You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.07.13 | ২৮ আষাঢ় ১৩৭৮ মঙ্গলবার, ১৩ জুলাই ১৯৭১ | একাত্তরের দশ মাস - রবীন্দ্রনাথ ত্রিবেদী - সংগ্রামের নোটবুক

২৮ আষাঢ় ১৩৭৮ মঙ্গলবার, ১৩ জুলাই ১৯৭১

মির্জাপুরে (টাঙ্গাইল) অতি প্রত্যুষে পাকবাহিনী ও রাজাকারের ব্যাঙ্কারে কাদেরিয়া বাহিনী উল্লার মত ঝাপিয়ে পড়ে। গ্রেনেডের ঝড়ের মধ্যে পাঞ্জাবী পাকবাহিনী ছিন্নভিন্ন হয়ে গেল। তিনঘন্টার যুদ্ধেশেষ হল সকাল সাড়ে আটটায়। পিছু হটে গেল পাঞ্জাবী পাক বাহিনী ফেলে রেখে গেল ২৩ টি সেনাশব ও দেশের রাজাকারদের ৬৯ টি শতছিন্নদেহ। (সংগ্রহ)

-বাংলাদেশ সরকার (জুলাই ১৩) পরিকল্পনা সেল গঠন করেন। এই পরিকল্পনা সেলের সদস্য হলেন সর্বজনাব ডঃ মুজাফফর আহমদ, ডঃ সারওয়র মুর্শিদ, ডঃ মোশাররফ হোসেন, ডঃ স্বদেশ বসু ও  ডঃ আনিসুজ্জামান। উল্লেখ্য,ডঃ আনিসুজ্জামান কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে গঠিত বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব তখন তার উপর অর্পিত ছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডঃ অজয় রায় পরে সাধারণ সম্পাদকের হয়েছিলেন। (১৫ খণ্ড পৃঃ ১২)

-পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান জুলফিকার আলী ভুট্টো করাচীতে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তিনি তেহরানে বলেছিলেন বেআইনি ঘোষিত আওয়ামী লীগের বিচ্ছন্নতাবাদীদের সাথে নয়, যেসব সদস্য বিচ্ছিন্নতাব্দী আন্দোলনের সাথে সংশ্লিষ্ট ছিলেন না তাদের সাথে সরকারের আলোচনা করা উচিত।

-ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জগজীবন রাম এদিন নয়াদিল্লীতে পার্লামেন্টে বলেন, বাংলাদেশ সরকার আজ ভারত সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে সামরিক সাহায্যের আবেদন জানিয়েছে।

-কেন্দ্রীয় সাহায্যও পুর্নবাসন কমিটি সদস্য সর্বজনাব শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, সোহরাব হোসেন, আব্দুল মালেক উকিল ও সচিব অধ্যাপক মুহম্মদ ইউসুফ আলী প্রতিদিন (৪৫, প্রিন্সেফ ষ্ট্রীট) দফতরে বসতেন। লিয়াজো অফিসার ব্যারিষ্টার জনাব এ এ আফজাল  (বাদল) এম এন এ ভারতের সহায়ক সমিতিসহ অন্যান্য দফতরের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে দাফতরিক কাজ চালিয়ে যান। বিভিন্ন জেলা থেকে আগত ছাত্র ও তরুণদের মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণের জন্য এখান থেকে পরিচিতিপত্রহ দেয়া হয়। এদিন পর্যন্ত ১০ হাজার পরিচিতিপত্র প্রদান করা হয়েছে।

-ভুরুঙ্গামারী, সোনাহাট, পাটেশ্বরী, নাগেশ্বরী, কুড়িগ্রাম, উলিপুর, চিলমারী বড়বাড়ি, মোগলহাট, লালমনির হাট, পাটগ্রাম, বুড়িমারী, হাতীবান্দা, জলঢাকা, ডোমার ডিমলা, থেকে প্রতিদিন হানাদার পাকবাহিনীর ওপর মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণ জোরদার করা হয়। (উত্তরাঞ্চলে বিজয় পৃঃ ৬৯)

-এদিন অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধারা কুমিল্লা জেলার মুরাদনগরে ১০৩ জন খান সেনাবাহিনী ৪টি নৌকায় অতর্কিত হামলা চালিয় ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে। ১ জন হানাদার বাহিনীর অফিসারসহ ১৮ জন খতম হয়। অনুরূপ অন্য অপারেশনে রাম চন্দ্রপুর খেয়াঘাটে পাক সেনাদের ৩১ জনকে হত্যা ও ৫০ জনকে আহত করে। গেরিলা দল গোমতী নদীতে টহলদারী হানাদার বাহিনীর স্পীডবোট এ্যামবুশ করে।

-এদিন দর্শনার একটি সীমান্ত ফাঁড়ির উপর মুক্তিবাহিনী বিএসএফের সহায়তায় হামলা চালায়ে ব্যপক ক্ষতি সাধন করে।

-এদিন ময়মনসিংহ, সিলেট , মৌলভীবাজার সেক্টরের বিভিন্ন এলাকায় মুক্তিবাহিনী প্রত্যক্ষ ও গেরিলা হামলা চালায়।

Reference:

একাত্তরের দশ মাস – রবীন্দ্রনাথ ত্রিবেদী