পরিশোধ ইত্যাদি। সমস্যা সংক্রান্ত আলোচনা- মতামত ও পরামর্শের ভিত্তিতে নির্দেশনা প্রদান।
৪। বয়স্ক শিক্ষাঃ
ক। ভূমিকা- বয়স্ক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা- নিরক্ষরতা অভিশাপ। সুন্দর জীবন এবং শিক্ষা: জাপান, পশ্চিম জার্মানি, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, সোভিয়েত রাশিয়া, ফ্রান্সসহ বিশ্বের অন্যান্য উন্নত দেশের প্রেক্ষিতে আমাদের দেশের তুলনামূলক আলোচনা- অর্থনৈতিক কার্যক্রমের সাথে সম্পর্ক আলোচনা।
খ। বাঙালি জাতীয়তাবাদ সংক্রান্ত আলোচনা- আধুনিক নগরায়ন- সংবাদপত্র পাঠ- কাব্যগ্রন্থ পাঠ- পারিবারিক চিঠিপত্র পাঠ- চরিত্র গঠন প্রভৃতি।
গ। সামাজিক এবং রাজনৈতিক শিক্ষা- প্রচেষ্টার মাধ্যমে কিভাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ উন্নতিলাভ করেছিল- তুরস্কের আধুনিকায়ন।
ঘ। সকল ধর্মের একতায় জোর দিয়ে ধর্মীয় শিক্ষার ব্যবস্থা- ধর্মীয় মূল্যবোধ এবং বাস্তব জীবনে নৈতিকতা- ধর্ম, মানবতা ও মানুষের মানসিক উন্নয়ন প্রভৃতি।
ঙ। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি- দাতব্য কাজ- ন্যায়বিচার- বিভিন্ন সংগ্রামের উদাহরণ যেমন কারবালার যুদ্ধ, বিশ্বজনবোধ- জাতি ধর্ম নির্বিশেষে নিঃস্বার্থভাবে সমাজের জন্য কাজ করা ইত্যাদি।
চ। সমস্যাবলি আলোচনা করা, দ্রুত অগ্রগতির লক্ষ্যে মতামত ও পরামর্শের জন্য আমন্ত্রণ করা।

৫। কুটির শিল্পঃ
ভূমিকা- বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কুটির শিল্পের গুরুত্ব- জাপান, চিন, ভারত, হল্যান্ড ও বাংলাদেশের কুটিরশিল্পের তুলনামূলক আলোচনা। কুটিরশিল্প এবং বেকার সমস্যার সমাধান- অলস শ্রমিক এবং কুটিরশিল্প।
ক। কুটিরশিল্পের প্রকৃতি- বেত ও বাঁশের তৈরি পন্য সামগ্রী- ঘানি এবং সরিষার তেল, খেলনা সামগ্রী, মৃৎশিল্প ইত্যাদি।
খ। অর্থ সংস্থান- বাজারজাতকরণ- সমস্যা নির্ণয়- উন্নতিকল্পে মতামত ও পরামর্শ প্রদান।

৬। স্বাস্থ্য শিক্ষা ও শোভাবর্ধনঃ
ক। পয়ঃপ্রণালী ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার গুরুত্ব- দৈনন্দিন জীবনের অংশ হিসেবে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা- পয়ঃপ্রণালী এবং টিকা প্রদান- বিশুদ্ধ পানীয়জলের ব্যবস্থাকরণ- পানি বিশুদ্ধিকরণ- মশা, মাছি নির্মূল- কলেরা, গুটি বসন্ত প্রভৃতি মহামারী রোগ প্রতিরোধক ব্যবস্থা গ্রহণ ইত্যাদি।
খ। আদর্শ গ্রাম- পরিচ্ছন্ন এবং খোলামেলা বাতাসসমৃদ্ধ বাড়ি- উত্তম নিষ্কাশন ব্যবস্থা- পুকুর, খাল প্রভৃতি পরিষ্কার করা- কচুরিপানা, অবাঞ্ছিত ঝোপঝাড় পরিস্কার করা। বৃক্ষরোপণ- বাগান করা- স্বাচ্ছন্দ্যকর ও ব্যয়বান্ধব গ্রামীণ গৃহ পরিকল্পনা গ্রহণ।
গ। সমস্যা সংক্রান্ত আলোচনা ও পরামর্শ প্রদানের জন্য আমন্ত্রণ করা।

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!