১৪ বৈশাখ ১৩৭৮ বুধবার ২৮ এপ্রিল
শান্তাহার, সিরাজ গঞ্জ পাকবাহিনীর হস্তগত হয়। পাকবাহিনী জয়পুর হাট থেকে তিন মাইল দূরে হিন্দু প্রধান করোইকাদিপুর কুমার পাড়া মুসলীম লীগারদের সহায়তার পৌঁছে যায়। গ্রাম ঘেরাও করে ১৮৫ জন নারী পুরুষ শিশুকে গুলিকরে হত্যা করে। গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়। ক’জন ধরা পড়ে তাদেরকে জনৈক মুন্সি জবাই করে হত্যা করে। জয়পুর হাটে গণহত্যা শুরু হল।
–বাংলাদেশের প্রধামন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ প্রতিবেশী দেশের কাছে গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বীকৃতি দান করার আহবান জানান । তিনি শর্তহীন ভাবে অস্ত্র সাহায্য করার আহবান জানান । প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ বিদেশে অবস্থানরত বাঙালীদের বাংলাদেশ সংগ্রাম সর্বাত্মক সহায়তা করার জন্য আহবান জানান (টাইমস অফ ইণ্ডিয়া )
কারমাইকেল মহা বিদ্যালয় অধ্যাপক ওতাঁর স্রত্রী দমদমা ব্রীজের নীচে গুলিকরে পাকবাহিনী হত্যা করে।
–সৈয়দ পুরগামী বাসযাত্রীদের রংপুর ক্যান্টনমেন্টের কাছে পাকবাহিনী ২১ জনকে হত্যা করে।
–পাকহানাদার বাহিনী সিলেট থেকে ছাতক অভিমুখে চালালো তাঁদের বর্বর অভিযান। ছাতক ধুকেই শুরু করল নির্বিচারে হত্যা আর অগ্নিসংযোগ। গ্রামের পর গ্রাম হত্যা , লুটতরাজ , অগ্নি সংযোগ চলল সমস্তদিন । কত মায়ের কোল যে খালি হল কত স্ত্রী চিরদিনের জন্য হারাল স্বামী- সন্তানরা হারালো বাবা –মা –ভাইবোনকে ইতিহাস কি তাঁর সাক্ষ্য রাখবে। উল্লেখ্য পাঞ্জাবী বেলায়েত আলী তিনি ছিলেন ছাতক সিমেন্ট ফ্যাক্টরীর জেনারেল ম্যানেজার, স্থানীয় বাঙালীদের কাছে তাঁর ভূমিকার জন্য শ্রদ্ধার পাত্র হয়ে আছেন।
–মার্চ মাস থেকে সিলেটের বিভিন্ন স্থানে সংগ্রাম পরিষদ গঠন, স্বেচ্ছাসেবক, আনসার সাবেক ইপিয়ার, পুলিশ ছাত্র কর্মীদের সহযোগে সিলেটের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগ নেতা দেওয়া ফরিদ্গালী প্রতিরোধে গড়ে তোলেন। উল্লেখ্য সিলেট শহরে গোপালগঞ্জ, মৌলিভীবাজার, শেরপুর, প্রমুখ স্থানে প্রতিরোধে যুদ্ধ পরিচালনার দেওয়ান ফরিদ গাজী সক্রীয় অংশ গ্রহণ করেন (১৫খঃ পৃ২৯৫)
–মৌলভীবাজার শহর পাকবাহিনীর কবলে চলে যায়। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বা ধীন সংগ্রাম কমিটি শ্রীমঙ্গল হতে কয়েক কাজার ব্যারল পেট্রোল ৩০ লাখ সিগারেট, কয়েক হাজার টন চাউল, ২৫০ টি ট্রাকটর,৩০০ টি ট্রাক ,২০০ জীপ, ও মটর কার ভারতে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়। (১৫খঃ পৃ৩৩৩)
–পাকবাহিনী সহায়তা করার জন্য জামায়েত ইসলামী ও মুসলিম লীগ নেতৃ বৃন্দ এগিয়ে আসেন। এঁদের মধ্যে ম ও লানা দেলোয়ার হোসেন সাঈদী , ম ওলানা জুলফিকার আহমদ কিসমত, লাগবাগ শাহী মসজিদের ইমাম এবং তৎকালীন পাকিস্তান সিরাত কমিটির সভাপতি মওলানা আমিনুল ইসলাম, মওলানা মুফতি দীন মুহম্মদ, বায়তুল মোকাররম মসজিদের তৎকালীন ইমাম মা ও লানা আমিনুল এহসান, মৌলভী ওবায়দুল্লাহ, ম ওলানা আজিজুর রহমান, নেপরারবাদী, মওলানা আবদুল জাব্বার, প্রমুখ সর্বাধিক তৎপরতা প্রদর্শন করেছিলেন।(সংবাদ)
Reference:
একাত্তরের দশ মাস – রবীন্দ্রনাথ ত্রিবেদী