You dont have javascript enabled! Please enable it!

১৬ ভাদ্র ১৩৭৮ বৃহস্পতিবার ২ সেপ্টেম্বর ১৯৭১

-কুমিল্লা যশোর ও সিলেট সীমান্তের ১৭ টি এলাকায় মুক্তিবাহিনীর একযোগে হামলা। মুক্তিযোদ্ধাদের আচমকা মর্টার আক্রমণে পাকবাহিনীর বহু হতাহত। মুক্তিবাহিনীর কুমিল্লার কালিপুর, পরশুরাম, খানুরিয়া, শাহপুর, কাউয়ামতলা, নয়নপুর, বড়জেলা, হরিমঙ্গল, ছাগলপুর, রাজপুর, শালদাহ নদী মধুগ্রাম এবং সিলেটের রাধা নগর জয়ন্তীপুর রাজঘাট ও যশোরের বেনাপোল, হিজলতলি গ্রামে শত্রু বাহিনীর উপর আক্রমণ চালায়। যশোর রাজশাহী, পাবনা ও কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে মুক্তিবাহিনীর কম্যাণ্ড আক্রমণে ১০ জন রাজাকার খতম হয়। (সাপ্তাহিক জয় বাংলা ১০/৯/৭১)

-বাংলাদেশ বিভিন্ন শিল্পী  ও সাহিত্যিকদের একত্র করে একটি সংগঠন করা হয়। নাম ছিল ‘ লিবারেশন কাউন্সিল অফ দি ইন্টেলিজেন্টসিয়া’। অধ্যাপক এ আর মল্লিক ছিলেন প্রধান। অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেনঃ সর্বজনাব জহির রায়হান, আলমগীর কবির। ওয়াহিদুল হক ছিলেন। সংগঠনের প্রাণপুরুষ। উল্লেখ্য এ সময়েই ‘জীবন থেকে নেয়া ’ চলচ্চিত্র শেরপুরের জনৈক সিনেমা হলের মালিক কলকাতায় নিয়ে আসে। আওয়ামী লীগের এম এন এ জনব আবুলখায়ের মধ্যস্থতায় ষাটহাজার টাকার বিনিময়ে কলকাতায় ‘জীবন থেকে নেয়া’ বিভিন্ন পেক্ষাগৃহে প্রদর্শিত হয়। পরিচালক জনাব জহীর রায়হান তাঁর ছবির আয়ের সব টাকা দুস্থ শিল্পীদের দিয়ে দেন। তিনি আর্থিক অস্বচ্ছলতার মধ্যে থাকা সত্ত্বেও ছবির আয়ের কোন টাকা গ্রহণ করেন নি।

-উপনির্বাচনকে সামনে রেখে জামাত ইসলামী নেতা অধ্যাপক গোলামে আযম বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও উত্তরবঙ্গে পৃথক প্রদেশ গঠন সহ ৫দফা পরিকল্পনা ঘোষণা করেন, করাচীতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে গোলামে আযম প্রদেশের প্রতি সংঘটিত অবিচারে প্রতিকার এবং অবিলম্বে মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টিসহ সকল বিচ্ছিন্নতাবাদী দলকে নিষিদ্ধ করার দাবী উত্থাপন করেন। (দৈঃপাঃ)

-পাকসামরিক সরকার ২৬ মার্চ জারীকৃত প্রেস সেন্সরশীপ ব্যবস্থা প্রত্যাহার করেন। রাজনৈতিক দল গুলোর রাজনৈতিক তৎপরতা উপর থেকে অক্টোবর ১০ তারিখ থেকে বিধিনিষেধ প্রত্যাহৃত হয়।

-করাচীতে পিপলস প্রধান জুলফিকার আলী ভুট্টো বলেন, পূর্ব পাকিস্তানে গভর্ণর হিসেবে ডাঃ মালিকের নিযুক্তি গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার সঠিক পদক্ষেপ নয়।

-প্রাক্তন গভর্ণর ও প্রাদেশিক সামরিক আইন প্রশাসক লেঃ জেনারেল টিক্কা খানের (করাচীর উদ্দেশ্য) ঢাকা ত্যাগ।

-ঢাকার শহরতলী নসিরাবাদ বস্তি ঘেরাওকালে সেনাবাহিনীর টহল ইউনিট ও মুক্তিবাহিনী গেরিলাদের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ।

-৪৪জন ইপিসিএস অফিসারদের সামরিক আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ। ইপিসি এস অফিসাররা হলেন আলতাফ হোসেন খান, জীতেন্দ্র লাল চক্রবর্তী, আলতাফ হোসেন, একিউএম কামরুল হুদা, আব্দুল মতিন সরকার, হেলাল উদ্দিন খান, আব্দুল লতিফ, আব্দুল হালিম, জিয়াউদ্দিন আহমদ, ক্ষিতীশ চন্দ্র কুণ্ড, কাজী লুৎফর হক, মাখন চন্দ্র মাঝি, মোঃ মিজানুর রহমান, আব্দুল কাদের মুন্সী, দ্বিজেন্দ্রনাথ বেপারী, মানিকলাল সমাদ্দার, আফতাব উদ্দিন, কৃষানন্দ মোহন দাস, অমিয়াংশু সেন, মোঃ ইসহাক, মোঃ আব্দুল আলী,এ কে এম রুহুল আমীন, ইয়াকুব শরীফ, চিত্তরঞ্জন চাকমা, প্রিয়দা রঞ্জন দাস, জ্ঞান রঞ্জন সাহা, অমরেন্দ্র মজুমদার, গোলাম আকবর, বিবেকান্দ মজুমদার, দীপক কুমার সাহা, অনিলচন্দ্র সিংহ, সুবীর কুমার ভট্টাচার্য, আব্দুল লতিফ ভুঞা, এ, এইচ এম, আব্দুল হাই, মোঃ আমানত উল্লাহ, রিয়াজুর রহমান, এ, এফ, এম, রমিজ উদ্দিন, জ্যোতি বিনোদ দাস, আজিজুর রহমান, বিভুতিভূষণ বিশ্বাস, জিতেন্দ্র লাল দাস, খান আমীর আলী, যোগেশচন্দ্র ভৌমিক ও জহিরুল ইসলাম ভুঞা। (দৈঃ পাঃ)

Reference:

একাত্তরের দশ মাস – রবীন্দ্রনাথ ত্রিবেদী

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!