You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.09.20 | স্বাস্থ্য ও জনকল্যাণ বিভাগের সচিবের বিভিন্ন এলাকা সফর শেষে প্রদত্ত রিপোর্ট | বাংলাদেশ সরকার, স্বাস্থ্য ও জনকল্যাণ বিভাগ - সংগ্রামের নোটবুক
শিরোণাম সূত্র তারিখ
স্বাস্থ্য ও জনকল্যাণ বিভাগের সচিবের বিভিন্ন এলাকা সফর শেষে প্রদত্ত রিপোর্ট বাংলাদেশ সরকার, স্বাস্থ্য ও জনকল্যাণ বিভাগ ২০ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১

 

মুজিবনগর
২০.০৯.১৯৭১

৮ থেকে ১৮ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১ তারিখে ড. টিহোসাইন, সচিব, স্বাস্থ্য ও জনকল্যাণ বিভাগ-এর সাম্প্রতিক সফরের প্রতিবেদন
৮. ৯. ১৯৭১ : ভোর ৫টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত দমদম বিমন বন্দরে অপেক্ষা। শেষ পর্যন্ত ফ্লাইট বাতিল
৯. ৯. ১৯৭১ : আগরতলা পৌঁছানো
সেক্টর ২ সদর দপ্তরে মেলাঘর হাসপাতাল পরিদর্শন
১০. ৯. ১৯৭১ : উদয়পুরের কাছে যুবশিবিরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে সঙ্গ দেওয়া।
ত্রিপুরার মুখ্য মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতকার
১১. ৯. ১৯৭১ : সেক্টর ৩ সদর দপ্তর মান তলায় গমণ। সেক্টর ১ সদর দপ্তর হরিয়ানায় গমণ। সেখানেই রাত্রিযাপন।
১২. ৯. ১৯৭১ : বেলোনিয়া ও রিশি মুখে গমণ।রাত১টায়আগরতলঅফিরেআসা।
১৩. ৯. ১৯৭১ : আগরতলায় স্থানীয় কতৃপক্ষের সঙ্গে সাক্ষাত। আগরতলা হাসপাতাল পরিদর্শন।
১৪. ৯. ১৯৭১ : করিমগঞ্জের উদ্দেশে যাত্রা ও পৌঁছানো
১৫. ৯. ১৯৭১ : বেরাপুঞ্জিতে সদর দপ্তর পরিদর্শনের চেষ্টা করা, কিন্তু পাক বাহিনীর তীব্র গোলাবর্ষনের কারণে পারা যায়নি। মুকিতলসাব-সেক্টরেগমণ। করিমগঞ্জ সদর হাসপাতালে রোগী পরিদর্শন ও মুক্তিবাহিনী হাসপাতাল পরিদর্শন।
১৬. ৯. ১৯৭১ : শিলচর প্রস্তুতকরা যুবশিবির ও মাশিমপুর সামরিক হাসপাতাল সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া। সেক্টর কমাণ্ডার কর্ণেল দত্তের সঙ্গে সমস্যা নিয়ে আলোচনা।
১৭. ৯. ১৯৭১ : শিলং পৌঁছানো। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে স্থানীয় সমস্যা নিয়ে আলোচনা
১৮. ৯. ১৯৭১ : বালাতে গমণএবং গৌহাটিতে ফেরা
১৯. ৯. ১৯৭১ : সদর দপ্তরে ফেরা
বিভিন্ন বিষয়ে প্রতিবেদন সংযুক্ত আছে।
(ড. টিহোসাইন)
সচিব
স্বাস্থ্যওজনকল্যাণবিভাগ
অনুলিপি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী, সি-ইন-সি, জেনারেল অ্যাফেয়ার্স, মন্ত্রীপরিষদ ও প্রতিরক্ষাসচিব।

আশু প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ
১. চোট পাওয়া রোগীদের জন্য পরিবহন ব্যবস্থা।

নিম্নলিখিত এলাকাগুলোতে অনতিবিলম্বে অ্যাম্বুলেনেসর ব্যবস্থা অবশ্যই করতে হবে:
ক. সেক্টর নং ০১ : হরিয়ানা, শ্রীনগর, রিশিমুখ ও বেলোনিয়ায় একটি করে, মোট : ০৪টি
খ. সেক্টর নং ০২ : রাজগঞ্জ, নিদায়া, সালদানন্দি ও মন্দাভাগে একটি করেল, মোট : ০৪টি
গ. সেক্টর নং ০৩ : সদর দপ্তর-সিমনায় একটি অথবা ছেবরিতে নতুন জায়গায় একটি, মোট : অন্তত ২টি
ঘ. সেক্টর নং ০৪ : কামালপুর, কৈলাশ শহর, ধর্মনগর, বড়পুঞ্জি, মুকতিল, জালালপুর এবং করিমগঞ্জে একটি করে মোট: ০৭টি। (কিছু পরিবহন) মশিমপুরে সেক্টর কমান্ডারদের কাছে হস্তান্তরের জন্য তৈরি। সেসব দ্রুত সারিয়ে ৪ নং সেক্টরের কমান্ডারের কাছে হস্তান্তরের জন্য বলা হলো
ঙ. সেক্টর নং ০৫: শিলং, বালাত, ডাওকি, শিলা ও বাসারায় একটি করে মোট: ০৫টি
চ. সেক্টর নং ০৬ : (আগে পরিদর্শন করা হয়েছে) পাটগ্রাম, তেঁতুলিয়া ও সাহেবগঞ্জে একটি করে মোট: ০৩টি

২. ঔষধ
দুর্ভাগ্যজনক ভাবে, আমার সবশেষ পরিদর্শনর পর সদর দপ্তর থেকে ঔষধ প্রেরণ ছয় সপ্তাহ বিলম্বিত হয়েছে এবং ঔষধের চরম সঙ্কটের কারণে সব জায়গাতেই দুভোর্গ পোহাতে হয়েছে। আমার প্রচেষ্টার ফলেই বিভিন্ন সূত্র থেকে উপহার হিসেবে ঔষধ সংগ্রহ সম্ভব হয়েছে এবং প্রায় ৬০ হাজার রূপী মূল্যের ঔষধ সংগ্রহ করেছি আমি। সেসব এখন বিভিন্ন সেক্টরে পাঠানো হয়েছে। তবে আরও ১ লাখ রূপীর বেশি মূল্যের ঔষধ দ্রুত কিনে তালিকা অনুযায়ী বিভিন্ন সেক্টরে পাঠানো প্রয়োজন। আমি নানা জায়গায় চেষ্টা করেছি কিন্তু বেশির ভাগ দাতারা নানান ছুতোয় ফাঁকি দিয়েছে।
সবচেয়ে বাজে ব্যাপার, বাংলাদেশ রেড ক্রসের মতো আমাদেরই কিছু সংগঠন আমাদের সহযোগিতা করছে না, অথচ মুক্তিবাহিনীর নামে ঠিকই ঔষধ সংগ্রহ করা হচ্ছে।

আমি প্রবলভাবে মনে করি, আমাদের সব এজেন্সর উচিত প্রাপ্য সব উপহার সমবন্টনের জন্য সদর দপ্তরে পাঠানো উচিত।
জরুরী প্রয়োজনীয় ঔষধ স্থানীয় ভাবে কেনার জন্য অনতিবিলম্বে প্রতিটি সেক্টর কমান্ডারকে অন্তত এক হাজার রূপি করে দেওয়া উচিত। আগরতলা, করিমগঞ্জ ও শিলংয়ে আশু প্রয়োজন মেটানোর জন্য ৫ হাজার রূপীর বেশি মূল্যের ঔষধ দান করেছেন জনাব এম. কে, ভিমানি। আমার অনুরোধে এই ঔষধগুলো স্থানীয় ভাবে কেনা হয়েছে। এর আগেও তিনি সদর দপ্তরকে ৭ হাজার রূপী মূল্যের ঔষধ দিয়েছেন। অন্যান্য উপহারের সঙ্গে এই ঔষধগুলোও পাঠানো হয়েছে বিভিন্ন সেক্টরে।

চিকিৎসা সরঞ্জাম

১. স্কোয়াড্রন লিডার শামসুল হক কাজ করছিলেন ১ নম্বর সেক্টরে। তিনি একজন জ্যেষ্ঠ অফিসার। আগরতলায় সদর দপ্তরে তার কাজের সঙ্গে তাকে আমি সেক্টর নং ১, ২ ও ৩-এর সামগ্রিক দায়িত্ব দিয়েছি। প্রতিটি সাব-সেক্টরের সব চাহিদা পূরণ ও সমন্বয় করবেন তিনি।
সমবন্টনের জন্য সদর দপ্তর থেকে প্রয়োজনীয় সব সরবরাহ পর্যালোচনা ও গ্রহণ করার জন্য আমার কাছে একমাত্র দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি হবেন তিনি।
২ বিলোনিয়ায় একটি এ, ডি. এস. স্থাপনের জন্য একজন ডাক্তারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আঞ্চলিক মেডিকেল অফিসার নং ১ –এর সহায়তায় তিনি কাজটি করবেন।
৩. ১, ২ ও ৩ নং সেক্টরে একজন করে দায়িত্বপ্রাপ্ত মেডিকেল অফিসার আছেন। ৩ নং সেক্টর কমান্ডারের চাওয়া আরও একজন।
৪. একজন ডাক্তারকে ৪ নম্বর সেক্টরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তার সদর দপ্তর করিমগঞ্জে মুক্তিবাহিনী হাসপাতাল।
৫. শিলংয়ে জরুরী ভিত্তিতে একজন ডাক্তার প্রয়োজন। আমি দু-একদিনের মধ্যে একজনকে পাঠানোর চেষ্টা করছি।
৬. প্রতিটি সাব-সেক্টরে কজন নিবেদিতপ্রাণ মেডিকেল শিক্ষার্থী কাজ করছে মেডিকেল অফিসার হিসেবে। আমার ইচ্ছা, উপযুক্ত ডাক্তার পাওয়া সাপেক্ষে প্রতিটি সাব সেক্টরে একজন করে এমবিবিএস ডাক্তার নিয়োগ দেওয়া।

বিশ্রামাগার/যুদ্ধকালীন হাসপাতাল

আমার চাপাচাপিতে ড. ত্রিগুণা সেনের নির্দেশে মি. এম. কে. ভিমানি আগরতলায় একটি যুদ্ধকালীন হাসপাতাল খুলেছেন (শুরু হয়েছে ৪০ শয্যা নিয়ে, ইচ্ছা আছে ১১.৯.১৯৭১ তারিখের মধ্যে ১০০ শয্য পর্যন্ত বাড়ানোর)। তার ইচ্ছা ছিল করিমগঞ্জ বা শিলচলেও একটি চালু করার, কিন্তু জুতসই ঘর বা সাহায্যকারী পাওয়া যায়নি দুই জায়গার একটিতেও। শিলংয়ের বিভাগীয় কমিশনারের স্ত্রী মিসেস এম. দাসের তত্বাবধানে শিলংয়ের যুদ্ধকালীন হাসপাতাল ভালো কাজ করছে।
যুদ্ধকালীন হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করা হয়েছে ৫ সদস্যের, যাদের তিনজন স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, দুজন বাংলাদেশের প্রতিনিধি।
আমার আগের নোটগুলোতে তুরা ও কুচবিহারের যুদ্ধকালীন হাসপাতালের কথা উল্লেখ করেছিলাম। এধরণের আরও কয়েকটি বিশ্রামাগারের ভাবনা বিবেচিত হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে, সম্ভব হলে কলকতা ও বালুরঘাটে।
এই হাসপাতালগুলো গড়ে তুলতে প্রায় এক লাখ রূপি লাগবে এবং মাসিক খরচের জন্য লাগবে অন্তত ৫০ হাজার রূপি। হরিয়ানা “বাংলাদেশ মুক্তি সহায়ক সমিতির” মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহ ও সেগুলো পরিচালনার দায়িত্ব নেবেন মি. ভিমানি।

অ্যাম্বুলেন্স সমস্যা

দুমাস আগে যখন দিল্লি গিয়েছিলাম, তখন মিস পদ্মজা নাইডুর সঙ্গে দেখা করে “বাংলাদেশ সহায়তা কমিটির” কাছ থেকে ৩৬টি অ্যাম্বুলেন্স চেয়েছিলাম। তার কাছ থেকে এখনো জবাব পাইনি। আমি তাকে তাগাদা দিয়ে যাচ্ছি। এদিকে, মি. সেন ও মি. ভিমানির কাছ থেকে জানতে পেরেছি যে তারা বোম্বে সরকারের কাছ থেকে দুটি, ভূটানের মহারাজার কাছ থেকে ৩টি ও হরিয়ানার কাছ থেকে ৩ টি অ্যাম্বুলেন্স সংগ্রহ করেছেন আমাদের জন্য।
৪ নং সেক্টরে অন্তত ৬টি গাড়ী আছে যেগুলোকে অ্যাম্বুলেন্সে রূপ দেওয়া যাবে।
আমি জানতে পেরেছি, আমাদের কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স বারাকপুরে বসে আছে। জানি না এটা কতটা সত্যি , তবে আমাদের আহত যোদ্ধাদের জীবন বাঁচাতে পরিবহনের ত্বরিত প্রয়োজনটা নিশ্চয়ই আমাকে বাড়িয়ে বলতে হবে না।

করিমগঞ্জ মুক্তিবাহিনী হাসপাতাল

একটি বাড়ীর ব্যবস্থা করেছে জনাব দেওয়ান ফরিদ গাজী এমএনএ। ২০ জন রোগীর জন্য শয্যা ও বিছানাপত্র দিয়েছেন জনৈক মোবাশ্বের আলি। আমরা সেখানে ১২ জন রোগী দেখেছি। একজন ডাক্তার ও ৩ জন নার্স নিয়োগ দিয়েছি আমরা।
এই হাসপাতালের দেখভাল করতে হবে প্রতিরক্ষা বিভাগকে। এই হাসপাতাল চালাতে আনুমানিক ৫ হাজার রূপি লাগবে। কিছু ঔষধ জরুরী ভিত্তিতে পাঠাতে হবে।

বালাত এ. ডি. এস

শিলংয়ে আমাদের রাজনৈতিকরা চারটি তাঁবুসহ একটি এ.ডি.এস-এর ব্যবস্থা করেছে। একজন ডাক্তার সেখানে কাজ করছেন, তার পারিশ্রমিক জোগাচ্ছে বিএসএফ। ঔষধ ও অস্ত্রোপচারের সরঞ্জাম জরুরী ভিত্তিতে পাঠাতে হবে আমাদের। ২০ শয্যার সঙ্গে আরও চারটি তাঁবু গঠন করতে হবে। প্রতিরক্ষা ব্যয় থেকে শুরু করে প্রারম্ভিক ব্যয় ৫ হাজার রূপি ও ঔষধসহ পরিচলনা ব্যয় ৩ হাজার রূপি আমাদের বহন করতে হবে। এসব নিয়ে কিছু একটা আমাদের খুব দ্রুত করা দরকার।
ডাওকি, শিলা ও বাসেরাতেও একইরকম এ.ডি.এস. স্থাপন করতে হবে। সেক্টর মেডিকেল অফিসার নিয়োগ দেওয়ার পর তারই দায়িত্ব হবে সবকিছু গোছানো। মেডিকেল অফিসারের দায়িত্বে একটি গাড়ীর ব্যবস্থা করতে হবে, নইলে কোনো কাজ করাই সম্ভবপর হবে না।

সামগ্রিক ধারণা

সাম্প্রতিক সফর নিয়ে আমার ধারণা মন্ত্রীপরিষদকে জানানোর যে সুযোগ ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি আমাকে দিয়েছেন, সেজন্য আমি কৃতজ্ঞ। আমার ধারণা, আমাদের উজ্জীবিত দেশপ্রেমের কাছে সার্বিক সব সমস্যাই সময়ের সঙ্গে মিলিয়ে যাচ্ছে। সমস্যাগুলো অন্তত চার পরতের, সেটাও আবার দুদিকেই। ভারতের দিকে সামরিক বাহিনী, বেসামরিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক। আমাদের দিকেও সেসব আছে।
আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের আর কিছুই হারানোর নেই, রক্ত ছাড়া কিছুব দেওয়ার নেই। আমাদের মরিয়া মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করায় ভারতীয় সামরিক কতৃপক্ষকে খুব একটা উৎসাহী মনে হচ্ছে না। অস্ত্র ও গোলাবারুদের ঘাটতিতে অতীতে অলস সময় কাটাতে হওয়ায় তারা বিরক্ত।

দুটি অপারেশন আমি দেখেছি, একটি বড়পুঞ্জিতে, আরেকটি বালাতে।

অভিযোগগুলো একই। আমাদের ছেলেদের কামানের পর্যাপ্ত কাভার দেওয়া হয়নি। ভারতীয় বাহিনীর কামান এখানে পিছিয়ে আছে (পাকিস্তানি কামান যেখানে ৫ মাইল দূরে লক্ষভেদী হতে পারে, ভারতীয় কামান যায় ৩ মাইল পর্যন্ত)। জানিনা এসব কতদূর সত্যি, কিন্তু অভিযোগুলো সব জায়গায় একই। বরপুঞ্জিতে ভারতীয় বাহিনী অপ্রস্তুত ছিল, সেখানে পাকস্তানি বাহিনী ভারতীয় সীমানায় ঢুকে গিয়েছিল এবং ভারতের ৩ মাইল ভেতরে আমাদের ছেলেদের ঘেরাও করেছিল। পাকিস্তানি বাহিনী কার্যতঃ সীমান্ত এলাকা ঘিরে ফেলেছে। বিশেষত বালাত এবং বাসারা সীমান্তবর্তী কয়েক মাইল সদ্যমুক্ত এলাকা পাক বাহিনী পুনর্দখল করে নিচ্ছে।
তদন্তের স্বার্থে আমি ভরতীয় মিত্রদের উদ্দেশ্যে যাত্রা করি। তারা জানায় আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা যথেষ্ট তথ্য ও পরিকল্পনা ছাড়াই বাংলাদেশে প্রবেশ করে যার ফলে তারা বিপক্ষশক্তির আক্রমনের জন্য প্রস্তুত ছিল না।
উপরন্তু, মিত্রবাহিনীর উপর আমাদের মুখাপেক্ষী হয়ে পড়ার পূর্বেই এই সমস্যাগুলি স্থানীয় পর্যায়ে কার্যকরভাবে সমাধা করতে হবে যেন তা উচ্চস্তরের চুক্তির জন্য সংগতিপুর্ণ হয়।
আমার মতে আগামী ৩ মাস এমন অবস্থা চলতে থাকলে কমপক্ষে ৫ মিলিয়ন মানুষ সীমান্ত অতিক্রম করে যাবে এবং প্রায় একই সংখ্যক মানুষ দেশের অভ্যন্তরে মারা যাবে।
অন্যান্য সমস্যা এখানে পুনরূত্থাপন করার প্রয়োজন নেই, তথাপি আমার বিনম্র ব্যক্তিগত মতামত হল, একমাত্র সমাধান আমাদের অস্থাবর মন্ত্রীসভা এবং সকল অঞ্চল ও বিভাগে এর বৈঠকসমূহ। মন্ত্রীসভাকে অকুস্থলেই সকল আঞ্চলিক সমস্যাগুলো সম্মিলিতভাবে সমাধা করতে হবে এবং সক্রিয় কর্মকর্তা নিয়োগ করতে হবে যেন সরকারী সিদ্ধান্তগুলি সঠিকভাবে অনুসৃত ও কার্যকর করা হয়।
আমরা কি এমন বিমান পরিবহণের ব্যাবস্থা করতে পারিনা যেমনটি ১২ই এপ্রিল আগরতলা হতে সমগ্র সরকারকে সীমান্ত পেরিয়ে আনার কাজে ব্যবহার করা হয়েছিল?
আমি এটি প্রস্তাব করছি কারণ, আমার মতে মন্ত্রীসভার প্রত্যেক সদস্যের নৈমিত্তিক সফর প্রায়ই সমস্যা সমাধানের তুলনায় অধিক জটিলতার সৃষ্টি করে।
আমাকে বলতেই হচ্ছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহদয় তাঁর সর্বত্র সফরের মাধ্যমে ভাল সুনাম অর্জন করেছেন, যদিও তাঁর এই সুনাম সরকারের অবস্থা সম্পর্কে পূর্বধারণা কিছুটা হলেও বদলে দিয়েছে।

শুধুমাত্র ভারপ্রাপ্ত রাস্ট্রপতি, পি. এম. & সি-ইন-সি. এর জন্য।