You dont have javascript enabled! Please enable it!
শিরোনাম সূত্র তারিখ
দখলদার বাহিনীর সহযোগীদের বিচার সম্পর্কে মন্ত্রী পরিষদের বৈঠকের কার্য বিবরণী বাংলাদেশ সরকার, কেবিনেট ডিভিশন ১৫ ডিসেম্বর, ১৯৭১

গোপনীয়
সর্বশেষ

ডিসেম্বর ১৩, ১৯৭১ তারিখে অনুষ্ঠিত “সহযোগীদের বিচার” এবং “সরকারি, আধা-সরকারী ও স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার কর্মচারীদের স্ক্রীনিং” বিষয়ে কেবিনেট মিটিংয়ে গৃহিত সিদ্ধান্তসমূহের সারসংক্ষেপ সংযোজনীতে রয়েছে । এটি অনুকূল তথ্য এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের জন্য প্রযোজ্য ।
এইচটি ইমাম
মন্ত্রীপরিষদ সচিব
১৫.১২.১৯৭১

ইউ ও নং (৯)/ ক্যাব তারিখ ১৫.১২.১৯৭১
১। ভারপ্রাপ্ত সচিব – সাধারণ
২। সচিব, পররাষ্ট্র
৩। সচিব, প্রতিরক্ষা
৪। সচিব, সাধারণ সভা
৫। সচিব, স্বরাষ্ট্র / মহাপরিচালক, পুলিশ
৬। সচিব, স্বরাষ্ট্র বিষয়ক
৭। সচিব, অর্থ
৮। সচিব, তথ্য ও প্রচারণা
৯। সচিব, কৃষি

ডিসেম্বর ১৩, ১৯৭১ তারিখে অনুষ্ঠিত কেবিনেট মিটিংয়ে গৃহিত সিদ্ধান্তসমূহের সারসংক্ষেপ

বিষয় নং ২ – সহযোগীদের বিচারকাজ
মন্ত্রীসভা ‘সহযোগীদের বিচারকাজ’ বিষয়ের সারসংক্ষেপ বিবেচনা করেছে এবং আলোচনা সাপেক্ষে নিম্ন বর্ণিত সিদ্ধান্তসমূহ গ্রহন করেছেঃ

ক। এই মর্মে একটি ঘোষণা অবিলম্বে দেওয়া উচিত যে সহযোগীদের বিচার কাজের জন্য একটি বিচার-ব্যবস্থা অবিলম্বে প্রতিষ্ঠা করা হবে এবং বিচারকাজ হওয়া পর্যন্ত সব সহযোগীদের সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে ও ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা অবশ্যই প্রতিহত করতে হবে।
খ। ‘সহযোগীদের বিচারকাজ’ বিষয়ের সারসংক্ষেপে সচিব কমিটির দ্বারা পেশকৃত, নিম্নলিখিত সুপারিশগুলো গৃহিত হয়েছেঃ
ক/ বিভিন্ন ধরণের সহযোগীদের জন্য ট্রাইবুনাল গঠিত হবে।
খ/ বেতার এবং অন্যান্য যোগাযোগ মাধ্যমে ঘোষণা দিতে হবে যে, গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অধীনস্ত স্থানীয় সরকার, বিচারাধীন ট্রায়ালের জন্য সকল সহযোগীদের দ্রুত গ্রেফতার ও নিরাপত্তা হেফাজতের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েছে ।
গ/ ‘সহযোগীদের বিচারকাজ’ – বিষয়টি জুরি এবং আইন বিশেষজ্ঞদের একটি কমিটি দ্বারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে পুঙ্খানুপুংখভাবে পরীক্ষা করতে হবে – যারা সরকারকে সহায়তা করবেন, বিশেষত নিম্নলিখিত বিষয়গুলোতেঃ
১/ সচিবদের কমিটি কর্তৃক মন্ত্রিসভায় পেশকৃত সুপারিশের আইনিরূপ দেওয়ার জন্য নতুন আইন খসড়া করতে হবে নাকি প্রচলিত আইনের কাঠামোতেই তা করা হবে। যদি সহযোগীদের বিচারের আইন, প্রচলিত আইন/আইনসঅমূহের কাঠামোতে করা হয়, তবে তা কিভাবে এপ্রিল ১০, ১৯৭১ তারিখের স্বাধীনতা ঘোষনার আইন অধ্যাদেশ এবং এপ্রিল ১০ , ১৯৭১ তারিখের ধারাবাহিক আইন অধ্যাদেশ এর সাথে এটি সেখানে সমন্বিত হবে?
২/ সহযোগীদের অপরাধ কি যথাযথভাবে সংজ্ঞায়িত করা হবে নাকি রাষ্ট্রবিরোধী যুদ্ধ, রাষ্ট্রদ্রোহ, হত্যা,লুণ্ঠন অগ্নিসংযোগ এসব বিষয়ক প্রচলিত আইনের দ্বারাই নিরূপণ করা যাবে?
৩/ ট্রাইবুনাল কিংবা বিশেষ আদালতের গঠন কি রকম হবে ?
৪/ কি ধরনের ব্যক্তিদের বিচার করা হবে?
৫/ সাদৃস্যপূর্ণ কোন ধরনের বিষয়গুলো বিবেচনা করা হবে এবং আইনি কাঠামোয় আনা হবে?

ঘ। আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক জুরি এবং আইন বিশেষজ্ঞদের কমিটি অবিলম্বে গঠিত হবে এবং পরবর্তী প্রয়োজনীয় উদ্দ্যোগ উক্ত মন্ত্রণালয় কর্তৃক গৃহিত হবে। আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রয়োজন হলে ভারত সরকারের আইন বিশেষজ্ঞদের সাহায্য চাইতে পারে।

বিষয় নং – ৩:- সরকারি, আধা-সরকারী ও স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার কর্মচারীদের বাছাইকরণ

মন্ত্রীসভা ‘সরকারি, আধা-সরকারী ও স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার কর্মচারীদের বাছাই’ বিষয়ের সারসংক্ষেপ বিবেচনা করেছে। সারসংক্ষেপে থাকা সুপারিশসমূহ কিছু সংশোধনীসহ গৃহিত হয়েছে । এই বিষয়ে সংশোধনীসহ সিদ্ধান্তসমূহ নিম্নরূপঃ
১। নিম্নবর্ণিত ভাবে স্ক্রিনিং কমিটি গঠন করা হবেঃ
ক/ বাছাই কমিটি কঃ ২০০০টাকা বা তদুর্ধ উপার্জন করা সকল ব্যক্তির জন্য ।
খ/ বাছাই কমিটি খঃ ৭৫০টাকা থেকে অনূর্ধ ২০০০ টাকা উপার্জন করা সকল ব্যক্তির জন্য
গ. বাছাই কমিটি গ ও ঘঃ ক ও খ এর আওতাভুক্ত ব্যাক্তিরা সহ ৩৫০-৭৫০ টাকা আয় করা ব্যক্তি বাদে সকল প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা।
ঘ. বাছাই কমিটি ঙঃ গ ও ঘ এর অধীনে নয় এরকম সকল দ্বিতীয় শ্রেণীর (গেজেটেড) সরকারি কর্মকর্তা এবং
ঙ. নন-গেজেটেড সরকারি কর্মকর্তা এবং আধা-সরকারী ও সমমানের পদে স্বায়ত্তশাসিত কর্মচারীদের জেলা পর্যায়ে সরকার কর্তৃক নিযুক্ত করা বাছাই কমিটি দ্বারা বাছাই করা হবে।

২) বাছাই কমিটি “সরকারি কর্মচারীদের দক্ষতা ও শৃঙ্খলার বিধিমালা 1961” অনুসারে যে কাউকে পুরস্কৃত বা শাস্তিদানের অধিকার রাখবে। অপরাধের গুরুত্ব প্রতিটি নির্ধারিত মামলার উল্লেখিত তথ্য দ্বারা নির্ধারিত হবে।
৩) বাছাই কমিটির নিম্নলিখিত গঠনপ্রণালী থাকবে
বাছাই কমিটি কঃ
(ক) একজন চেয়ারম্যান থাকবেন যিনি বা হাইকোর্ট বা হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের একজন বিচারক ছিলেন বা আছেন,
(খ) বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন উপাচার্য ও
(গ) এক জন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি।
বাছাই কমিটি খঃ
(ক) কেন্দ্রীয় সরকারের একজন সচিব যিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সমতুল্য,
(খ) এক জন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি এবং
(গ) বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড / হেড পদমর্যাদার এক শিক্ষাবিদ।
স্ক্রিনিং কমিটি গ ও ঘঃ
(ক) চেয়ারম্যান হিসেবে একজন জেলা জজ.
(খ) এক জন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি এবং
(গ) বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র।
স্ক্রিনিং কমিটির ঙঃ
(ক) চেয়ারম্যান হিসেবে একজন সাব-জজ.
(খ) এক জন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি এবং
(গ) একটি কলেজের এক অধ্যক্ষ অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সিনিয়র প্রভাষক।

৪) স্ক্রীনিং কমিটি তার অনুমোদনের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে তাদের রিপোর্ট এবং তথ্যও জমা দিবে।

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!