You dont have javascript enabled! Please enable it!

শিরোনাম: লাহর প্রস্তাব বাস্তবায়ন কমিটি গঠন
সুত্র: দৈনিক পুর্ব্দেশ
তারিখ: ৩০ মার্চ,১৯৭০

লাহোর প্রস্তাব বাস্তবায়ন কমিটি গঠিত
(ষ্টাফরিপোর্টার)

তথাকথিত আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার মুক্তিপ্রাপ্ত দশজন ব্যক্তি “ লাহোর প্রস্তাব বাস্তবায়ন কমিটি’’ গঠন করেছেন। মামলার দুই নাম্বার আসামী লেঃ কমান্ডার মোয়াজ্জেম হোসেন এবং করপোরাল এ,বি,এম আবদুস সামাদ যথাক্রমে কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হয়েছে ।

কমিটির সম্পাদক এবং যুগ্মসম্পাদক স্বাক্ষরিত প্রেস রিলিজে “সকল রাজনৈতিক’’ ছাত্র,শ্রমিক প্রতিষ্ঠান জনসাধারণ এবং বিশেষ করে যুবসমাজকে কমিটির প্রতি পৃষ্ঠপোষকতা সাহায্য দান এবং আমাদের এক দফার লক্ষ্যকে সাফল্যমণ্ডিত করার আবেদন জানান।

কমিটিতে অন্যান্যদের মধ্যে ষ্টুয়ার্ড মুজিবুর রহমানকে সাংগঠনিক সম্পাদক এম,এস সুলতান আহমদ এবং সার্জেন্ট আবদুল জলিলকে যুগ্ম-সম্পাদক এবং সুবেদার তাজুল ইসলাম, রিসালদার শাসসুল হক, এস,এস,নূর মোহাম্মদ,ফ্লাইট সার্জেন্ট আবদূর রাজ্জাক এবং এ,বি,এম,খুরশীদ সদস্য মনোনীত হয়েছেন ।

——————————————————————–
আইনগত আদেশ কাঠামো, ১৯৭০
রাওয়ালপিন্ডি, মার্চ ৩০ – আইনগত আদেশ কাঠামো ১৯৭০ এর মূল পাঠগুলো নিম্নে বর্ণিত হল (রাষ্ট্রপতির আদেশ ক্রম, ১৯৭০ এর ২) যা রাষ্ট্রপতি এবং সামরিক আইন প্রশাসক প্রধান জেনারেল এ, এম ইয়াহিয়া খান কর্তৃক অদ্য জারিকৃত।
যেহেতু ২৬শে মার্চ ১৯৬৯ সালে জাতির উদ্দেশ্যে তার প্রথম ভাষণে রাষ্ট্রপতি এবং সামরিক আইন প্রশাসক প্রধান জেনারেল প্রতিজ্ঞা করেছিলেন দেশের গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা পুনঃ স্থাপন করার আপ্রাণ চেষ্টা করবেন;
এবং যেহেতু ১৯৬৯ এর ২৮ নভেম্বর জাতির প্রতি ভাষণে তার প্রতিজ্ঞার কথা তিনি পুনর্ব্যক্ত করেছেন এবং ঘোষণা করেছেন পাকিস্তানের জাতীয় সমাবেশের সাধারণ নির্বাচন ১৯৭০ সালের ৫ই অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে;
এবং যেহেতু তিনি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে প্রাদেশিক নির্বাচনের ভোট কোনক্রমেই ১৯৭০ সালের ২২ এ অক্টোবরের পরে হবে না;
এবং যেহেতু, প্রাপ্তবয়স্ক ভোটাধিকারের ভিত্তিতে জনগণের প্রতিনিধি নির্বাচনের প্রস্তুতি স্বরূপ ইতোমধ্যেই ১৯৬৯ সালের ভোটার তালিকা সরবরাহ করে হয়ে গিয়েছে;
এবং যেহেতু পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের সংবিধানের জন্য বিধান তৈরির উদ্দেশ্যে এটা সরবরাহ করা গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে পাকিস্তানের সংবিধানের বিধান রচিত হবে এই আদেশ এবং প্রতিটি প্রদেশের প্রাদেশিক পরিষদ অনুসারে;
সেহেতু, ১৯৬৯ সালের ২৫ এ মার্চের ঘোষণা অনুসারে রাষ্ট্রপতি এবং সামরিক আইন প্রশাসক প্রধান তার উপর প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সজ্ঞানে নিম্নলিখিত আদেশ জারি করছেন:

সংক্ষিপ্ত শিরোনাম এবং উপক্রমণিকা –
১ (ক) এই আদেশ আইনগত আদেশ কাঠামো ১৯৭০ কে বাতিল করে দিতে পারে।
(খ) সরকারী গেজেটে প্রেসিডেন্ট কর্তৃক প্রজ্ঞাপন দ্বারা ইহা বলবত হইতে পারে।
অন্যান্য আইনকে অগ্রাহ্য করার রীতি
২) ইসলামী প্রজাতন্ত্র পাকিস্তানের ১৯৬২ সালের সংবিধান বা আপতঃত বলবত অন্য কোন আইনের শর্তাধীন সংবিধান আদেশে যদি এই আদেশের বিপক্ষে কিছু থেকেও থাকে তবু এই আদেশ কার্যকর থাকবে।
৩ (ক) বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী না হলে তার আদেশে যা বুঝানো হয়েছে:
১- “পরিষদ” বলতে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদ, বা কোন প্রদেশের জন্য হলে সেই প্রদেশের প্রাদেশিক পরিষদ বোঝানো হয়েছে।
২- “কমিশন” বলতে বোঝানো হয়েছে নির্বাচন কমিশন যা অনুচ্ছেদ ৮ এ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
৩ – “কমিশনার” বলতে ভোটার আদেশ, ১৯৬৯ অনুযায়ী নিযুক্ত বা নিযুক্তের জন্য গণ্য বলে বিবেচিত প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে বোঝানো হয়েছে (পি ও নাম্বার: ১৯৬৯ এর ৬)
৪ – “ভোটার” বলতে ভোটার তালিকা ১৯৬৯ মোতাবেক তালিকাভুক্ত ভোটারদের বোঝানো হয়েছে (পি ও নাম্বার: ১৯৬৯ এর ৬)
৫ – “সদস্য” বলতে সংসদ/সমাবেশের সদস্যদের বোঝানো হয়েছে।
৬ – “স্পীকার” বলতে সংসদ/সমাবেশের স্পীকারকে বোঝানো হয়েছে।
৭ – “কেন্দ্রীয় ভাবে নিয়ন্ত্রিত উপজাতীয় এলাকা” সেই অর্থই বহন করে যা পশ্চিম পাকিস্তানের প্রাদেশিক (বিচ্ছেদ) আইন ১৯৭০ এ অন্তর্ভুক্ত আছে।
(খ) এই আদেশে অন্তর্ভুক্ত অঞ্চলগুলো যাদেরকে প্রদেশ বা প্রাদেশিক পরিষদ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে তারা পশ্চিম পাকিস্তানের প্রাদেশিক (বিচ্ছেদ) আইন ১৯৭০ অনুযায়ী নতুন প্রদেশ বা উল্লেখিত প্রদেশের প্রাদেশিক পরিষদ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হবে।
৪) জাতীয় পরিষদ গঠন:
(ক) নির্বাচিত ৩০০ সাধারণ আসন এবং মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত ৩০টি আসন নিয়ে ৩৩০ আসনের পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ গঠিত হবে।
(খ) তফসীল ১ মোতাবেক জনসংখ্যা পরিসংখ্যান ১৯৬১-র সাথে সঙ্গতিপূর্ণ করে প্রদেশ এবং কেন্দ্রীয় ভাবে শাসিত উপজাতীয় এলাকা গুলোতে আসন বরাদ্ধ করা হবে।
(গ) দফা/ধারা ১- কোন মহিলাকে সাধারণ আসন থেকে নির্বাচন করতে অনুৎসাহিত করা হবে না।
৫) প্রাদেশিক পরিষদের গঠন:
(ক) তফসীল ২ এ বর্ণিত প্রাদেশিক নিয়মানুযায়ী প্রতিটি প্রদেশের প্রাদেশিক পরিষদ গঠিত হবে উক্ত প্রদেশ থেকে সাধারণ নির্বাচনে নির্বাচিত এবং সংরক্ষিত মহিলা আসনে নির্বাচিত সদস্যদের নিয়ে।
(খ)দফা/ধারা ১- কোন মহিলাকে সাধারণ আসন থেকে নির্বাচন করতে অনুৎসাহিত করা হবে না।
৬) নির্বাচনের নীতি:
(ক) ধারা/দফা ২ এ প্রদত্ত ব্যতীত, সদস্যদের স্থানীয় নির্বাচনী এলাকা থেকে সাধারণ আসনের জন্য নির্বাচিত করা হবে আইন অনুযায়ী প্রাপ্তবয়স্ক ভোটাধিকারের ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত সরাসরি নির্বাচনের দ্বারা।
(খ) রাষ্ট্রপতি প্রবিধান দ্বারা কেন্দ্রিয় ভাবে শাসিত উপজাতি এলাকা থেকে সদস্যদের নির্বাচনের জন্য আলাদা বিধান জারি করতে পারেন।

(গ) জাতীয় সংসদের কোন প্রদেশের সংরক্ষিত মহিলা আসনের জন্য সদস্যবৃন্দ ওই প্রদেশেরই সাধারণ আসনগুলোর জন্য যেসকল সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন, তাদের দ্বারাই নির্বাচিত হবেন – জাতীয় সংসদের সদস্যদের সাধারণ নির্বাচনের পরপরই এটা কার্যকর হবে।
(ঘ) প্রাদেশিক সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্যবৃন্দ, সাধারণ আসনের জন্য যেসকল সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন, তাদের দ্বারাই নির্বাচিত হবেন।
(৭) নৈমিত্তিক পদরিক্তিঃ
জাতীয় সংসদে যখনই কোন আসন শূন্য হবে, সেই পদরিক্তির তিন সপ্তাহের মধ্যেই ওই আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে হবে।
(৮) নির্বাচন পরিচালনার জন্য নির্বাচন কমিশনঃ
সংসদ সদস্য নির্বাচনের নিমিত্তে এবং আনুষঙ্গিক কার্যনির্বাহের জন্য রাষ্ট্রপতি নিম্নলিখিত সদস্যের সমন্বয়ে একটি নির্বাচন কমিশন গঠন করবেনঃ
(ক) একজন কমিশনার, যিনি ওই কমিশনের চেয়ারম্যান পদে আসীন থাকবেন;
(খ) দুইজন অতিরিক্ত সদস্য, যাদের প্রত্যেককেই হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতি হতে হবে।
(৯) সদস্য হবার যোগ্যতা এবং অযোগ্যতাসমূহঃ
(১) দফা (২) এর বিধানের আওতায় থাকা কোন ব্যক্তি নির্বাচনের যোগ্য হতে পারবেন এবং একজন সংসদ সদস্য হতে পারবেন যদিঃ
(ক) তিনি পাকিস্তানের একজন নাগরিক হন;
(খ) তার বয়স পঁচিশ পূর্ণ হয়;
(গ) তার নাম কোন প্রাদেশিক আসনে কিংবা কেন্দ্র-নিয়ন্ত্রিত আদিবাসী-অধ্যুষিত এলাকার নির্বাচক তালিকায় উপস্থাপিত হয়, যে আসন/এলাকা থেকে তিনি নির্বাচনে দাঁড়াতে চান।
(২) ব্যক্তি নির্বাচিত হওয়ার কিংবা সদস্য মনোনীত হওয়ার জন্য অযোগ্য বলে ঘোষিত হবেন যদিঃ
(ক) কোন উপযুক্ত আদালত কর্তৃক তাকে মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন কিংবা অবস্থানগতভাবে অগ্রহণযোগ্য বলে ঘোষণা করা হয়;
(খ) তিনি একজন অক্ষম দেউলিয়া হয়ে থাকেন, যদিনা দেউলিয়া ঘোষণার পর দশ (১০) বছর অতিবাহিত হয়ে থাকে;
(গ) তিনি কোন অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত অথবা স্থানান্তর বা দুই বছরের অধিককালের কারাবরণের জন্য নির্দেশপ্রাপ্ত হন; যদিনা কারামুক্তির পাঁচ (০৫) বছর, কিংবা বিশেষ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন সাপেক্ষে পাঁচ বছরের কম সময় অতিবাহিত হয়ে থাকে;
(ঘ) তিনি ১লা আগস্ট, ১৯৬৯ এর পর হতে রাষ্ট্রপতির মন্ত্রী-পরিষদের একজন সদস্য হয়ে থাকেন; যদিনা মন্ত্রীপদে ইস্তফা দেওয়ার দুই (০২) বছর, কিংবা বিশেষ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন সাপেক্ষে দুই বছরের কম সময় অতিবাহিত হয়ে থাকে;
(ঙ) তিনি পাকিস্তানের সেবায় এমন কোন কার্যালয় অধিষ্ঠান করেন যা কিনা খণ্ডকালীন কার্যালয় নয় এবং বেতন বা ভাতা দ্বা্রা আর্থিকভাবে নিয়ন্ত্রিত নয়;
(চ) তিনি পাকিস্তানের সেবায় কোনরূপ অসদাচরণের জন্য চাকুরীচ্যুত হয়েছেন; যদিনা চাকুরীচ্যুতির পাঁচ (০৫) বছর, কিংবা বিশেষ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন সাপেক্ষে পাঁচ বছরের কম সময় অতিবাহিত হয়ে থাকে;
(ছ) তিনি পাকিস্তানের সেবায় নিয়োজিত কোন ব্যক্তির জীবনসংগী/ জীবনসঙ্গিনী হন;
(জ) যদি তার নিজের দ্বারা কিংবা তার পক্ষে অপর কোন ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের দ্বা্রা, নিজস্ব লাভের খাতিরে কিংবা কোন অবিভক্ত হিন্দু পরিবারের সদস্য হিসেবে কোন চুক্তিতে তার অংশীদারীত্ব বা স্বার্থ থাকে; পণ্য সরবরাহ কিংবা সরকার কর্তৃক গৃহীত কোন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য সরকার এবং কোন সমবায় প্রূতিষ্ঠানের মধ্যকার চুক্তি এর আওতার বাইরে।
উপরোল্লিখিত উপ-দফায় বর্ণিত অযোগ্যতার শর্তসমূহ প্রযোজ্য হবে না যদিঃ
(i) চুক্তির অংশীদারীত্ব বা স্বার্থ তার উপর উত্তরাধিকার সূত্রে বা বংশ পরম্পরায় অথবা উত্তরাধিকারী, নির্বাহক বা প্রশাসক হিসেবে বর্তায়; এবং বর্তানোর পর ছয় মাস কিংবা বিশেষ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন সাপেক্ষে ততোধিক সময় অতিবাহিত হয়;
(ii) চুক্তিটি কোম্পানি আইন, ১৯১৩ (VII of ১৯১৩) এর নির্ধারিত বিধি অনুযায়ী কোন সরকারী কোম্পানির দ্বারা কিংবা তার পক্ষে সংযুক্ত করানো থাকে; যে চুক্তির মধ্যে তিনি কেবলমাত্র একজন অংশীদার এবং কার্যালয়-ধারণকারী মুনাফাভোগী পরিচালক কিংবা ব্যবস্থাপনা প্রতিনিধি – এর কোনটাই নন;
(iii) তিনি কোন অবিভক্ত হিন্দু পরিবারের সদস্য হন এবং চুক্তিটি অন্য কোন ব্যবসায়িক অভিপ্রায়ে পরিবারের অন্য কোন সদস্য দ্বারা সংযুক্ত হয়েছে, যার মধ্যে উল্লিখিত প্রার্থীর কোনঅংশীদারীত্ব বা স্বার্থ নেই।
(৩) দ্ব্যর্থতা এড়ানোর জন্য এখানে উল্লেখ করা বাঞ্ছনীয় যে, পাকিস্তানের সেবায় কার্যালয় অধিষ্ঠান করেন এমন ব্যক্তিরা হলেন – হাইকোর্ট কিংবা সুপ্রীমকোর্টের বিচারপতি, পাকিস্তানের হিসাবাধ্যক্ষ এবং মহানিরীক্ষক, পাকিস্তানের এটর্নী জেনারেল এবং প্রাদেশিক অ্যাডভোকেট জেনারেল।
(৪) প্রার্থী নির্বাচনের পর যদি তার অযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উথাপিত হয়, কমিশনার উদ্ভুত অভিযোগ নির্বাচন কমিশনের সামনে উত্থাপন করবেন এবং নির্বাচন কমিশন যদি উদ্ভুত অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে পারেন, তবে ওই আসন শুন্য হয়ে পড়বে।
(১০) প্রার্থীতার উপর নিষেধাজ্ঞাঃ
(১) কোন প্রার্থী একই সময়ে একের অধিক সংসদের সদস্য হতে পারবেন না কিংবা একই সংসদের একের অধিক আসনের সদস্য হতে পারবেন না।
(২) উপরোক্ত ১নং দফা প্রার্থীকে একই সময়ে একের অধিক আসন থেকে নির্বাচন করতে বাধা দেবে না। তবে একজন প্রার্থী যদি দুই বা ততোধিক আসনে সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন; এবং সর্বশেষ যেই আসনে তিনি নির্বাচিত হয়েছেন সে সম্পর্কে অবহিত হওয়ার পনেরো (১৫) দিনের মধ্যে কমিশনার বরাবর লিখিত ঘোষণার মাধ্যমে তিনি কোন আসনে প্রতিনিধিত্ব করতে চান একথা না জানান, তাহলে তার সকল আসন শূন্য হয়ে পড়বে। কিন্তু যতদিন তিনি সংসদে দুই বা ততোধিক আসনের সদস্য থাকবেন, তিনি সংসদে অধিবেশনে অংশগ্রহণ করতে বা ভোট দিতে পারবেন না।

(১১) পদত্যাগ, ইত্যাদিঃ
(১) একজন সদস্য স্পিকারের কাছে স্বহস্তে লিখিতভাবে নোটিস দিয়ে স্বীয় পদ থেকে পদত্যাগ করতে পারবেন।
(২) যদি একজন সদস্য স্পিকারের অনুমতি ব্যতিরেকে টানা ১৫টি কার্যদিবস সংসদ থেকে অনুপস্থিত থাকেন, তাঁর আসন শূণ্য হয়ে যাবে।
(৩) নির্বাচনের পর প্রথম সংসদ অধিবেশনের প্রথম থেকে সাত দিনের মধ্যে যদি একজন সদস্য আর্টিকেল ১২ অনুসারে শপথ গ্রহণে ব্যর্থ হন, তাঁর আসন শূণ্য হয়ে যাবে ; তবে শর্ত থাকে যে, স্পিকার কিংবা স্পিকার তখনও নির্বাচিত হয়ে না থাকলে, ঐ নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে উপযুক্ত কারণ দর্শানো সাপেক্ষে কমিশনার উক্ত সময়সীমা বাড়িয়ে দিতে পারেন.

(১২) সংসদ সদস্যদের শপথঃ
সংসদের সদস্য হিসেবে নির্বাচিত ব্যক্তি স্বীয় দপ্তরে প্রবেশের পূর্বেই সংসদে সভাপতিত্বকারী ব্যক্তির সামনে নিন্মলিখিত শপথবাক্য গ্রহণ ও পাঠ করবেঃ

“আমি শপথ গ্রহণ করিতেছি যে আমি পাকিস্তানের প্রতি সত্যিকার বিশ্বস্ততা ও আনুগত্য বজায় রাখিব এবং আমার প্রতি প্রদত্ত দায়িত্ব সততার সহিত, সর্বোচ্চ সামর্থের সহিত ও আইন কাঠামো আদেশ ১৯৭০ (Legal Framework Order, 1970) এর নিয়মানুযায়ী এবং সে মতে সংসদ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত আইনকানুন মোতাবেক পূর্ণ বিশ্বস্ততার সহিত সম্পাদন করিব, এবং সর্বদাই পাকিস্তানের সংহতি, অখন্ডতা, উন্নতি ও সমৃদ্ধির প্রতি নিবেদিত থাকিব।“

(১৩) ভোটের তারিখঃ

জাতীয় সংসদের নির্বাচনের তারিখ শুরু হবে ৫ অক্টোবর, ১৯৭০ এবং প্রাদেশিক সংসদের নির্বাচন হবে অনধিক ২২ অক্টোবর, ১৯৭০।

(১৪) জাতীয় সংসদের অধিবেশন আহবান, ইত্যাদিঃ

(১) জাতীয় সংসদের সদস্যদের জন্য সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবার পর , পাকিস্তানের সংবিধান প্রণয়নের লক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি জাতীয় সংসদের অধিবেশন আহবান করবেন তাঁর পছন্দমত একটি দিনে এবং সময়ে ; এবং জাতীয় সংসদ তার প্রথম দিবস থেকেই শাসনতন্ত্র নির্ধারণকারী হিসেবে নিযুক্ত হবে ; এই শর্তে যে, জাতীয় সংসদের সকল আসন পূর্ণ হয় নাই – এ জাতীয় ভিত্তিতে এই ধারার কোন ব্যাখ্যা রাষ্ট্রপতিকে সংসদের অধিবেশন ডাকতে যদি বিরত না করে।

(২) আহূত সভার পরে ধারা (১) এর অধীনে স্পিকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক নির্ধারিত সময় ও স্থানে জাতীয় সংসদের অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে।

(৩) জাতীয় সংসদ , যুক্তিসংগত মুলতবি বা স্থগিত রাখা ছাড়া, দিনের পর দিন বসে এর কার্যপ্রণালী এগিয়ে নিয়ে যাবে।

(১৫) রাষ্ট্রপতির ভাষণের অধিকার , ইত্যাদিঃ

রাষ্ট্রপতি জাতীয় সংসদে ভাষণ দিতে এবং সংসদে কোন বার্তা বা বার্তাসমূহ প্রেরণ করতে পারবেন।

(১৬) স্পিকার এবং ডেপুটি স্পিকারঃ

(১) জাতীয় সংসদ যত শীঘ্র সম্ভব এর সদস্যদের মধ্য থেকে দু’জনকে নির্বাচিত করবে স্পিকার এবং ডেপুটি স্পিকার হিসেবে ; যাতে কখনো স্পিকার বা ডেপুটি স্পিকারের দপ্তর খালি হলে অন্য সদস্যদের থেকে স্পিকার, প্রয়োজনে ডেপুটি স্পিকার নির্বাচিত করা যায়।

(২) স্পিকার এবং ডেপুটি স্পিকার নির্বাচিত হবার পূর্ব পর্যন্ত কমিশনার জাতীয় সংসদের অধিবেশনে সভাপতিত্ব এবং স্পিকারের কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।

(৩) স্পিকারের দপ্তর খালি থাকলে সে স্থলে ডেপুটি স্পিকার, এবং ডেপুটি স্পিকারের দপ্তরও খালি হয়ে থাকলে সে স্থলে কমিশনার সে দায়িত্ব পালন করবেন।

(৪) সংসদ অধিবেশন চলাকালীন স্পিকারের অনুপস্থিতিতে ডেপুটি স্পিকার, এবং ডেপুটি স্পিকারেরও অনুপস্থিতিতে সংসদের কার্যপ্রণালী দ্বারা নির্বাচিত সদস্য স্পিকারের দায়িত্ব পালন করবেন।

(৫) স্পিকার বা ডেপুটি স্পিকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি সে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিবেন

(ক) যদি জাতীয় সংসদের সদস্যপদ থেকে অব্যাহতি পান
(খ) যদি তিনি রাষ্ট্রপতি বরাবর স্বহস্তে লিখিত দরখাস্তে সে দায়িত্ব হতে অব্যাহতি চান, অথবা
(গ) যদি তার প্রতি আস্থার অভাব এনে কোন প্রস্তাব সংসদে উঠে এবং তা নোটিস প্রদানের ১৪ দিন পরেও সরানো না হয়, এবং জাতীয় সংসদের সদস্যদের অন্তত দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে তা গৃহীত হয়।

(১৭) কোরাম এবং কার্যপ্রণালী বিধিঃ

(ক) যদি, কোন সময়ে জাতীয় সংসদের অধিবেশন চলাকালে সভাপতির নজরে আসে যে, সংসদে সদস্যদের উপস্থিতির হার একশ’র নিচে, তাহলে তিনি উপস্থিতি কমপক্ষে একশ’ না হওয়া পর্যন্ত সভা স্থগিত কিংবা মুলতবি রাখতে পারেন।

(খ) জাতীয় সংসদের কার্যপ্রণালী শিডিউল ৩ (Schedule III) বিধি মোতাবেক পরিচালিত হবে। বিশেষ করে আইনগত বিধি নির্ধারণের ক্ষেত্রে সংসদ সিদ্ধান্ত নিবে।

(গ)যদি জাতীয় পরিষদের কোন সদস্যের নির্বাচন প্রক্রিয়া কিংবা সদস্য নিজেই অনুরূপ ভাবে অযোগ্য বলে বিবেচিত হয়, তবে সেই আসনের জন্য জাতীয় পরিষদ কর্তৃক আনিত কোন কার্যাবলি অবৈধ বলে বিবেচিত হবেনা এবং পরিষদ যে কোন প্রকারের সিদ্ধান্ত গ্রহন ও বাস্তবায়ন করতে পারবেন ।

(১৮) জাতীয় সংসদের সুবিধাদি, ইত্যাদিঃ

(ক) জাতীয় সংসদের কোন আচরণের ( কার্যবিবরণী ) বৈধতা নিয়ে কোন আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না।

(খ) জাতীয় সংসদে বক্তব্য রাখার ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন সদস্য বা ব্যক্তিকে সংসদে বা কোন কমিটিতে দেয়া বক্তব্য বা ভোটের কারণে কোন আদালতের কোন কার্যক্রমের মুখোমুখি করা যাবে না।

(গ) জাতীয় পরিষদের সকল ক্ষমতা ন্যস্ত করা হবে একজন কর্মকর্তার উপর, এর
কার্যপ্রণালী নিয়ন্ত্রণ, কার্যচালন বা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য তাকে অথবা পরিষদের কোন কার্যধারা সম্পর্কিত আদেশ কোনো আদালতের বিচারের আওতাধীন হবে না।

(ঘ) একজন ব্যক্তি জাতীয় পরিষদের মাননীয় কর্তৃপক্ষের অধীনে প্রকাশিত কোন প্রতিবেদন, কাগজ, ভোট অথবা যে কোন কার্যক্রমের জন্য আদালতের কাছে আইনত দায়বদ্ধ থাকবে না।

(ঙ) কেবলমাত্র স্পিকারের অনুপস্থিতি ব্যতীত জাতীয় পরিষদের কোন অধিবেশন অনুষ্ঠিত হওয়ার জায়গা নির্ধারণ কোন আদালত বা অন্য কোন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত নির্দেশে হবে না ।

১৯। সদস্যদের ভাতা এবং সুযোগ-সুবিধা – স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার এবং অন্যান্য সদস্যগণের ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা রাষ্ট্রপতির নির্দেশে বিহিত হবে।

২০। সংবিধান-এর মৌলিক নীতি- সংবিধানে অবশ্যই নিম্নলিখিত মৌলিক নীতির বাস্তব রূপ দান করতে হবে

( ক) পাকিস্তান একটি ফেডারেল প্রজাতন্ত্র হবে যা ইসলামী প্রজাতন্ত্র অফ পাকিস্তান নামে পরিচিত হবে যেখানে অবস্থিত প্রদেশ এবং অন্য অঞ্চল যা বর্তমান অথবা ভবিষ্যতে পাকিস্তানে অন্তর্ভুক্ত হবে তা একটি ফেডারেশনরূপে একতাবদ্ধ হবে যা স্বাধীনতা, অখণ্ডতা ও পাকিস্তানের জাতীয় সংহতি নিশ্চিত করবে এবং ফেডারেশনের যে কোন অংশের যে কোন পদ্ধতিতে ক্ষতি হওয়া থেকে রক্ষা করবে।

(খ) (১) পাকিস্তানের সৃষ্টি সংরক্ষণ করা হবে ইসলামী ভাবাদর্শের ভিত্তিতে; এবং

(২) রাষ্ট্রের প্রধানকে অবশ্যই মুসলিম হতে হবে।

(গ) (১) ফেডারেল এবং প্রাদেশিক আইনসভা গণতন্ত্রের মূলনীতি ও অনুষঙ্গ দ্বারা জনসংখ্যা ও প্রাপ্তবয়স্কদের সরাসরি ও বিনামূল্যে ভোটাধিকারের ভিত্তিতে নির্বাচিত হবে।

(২) নাগরিকদের অধিকার তুলে ধরা ও নিশ্চিত করা হবে।

(৩) মৌলিক অধিকার সংক্রান্ত বিচার এবং আইন-প্রয়োগের ব্যাপারে বিচারবিভাগের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হবে।

(ঘ) বিধানিক, প্রশাসনিক আর আর্থিক সহ সব ক্ষমতা, ফেডেরাল সরকার এবং প্রাদেশিক সরকারের মধ্যে এমনভাবে বিতরণ করা হবে যাতে প্রদেশে সর্বোচ্চ স্বায়ত্তশাসন থাকবে, কিন্তু ফেডেরাল সরকার দেশের স্বাধীনতা ও অখণ্ডতা সংরক্ষণের স্বার্থেপ্রদেরশের উক্ত বিধানিক, প্রশাসনিক আর আর্থিক ক্ষমতা সহ অন্যান্য ক্ষমতা খারিজ করতে এবং বহিঃস্থ ও অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে পারবে।

(ঙ) অবশ্যই নিশ্চিত করা হবে যে-

(১) পাকিস্তানের সকল ধরণের জাতীয় কার্যক্রমে সব এলাকার সকল মানুষ সম্পূর্ণরূপে সক্রিয় অংশগ্রহণ করতে পারবে এবং

(২) একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সকল প্রদেশের মধ্যে এবং একটি প্রদেশের বিভিন্ন এলাকার মধ্যে অর্থনৈতিক এবং অন্যান্য সমস্ত বৈষম্য সংবিধিবদ্ধ এবং অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে দূর করা হবে।

২১। সংবিধানের প্রস্তাবনা- সংবিধানের প্রস্তাবনায় ইহা নিশ্চিতকরণের বিবৃতি অন্তর্ভুক্ত থাককে যে;

(ক) পাকিস্তানের মুসলমানরা যাতে ব্যক্তিগত এবং সমষ্টিগভাবে পবিত্র কুরআন ও সুন্নি ইসলামিক শিক্ষার মাধ্যমে জীবন নির্বাহ করতে পারে সে বিষয়ে তাদের পূর্ণ ক্ষমতা দেওয়া হবে এবং

(খ) সংখ্যালঘুরা অবাধে তাদের ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলতে ও এর চর্চা করতে পারবে এবং পাকিস্তানের নাগরিক হিসেবে তাদের সকল অধিকার, বিশেষাধিকার ও নিরাপত্তার অধিকার ভোগ করবে।

২২। নির্দেশাত্মক নীতিসমূহ – রাষ্ট্র পরিচালনার সকল মূলনীতি যা দ্বারা রাষ্ট্র পরিচালিত হবে সেসব নির্দেশাত্মক নীতিসমূহ সংবিধান কর্তৃক ঘোষিত হবেঃ

(ক) ইসলামিক পথে জীবন অতিবাহিত করতে;

(খ) ইসলামি নৈতিক আদর্শের নিয়ম পালনে;

(গ) পাকিস্তানের মুসলমানদের পবিত্র কুরআন ও ইসলামিক শিক্ষা প্রদানের জন্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতকরণে; এবং

(ঘ) ইসলামি প্রয়োজন ও শিক্ষায় কোন আইন প্রণয়নে নিষেধ করা হচ্ছে যেহেতু পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহতেই সেগুলো ঘোষিত হয়েছে।

২৩। জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের প্রথম বিধানসভা হবে আইনসভা। –
সংবিধান যে প্রদান করবে

(ক) এই আদেশ দ্বারা জাতীয় পরিষদকে ক্ষমতা প্রদান করে যাচ্ছে যে:

(১) যদি ফেডারেশনের আইনসভা এক কক্ষ বিশিষ্ট হয় তাহলে ইহাই হবে পূর্ণ মেয়াদের জন্য ফেডারেশনের প্রথম আইনসভা; এবং

(২) যদি ফেডারেশনের আইনসভা দুই কক্ষ বিশিষ্ট হয় তাহলে ইহা হবে পূর্ণ মেয়াদের জন্য ফেডারেশনের নিম্ন আইনসভা।

(গ) এই আদেশ অনুযায়ীই পূর্ণ মেয়াদের জন্য প্রাদেশিক পরিষদই হবে উক্ত প্রদেশের প্রথম আইনসভা।

২৪। সংবিধান প্রণয়নের সময়- জাতীয় পরিষদ এর প্রথম অধিবেশনের ১২০ দিনের মধ্যে সংবিধানকে সংবিধান বিল আকারে উত্থাপন করবে এবং যদি ব্যর্থ হয় তাহলে পরিষদ বিলুপ্ত হবে

২৫, সংবিধানে প্রামাণিকরণঃ রাষ্ট্রপতির কাছে জাতীয় সভায় পাশকৃত পাণ্ডুলিপির সত্যতা যাচাই করতে হবে। অপ্রমাণিত হলে জাতীয় সমাবেশে বিশ্লিষ্ট করতে হবে।

২৬, সভার উদ্দেশ্যঃ
(ক) রাষ্ট্রপতি কর্তৃক সমাবেশ হয়ে প্রামাণ সংবিধান বিল বলবৎ হওয়া পর্যন্ত পাকিস্তানের জন্য একটি সংবিধান প্রণয়নের উদ্দেশ্যে এই আদেশ প্রদাণ, সংরক্ষণ, জাতীয় সমাবেশ ক্ষমতা পূরণ করতে পারবে না।
(খ) রাষ্ট্রপতি কর্তৃক জাতীয় সভার সংবিধানের বিল পাশ হওয়া পর্যন্ত প্রাদেশিক সমাবেশ আহ্বান করা যাবেনা।
২৭, আদেশের ব্যখ্যা ও সংশোধনঃ
(ক) যেকোন প্রাদেশিক আদেশের ব্যখ্যা নিয়ে কোন প্রশ্ন বা সন্দেহ থাকলে তা রাষ্ট্রপতির একটি সিদ্ধান্ত দ্বারা সমাধান করা হবে এবং তা আদালতের সকল প্রশ্নের ঊর্ধ্বে থাকবে।
(খ) রাষ্ট্রপতি এবং জাতীয় সভার এই আদেশ সংশোধনের কোন অধিকার থাকবেনা।

তালিকা ১-
[অনুচ্ছেদ ৪(২)]
পাকিস্তানের জাতীয় সভা

সাধারণ মহিলা
পূর্ব পাকিস্তান- ১৬২ ৭
পাঞ্জাবী- ৮২ ৩
সিন্ধু- ২৭ ১
বেলুচিস্তান- ৪ ১
উত্তর-দক্ষিণ প্রদেশের সীমান্ত- ১৮ ১
কেন্দ্রীয় শাসিত জাতি- ৭ ১
————————————————————————————————
মোট- ৩০০ ১৪

তালিকা ২-
[অনুচ্ছেদ ৫(১)]
প্রাদেশিক সভা

সাধারণ মহিলা
পূর্ব পাকিস্তান- ৩০০ ১০
পাঞ্জাবী- ১৮০ ৬
সিন্ধু- ৬০ ২
বেলুচিস্তান- ২০ ১
উত্তর-দক্ষিণ প্রদেশের সীমান্ত- ৪০ ২
—————————————————————————————————-
মোট- ৬০০ ২১

তালিকা ৩-
[অনুচ্ছেদ ১৭(২)]
কার্যপ্রণালীর নিয়ম

১, সংক্ষিপ্তশিরোনামঃ এই নিয়মগুলো জাতীয় সভার কার্যপ্রণালীর নিয়ম, ১৯৭০ নামে পরিচিত হতে পারবে।

২, সংজ্ঞাঃ এই বিষয় বা প্রসঙ্গে যদি না কোন প্রতিকূলতা থাকে তাহলে এই নিয়মগুলো খাটবে-
(ক) “এসেম্বলী” মানে পাকিস্তানের জাতীয় সমাবেশ;
(খ) “বিল” মানে পাকিস্তানের সংবিধানের জন্য একটি বিলের কাঠামোর আবেদন;
(গ) “কমিশনার” মানে নির্বাচন কার্য আদেশ, ১৯৬৯ (পি.ও নং ১৯৬৯ এর ৬) এর জন্য নিয়োজিত প্রধান নির্বাচন কমিশনার;
(ঘ) “সমিতি” মানে সভায় নিয়োজিত একটি সমিতি;
(ঙ) “বিল বিষয়ক দায়িত্বরত সদস্য” মানে দায়িত্বরত সদস্যসহ অন্যান্য সদস্যারা বিল বিষয়ক যা পরিবর্তন আনতে পারবে তা কেবল অধিবেশনের সভাষক বলতে পারবেন;
(চ) “সম্পাদক” মানে এসেম্বলীর সম্পাদক;
(ছ) “স্পীকার” মানে এসেম্বলীর সভাষক।

৩, সভার ক্রিয়াকৌশলঃ
(ক) সভার ক্রিয়াকৌশল পাকিস্তানের সংবিধান কাঠামোর জন্য গঠন করা হবে;
(খ) সংবিধান একটি বিলের মাধ্যমে সভায় গঠন ও অনুমোদন হবে।

৪।স্পীকার ও ডেপুটি স্পীকার নির্বাচন :(ক)পরিষদের প্রথম বৈঠকে, সদস্যদের শপথ গ্রহণ শেষে কমিশনার সদস্যদের স্পীকার ও ডেপুটি স্পীকার নির্বাচন করতে ডাকবেন।
(খ)যেকোন সদস্য অপর কোন সদস্যের নাম তার সম্মতি ক্রমে সচিবের নিকট স্পীকার বা ডেপুটি স্পীকার হিসাবে লিখিত ভাবে প্রস্তাব করতে পারবেন।
(গ) কোন সদস্য স্পীকার বা ডেপুটি স্পীকার হিসাবে একাধিক সদস্যের নাম প্রস্তাব করতে পারবেন না।
(ঘ) সচিব স্পীকার বা ডেপুটি স্পীকার হিসাবে মনোনীত সদস্যদের নাম পৃথক ভাবে পড়ে শোনাবেন।
(ঙ)নাম ঘোষণার পরপরই যে কোন মনোনীত সদস্য তার মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে পারবেন।
(চ)যেখানে প্রত্যাহার শেষে, যদি মাত্র একজন প্রার্থী স্পীকার বা ডেপুটি স্পীকার নির্বাচনের জন্য অবশিষ্ট থাকেন তখন কমিশনার সেই প্রার্থী কে নির্বাচিত স্পীকার বা ডেপুটি স্পীকার হিসাবে ঘোষণা করবেন।
(ছ)যখন স্পীকার বা ডেপুটি স্পীকার নির্বাচনের জন্য একাধিক প্রার্থী থাকবেন, তখন সচিব পরিষদের সামনে সেসব প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করবেন এবং পরিষদ তখন কমিশনার এর নির্দেশনা অনুযায়ী গোপন ব্যালট এর মাধ্যমে স্পীকার ও ডেপুটি স্পীকার নির্বাচন করবেন।
(জ)যদি দুই বা ততোধিক প্রার্থী এরুপে সমান সমান ভোট পান যে একটি অতিরিক্ত ভোটেই তারা নির্বাচিত হতে পারেন, সেক্ষেত্রে কমিশনার ঐসকল প্রার্থীদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে ড্র করবেন। ড্রতে যার নাম আসব, তিনিই স্পীকার বা ডেপুটি স্পীকার নির্বাচিত হবেন।
৫। অধিবেশন পরিচালক হিসাবে স্পীকারঃ (ক)জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্পীকারবা তার অনুপস্থিতিতে ডেপুটি স্পীকার দ্বারা পরিচালিত হবে। উভয়ের অনুপস্থিতে, সভাপতির প্যানেলে বৈঠকে উপস্থিত যে সদস্যের নাম সর্বাগ্রে রয়েছে তাকে দিয়ে পরিচালিত হবে।
(খ)যদি কোন অধিবেশনের কোন বৈঠকে স্পীকার, ডেপুটি স্পীকার বা সভাপতির প্যানেলের কেউ ই উপস্থিত না থাকে, তবে কমিশনার বিষয়টি অধিবেশনে উপস্থাপন করবেন এবং সাথে সাথে একজন উপস্থিত সদস্যকে অধিবেশন পরিচালক হিসাবে নির্বাচিত করবেন।
৬।স্পীকারের ক্ষমতাঃ (ক)এই ধারার, উপধারা অনুযায়ী, স্পীকার চাইলে পরিষদের কোন বৈঠক স্থগিত করতে পারেন এবং স্থগিতাদেশের পর বৈঠক ডাকতে পারেন।
(খ)স্পীকারঃ
(i)ধারানুযায়ী পরিষদের বৈঠক ডাকতে পারবেন।
(ii)শৃংখলা ও শালীনতা রক্ষা করবেন এবং যদি গ্যালারীতে বিশৃংখলার সৃষ্টি হয় তবে তা দূর করবেন। এবং
(iii) শৃংখলার সকল নিয়ম নির্ধারন করবেন।
(গ)নিজের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করার জন্য প্রয়োজনীয় সকল ক্ষমতা স্পীকারের থাকবে।
৭।সভাপতিদের প্যানেলঃ পরিষদের সদস্যদের মাঝ থেকে স্পীকার অনধিক চার সদস্যের একটি সভাপতি প্যানেল মনোনীত করবেন এবং প্রাধান্য অনুযায়ী তাদের নাম বিন্যাস করবেন।
৮।পরিচালকের ক্ষমতাঃ যে সদস্য পরিষদের কোন বৈঠক পরিচালনা করবেন তিনি সেই বৈঠকের জন্য স্পীকারের সকল ক্ষমতার অধিকারী হবেন এবং স্পীকার যে সকল নিয়মের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন পরিচালক ও সে সকল বিষয় ও ব্যাক্তি সম্পর্কে প্রসঙ্গ উল্লেখ করবেন।
৯।পরিষদে কার্যসম্পাদনঃ পরিষদের কার্যাবলী পরিষদের সামনে নিম্নোক্ত ভাবে আনা হবেঃ
(ক)আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব
(খ)কোন প্রস্তাবের সংশোধন, বা কোন সংশোধনীর সংশোধন; এবং
(গ)কোন কমিটির রিপোর্ট।
১০।বৈঠকের সময়ঃ পরিষদের বৈঠক সকাল ৯ ঘটিকায় আরম্ভ হবে যদিনা পরিষদ অন্যরুপ নির্ধারন করে বা স্পীকার অন্য নির্দেশনা দেন।
১১। কার্যসম্পাদনের উপায়ঃ (ক)সচিব কর্তৃক একটি কার্যতালিকা প্রস্তুত করা হইবে এবং স্পীকারের অনুমোদনের পর কার্যদিবস শুরু হবার পূর্বে এর একটি কপি সকল সদস্যের কাছে হস্তান্তর করা হইবে। এই তালিকাটি কে “দিবসের কার্যাবলি” নামে অভিহিত করা হইবে।
(খ)এই সকল নিয়মের বাইরের কোন কার্য যা দিবসের কার্যাবলি তে উল্লেখ নেই, স্পীকারের অনুমতি ব্যতিরেকে অন্য কোন দিনের অন্য কোন বৈঠকে চালান করা যাবে না।

২২। অপ্রাসঙ্গিকতা বা পুনরাবৃত্তি- একজন সাংসদের তার নিজের অথবা অন্য সাংসদদের যুক্তিতর্কের অপ্রাসঙ্গিক বা ক্লান্তিকর পুনরাবৃত্তিতে অবিরত থাকার বিষয়ে স্পিকার সংসদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তাকে নিজের বক্তব্য থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিতে পারেন এবং সংসদ অবিলম্বে তার আসন গ্রহণ করবেন।

২৩। বিতর্কের সীমাবদ্ধতা- সংসদের সামনে প্রত্যেক বক্তব্যের বিষয়বস্তু কঠোরভাবে বিষয়ের প্রাসঙ্গিক হবে। একজন সাংসদ যখন কথা বলবেন এবং বলবেন না

(ক) সংসদের চরিত্র অথবা কার্যবিবরণীর বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক এবং অপমানজনক শব্দ;
(খ) রাষ্ট্রদোহমূলক অথবা ন্যায়সঙ্গত শব্দ উচ্চারণ;
(গ) যথেচ্ছ ও অবিরতভাবে সংসদের কর্মকাণ্ডে ব্যাঘাত ঘটানোর জন্য তার বক্তব্যের অধিকার ব্যবহার।

২৪। সংসদদের একবারের বেশি কথা না বলা। -কোন সাংসদ সংসদের একটি প্রস্তাবনায় একবারের বেশি কথা বলবেন না শুধুমাত্র প্রত্যুত্তরের অধিকার চর্চা অথবা স্পিকারের অনুমতি নেওয়া ব্যতীত এবং তা হবে কোন নতুন বিতর্কের বিষয় উপস্থাপনা ছাড়া শুধু নিজস্ব কোন ব্যাখ্যার উদ্দেশ্যে।

২৫। সংসদ কক্ষে প্রবেশাধিকার। – সংসদ চলাকালীন সময়ে সংসদ কক্ষ ও এর গ্যালারিতে সাংসদ ব্যতীত অন্য কারো প্রবেশাধিকার স্পিকারের নির্দেশ অনুযায়ী নিয়ন্ত্রিত হবে।

২৬। সংসদের কার্যবিবরণীর প্রতিবেদন। – সংসদের কার্যবিবরণীর সম্পূর্ণ প্রতিবেদন ছাপানো এবং সাংসদদের কাছে পৌঁছে দেবার দায়িত্ব বর্তাবে সচিরের উপর।

২৭। প্রস্তাবিত আইনের খসড়া উপস্থাপনের জন্য লিভ।
(ক) সচিবের নিকট দুই দিনের বিজ্ঞপ্তিপূর্বক প্রস্তাবিত আইনের খসড়া পাঠানোর পর তা উপস্থাপনের জন্য যেকোনো সাংসদ লিভের জন্য প্রস্তাব করতে পারেন।
(খ) যদি একটি বিল উপস্থাপনের জন্য লিভের প্রস্তাবের বিরোধিতা করা হয়, তবে স্পিকার, অনুমতি প্রদানের পর, যদি তিনি উপযুক্ত বলে মনে করে, যে সাংসদ প্রস্তাব করেন তার কাছ থেকে একটি সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যামূলক বক্তব্য এবং যে সাংসদ তা বিরোধিতা করেন, আরও বিতর্ক করতে পারেন, সেই প্রস্তাবে ভোট প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় সাংসদ সংখ্যা পূরণের জন্য।
(গ) যদি প্রস্তাবিত আইনের খসড়া উপস্থাপনের জন্য লিভ মঞ্জুর করা হয়, তবে সাংসদ তা উপস্থাপন করতে পারেন।

২৮। উপস্থাপনের পরবর্তী প্রকাশনা। – প্রস্তাবিত আইনের খসড়া উপস্থাপনের পর যত দ্রুত সম্ভব তা সরকারী ঘোষপত্রে প্রকাশিত হবে।

২৯। উপস্থাপনের পরবর্তী প্রস্তাবনা যখন একটি প্রস্তাবিত আইনের খসড়া উপস্থাপিত হয় অথবা কোন পরবর্তী উপলক্ষ, দায়িত্বে থাকা সাংসদ তার প্রস্তাবিত আইনের খসড়া বিবেচনায়নিম্নলিখিতযেকোনোএকটিপ্রস্তাবনাপারেন, যথাঃ

(ক) যে এটি সংসদ কর্তৃক অবিলম্বে অথবা ভবিষ্যতে কোন সুনির্দিষ্ট দিনে বিবেচিত হবে; অথবা
(খ) যে এটি কোন বাছাই কমিটির প্রতি অর্পিত হবেঃ

এই শর্তে যে, যতক্ষণ পর্যন্ত না বিলের প্রতিলিপি সাংসদদের ব্যবহারের জন্য প্রাপ্তিসাধ্য হবে ততক্ষণ পর্যন্ত কোন প্রস্তাবনা করা যাবেনা এবং যেকোনো সাংসদ যেকোনো প্রস্তাবনার বিরুদ্ধে আপত্তি জানাতে পারেন যদি না বিলের প্রতিলিপি যেদিন প্রস্তাবনা করা হয়েছে তার তিন দিন পূর্বে প্রাপ্তিসাধ্য করা হয়; এবং এই আপত্তিগুলো গ্রহণযোগ্য হবে যদি না স্পিকার, তার বিল বিলম্বিত করার ক্ষমতাবল অধিকারে, প্রস্তাবনাটিকে তৈরি করতে দেন।

৩০। বিলের নীতি আলোচনা, – { (ক) যেদিন কোন প্রস্তাবনা করা হবে সেদিন, অথবা যেদিন এই আলোচনা স্থগিত করা হবে তার পরবর্তী যেকোনো দিন, বিলের নীতি এবং এর সাধারণ বিধান আলোচনা করা যেতে পারে, কিন্তু নীতি ব্যাখ্যা করতে যতটুকু প্রয়োজন তার চেয়ে বেশি বিলের বিস্তারিত অবশ্যই আলোচনা করা যাবেনা।

(খ) এই পর্যায়ে, বিলের কোন সংশোধনী প্রস্তাব করা নাও হতে পারে কিন্তু দায়িত্বশীল সাংসদ যদি প্রস্তাব করেন যে তার বিলটিকে বিবেচনায় রাখা হোক, তবে যেকোনো সাংসদ প্রস্তাব করতে পারেন যে বিলটিকে সংশোধনী হিসেবে বাছাই কমিটির নিকট অর্পিত হবে।

৩১। যাদের দ্বারা বিলের প্রস্তাবনাসমূহ করা যাবে। – দায়িত্বশীল সাংসদ বাদে অন্য কোন সাংসদ দ্বারা বিল বিবেচনায় নেওয়া বা বিল পাস করার প্রস্তাব করা যাবেনা যদি না স্পিকার অন্য কোন সাংসদকে দায়িত্বশীল সাংসদ হিসেবে ভারপ্রাপ্ত করেন; এবং বাছাই কমিটির নিকট বিল অর্পিত করার প্রস্তাব দায়িত্বশীল সাংসদ ব্যতীত অন্য কেউ প্রস্তাব করতে পারবেন না শুধুমাত্র সংশোধনীর কোন উপায়ে দায়িত্বশীল সাংসদ দ্বারা প্রস্তাব করা হলে।

৩২। প্রতিবেদন উপস্থাপনের পর কার্যপ্রণালী, – (ক) বাছাই কমিটিতে বিল উপস্থাপনের পর, দায়িত্বশীল সাংসদ প্রস্তাব করতে পারেনঃ

(১) বাছাই কমিটির প্রতিবেদন করা বিলটি বিবেচনায় নেওয়া হোকঃ এই শর্তে যে, যেকোনো সাংসদ এই বিবেচনার প্রতি আপত্তি জানাতে পারেন যদি প্রতিবেদনের প্রতিলিপি সাংসদদের ব্যবহারের জন্য প্রাপ্তিযোগ্য করা না হয় এবং এই আপত্তি টিকে থাকবে যদি না স্পিকার প্রতিবেদনটিকে বিবেচনায় নেন; অথবা
(২) বাছাই কমিটির প্রতিবেদন করা বিলটিকে পুনরায় বিবেচনার জন্য পেশ করা হবে হয়
(ক) সীমাবদ্ধতা ছাড়া; অথবা
(খ) শুধু কোন সুনির্দিষ্ট ধারা বা সংশোধনী সম্পর্কে; অথবা
(গ) বিলে কোন সুনির্দিষ্ট বা একটি অতিরিক্ত ব্যবস্থা তৈরি করার জন্য বাছাই কমিটির প্রতি নির্দেশনা;
(ঘ) যদি দায়িত্বশীল সাংসদ প্রস্তাব করেন যে বিলটিকে বিবেচনায় নেওয়া হোক তবে যেকোনো সাংসাদ প্রস্তাব করতে পারেন যে একটি সংশোধনী হিসেবে বিলটিকে পুনরায় বিবেচনার জন্য পেশ করা হবে।

৩৩। সংশোধনীসমূহের প্রস্তাব, – (ক) যখন একটি বিল বিবেচনায় নেওয়ার প্রস্তাব সম্পন্ন করা হয়েছে তখন যেকোনো সাংসাদ বিলের একটি সংশোধনী প্রস্তাব করতে পারেন।
(খ) যে সাংসদ একটি সংশোধনী প্রস্তাব করার ইচ্ছা পোষণ করে তিনি সচিবের নিকট সংশোধনীর প্রতিলিপিসহ একটি বিজ্ঞপ্তি দিবেন।

(গ) প্রত্যেক সদস্যের ব্যবহারের জন্য সংশোধনীর প্রতিলিপি প্রাপ্তিযোগ্য করার জন্য সচিব দায়ী থাকবেন।

৩৪। সংশোধনীর কার্যপ্রণালী। – সংশোধনীসমূহকে সাধারণভাবে তাদের সম্বন্ধযুক্ত স্ব স্ব ধারার ক্রমেই বিবেচনা করা হবে, এবং এইধরণের ধারার প্রসঙ্গে একটি প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়েছে বিবেচনা করা হবে “ যে তার ধারা ( অথবা ক্ষেত্রবিশেষে, যে এই ধারাটি, সংশোধিত হিসেবে) বিলের অংশ হিসেবে গণ্য হবে”।

৩৫। ধারা অনুযায়ী বিলের দাখিল। – যখন একটি বিল বিবেচনায় নেওয়ার প্রস্তাব সম্পন্ন করা হয়েছে, তখন ধারা অনুযায়ী বিল দাখিলের বিষয়টি স্পিকারের বিচক্ষণতায় থাকতে হবে এবং যখন তিনি এটি করবেন, তখন স্পিকার প্রতিটা ধারা আলাদা আলাদাভাবে পড়বেন এবং যখন এর সাথে সম্পর্কিত সংশোধনীসমূহ মোকাবিলা করা হবে তখন প্রশ্নটি রাখা হবে। “যে তার ধারা ( অথবা ক্ষেত্রবিশেষে, যে এই ধারাটি, সংশোধিত হিসেবে) বিলের অংশ হিসেবে গণ্য হবে”।

(ঘ) একটি সংশোধনীর উপর বিল বিবেচনায় নেওয়ার পর আনুষ্ঠানিক বা আনুষঙ্গিক নয় এমন কোন সংশোধনী প্রস্তাব করা যাবেনা যে বিল পাশ করা হবে।

৩৬। বিল পাশ। –
(ক) যখন একটি বিল বিবেচনায় নেওয়ার প্রস্তাব সম্পন্ন হবে এবং বিলটির কোন সংশোধনী করা হবে না, দায়িত্বশীল সাংসদ তখনই প্রস্তাব করতে পারেন যে বিলটিকে পাশ করা হোক।
(খ) যদি বিলের কোন সংশোধনী করা হয়, তবে যেকোনো সাংসদ একই দিনে বিল পাশের প্রস্তাবে আপত্তি জানাতে পারেন এবং তা টিকে থাকবে যদি না স্পিকার এই প্রস্তাবটিকে গ্রাহ্য করেন।
(গ) যখন আপত্তি টিকে যাবে, তখন বিল পাশের জন্য একটি প্রস্তাব ভবিষ্যতের কোন দিনে করা যেতে পারে।
(ঘ)

৩৭। বিল প্রত্যাহার। – দায়িত্বশীল সাংসদ যেকোনো মুহূর্তে তার উপস্থাপিত বিল প্রত্যাহারের জন্য প্রস্তাব করতে পারেন; এবং, যদি এরূপ প্রত্যাহার মঞ্জুর হয়, তবে বিল প্রসঙ্গে আর কোন প্রস্তাব করা নাও হতে পারে।

৩৮। বিলের ভ্রষ্টতা। যখন একটি বিল পাশ হবে, তখন অন্যান্য মুলতবী বিলগুলো সংসদে ভ্রষ্ট হবে।

৩৯। প্রমাণীকরণ। – যখন একটি সাংবিধানিক বিল সংসদ কর্তৃক পাশ হবে, তখন সচিব রাষ্ট্রপতির নিকট স্পিকারের সই করা বিলের একটি প্রতিলিপি প্রমাণীকরণের জন্য জমা দিবেন।

৪০। সংসদের কমিটি। –
(ক) সাংসদ বিল সম্পর্কে গঠিত একটি বাছাই কমিটির পাশাপাশি যত খুশি কমিটি নিয়োগ দিতে পারেন এবং এই প্রতিটি কমিটিতে এমন আলোচ্য বিষয় বরাদ্দ করতে পারে যা সাংসদ উপযুক্ত বলে মনে করবে।
(খ) যখন সংসদ কমিটি নিয়োগ করবে তখন চেয়ারম্যান সহ কমিটির সদস্যরাও সংসদ কর্তৃক নিয়োগ হবে।

(গ) স্পিকার কর্তৃক মনোনয়নের পর একটি কমিটির সাময়িক পদ শুন্যতা যত দ্রুত সম্ভব পূরণ করতে হবে।
(ঘ) যদি কোন সভায় কমিটির চেয়ারম্যান উপস্থিত না থাকে, তবে কমিটির সদস্যরা তখনই নিজেদের মধ্যে কাউকে চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত করবে।

(ঙ) ভোটের সমতার ক্ষেত্রে, চেয়ারম্যান দ্বিতীয় বা নির্ণায়ক ভোট দিবেন।

৪১। পরন্তু শুন্যতার ক্ষেত্রে যেকোনো কমিটির ক্রিয়া ক্ষমতা, -(ক) এই নিয়ম দ্বারা বা এই নিয়মের অধীনে কোরামের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে সংসদ দ্বারা নিয়োগপ্রাপ্ত কমিটির ক্ষমতা থাকবে সদস্যতার কোন পরন্তু শুন্যতার ক্ষেত্রে ক্রিয়া করার।
(খ) কমিটি, বিশেষজ্ঞদের সাক্ষ্য এবং বিশেষ স্বার্থের প্রতিনিধিরা যারা কমিটিতে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ব্যক্ত করতে চান, তা শুনতে পারে।
(গ) (খ) অধীন নীতি অনুসৃতে যখন কমিটির পরপর দুই দিন নির্ধারিত সভা স্থগিত করা হয়, তখন চেয়ারম্যান বিষয়টি সংসদে অবহিত করবেন।

৪২। কমিটির কোরাম। – (ক) কমিটির সদস্যদের নিয়োগ দেওয়ার সময়, কমিটি সভার সাংসদদের সংখ্যা যাদের উপস্থিতি কোরাম গঠনের জন্য প্রয়োজনীয়, তা সংসদ কর্তৃক নির্ধারিত হবে।
(খ) যদি বাছাই কমিটির কোন সভার জন্য নির্ধারিত সময়ে। অথবা এরকম কোন সভা চলাকালীন কোন সময়ে , কোরাম উপস্থিত না থাকে, তবে কমিটির চেয়ারম্যান সেই সভা কোরাম উপস্থিত না থাকা পর্যন্ত বিলম্বিত করবেন অথবা ভবিষ্যতের কোন দিন পর্যন্ত মুলতবি ঘোষণা করবেন।
(গ)
৪৩। কমিটির ভোটদান। – (ক) কমিটির সভায় সব প্রশ্ন উপস্থিত সদস্যদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা দ্বারা এবং ভোটদানের মাধ্যমে নির্ধারিত হবে।
(খ) ভোটের সমতা বাদে অন্য কোন ক্ষেত্রে চেয়ারম্যান ভোটদান থেকে বিরত থাকবেন।

৪৪। কমিটির প্রতিবেদন। – (ক) একটি কমিটি তার জন্য বরাদ্দ আলোচ্য বিষয়াদির একটি প্রতিবেদন তৈরি করবে অথবা বাছাই কমিটির ক্ষেত্রে তার প্রতি অর্পিত বিলের একটি প্রতিবেদন তৈরি করবে।
(খ) যদি কমিটির কোন সদস্য কোন বিষয়ে এক মিনিট বিরোধিতা করার ইচ্ছা পোষণ করেন তবে তাকে অবশ্যই প্রতিবেদনে এই বলে সই করতে হবে যে তিনি তার বিরোধিতার জন্য দায়ী থাকবেন এবং একই সময়ে তার বিরোধিতার কারণ ব্যাখ্যা করবেন। (??)

৪৫। প্রতিবেদকের উপস্থাপন। – (ক) একটি কমিটির প্রতিবেদন চেয়ারম্যান কর্তৃক সংসদে উপস্থাপিত হবে।
(খ) কমিটির প্রতিটি প্রতিবেদন, সংখ্যালঘুদের অভিমত সহ (যদি থাকে) , ইংরেজিতে ছাপা এবং তার একটি প্রতিলিপি সংসদের প্রতিটি সাংসদের ব্যবহারের জন্য নিশ্চিত করার দায়িত্ব বর্তাবে সচিবের উপর। সংখ্যালঘুদের অভিমত সহ (যদি থাকে) , এই প্রতিবেদন

আনুষ্ঠানিক গ্যাজেটে প্রকাশিত হবে এবং বাছাই কমিটির প্রতিবেদনের ক্ষেত্রে, কমিটিতে স্থিরীকৃত বিলের সাথে একত্রে ছাপানো হবে।

৪৬। কমিটির সভার আলোচ্যসূচি ও বিজ্ঞপ্তি। – (ক) একটি কমিটির আলোচ্যসূচির সময়সূচি এবং প্রত্যেক সভার আলোচনার বিষয় কমিটির চেয়ারম্যান কর্তৃক নির্ধারিত হবে।
(খ) একটি কমিটির সকল সভার বিজ্ঞপ্তি কমিটির সদস্যদের নিকট পাঠানো হবে।

৪৭। নিয়মের বিলম্বীকরণ। – এসব নিয়মের বাস্তবায়নে যখনই কোন অসঙ্গতি বা সঙ্কট দেখা দিবে, তখন যেকোনো সাংসদ ইচ্ছা করলে, স্পিকারের অনুমতি মোতাবেক, সংসদে কোন সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব করতে পারেন যে যেকোনো নিয়মের বাস্তবায়ন স্থগিত করা হোক, এবং যদি প্রস্তাবটি গৃহীত হয়, তবে বিচারাধীন নিয়মটি স্থগিত থাকবে।

৪৮। সঙ্কট দূরীকরণ। – যখন স্পিকারের মতামতে এই নিয়মগুলোর বিধান বাস্তবায়নে সম্ভাব্য সঙ্কট দেখা দিতে পারে, অথবা এমন কোন ক্ষেত্রে, যেখানে কোন বিধান বা যথেষ্ট কোন বিধানের অস্তিত্ব নেই, সেক্ষেত্রে সঙ্কট দূরীকরণে স্পিকার যেরূপ উপযুক্ত বলে মনে করেন সেরূপ অসঙ্গত নয় এরূপ নিয়ম তৈরি করতে পারেন।

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!