You dont have javascript enabled! Please enable it!

৩১ আষাঢ়, ১৩৭৮ শনিবার, ১৭ জুলাই ১৯৭১

বিপ্লবী বাংলাদেশের মন্ত্রীসভার এক বৈঠকে নিন্মলিখিত সিদ্ধান্তসমূহ গৃহীত হয়ঃ

(ক) মন্ত্রীসভা সপ্তাহে সোম ও শুক্রবার বৈঠকে বসবে। শুক্রবার শুধু সামরিক বিষয়াদি আলোচ্য থাকবে।

(খ) মুক্তি বাহিনীর প্রধান সেনাপতি সম্প্রতি অনুষ্ঠিত সেক্টর কমান্ডারদের বৈঠক সম্পর্কীয় প্রতিবেদন বিবেচিত হয়।

(গ) সরকারের প্রচার মাধ্যমের বিশেষত বেতার, সংবাদ, চলচ্চিত্রে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়।

(ঘ) জেনাল কাউন্সিলের বর্তমান সংখ্যা ৫ থেকে ৮ বৃদ্ধি করা হয়।

(ঙ) বাণিজ্য উন্নয়ন বোর্ড গঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। (৩খঃপৃঃ৭১)

–ইয়াহিয়ার সাথে কয়েক দফা বৈঠকে মিলিত হওয়ার পর ভুট্টো সাহেব বলেছেন, তিনি সংবিধান ব্যাপারে সব বিষয়ে ইয়াহিয়ার সাথে একমত নন। (দৈঃ পাঃ)

-পাকিস্তান অবজারবার’ এ প্রকাশঃ পাকিস্তানস্থ মার্কিন রাষ্ট্রদূত ফারল্যাণ্ড আলোচনার জন্যে স্বদেশে গেছেন। তিনি কয়েক সপ্তাহ সেখানে থাকবেন। উল্লেখ্য, ভাষ্যকারদের মতে বাংলাদেশ সমস্যা সম্বন্ধে মার্কিনী নীতি পরিবর্তন হতে পারে বলে অভিমত প্রকাশ করে।

-পাকহানাদার বাহিনী পাঁচবিবি হতে কান্দি যাবার পথে কান্দিয়া ব্রিজে মুক্তিবাহিনীর পাত মাইন উদ্ধার করে। পরিণতিতে আশপাশের গ্রামবাসীদের উপর চলে অত্যাচার। স্থানীয় শান্তি কমিটির প্রধান পাক বাহিনীকে সর্ববিধ সহায়তা করে গ্রামবাসীদের জীবন অতিষ্ঠ করে তুলে।

-তাহারিকে ইন্তেকেলাল পার্টি প্রধান আসগর খান পূর্বাঞ্চলে সফর শেষে লাহোরে বলেন, পূর্বপাকিস্তানের সবকিছুই এখন সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধিণ রয়েছে। তবে প্রদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা অতিশয় হতাশাগ্রস্থ। (দৈঃ পাঃ)

-ভারতীয় সামরিক বাহিনীর তৎপরতা সম্বন্ধে সাংবাদিক Mankekar লিখেছেন, By July, General Sam Manek shaw’s out lines of strategy for operations in both theater had been Completed. (p-36)

রাজশাহীর সীমান্তগ্রাম গোগরবিলে পাকবাহিনীর সাথে সংঘর্ষে ২জন গেরিলা নিহত ও ১জন গ্রেফতার হন।

-ইষ্ট্রাণ কমান্ডার লেঃ জেনারেল এ এ কে নিয়াজী টাঙ্গাইল, শেরপুর ও হালুয়াঘাটস্থ সেনাবাহিনীর ঘাঁটিসমূহ পরিদর্শন করেন।

-পিপিলস পার্টির চেয়ারম্যান জুলফিকার আলী ভুট্টো প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খানের সাথে বৈঠকে মিলিত হন।

-মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে পাকিস্তানে বর্তমান পরিস্থিতি প্রেক্ষিতে অর্থনৈতিক ও সামরিক সাহায্য বন্ধের সুপারিশ গৃহীত হয়।

–আর্জেন্টিনার বুদ্ধিজীবীমহল বাংলাদেশের সংগ্রামে ও শরণার্থীদের সহায়তা করার জন্য এলসেলভেডর বিশ্ববিদ্যালয় উপচার্যের চেয়ারম্যানশীপে একটি কমিটি গঠিত হয়। আর্জেন্টিনার জাতীয় কবি ম্যাডাম ডিকটোরিয়া ওক্যাম্পো (কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গুণমুগ্ধ)বুদ্ধিজীবীদের নেতৃত্ব দিয়ে সেদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী কাছে বাংলাদেশ আন্দোলনের স্বপক্ষে স্মারকলিপি পেশ করেন। আর্জেন্টিনার দৈনিক ‘বুয়েনার্স অ্যায়রস” পরবর্তীতে বাংলাদেশ প্রশ্নে মার্কিন ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করে। উল্লেখ্য, এ সময়ে ব্রাজিলও চিলির গণমাধ্যমে বাংলাদেশ সংগ্রামের সংবাদ প্রচার হয়। চিলির প্রেসিডেন্ট আলেন্ডে জাতিসংঘের মহাসচিবের কাছে পূর্ব বাংলার সমস্যা ও শরণার্থীদের দুঃখ দুর্দ্দশায় উদ্ধেগ প্রকাস করেন। কিউবায় সাপ্তাহিক ‘বহিমিয়া’ মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বের সংবাদ প্রকাশ করে এবং আশা প্রকাশ করে মুক্তিযোদ্ধাদের জয় অবশ্যম্ভাবী। এই সাপ্তাহিকীটি দক্ষিণ আমেরিক্য সবচেয়ে ব্যাপক প্রচারিত সংবাদপত্র।

Reference:

একাত্তরের দশ মাস – রবীন্দ্রনাথ ত্রিবেদী

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!