২৫ আষাঢ়, ১৩৭৮ শনিবার, ১০ জুলাই ১৯৭১
-ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ অবরুদ্ধ বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলে গেরিলা কমান্ডো তৎপরতা ব্যাপকভাবে চলে। ঢাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ ক্ষতিগ্রস্থ করা হয়।
-মিঃ জুলফিকার আলী ভুট্টো তেহরানে বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিকে একটা রাজনৈতিক সমাধান পৌছাতে হবে। আওয়ামী লীগকে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের ভূমিকার পালন করতে দিতে হবে। শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে আলোচনা করে মীমংসা করা প্রয়োজন। যত শীঘ্র সম্ভব বেসামরিক শাসন প্রবর্তন আবশ্যক। বিদেশী সাংবাদিকদের সাক্ষাৎ করে দান কালে মিঃ ভুট্টো এইসব কথা বলেন।
-কূটনৈতিক সূত্রে প্রকাশ ডঃ কিসিঞ্জার পাকস্থলী পীড়া সঠিক নয়, তিনি গোপনে ইয়াহিয়া চক্রের সহায়তার পিকিংয়ে গিয়েছেন। পর্যবেক্ষক মহলের মতে গণচীন সম্বন্ধে মার্কিনী নীতি পরিবর্তনের লক্ষণ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। কিসিঞ্জার তেহরান হয়ে প্যারিস ওয়াশিংটন যাওয়ার পূর্ব ৮,৯,১০ জুলাই পিকিং ছিলেন। ১১ তারিখে ইয়াহিয়ার সাথে মধ্যাহ্নভোজ সমাপ্ত করে তেহরানে চলে যান।
-ভুট্টো যেদিন তেহরানে গমন করেন ঐদিন কিসিঞ্জার তেহরানে ছিলেন। কূটনৈতিক মহলের ধারণা, সাংবাদিক সম্মেলনে মিঃ ভুট্টোর বক্তব্য ইয়াহিয়ার অনুমোদিত কর্মসূচীর অংশমাত্র।
-লেঃ জেনারেল এ.এ. কে. নিয়াজী চট্টগ্রাম এলাকা পরিদর্শন করে বলেন, পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্ত সেনাবাহিনীর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে। (দৈঃ পাঃ)
– ক্যাপ্টেন পরে মেজর রফিকুল ইসলাম এদিন আগরতলা থেকে আজ কলকাতায় পৌঁছান। প্রধানমন্ত্রী সচিবালয়ে ১১-১৭ জুলাই সেক্টর কমান্ডারদের ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। সকল সেক্টর কমান্ডারগণ (৮ থিয়েটার রোডস্থ) বাংলাদেশ সরকারের সদর দফতরে এসে পৌঁছেন।
-কানাডীয় পার্লামেন্টারী প্রতিনিধিদল এদিন নয়াদিল্লীতে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাথে বাংলাদেশ ও শরণার্থী প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করেন।
কানডীয় পার্লামেন্টের তিনজন প্রভাবশালী সদস্য এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেনঃ পূর্ব পাকিস্তান’ এই নামে কোন রাষ্ট্র বা রাষ্ট্রংশের অস্তিত্ব আর নেই। বাংলাদেশ আজ একটি বাস্তব সত্য। কানাডীয় পরিষদের এই তিনজন সদস্য হলেনঃ ক্ষমতাসীন লিবারেল পার্টির মিঃ জর্জেস লাচাস, মিঃ বিউইন ও মিঃ হিথ নেলসন।
Reference:
একাত্তরের দশ মাস – রবীন্দ্রনাথ ত্রিবেদী