শিরোনম | সূত্র | তারিখ |
বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন বিভাগের কর্মের অগ্রগতি সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন | বাংলাদেশ সরকার, কেবিনেট বিভাগ | ২০ অক্টোবর, ১৯৭১ |
সরকারের ক্রিয়াকলাপ
এতদূর পর্যন্ত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সরকার নিম্নলিখিত মন্ত্রণালয়/বিভাগ নিয়ে গঠিত হয়েছে।
১. প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
২. পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
৩. অর্থ,ব্যবসা এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
৪. মন্ত্রিসভা সচিবালয়।
৫. সাধারণ প্রশাসন।
৬. স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।
৭. তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়।
৮. স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
৯. ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিভাগ।
১০. সংসদ বিষয়ক বিভাগ।
১১. কৃষি বিভাগ।
১২. প্রকৌশল বিভাগ।
উপরন্তু, সরাসরি সরকারের আাওতার বাইরে কতিপয় স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা গঠিত হয়েছে। এগুলো হলো:
(i)পরিকল্পনা কমিশন;
(ii) ব্যবসা-বাণিজ্যের বোর্ড;
(iii) নিয়ন্ত্রণ, যুব ও অভ্যর্থনা শিবির বোর্ড;
(iv) ত্রাণ ও পুনর্বাসন কমিটি; এবং
(v) উদ্বাস্তু কল্যাণ বোর্ড।
১. প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়:
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত রিপোর্ট আলাদাভাবে জমা হচ্ছে। প্রতিরক্ষার প্রশাসনের আরো তিনটি কাজ উল্লেখ করা হলো:
(i) মানসিক কল্যাণ সেল-এটি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার মধ্যে কাজ করছে।
(ii) নিয়মিত বাহিনী এবং গণবাহিনীর মেডিকেল কভার ও কল্যাণের জন্য-এটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার মধ্যে সম্পন্ন করা হচ্ছে।
(iii) বাহিনীর জন্য বীরত্বসূচক পুরস্কার প্রবর্তন-
২. পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়:
(ক) বিদেশে মিশন প্রতিষ্ঠা- কলকাতা, দিল্লী, লন্ডন, ওয়াশিংটন, নিউ ইয়র্ক এবং স্টকহোমে।
খ) বৈদেশিক কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন/ অভিযানঃ
১) জাতিসংঘে প্রতিনিধি দল
২)আফগানিস্তান, সিরিয়া, লেবানন -এ প্রতিনিধি দল
৩) নেপাল-এ প্রতিনিধি দল; এবং,
৪) সিলন, বার্মা এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতে প্রতিনিধি দল
উপরিউক্ত কিছু দেশ থেকে আশান্বরুপ সাড়া পাওয়া যায় ।
গ) ইংল্যান্ড, আমেরিকা, ফ্রান্স, সুইডেন, জাপান এবং আরও অন্যান্য কিছু দেশ বাংলাদেশের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিল । বাংলাদেশের জন্য এই দেশগুলো বৈদেশিক অনুদান জোগাড় করে এবং বাংলাদেশের পক্ষে সংবাদ প্রচার করে।
ঘ) ইরাক, ফিলিপাইন, আর্জেন্টিনা, পাকিস্তানের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক সরিয়ে নেয়। লন্ডন ,ওয়াশিংটন ,নিউইয়র্ক , কাঠমুন্ডু এবং হংকং এর উচ্চপদস্থ কূটনৈতিকগণ সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেন (শুধুমাত্র কলকাতা আর দিল্লী ছাড়া)
ঞ) বিদেশী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সরকারী চাকুরী নিয়োগ ( যুক্তরাজ্যে সাতজন এবং যুক্তরাষ্ট্রে ২ জন) সেবা দেয়া হবে।
এছাড়াও বাইরে প্রচারের ব্যবস্থা করা হবে।
৩) অর্থ ও ব্যবসা-বানিজ্য মন্ত্রনালয়ঃ
অর্থ সচিব তার প্রতিবেদন আলাদাভাবে জমা দেন । এই মন্ত্রনালয় বাংলাদেশের জন্য আর্থিক সাহায্য সংগ্রহ করে । এটা বাজেটও প্রস্তুত করে এবং বিভিন্ন এজেন্সি ও ব্যাক্তিদের দেনা পরিশোধ করে । এটি কিছু কিছু অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডও চালু করে । দেরীতে হলেও এই মন্ত্রনালয় বাংলাদেশ সরকারের কর্মচারী ও এজেন্সি থেকে কর সংগ্রহ শুরু করে । মন্ত্রনালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই কর্মকাণ্ড নজরদারি করার জন্য একটি তদন্ত কমিশন গঠন করা হয় ।
ব্যবসা এবং বাণিজ্য
ব্যবসা-বাণিজ্য পরিষদ একটি স্বশাসিত কাঠামো হিসেবে সংগঠিত। পরিষদটি ইতিমতিমধ্যে বাংলাদেশি পন্যদ্রব্য রপ্তানি করার বিভিন্ন সম্ভাবনা উদ্ভাবন করেছে যা শুধুমাত্র উপার্জনের উৎস হিসেবেই নয়, এছাড়াও অর্থনৈতিক টেকসইতা নির্ধারণ এ কাজ করে।
ভারতের সাথে বানিজ্য চুক্তির সম্ভাবতা পর্যালোচনায় অর্থ, ব্যবসা ও বাণিজ্য মন্ত্রনালয়, ব্যবসা ও বাণিজ্য পরিষদ যৌথভাবে ভারতীয় প্রশাসন ও ভারতীয় প্রাদেশীয় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠনের সঙ্গে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত করে। চট্টগ্রাম ও চালনা বন্দর ব্যবহারের মাধ্যমে ভারতের সাথে পরিবহন ব্যাবস্থায় উন্নতির প্রসঙ্গেও তারা পর্যালোচনা করে।
এই মুহূর্তে ব্যবসা-বানিজ্য বিভাগ এ কোনো সচিব নেই। অর্থ-মন্ত্রনালয় এটি তত্ত্বাবধানে নিয়োজিত
৪. মন্ত্রী পরিষদ সচিবালয়
মন্ত্রী পরিষদ সচিব এবং তার অধীনে থাকা অত্যন্ত অস্থিসহ একজন কর্মচারীকে সাথে নিয়ে মন্ত্রী পরিষদ সচিবালয় আয়োজন করা হয়েছে । মন্ত্রীসভার সাথে যুক্ত গৃহীত সকল সিদ্ধান্ত, প্রচারনা, কোন সিদ্ধান্তের অনুসরন এবং সকল গুরুত্বপূর্ন বিষয়ের ব্যাপারে মন্ত্রী পরিষদ সচিব দায়ী থাকেন; তবে কোন কোন বিশেষ মন্ত্রনালয়ের আওতায় তা কঠোর ভাবে পড়ে না। রাষ্ট্রপতির সচিবালয় মন্ত্রী পরিষদ সচিবই দেখাশোনা করে থাকেন ।
৫. সাধারণ প্রশাসন
সাধারণ প্রশাসন বিভাগের জন্য একজন পুরোদমে দক্ষ সচিবকে প্রথম থেকেই নিয়োগ দেয়া হয়েছিলো । সে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর অধীনে কাজ করে ।
এই বিভাগটি সরকারের সব প্রাতিষ্ঠানিক ব্যাপারগুলো, যেমনঃ বাছাই, নিয়োগ, পদ, বদলি, শৃঙ্খলার ইত্যাদির জন্য দায়ী । জনগন নিয়োগের ব্যাপারে সরকারী নীতি নির্বাহের জন্যও এই বিভাগ দায়ী । মন্ত্রীসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সরকারের অধীনে সকল প্রথম শ্রেণী এবং দ্বিতীয় শ্রেণীর নিয়োগ দেয় প্রতিষ্ঠার মন্ত্রী নিজে (উনিই হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী) । এই বিভাগেরই আওতায় আঞ্চলিক প্রশাসনিক পরিষদের অধীনে প্রথম শ্রেণী এবং দ্বিতীয় শ্রেণীর পদের জন্য সকল মানুষ জোগাড় করা হয় । অফিসিয়াল কর্মচারীদের রক্ষণাবেক্ষণ করা যারা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ এর সরকারের নিকট আনুগত্যের সহিত অঙ্গীকার বদ্ধ । এই তালিকা থেকে বাছাইকৃত কর্মীবৃন্দ এবং বাছাইয়ের জন্য তৈরি হওয়া প্যানেল সব সাধারণ প্রশাসনিক বিভাগই তৈরি করে থাকে ।
আঞ্চলিক প্রশাসনিক পরিষদ
এলাকা ভিত্তিক প্রাতিষ্ঠানিক পরিষদের প্রতিষ্ঠার অংশ, এই যে এলাকা ভিত্তিক প্রাতিষ্ঠানিক কর্মচারীরা এবং অন্যান্য বিভাগ সাধারন প্রাতিষ্ঠানিক বিভাগের অন্তর্ভূক্ত। প্রথম এবং দ্বিতীয় শ্রেনীর এলাকা ভিত্তিক আসন পূর্ণ করা এবং অর্থের যোগান করাও ইত্যাদি সাধারন প্রাতিষ্ঠানিক পরিষদের মাধ্যমে হয়ে থাকে। মূল প্রকল্পের আওতায় পাঁচটি এলাকা তৈরি করা হয়েছিল। মূল প্রকল্পকে বিষেশায়িত করা হয়েছে এবং নতুন আরো ছয়টি এলাকা তৈরি করা হয়েছে। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং চেয়ারম্যান নিম্নলিখিত এলাকার নির্বাচন করা হয়েছে:
১.দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চল ১ প্রফেসর এন.আই.চৌধুরী এমএনএ
২. দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চল ২ মিঃ জহুর আহমেদ চৌধুরী এমপিএ
৩. পূর্ব অঞ্চল কর্নেল এম.এ. রব এমএনএ
৪. উত্তর-পূর্ব অঞ্চল ১ দেওয়ান ফরিদ গাজী এমএনএ
৫. উত্তর-পূর্ব অঞ্চল ২ মিঃ সামসুর রহমান খান এমএনএ
৬. উত্তর অঞ্চল মিঃ মতিউর রহমান এমএনএ
৭. পশ্চিম অঞ্চল ১ মিঃ আব্দুর রহিম এমপিএ
৮. দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল ২ মিঃ ফানি ভূষণ মজুমদার এমপিএ
৯. মিঃ আশরাফুল ইসলাম মালদা
১০. মিঃ আব্দুর রউফ কৃষ্ণনগর
আঞ্চলিক কাউন্সিল তাদের বিভিন্ন উপ-কমিটিও নির্বাচন করেছে। প্রায় সবগুলো আঞ্চলিক কাউন্সিলে কিছু সাধারণ এবং অদ্ভুত উদ্ভুত সমস্যার বিশ্লেষণ করেছে। কিছু বিশেষ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, কিন্তু যে বিষয়গুলো সমিতির নীতি সংক্রান্ত সে বিষয়গুলোতে কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। যখন প্রত্যেক আঞ্চলিক কাউন্সিলে নির্বাচন সম্পন্ন হয়ে যাবে তারপর অঞ্চলভিত্তিক বিভিন্ন পরিকল্পনা অনুযায়ী সরকারের সিদ্ধান্ত/কার্যপ্রণালী সকল আঞ্চলিক কাউন্সিলে পৌঁছে যাবে।
যেসব স্থানে নির্বাচন হয়েছে সেসব অঞ্চলের জন্য কিছু অর্থনৈতিক বিধান এবং বরাদ্দও রয়েছে। তহবিল থেকে অর্থ বের হবার পথে রয়েছে।
আঞ্চলিক প্রশাসনিক কাউন্সিল বিভিন্ন আঞ্চলিক দপ্ত্রে প্রয়োজনীয় কর্মকর্তা এবং কর্মী নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
৬। স্বাস্থ্য ও কল্যাণ মন্ত্রণালয়
স্বাস্থ্য সচিব তার প্রতিবেদন আলাদাভাবে জমা দিবেন। এই বিভাগের জন্য অতিরিক্ত টীকাগুলো নিম্নে দেয়া হলোঃ
এই বিভাগটি একজন স্বাস্থ্য মহাপরিচালকের অধীনে গঠন করা হয়েছিলো। পরবর্তীতে, মহাপরিচালককে সচিব পদমর্যাদা দেয়া হয়েছে।
বিভাগটির স্বাস্থ্য খাত দুইটি ভিন্ন শ্রেণীতে বিভক্ত করা হয়েছে। যথা, (i) সামরিক স্বাস্থ্যসেবা এবং (ii) বেসামরিক স্বাস্থ্যসেবা
(i) প্রতিরক্ষা বিভাগের স্বাস্থ্যসেবা নিম্নোক্ত সুবিধাগুলো পাওয়া যাবে।
ক) শল্যচিকিৎসক এবন সাধারণ চিকিৎসকের উপস্থিতি
খ) আহত/মৃতদেহ পরিবহন ব্যবস্থা
গ) ঔষধ
ঘ) অস্ত্রোপচার সরঞ্জাম
ঙ) বিভিন্ন ফিল্ড মেডিক্যা ইউনিট যেমন উন্নত ড্রেসিং স্টেশন (এডিএস) এবং প্রধান ড্রেসিং স্টেশন (এমডিএস)
চ) আরোগ্য নিরময় কেন্দ্রঃ কল্যাণ ক্ষেত্রে যুদ্ধরত সেনাবাহিনীর জন্য নিম্নোক্ত বিধি চলবে।
i) শহীদদের নির্ভরশীলদের জন্য গাড়ি
ii) কর্মক্ষেত্রে সম্পূর্ণ অক্ষমদের জন্য পেনশন/ জীবিকার ব্যবস্থা করা
iii) আংশিক ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য কাজের ব্যাপারে বিশেষ বিধান করা
উপরোক্ত উদ্দেশ্যগুলো সাধন করতে প্রয়োজনীয় বিধান নেয়া হয়েছে (দশ লাখ রূপি)।
অন্যদিকে বেসামরিক গোষ্ঠীর ক্ষেত্রে, বাংলাদেশের সাধারণ নাগরিকদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এই উদ্দেশ্যে ৯,৫০,০০০ রূপি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য সচিব বাংলাদেশের ডাক্তারদের বিভিন্ন খাতে চাকরি করবার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। ভারতীয় সরকারের মাধ্যমে এই ডাক্তারেরা শরণার্থী শিবিরে কাজ করতে থাকবেন।
স্বাস্থ্য বিভাগ বিভিন্ন বন্ধুপ্রতিম এজেন্সি থেকে বিভিন্ন ঔষধ এবং অন্যসব উপকরণ দান হিসেবে নিতে দায়িত্বরত, একইসাথে এসব দান বিভিন্ন স্থানে প্রয়োজন অনুযায়ী পৌঁছাতেও প্রতিজ্ঞাবদ্ধ!
বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জামাদি, অ্যামবুলেন্স কেনার দায়িত্বও স্বাস্থ্য বিভাগের উপর ন্যস্ত যদি কোন বন্ধুপ্রতিম উৎস থেকে প্রাপ্যতার পর তা অপর্যাপ্ত হয়।
৭। তথ্য এবং সম্প্রচার মন্ত্রণালয়
বাংলাদেশ বেতার সরকারের অন্যতম প্রাচীনতম সংগঠন। প্রাথমিকভাবে বেতার জনাব আবদুল মান্নান এমএনএ এর সরাসরি তত্ত্বাবধানে স্থাপিত হয়েছিলো। পূর্বেকার রেডিও পাকিস্তানের কর্মীদের থেকে অনুষ্ঠান এবং সম্প্রচার বিভাগের কর্মী নিয়োগ দেয়া হয়েছিলো। ক্রমান্বয়ে আরও শিল্পী এবং যন্ত্রবিদ বেতারে যোগ দেন এবং বেতারের উন্নতি সাধন করতে থাকেন। এখন পর্যন্ত প্রায় ১০০জন মানুষ বাংলাদেশ বেতারে নিয়োগ পেয়েছেন। যেহেতু নানা ধরনের উপাদান আমাদের মাঝে উপস্থিত, সেহেতু কোন একটি নির্দিষ্ট মানদণ্ড ধরে বাংলাদেশ বেতারের সকল কর্মীবৃন্দকে নিয়মের অধীনে আনা খুবই কঠিন একটি কাজ। যেহেতু বেতার আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যকেন্দ্র এবং এই যুদ্ধকালীন প্রয়াসে আমাদের দ্বিতীয় অগ্রাধিকার, সেহেতু সরকার এই খাতে সবসময়ে প্রয়োজনীয় অর্থনৈতিক অনুমোদন দিয়েছে।
অন্য যেসব এজেন্সি তথ্য এবং সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অধীনে সংগঠিত হয়েছে সেগুলো হলো,
(ক) চলচ্চিত্র পরিচালক;
(খ) প্রকাশনা পরিচালক; এবং,
(গ) শিল্প এবং নকশা পরিচালক।
উপরের আলোচনা মোতাবেক, মনস্ত্বাত্ত্বিক যুদ্ধের প্রাণ হিসেবে তথ্য এবং সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাথে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার মাধ্যমে কাজ করে যাবে।
সরকারের বহিরাগত প্রচার এখন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকবে। এই শাখাটি একটি বড় সংখ্যক পুস্তিকা, প্রচারপত্র এবং ইস্তেহার প্রকাশ করেছে। তারা আমাদের বৈদেশিক প্রচারের ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
কিছু বিশিষ্ট বাংলাদেশি বুদ্ধিজীবী বাংলাদেশের যুদ্ধের কারণ এবং আমাদের সংগ্রাম নিয়ে বিভিন্ন বই এবং পুস্তিকা প্রকাশ করেছেন যেখানে আমাদের আন্দোলনের অগ্রসর হবার কারণগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
আমাদের প্রচারণা সর্বক্ষেত্রে আরও শক্তিশালী করবার উদ্দেশ্যে তথ্য এজেন্সির সাথে বন্ধুপ্রতীম সরকারের অধীনে একটানা কিছু সভা করা হয়েছে। সবধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেয়া হয়েছে এবং এটি আসছে!
মন্ত্রণালয় প্রথম থেকেই প্রয়োজনীয় দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতাসম্পন্ন একজন মানুষের অভাব বোধ করেছে যাকে সচিব হিসেবে নিয়োগ দেয়া যায়। অনেকদিন অপেক্ষার পর সরকার জনাব আনোয়ারুল হক খানকে সম্পূর্ণ অস্থায়ীভাবে এ বিভাগটি তত্ত্বাবধানের জন্য নিয়োগ দিয়েছে। তিনি জনাব আ. মান্নান এমএনএ-এর সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করবেন।
৮. স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ঃ
একজন অভিজ্ঞ সচিবের অধীনে এটা গঠন করা হয়েছে। একজন পর্যন্ত পুলিশের মহাপরিদর্শক এ দপ্তরের প্রধান কার্য সম্পাদন করতেন । তথ্য সংগ্রহ এবং সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার তথ্য সরবরাহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের একটি গুরুত্বপুর্ন কাজ।
দায়িত্বপ্রাপ্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আঞ্চলিক প্রশাসনিক বা দপ্তরের কাজের জন্যও দায়ী । তার মন্ত্রনালয় অন্যান্য কার্যক্রমের মধ্যে নিম্নোক্ত কার্যক্রম সমুহও সম্পাদন করে ।
(a) স্বাধীন এলাকাসমুহের প্রশাসনিক বন্যাস
(b) ভ্রমণ নথিপত্র ইস্যু করা এবং
(c) তদন্ত
৯. ত্রান ও পুনর্বাসন দফতরঃ
একজন ত্রান কমিশনার, যিনি সরাসরি ত্রান ও পুনর্বাসন মন্ত্রীর অধীনে কাজ করেন তার অধীনে এটা গঠন করা হয়েছে। প্রিন্সেপ সড়কে এ দফতরের অফিস পরিচালিত হয়। এটি বিশেষ ক্ষেত্রে বাংলাদেশী নাগরিকদের ত্রান ও সাহায্যের জন্য প্রাপ্ত আবেদনসমূহ নিরীক্ষন করে। এছাড়াও আঞ্চলিক প্রশাসনিক কাউন্সিল কাঠামোর মধ্যে আঞ্চলিক ত্রান অফিসগুলোকে ও সংগঠিত করে ।
এ মন্ত্রনালয় বাংলাদেশ শিক্ষকদের ত্রান সংগঠন করে । বাংলাদেশী শিক্ষকদের সেবাসমূহ কাজে লাগিয়ে স্থানান্তরিত
* নাগরিকদের সন্তানদের সুবিধার্থে ক্যামা স্কুল নামক একটি পদক্ষেপ গ্রহন করেছে এবং বাংলাদেশ শিক্ষক সংগঠন, যার নির্বাহী সভাপতি জনাব কামরুজ্জামান (এম এন এ), সহযোগিতায় দল এটি বাস্তবায়ন করবে
১০. সংসদ বিষয়ক বিভাগঃ
পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রী নিজে এর দেখাশুনা করবেন। এই মুহুর্তে এটি বাংলাদেশী নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সমস্যা সমূহ দেখাশোনা করবেন । এই মুহুর্তে এটি বাংলাদেশী নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সমস্যাসমূহ দেখাশোনা করবে ।
১১. কৃষি দফতরঃ
এটা এখনো গঠিত হয়নি। শুধুমাত্র একজন সচিব নিয়োগ দেয়া হয়েছে যিনি এখন স্বাধীন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়নের নীল নকশা তৈরি করছেন।
১২. প্রকৌশল দফতরঃ
একজন প্রধান প্রকৌশলী নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। সেক্টর কমান্ডারদের প্র্যোজনীয় চাহিদা পূরনের জন্য তার অধীনস্ত আঞ্চলিক প্রকৌশলীদেরও পদায়ন করা হয়েছে।
(i) পরিকল্পনা কমিশনঃ
সরকার সম্প্রতি পুর্ববর্তী পরিকল্পনা কেন্দ্রকে পূর্নতা পরিকল্পনা কমিশনের রূপ দিয়েছে। ড. মোজাফফর আহমেদ চৌধুরিকে চেয়ারমুয়ান ও নিন্মোক্তদের সদস্য হিসেবে নিয়োগ দান করা হয়েছেঃ
(a) ড. সারওয়ার মোর্শেদ
(b) ড. মোশাররফ হোসেইন
(c) ড. এস.আর বোস এবং
(d) ড. আনিসুজ্জামান
কমিশন এখন বাংলাদেশী বুদ্ধিজীবি ও প্রকৌশলী যারা সরকারের তালিকাভুক্ত তাদের মধ্যে থেকে কর্মী নিয়োগ দিচ্ছে।
কমিশনকে নিন্মোক্ত কার্যক্রম সম্পাদনের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে ।
(a) আওয়ামীলীগের নির্বাচনী ইসতেহার এবং গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ও আওয়ামীলীদের শীর্ষ স্থানীয় নেতৃবৃন্দের প্রতিষ্ঠিত লক্ষ্যসমূহের উপর ভিত্তি করে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা ।
(b) দেশ এবং দেশীয় অর্থনীতি পুনর্গঠনের জন্য একটি মধ্যমেয়াদী পরিকল্পনা তৈরি করা । এ পরিকল্পনা অবশ্যই দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার সাথে সঙ্গতিপূর্ন হবে ।
(C) একটি স্বল্পমেয়াদী পুনর্গঠন পরিকল্পনা তৈরি যা নিকট ভবিষ্যতে প্রয়োজন হবে ।
যেহেতু পুনর্গথন সমস্যা বিমালাকার হবে এবং সরকারের হাতে এসব সমস্যা মোকাবেলার কোন সুযোগ থাকবেনা সে জন্য আমাদের সমস্ত পরিকল্পনা ও কর্মসুচি নিয়ে তৈরি হতে হবে। সেজন্য পরিকল্পনা অতীব জরুরী বিষয় হিসাবে বিবেচ্য ।
দেশকে তাৎক্ষণিক পুনর্গঠনের জন্য নিন্মোক্ত সমস্যা সমুহের প্রতি প্রদান করতে হবে ।
(a) উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসন সমস্যা
(b) স্থানান্তরিত ব্যক্তিদের বাসস্থান সমস্যা
(c) খাদ্য সরবারাহ
(d) যোগাযোগ ব্যাবস্থা পুনঃস্থাপন
(e) স্বাভাবিক সুবিধাসমুহ যেমনঃ স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, পানি, হাস পালন পুনরায় চালু করন
(f) ধ্বংস্প্রাপ্ত বন্দর, কলকারখানা শিল্পপ্রতিষ্ঠান পুনর্গঠন
(g) আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুনরুদ্ধার
(h) শিক্ষা সুবিধা সমূহ পুনরায় চালুকরন
(i) যতদুর সম্ভব সামরিক বাহিনীকে সাময়িক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দান এবং যুবকদের অস্থ্রে পরিবর্তে শিক্ষার ব্যবস্থাকরন ।
(j) বিঘোষিত নীতি অনু্যায়ী জাতীয়করনের জন্য ব্যাংক, বীমা এবং অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান সমূহ চালুকরন ।
(k) ব্যবসা বানিজ্য চালুকরন এবং
(l) ভবিষ্যৎ দেশীয় বাণিজ্য এবং ইত্যাকার।
পরিকল্পনা কমিশন সময়ে সংশ্লিষ্ট বিষুয়ে বিশেষজ্ঞ মতামত সরকারের নিকট দাখিল করবে
পরিকল্পনা বিষয়ে বন্ধুভাবাপন্ন প্রতষ্ঠান সমূহের সাথে সহযোগিতা
জনাব ডি. পি ধর এর সাথে ক্রম আলোচনা হয়েছে। সম্প্রতি ভারতীয় পরিকল্পনা কমিশনের ড. এস. চক্রবর্তী এখানে এসেছিলেন এবং ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং পরিকল্পনা কমিশনের সাথে পুঙ্খানুপুঙ্খ আলোচনা করেছেন। সহযোগিতা বিভিন্ন ক্ষেত্র এবং পরিকল্পনা সংশ্লিষ্ট পারষ্পারিক সহযোগিতার বিষয় সম্পর্কিত আলোচনা হয়েছে। সেবা ও সুবিধা সমূহের প্রস্তাব ও করা হয়েছে।
(ii) ব্যবসা বানিজ্য বিষয়ক বোর্ডঃ
এটা ইতিমধ্যেই বানিজ্য মন্ত্রনালয়ের অধীনে গঠন করা হয়েছে।
(iii) যুব ও অভর্থনা শিবির নিয়ন্ত্রন বোর্ডঃ
অধ্যাপক ইউসুপ আলী (এম.এন.এ) কে প্রধান করে এ বোর্ড গঠন করা হয়েছে । পুনর্গঠিত কাঠামো অনুযায়ী যুব শিবির অধিদপ্তরও বানিজ্য মন্ত্রনালয়ধীন । প্রধানমন্ত্রী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে যুব শিবির ঘর রক্ষনাবেক্ষন কার্যক্রম কর্পন করেছেন যিনি যুদ ও অভ্যররথনা শিবির নিয়ন্ত্রন বোর্ড এর সাহায্য ও সহযোগিতায় এ দায়িত্ব পালন করবেন।
এখন প্রায় ২৪টির মত যুব শিবির এবং ১১২ টি অভ্যর্থনা শিবির ( তালিকা সংযুক্তি চালু রয়েছে অনুমোদিত বাজেট এর উপর ভিত্তি করে যুব ও অভ্যর্থনা শিবির এর প্রয়োজন পূরন করবে বোর্ড । যুব শিবির ইউনিট এর প্রশিক্ষন সরঞ্জাম ব্যাপক আকারে ব্যাবস্থা করা হয়েছে। যুব শিবির থেকে ছেলেদের গেরিলা বাহিনীতে অভিষিক্তকরণ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। যুবকদের প্রয়োজনীয় উপাদান
* যেমনঃ বিছানাপত্র, উলের কাপড়চোপড় ইত্যাদি বিভিন্ন বন্দুভাবাপন্ন সংস্থা এবং আমাদের নিজেদের প্রতিষ্ঠানিক আয়োজনের মাধ্যমে সরবরাহ করা হচ্ছে।
(iv) ত্রান ও পুনর্বাসন কমিটিঃ
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে গঠিত এবং এর দায়িত্ব বাংলাদেশ থেকে স্থানান্তরিত লোকজনের তত্ত্বাবধান করা।
(v) স্থানান্তরিত ব্যাক্তিদের কল্যান বোর্ডঃ
এটা এখনো গঠিত হয়নি। সুধুমাত্র একজন চেয়ারম্যান নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে।
সরকারী চৌহদ্দির বাইরের বাংলাদেশী নাগরিক জন্য নিন্মোক্ত ৩ টি সংগঠন ও গঠন করেছেনঃ
(a) বাংলাদেশ রেডক্রস সমিতি (ডঃ আসাদুল হক এমপি)
(b) বাংলাদেশ শিক্ষক সংগঠন (মিঃ কামরুজ্জামান এমএনএ)
(c) বাংলাদেশ স্বেচ্ছাসেবী কর্পস (মিঃ আমিনুল ইসলাম এম এন এ)
(এইচ . টি ইমাম)
মন্ত্রিপরিষদ সচিব
গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার