You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.02.21 | শাসনতন্ত্র সম্পর্কে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের ১৪-দফা দাবী |  পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন - সংগ্রামের নোটবুক
   শিরোনাম    সূত্র  তারিখ
শাসনতন্ত্র সম্পর্কে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের ১৪-দফা দাবী  পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন  ২১ ফেব্রুয়ারী,১৯৭১

শাসনতন্ত্র সম্পর্কে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের দাবী
গণস্বার্থ ও জাতীয় অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য গণতান্ত্রিক শাসনতন্ত্র কায়েম করুন
সংগ্রামী ভাই ও বোনেরা,
রক্তক্ষয়ী গণ-সংগ্রামের ফলে পাকিস্তানে প্রথমবারের জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠীত হইয়াছে। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়া বর্তমানে প্রধান রাজনৈতিক ইস্যু হিসাবে শাসন্তন্ত্রের ইস্যু সামনে আসিয়াছে।এই পরিপ্রেক্ষিতে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন জনগণের স্বার্থে একটি পূর্ণ গণতান্ত্রিক শাসনতন্ত্র কায়েমের জন্য সংগ্রাম করা বর্তমান মুহূর্তে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ দেশপ্রেমিক কর্তব্য বলিয়া বিবেচনা করিতেছে।শাসনতন্ত্র সম্পর্কে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের দাবি ছাত্র জনতার মধ্যে জনপ্রিয় করা ও উহা ব্যাখ্যা করা এবং নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিকট উহা উপস্থিত করা সকল পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন কর্মীর কর্তব্য বলিয়া এই কাউন্সিল ঘোষণা করিতেছে।
শাসনতন্ত্র সম্পর্কে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন মনে করে যে,পাকিস্তানের শাসনতান্ত্রিক সমস্যা স্থায়ী এবং গণতান্ত্রিক ও বিজ্ঞানসম্মত সমাধান হওয়া প্রয়োজন।
তাই একটি বিজ্ঞানসম্মত,গণতান্ত্রিক ও জনগণের আশা-আকাংখার অনুরূপ শাসনতন্ত্র কায়েমের দাবীতে ছাত্রসমাজ সকল গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হইবার জন্য এই কাউন্সিল আহবান জানাইতেছে।এই পরিপ্রেক্ষিতে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন শাসনতন্ত্র সুনির্দিষ্ট দাবি উত্থাপন করিতেছে।
এই কাউন্সিল গণতান্ত্রিক শাসনতন্ত্র কায়েমের জন্য তীব্র গণসংগ্রাম গড়িয়া তোলার আহবান জানাইতেছে।
গণতান্ত্রিক শাসনতন্র রচনার পথ বাধাহীন করার জন্য এই কাউন্সিল LFO-র বিরুদ্ধে সংগ্রামের আহবান জানাইতেছে।

শাসনতন্ত্র সম্পর্কে দাবী
১। পাকিস্তানে কেন্দ্রে ও প্রদেশসমূহে ১৮ বৎসর বয়স্ক সকল নরনারীর প্রত্যক্ষ ভোতে নির্বাচিত পার্লামেন্টারী পদ্ধতির সরকার গঠন করতে হইবে।প্রতি ৪ বছর অন্তর সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠান করিতে হইবে।
পার্লামেন্ট হইবে সম্পূর্ণ সার্বভৌম।দেশের প্রেসিডেন্ট ও প্রাদেশিক গভর্ণরগণ হইবেন নিয়মতান্ত্রিক প্রধানমাত্র।
২।পার্লামেন্টের উপর জনগণের প্রত্যক্ষ অধিকার রক্ষার ব্যবস্থা করিতে হইবে।এইজন্য প্রয়োজনমত নির্বাচিত সদস্যদের ফিরাইয়া আনার অধিকার জনগণের হাতে দিতে হইবে।
৩।জাতি-ধর্ম-বর্ণ নারী-পুরুষ নির্বিশেষে রাষ্ট্রের চোখে সকল নাগরিকের সমান অধিকার দিতে হইবে।সকল ধর্মের স্বাধীনতা ও নাগরিকদের নিজ নিজ বিবেক অনুযায়ী ধর্ম পালনের পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে হইবে।ধর্মের ব্যাপারে রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ চলিবে না,তবে যে কোনরূপ সাম্প্রদায়ীকতা প্রচার বেআইনি করিতে হইবে।রাষ্ট্র হইবে ধর্মনিরপেক্ষ গণোতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র।