শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
২৭। পাকিস্তানকে অর্থনৈতিক সাহায্যের বিরুদ্ধে অ্যাকশন কমিটির বক্তব্য | বাংলাদেশ অ্যাকশন কমিটির প্রচারপত্র | এপ্রিল, ১৯৭১ |
অর্থনৈতিক সাহায্য না বুলেট?
বাংলাদেশে নতুন মাত্রার গণহত্যার ভয়ংকর সব গল্পের বর্ণনা দিয়ে শতশত চিঠির পাহাড় জমছে প্রতিদিন। বর্তমানে গ্রামাঞ্চলগুলোকে মূল লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হয়েছে। গ্রামের পর গ্রাম পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে এবং বোমাবর্ষণ চলছে। গ্রামবাসীদেরকে সাধারণত সারবদ্ধ করে দাঁড় করিয়ে গুলি করা হয়। পশ্চিম পাকিস্তানি সেনারা ঘরে ঘরে তল্লাসি চালাচ্ছে এবং ১৫ থেকে ২৫ বছর বয়সী ছেলেদেরকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। ছেলেগুলো আর ঘরে ফেরে না। সেনাদের কাছে এদেরকে হেফাজতে রাখার মত খাবার কিংবা থাকার ব্যবস্থা – কিছুই থাকে না। তারা বরং এরচেয়ে সহজ পদ্ধতি অবলম্বন করেছে: হত্যা।
নদীর পাড়ের প্রত্যন্ত জেলার মানুষদেরকে হত্যা করার জন্য সেনারা মেশিনগানসহ ৪০০টি স্পিডবোট ব্যবহার করছে। ত্রাণকার্যের জন্য এসব স্পিডবোটগুলোকে বিদেশি রাষ্ট্র ভাড়া করেছিল। ইয়াহিয়ার লোকেরা সারা পৃথিবী ঘুরে বেড়াচ্ছে আরও কিছু বোট সংগ্রহের জন্য।
পশ্চিম পাকিস্তানের কোষাগারে ২৫ শে মার্চ ৯৩ মিলিয়ন পাউন্ড ছিল। আজ তার কিছুই অবশিষ্ট নেই। এই পুরো অর্থ খরচ হয়েছে গণহত্যার কাজে, যা অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য খরচ করার কথা ছিল। বাংলাদেশে ইয়াহিয়ার সেনাদের প্রতিদিনের খরচ ১০ লাখ টাকা।
ইয়াহিয়ার প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা স্যার এলেকের সাথে দেখা করেন এবং আরও অর্থনৈতিক সহায়তা চান। এই সহায়তা খুব সম্ভবত সামরিক কাজেই ব্যয় করা হবে। এবং এরপর আবারো এই সহায়তা যা অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য বরাদ্দ থাকার কথা তা সামরিক কাজে ব্যয় করে পশ্চিম পাকিস্তানের অর্থনীতিকে সক্ষম করে তুলবে।
এই সহায়তা আসছে আপনার টাকা থেকে, আপনারা যারা নিয়মিত কর প্রদান করছেন। আপনারা কি চান আপনাদের টাকা বুলেটে পরিণত হয়ে নিরাপরাধ এবং নিরস্ত্র মানুষদের হত্যার কাজে ব্যয় হোক? আপনারা কি চান এই গণহত্যার অংশীদার হতে?
জেগে উঠুন আমাদের পক্ষে কথা বলুন এমপি