You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.03.14 | আওয়ামীলীগের প্রতি জাতীয় পরিষদের সংখ্যালঘিষ্ঠ দলগুলির সমর্থন | দ্য ডন - সংগ্রামের নোটবুক
শিরোনাম সূত্র তারিখ
আওয়ামীলীগের প্রতি জাতীয় পরিষদের সংখ্যালঘিষ্ঠ দলগুলির সমর্থন দ্য ডন ১৪ই মার্চ, ১৯৭১

 জাতীয় এবং প্রাদেশিকেঅন্তর্বর্তী সরকার করতে
জাতীয় পরিশোধে সংখ্যালঘু দলগুলি আওয়ামীলীগ এর সাথে চার দফা দাবি করেছে
১৯৭১ সালের মার্চের ১৩ তারিখে লাহোরে জাতীয় পরিষদে অনুষ্ঠিত
সংখ্যালঘু দলগুলির মিটিঙের রিপোর্ট

প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া এবং শেখ মুজিবের সাথে দেখা করতে প্রতিনিধি দল

আজ এখানে অনুষ্ঠিত এক সভায় জাতীয় পরিষদে সংখ্যালঘু দলগুলি নীতিগত ভাবে, আওয়ামীলীগের সভাপতি শেখ মুজিবের চার দফা দাবিতে সম্মত হয়েছে, এবং ২৫ মার্চ সংসদ অধিবেশন বসার আগে জাতীয় এবং প্রাদেশিক ভাবে মধ্যবর্তি সরকার স্থাপনের দাবি করেছে, ।

আহূত মিটিং এ সভাপতিত্ব করেন মাওলানা মুফতি মাহমুদ, জমিয়াতুল উলামা- ই- ইসলাম সংসদীয় দলের নেতা। অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিল লীগ নেতা মিয়ান মমতাজ দৌলতানা এবং সরদার সাউকাত হাইয়াত খান, জমিয়াতুল উলামা-ই- পাকিস্থান হতে মাওলানা শাহ আহমেদ নূরানি, জামাত-ই-ইসলাম এর প্রফেসর আব্দুল ঘাফুর, কনভেনশন লীগের জনাব জামাল মুহাম্মদ করেজা, এবং স্বতন্ত্র এমএনএস, মাওলানা জাফর আহাম্মেদ আন্সারি এবং সর্দার মাওলানা বক্স সুম্রু।

ন্যাপ এর ওয়ালী খান মিটিং এ উপস্থিত ছিলেন না কিন্তু সভার আহবায়ক, মাওলানা মুফতি মাহমুদ দাবি করেছেন যে তাদের সিদ্ধান্থে সকলের সমর্থন আছে। কারণ মুসলিমলীগ একমাত্র সংখ্যালঘু দল, যার অনুপুস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত।

প্রতিনিধি দলের ইয়াহিয়ার সাথে দেখা করা

মিটিং এ এই সিধান্ত হয় যে মুফতি মাহমুদের নেত্রিত্তে একটি প্রতিনিধি দল যত তারাতারি সম্ভব প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার সাথে দেখা করে ক্ষমতা হস্তান্তরের বেপারে কথা বলবে।

একই বেপারে কথা বলতে প্রতিনিধিদল শেখ মুজিবের সাথেও দেখা করতে পারে।

মিটিং এ মনে হয়েছে যে শেখ মুজিবের দুইটি দাবি, আর্মি উঠিয়ে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়া এবং পূর্ব পাকিস্থানে হত্যার বিচার বিভাগীয় তদন্ত করা, অবশ্যই অবিলম্বে মেনে নিতে হবে। অবিলম্বে মার্শাল ল তুলে নিতে এবং নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি প্রসঙ্গে, ”এটি সমগ্র জাতির সর্বসম্মত দাবী এবং সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রচেষ্টা করা হয়েছে, অবশ্যই পাকিস্থানের রাষ্ট্রপতিকে এর জন্য কৃতিত্ব দিতে হবে।” কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এবং ঘটনাপ্রবাহের গুরুত্ব বিবেচনায়, শেখ মুজিবের প্রস্তাব অনুযায়ী, অবশ্যই কার্যকরভাবে বিবেচনা করার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে হবে বলে সভা মনে করে।

ভুট্টোর সাথেও দেখা হতে পারে

মার্শাল ল প্রত্যাহার এবং ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মুফতি মুহাম্মদ বলেছেন অনেকগুলি প্রস্তাব পেশ করাহয়েছিল মিটিংএ কিন্তু তিনি সেটাই বিবেচনা করবেন যেটাতে প্রেসিডেন্ট এবং শেখ মুজিবুর রহমান রাজি হবেন।

এক প্রশ্নের জবাবে মুফতি মাহমুদ বলেছেন, যদি প্রয়োজন হয় প্রতিনিধি দল পিপলস পার্টির সভাপতি জুলফিকার আলি ভুট্টুর সাথেও দেখা করবে। তিনি এও বলেছেন, মার্শাল ল প্রত্যাহার করা এবং ক্ষমতা হস্তান্তর করা প্রকৃত পক্ষে সরকার এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের সিধান্তের উপর নির্ভর করে।

লিখিত বক্তব্য

মুফতি মাহমুদ একটি লিখিত বক্তব্য প্রেসে দিয়েছিলেন যেখানে বলা হয়েছে,”বর্তমান সংকট পাকিস্থানের জন্য হুমকির স্বরূপ। প্রতিটি দেশপ্রেমিকের একক এবং একমাত্র চিন্তা হতে হবে পাকিস্থানের অস্তিত্ব এবং একাত্মতা স্বীকার করা এবং তা নিশ্চিত করা।

“পূর্ব এবং পশ্চিম পাকিস্থানের মানুষের ঐক্য ছাড়া পাকিস্থান হতে পারে না, কিংবা পাকিস্থানের সত্তার কোন আদর্শিক বা ব্যাবহারিক ধারণা থাকবে না । এই ঐক্যের একমাত্র ভিত্তি, উৎস এবং নিশ্চয়তা হল স্বাধীনভাবে একসাথে বেচে থাকার ইচ্ছা যা নিহিত থাকে একক পরিচয়ে, সঙ্গীদের সম্পর্কে, পারস্পরিক ন্যায়বিচার এবং ভ্রাতৃত্ববন্ধনে। যদিও পাকিস্থানের সকল শ্রেণির মানুষের প্রত্যাশা এবং স্বার্থ সংরক্ষিত থাকতে হবে।”

রাষ্ট্রপতির নিকট অনুরোধ

“আমরা যাতে পশ্চিম পাকিস্তানের মানুষ পূর্ব পাকিস্তানে তাদের ভাই ও সহকর্মী-নাগরিকদের সঙ্গে কার্যকরভাবে সংহতি জ্ঞাপন করতে পারে এবং সেইসাথে বর্তমান সঙ্কট মীমাংসা করা সম্পর্কে আমাদের গভীরতম উদ্বেগ প্রকাশ করতে পারি এবং তা থেকে পরিত্রানে আমাদের মতামত জানাতে পারি সেজন্য আমরা পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতির নিকট অনুরোধ করছি পার্টিগুলোর প্রতিনিধি দল এবং এই মিটিং এ উপস্থিত এমএনএ সমুহের সাথে বৈঠকে বসার। একই উদ্দেশ্যে আমরা প্রস্তাব করছি যে একটি অনুরূপ প্রতিনিধিদল ঢাকায় যাওয়া উচিত এবং শেখ মুজিবুর রহমান এর সাথে মিটিং এ বসুক।

আমরা পশ্চিম পাকিস্তানের মানুষের প্রতি আহবান জানাই তাদেরকে মত প্রকাশ করতে, একটি গণতান্ত্রিক উপায়ে পাকিস্তানের অবিচ্ছেদ্য সংহতি, তাদের অঙ্গীকার এবং বিশ্বাস বজায় রাখতে এবং নিয়তিতে আস্থা রাখতে, যথা পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের মধ্যে তাদের জ্ঞাতি ভাইদের সাথে পবিত্র অনুভূতি ভাগাভাগি করে নিতে।

একই সময়ে, আমরা জানি যে, পূর্ব পাকিস্তানের নেতারা তাদের অবিভাজ্য ঐক্য ও সংহতি ধরে রাখবে যা ইতিমধ্যে করেছে, আত্মার বন্ধন ও সংযম ধরে রাখবে যা ইতিমধ্যে মুজিবুর রহমান তার বিবৃতিতে বলেছেন, এবংপাকিস্তানের প্রতি তাদের সংযুক্তি অব্যাহত থাকবে।”