You dont have javascript enabled! Please enable it!

শিরোনাম

সূত্র তারিখ
জোনাল এডমিনিষ্ট্রেটিভ কাউন্সিল গঠনের উদ্দেশ্যে স্বরাষ্ট্র মন্তী আহৃত সভার বিজ্ঞপ্তি বাংলাদেশ সরকার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ২৫ আগস্ট, ১৯৭১

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলদেশ সরকার
স্বরাষ্ট্র ও আন্তঃমন্ত্রনালয়
নোটিশ

১. আঞ্চলিক প্রশাসন পরিষদের সংবিধানের জন্য MNA ও MPA দের একটি মিটিং ১৯৭১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর স্ব স্ব আঞ্চলিক পরিষদের সদর দপ্তরে একযোগে অনুষ্ঠিত হবে।
২. উপস্থিত MPA/MNA দের মধ্য হতে একজন সভায় সভাপতিত্ব করার জন্য বাছাইকৃত হবেন।
৩. আঞ্চলিক প্রশাসন অফিসের প্রাক্তন সদস্য সচিব সভার সারসংক্ষেপ লিখবেন এবং সভার শেষে যত দ্রুত সম্ভব (২৪ ঘন্টার মধ্যে) মন্ত্রিসভায় যোগাযোগ করবেন।
৪. সভার ভেন্যু জানতে সকল MNA এবং MPA দের স্ব স্ব আঞ্চলিক প্রশাসন অফিসার ও স্বরাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রনালয়ে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করা হচ্ছে।
(এ.এইচ.এম কামরুজ্জামান )
মন্ত্রী স্বরাষ্ট্র ও আন্তঃমন্ত্রণালয়
২৫ আগস্ট ১৯৭১

স্মারকলিপি নং- HM/43 (400)
কপি ফরোয়ার্ড করা হয়েছে :-
১) জনাব আব্দুল হামিদ এম. এন. এ
২) আঞ্চলিক প্রশাসনিক কর্মকর্তা তথ্য এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের জন্য অঞ্চল
(এ.এইচ.এম কামরুজ্জামান )
মন্ত্রী স্বরাষ্ট্র ও আন্তঃমন্ত্রণালয়

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
সাধারন প্রশাসন বিভাগ
আদেশ

১. মাঠপর্যায়ের প্রশাসনের গতি বৃদ্ধি করার মন্ত্রীসভার সিদ্ধান্তকে কার্যকর করার জন্য এইই সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে, প্রত্যেকের জন্য আলাদা সদর দপ্তর ও আইনগত সীমা ঠিক করে প্রশাসনিক অঞ্চল ভাগ করা হবে।
১) দক্ষিণ-পুর্ব অঞ্চল (১) এইচ.কিউ. সাবরুম i) চট্টগ্রাম
ii) পার্বত্য চটগ্রাম
iii) ফেনী মহকুমা,

২) দক্ষিন-পূর্ব অঞ্চল (২) এইচ.কিউ. আগরতলা নোয়াখালী জেলা
i) ঢাকা
Ii) কুমিল্লা
iii) নোয়াখালী জেলা (ফেণি মহকুমা বাদে)

৩) পূর্ব অঞ্চল এইচ.কিউ. ধর্মনগর i)হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার মহকুমা
ও সিলেট জেলা

৪) উত্তর-পূর্ব অঞ্চল (১) এইচ.কিউ. ডকি i) সদর ও সুনামগঞ্জ মহকুমা, সিলেট জেলা

৫) উত্তর-পূর্ব অঞ্চল (২) এইচ.কিউ. তুরা i) ময়মনসিংহ
ii) টাঙ্গাইল
৬) উত্তর অঞ্চল এইচ.কিউ. চকবিহার i) রংপুর

৭) পশ্চিম অঞ্চল এইচ.কিউ. বালুরঘাট i) দিনাজপুর
ii) বগুড়া
iii) রাজশাহী

৮) দক্ষিন-পশ্চিম অঞ্চল এইচ.কিউ. কৃষ্ণনগর i) পাবনা
ii) কুষ্টিয়া
iii) ফরিদপুর
iv) যশোর

৯) দক্ষিন অঞ্চল এইচ.কিউ. বারাসাত i) বরিশাল
ii) পটুয়াখালী
iii) খুলনা

বি.দ্রঃ ১) জোনাল ডিভিশন তৈরির ক্ষেত্রে জোনাল ডিভিশনের সাথে উল্লেখিত অঞ্চল থেকে অনেক মানুষ নিকটস্থ জোনাল
হেডকোয়ার্টারস এ আসার ভিত্তিতে উপরোক্ত অঞ্চলগুলো ভাগ করা হয়েছে।
২) আরও মাথায় রাখতে হবে যে এক জেলার মানুষ নিজেদের এলাকা যে অঞ্চলে আছে, সে অঞ্চল বাদে অন্য অঞ্চলেও পরতে
পারেন। এ সকল ক্ষেত্রে তারা যেখানে আছেন, সে অঞ্চলের বলে গণ্য হবেন
২. আঞ্চলিক প্রশাসনিক পরিষদ

প্রতি অঞ্চলে একটি করে আঞ্চলিক প্রশাসনিক পরিষদ গঠন করা হবে।
আঞ্চলিক প্রশাসনিক পরিষদের সংবিধানঃ
ক) সকল অঞ্চলের এম.এন. এস এবং এম. পি. আঞ্চলিক প্রশাসনিক পরিষদের সদস্য হবেন।

i) এম.এন. এস এবং এম.পি সকল তাদের অঞ্চল যে জেলায় পরেছে তাতে অবস্থান করবেন যাতে যথাসংখ্যক জনগণের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয় যারা তাদের নির্বাচকমন্ডলীতে অবস্থা করছেন এবং নির্বাচকমন্ডলীর মাঝে যারা স্বাধীনতার যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন।
ii) নির্বাচকমন্ডলী নিজের অঞ্চলের না হওয়া সত্ত্বেও যদি মনে হয়ে যে কোন অঞ্চলে থাকলে আমরা আমাদের লক্ষ্য অর্জনে সফল হবো, এই সিদ্ধান্ত এম.এন.এস অথবা এম. পি দের সুবিধা এবং সুবিবেচনার উপর ছেড়ে দেওয়া হলো।
iii)কোন এম.এন.এস বা এম.পি. এস এক আঞ্চলিক পরিষদের বেশি পরিষদের সদস্য হতে পারবেন না।
(খ) প্রতিটি আঞ্চলিক পরিষদের প্রধান পদে থাকবেন একজন করে চেয়ারম্যান যিনি আঞ্চলিক প্রশাসনিক পরিষদের সদস্যদের মথ্যে থেকে নির্বাচিত হবেন।
(গ)আঞ্চলিক প্রশাসনিক অফিসার পরিষদের সদস্য সচিব হবেন।
(ঘ) প্রশাসনিক পরিষদের কাজ ছেড়ে দেওয়ার জন্য আঞ্চলিক সচিব থাকবেন

৩. আঞ্চলিক প্রশাসনিক পরিষদের কাজঃ
(ক) মন্ত্রিসভার নির্দেশিত নীতি বাস্তবায়ন এবং উপদেশ ও রাজনৈতিক ক্ষমতা আঞ্চলিক পরিষদকে নিশ্চিত করতে হবে।
(খ) আঞ্চলিক অফিসকে সাধারণ জনগণের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হবে এবং তাদের বাংলাদেশ সরকারের উপস্থিতি
অনুভব করাতে হবে।
(গ) আঞ্চলিক প্রশাসনিক পরিষদকে স্থানীয় প্রশাসন এবং অন্যান্য স্থানীয় সংস্থার সহায়তায় উদ্বাস্তুদের মাঝে ত্রাণ বিতরণে
অংশগ্রহণ করতে হবে। তারা বাংলাদেশ সরকারের ত্রান বিতরন কর্মসূচি আয়োজন, পর্যবেক্ষন এবং বিতরণে সহায়তা করবে।
(ঘ) আঞ্চলিক পরিষদ উদ্বাস্তু শিবিরে নজর রাখবে এবং বহিরাগতদের সরিয়ে দেবে।
(ঙ) পরিষদ ইয়ুথ ক্যাম্পে লজিস্টিক এবং প্রসাশনিক সহায়তা দেবে।
(চ) আঞ্চলিক পরিষদ সেক্টর কমান্ডারদের সাথে যোগাযোগ রাখবে এবং সহায়তা নিশ্চিত করবে।
(ছ) আঞ্চলিক পরিষদ স্বাধীন এলাকাসমূহে প্রশাসনিক যন্ত্রপাতি বসাতে সহায়তা করবে।
(জ) পরিষদের সদস্যরা প্রতি মাসে অন্তত একবার একে অপরের সাথে দেখা করবে। সদস্য সচিব চেয়ারম্যানের সাথে আলাপ
করে কর্মসূচি ঠিক করবেন। পরবর্তীতে সভার অন্তত ৫ দিন আগে সদস্য সচিব বিজ্ঞপ্তি জারি করবেন। সদস্যদের প্রস্তাবিত
প্রস্তাবসমূহের মাঝে গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবসমূহ বিবিধ বিষয়ের অধীনে সভায় প্রথমে আলোচনা করা হবে।
৪। আঞ্চলিক প্রশাসনিক কাউন্সিলের উপকমিটিসমূহঃ
(ক) আঞ্চলিক কাউন্সিল তার কাজকর্ম সহজতরভাবে সম্পাদনের উদ্দেশ্যে নিম্নোক্ত উপ-কমিটিগুলো সাধারণভাবে গঠন করবে।
(ক) অর্থ উপ-কমিটি
(খ) ত্রাণ উপ-কমিটি
(গ) স্বাস্থ্য উপ-কমিটি
(ঘ) প্রচারণা উপ-কমিটি
(ঙ) শিক্ষা উপ-কমিটি
কাউন্সিল চাইলে, তৎসত্ত্বেও, যদি প্রয়োজন মনে করে, তাহলে কোন উপ-কমিটি গঠন করতে পারে যেটি মন্ত্রিসভার সংস্থাপন শাখার অনুমোদনের উপর নির্ভর করে।
(খ) প্রত্যেক উপ-কমিটি আঞ্চলিক প্রশাসনিক কাউন্সিলের সর্বনিম্ন ৩ এবং সর্বোচ্চ ৭ সদস্যের মাধ্যমে গঠিত হবে।
(গ) উপ-কমিটির সদস্যরা তাদের মধ্য থেকে একজন সভাপতি (চেয়ারম্যান) নির্বাচন করবেন।
(ঘ) বিভিন্ন বিভাগের প্রতিনিধিত্বকারী আঞ্চলিক কর্মকর্তা অনুরূপ উপ-কমিটির সদস্য-সচিব হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন।
৫। আঞ্চলিক প্রশাসনিক কর্মকর্তাঃ
(ক) প্রত্যেক অঞ্চলের প্রশাসনিক বিন্যাসে একজন আঞ্চলিক প্রশাসনিক কর্মকর্তা প্রধানরূপে থাকবেন।
(খ) আঞ্চলিক প্রশাসনিক কর্মকর্তা সরকারের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন
(গ) আঞ্চলিক প্রশাসনিক কর্মকর্তা, যিনি পদাধিকার বলে আঞ্চলিক প্রশাসনিক কাউন্সিলের সদস্য সচিব, তিনি কাউন্সিল সভার মিনিটস লিপিবদ্ধ রাখবেন।
(ঘ) আঞ্চলিক প্রশাসনিক কর্মকর্তা, সকল আঞ্চলিক কর্মকর্তাদের মধ্যে, যারা জবাবদিহিতার আওতায় পড়েন, তাদের মধ্যে সমন্বয় সাধন করবেন।
(ঙ) আঞ্চলিক কর্মকর্তারা তাদের স্থানীয় প্রতিরূপদের সাথে ঘনিষ্ঠ মৈত্রী স্থাপন করবেন এবং তাদের প্রয়োজনীয় সকল সহযোগিতা এবং সহায়তা করবেন।
(চ) আঞ্চলিক প্রশাসনিক কাউন্সিলের সকল নীতি গ্রহণ করে তা কার্যকর করার জন্য তিনি দায়িত্বপ্রাপ্ত থাকবেন।
৬। আঞ্চলিক কর্মকর্তারাঃ
(ক) প্রত্যেক অঞ্চলে থাকবেঃ
১) একজন আঞ্চলিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা
২) একজন আঞ্চলিক শিক্ষা কর্মকর্তা
৩) একজন আঞ্চলিক ত্রাণ কর্মকর্তা
৪। একজন আঞ্চলিক ইঞ্জিনিয়ার
৫। একজন আঞ্চলিক পুলিশ কর্মকর্তা
৬। একজন আঞ্চলিক তথ্য কর্মকর্তা
৭। একজন আঞ্চলিক হিসাব কর্মকর্তা
খ) আঞ্চলিক কর্মকর্তারা সরকারের নির্দিষ্ট বিভাগ কর্তৃক নিয়োগকৃত হবে, এবং বিভিন্ন অঞ্চলে কাজে নিয়োজিত হবে।
অর্থঃ
ক) অর্থ বিষয়ক সবকিছু প্রত্যেক অঞ্চলের আঞ্চলিক অর্থ উপ কমিটি কতৃক পরিচালিত হবে।
খ) অর্থ উপ কমিটি ৫ জন সদস্য নিয়ে গঠিত হবে। আঞ্চলিক প্রশাসনিক কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও আঞ্চলিক প্রশাসনিক কর্মকর্তা অন্যদের উপ- কমিটির পদাধিকারবলে সদস্য এবং বাকি তিন সদস্য তার সদস্যদের মধ্যে থেকে কাউন্সিল দ্বারা নির্বাচিত হতে থাকবে।
গ) ফান্ড একটি ব্যাংক একাউন্ট কতৃক পরিচালিত হবে। জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট অর্থ উপ-কমিটির সব সদস্যদের নামে খোলা হবে এবং একই নিম্নলিখিত পদ্ধতিতে পরিচালিত হবে:
চেক আঞ্চলিক প্রশাসনিক কর্মকর্তা দ্বারা জারি করা হবে এবং অর্থ উপ-কমিটির চেয়ারম্যান বা তাহার অনুপস্থিতিতে অন্যান্য সদস্যদের কোন একজন দ্বারা প্রতিস্বাক্ষরিত হতে হবে ।
ঘ) মাসিক ভিত্তিতে মূল ব্যয় অনুযায়ী প্রয়োজনীয় তহবিল সরকার দ্বারা প্রকাশ করা হবে। সরকারের অনুমোদন ছাড়া কখনই ব্যয় মূল ব্যয়কে ছাড়িয়ে যাবে না।
ঙ) আঞ্চলিক হিসাব কর্মকর্তা সরকারের সাধারণ আর্থিক বিধি অনুযায়ী যথাযথ হিসাব সংরক্ষণ করবেন।
চ) হিসাব অন্তত একবার অর্থ বিভাগ কর্তৃক নিযুক্ত নিরীক্ষক কতৃক নিরীক্ষিত হবে। হিসাবের একটি পাক্ষিক বিবৃতি অর্থ বিভাগের নিকট প্রেরণ করতে হবে মন্ত্রিসভায় স্থাপন করার জন্য

এস.ডি/- তাজুদ্দিন আহমেদ
প্রধানমন্ত্রী

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!