শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
অসহযোগ আন্দোলন ত্যাগ করে গেরিলা লড়াইয়ে আহ্বান জানিয়ে পূর্ব পাকিস্থানের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী-লেনিনবাদী) | পূর্ব পাকিস্থানের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী-লেনিনবাদী) | ৯ই মার্চ, ১৯৭১ |
নল থেকে রাজনৈতিক ক্ষমতা বেরিয়ে আসে- মাওসেতুঙ
পূর্ব বাংলার মুক্তির জন্য শান্তিপূর্ণ অসহযোগ
আন্দোলন নয়, হরতাল ধর্মঘট নয়
অস্ত্র হাতে লড়াই করুন
শত শত মানুষের হত্যার বদলা নিন
পূর্ব বাংলার মেহনতি গরীব ভাইসব,
গত কয়েক দিনের শাসকগোষ্ঠীর পুলিশ-মিলিটারী পূর্ব বাংলার শত শত মেহনতি মানুষকে হত্যা করেছে। আরো হত্যা করার নতুন হুমকি দিয়েছে। অথচ, হত্যাকারীদের একটি চুলও খসেনি। অতীতেও তারা জনতার উপর হত্যালীলা চালিয়েছে। মরেছে, মার খেয়েছে শুধু গরীব জনসাধারণই। কিন্তু গরীব লোকের উপর শোষণ কমেনি, অত্যাচার কমেনি বরং বেড়েই চলেছে। শাসকগোষ্ঠীর হত্যালীলা ও শোষণের বিরুদ্ধে আজ যখন সারা পূর্ব বাংলায় বিক্ষোভের আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছে, পূর্ব বাংলার পূর্ণ মুক্তির জন্য মেহনতি মানুষ পাগল হয়ে উঠেছে, তখন তথাকথিত বাংলার দরদি নেতারা অস্ত্রহাতে লড়াই শুরু করার আহ্বান না দিয়ে বিপ্লবী জনগণকে এত হত্যালীলার পরও শান্তিপূর্ণ অসহযোগ আন্দোলনের নির্দেশ দিচ্ছে। এই ধোঁকাবাজ নেতারা গরীব জনতাকে আন্দোলনে নামিয়ে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করেছে। মন্ত্রী হয়েছে, ধনী হয়েছে। যখনই জনতা অস্ত্র হাতে নিয়ে শোষক শ্রেণীকে খতম করার চেষ্টা করেছে, তখনই তারা শান্তির কথা বলে জনতাকে লড়াই থেকে সরিয়ে নিয়েছে। তারপর নিজেরা ক্ষমতার হালুয়া-রুটির ভাগাভাগি করেছে। ফলে, গরীব জনতা জান দিয়েছে, কিন্তু পায়নি কিছুই।
পাকিস্থানের শাসকগোষ্টী এবং পূর্ব বাংলার তথাকথিত দরদি বিশ্বাসঘাতক নেতাদের পরামর্শদাতা হলো কুখ্যাত নরপশু মার্কিন রাষ্ট্রদূত ফারল্যান্ড। এই নরঘাতক শুয়োরের বাচ্চাটি চক্রান্ত করে ইন্দোনেশিয়ার লক্ষ লক্ষ্য গরীব মানুষকে হত্যা করেছে। গত কিছুদিন যাবৎ ঘন ঘন পূর্ব বাংলায় এসে এখানেঈ ব্যাপক হত্যার ষড়যন্ত্র করছে। বিশ্বে মেহনতি মানুষের বড় দুশমন এই হিংস্র জানোয়ারদের সাথে যেসব তথাকথিত বাংলার দরদি নেতারা বৈঠক করে, ষড়যন্ত্র করে এবং লাঞ্ছিত-শোষিত মেহনতি মানুষকে শান্ত থাকতে উপদেশ দেয়, তারা গরীব কৃষক-শ্রমিকদের বন্ধু হতে পারে না। তারা শোষকগোষ্ঠী ও সাম্রাজ্যবাদের পা চাটা কুকুর। এই দালালদের চিনে নি। এই শয়তানদের শান্তির আব্দেওনে ঝাঁটা মেরে হত্যার বদলা নেয়া শুরু করুন। অস্ত্র হাতে নিয়ে ছোট দলে (৪/৫ জন) বিভক্ত হয়ে অতর্কিতে দেশী-বিদেশী সকল শোষকদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ুন। শহরের বস্তিতে বস্তিতে, পড়ায় পাড়ায়, প্রত্যেক গ্রামে গ্রামে গেরিলা লড়াই (গোপন যুদ্ধ) চালিয়ে অত্যাচারী জোতদারী মহাজন ও দালালদের খতম করুন। গণবাহিনী গড়ে তুলুন। গ্রামে গ্রামে গরীবের রাজত্ব কায়েম করুন।পাকিস্থান শাসকগোষ্ঠীর জাতীয় পরিষদ পূর্ব বাংলার জনগণের স্বার্থবিরোধী। পূর্ব বাংলার জাতীয় পরিষদ সদস্যরা এই কুখ্যাত পরিষদ থেকে পদত্যাগ করুন। পূর্ব বাংলার মুক্তি সশস্ত্র সংগ্রামে শরীক হউন। জাতীয় পরিষদের যোগদানকারী সকলেই পূর্ব বাংলার মানুষের কাছে জঘন্য বিশ্বাসঘাতক বলেই প্রমাণিত হবে।
শোষিত নির্যাতিত ভাইসব, পূর্ব বাংলাকে মুক্ত করতেই হবে। পূর্ব বাংলার শ্রমিক০কৃষক রাজত্ব কায়েক করতেই হবে, এর জন্য গ্রামকে লড়াইয়ের ঘাঁটি করুন। জনগণের সশস্ত্র বাহিনী কড়ে তুলুন। শ্রমিক শ্রেণীর পার্টি পূর্ব লাকিস্থানের কমিউনিস্ট পার্ট (মার্কসবাদী-লেনিনবাদী)’র ডাকে ও নেতৃত্বে ১৯৭০ সালের ৪ঠা অক্টোবর থেকে গ্রামে গ্রামে কৃষকদের গেরিলা যুদ্ধ শুরু হয়েছে। অত্যাচারী জোতদারী মহাজন ও দালাল খতমের মাধ্যমে এই গেরিলা কড়াই ৭টি জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। এই লড়াইকে সারা পূর্ব বাংলায় ছড়িয়ে দিন। শোষকদের খতম করুন। শত্রুর হাত থেকে অস্ত্র কেড়ে নিন। শাসকগোষ্ঠীর পুলিশ০মিলিটারী খতম করুন। পূর্ব বাংলা মুক্ত করুন। জনগণতান্ত্রিক পূর্ব বাংলা কায়েম করুন।
শোষক গোষ্ঠীর জাতীয় পরিষদ- ধ্বংস হউক
পূর্ব বাংলার মুক্তি সংগ্রাম- জিন্দাবাদ
পূর্ব বাংলার কৃষকদের সশস্ত্র গেরিলা যুদ্ধ- জিন্দাবাদ
মার্কিনী দালালদের- খতম করুন
জনগণতান্ত্রিক পূর্ব বাংলা- জিন্দাবাদ
ঢাকা জেলা শাখা পূর্ব পাকিস্থানের কমিউনিস্ট পার্টি
৯-৩-১৯৭১ ইং (মার্কসবাদী-লেনিনবাদী)।