You dont have javascript enabled! Please enable it!

২ ভাদ্র, ১৩৭৮ বৃহস্পতিবার, ১৯ আগষ্ট ১৯৭১

২নং সেক্টরের বীর মুক্তিযোদ্ধা গ্রুপ কমান্ডার আবদুল হালিম চৌধুরী এ দিন নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ পাওয়ার ষ্টেশনে পাক সেনাদের বিরুদ্ধে সম্মুখ যুদ্ধে আহত হন। তিনি এ লিটেন্ট রোডের পাওয়ার ষ্টেশন, ফার্মগেট, যাত্রাবাড়ী ও আশুগঞ্জ পাওয়ার ষ্টেশনে গেরিলা আক্রমণে সাহসিকতার  পরিচয় দেন। উল্লেখ্য, ২৯ আগষ্ট বড় মগবাজারে এক অপারেশন পাকসেনাদের হাতে ধৃত হন পরে পাকসেনারা তাঁকে হত্যা করে। শহীদ আবদুল হালিম চৌধুরীর সাহসিকতার জন্য “বীর বিক্রম” উপাধিতে ভূষিত হন।

এ দিন পাকিস্তান সরকার এক ঘোষণায় পূর্বাঞ্চলে আওয়ামী লীগ দলীয় ৯৪ জন প্রাদেশিক পরিষদ সদস্যের আসন সংরক্ষন উল্লেখ করে। এ প্রসঙ্গে কে সিএ লিখেছেঃ The Central Government of Pakistan announced (on Aug.19) that 94 Awami League members of the East Pakistan provincial Assembly would be allowed to retain their seats, while 193 other members, who were charged with “incitement to murder, rape, kidnapping, attacks on police posts and banks, armed robbery, rebellion and conspiring with the enemy” had been disqualified.

   

President Yahya Khan stated on Oct. 12 that by-elections to fill the vacant provincial seats would be held between Dec. 12. 1971 and Jan, 7 1972. (KCA, P-24954)

এ দিন ২ নম্বর সেক্টর ‘কে’ ফোর্সের মুক্তিসেনা শালদা নদীতে তিনটি নৌকা বোঝাই পাকিস্তানী সেনাদের ওপর অ্যামবুশ করে। এই হামলায় খতম হয় ২০ জন শত্রুসেনা। এলাকাটিও  দখলে আসে মুক্তিবাহিনীর। কানশাতলা এবং ফেরি এলাকায় শত্রুসেনা নিহতের সংখ্যা যথাক্রমএ ২ ও ২১, আহত ৩০।

রংপুর-রাজশাহী দিনমজুর রণাঙ্গণের মুক্তিবাহিনী আক্রমণে নিহত হয় ১০ হানাদার। আরেকটি সংঘর্ষে প্রাণ হারায় শত্রুবাহিনীর ৬ জন, আহতের সংখ্যা ৯।

ময়মসিংহ-সিলেট দিনমজুর রণাঙ্গণের আতাপাআ এক দুঃসাহসিক আক্রমণ চালিয়ে মুক্তিবাহিনী পুলিশ ষ্টেশন দখল করে। তিনঘণ্টা যুদ্ধের পর আহত ৯ রাজাকার, পুলিশ ষ্টেশন-পোষ্ট অফিস ধ্বংস, ২২ টি রাইফেলশ, টেলিফোন সেট হস্তগত করে মুক্তিবাহিনী। পরাগপুর, শালদা নদী বড়লেখা, ফাইলাপুর, কামাল্পুর, জাকিবাড়ি এলাকায় নিহত হয় ৩২ জন শত্রুসেনা, ৪ রাজাকার।

গোমতী-খেতকিবাড়ি, কামালপুর, সড়কসেতু, কুশিয়ারা নদীর বাঁধে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে তা ধ্বংস করে মুক্তিবাহিনী। তানতার, আন্দপুর, বাগধানী, সুতারকান্দি, শাহাবাজপুর, লাটু- বড়লেখায় মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন আক্রমণের শত্রুর ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়।

পূর্বাঞ্চলীয় জোন ক্যাম্পের তালিকা তৈরি করা হয়। তালিকায় ২৫ টি ক্যাম্পের উল্লেখ ছিল। এসব ক্যাম্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রশিক্ষণ শিবিরগুলোর সংখ্যা ছিল ২৭। আজ কোন শিবিরে কে প্রশিক্ষণ দেবেন তার তালিকাও প্রকাশ করে বাংলাদেশ সরকারের লিবারেশন কাউন্সিল।  (স্বঃ যুঃ দঃ)

লেঃ জেনারেল টিক্কা খান সামরিক বিধি ও পাকিস্তান দণ্ডবিধি অনুযায়ী অভিযুক্ত করেন ১৩ জন নির্বাচিত জাতীয় পরিষদ সদস্যকে। অভিযুক্তরা হলে মিসেস নূরজাহান মূর্শেদ, মিজানুর রহমান চৌধুরী, কাজী জহিরুল কাউয়ূম, খন্দকার মুশতাক আহমদ, খুরশীদ আলম, নূরল ইসলাম চৌধুরী, মোহাম্মদ ইদ্রিস, মুস্তাফিজুর রহমান, খালিদ মোহাম্মদ আলী, খাজা আহমদ, নুরুল হক, মোহাম্মদ হানিফ। রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতা গুন্ডাদের নিয়ে দল গঠন, নিরীহ জনসাধারণকে হত্যা, সেতু ও কালভার্ট ধ্বংস, জাতীয় পতাকার প্রতি অবমানানা, কায়েদে আজমের ছবির অমর্যাদাসহ বিভিন্ন অভিযোগ তাদেরকে অভযুক্ত করা হয়।

আজ সুন্দরবনের গভীরে রাজাকারদের সহায়তায়, হানাদাররা আক্রমণ করে মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পে। নির্মমভাবে হত্যা করে ৫১ জন মুক্তিযোদ্ধাকে। ৯ জন মুক্তিযোদ্ধা ধরা পড়ে, স্বীকার হন হানাদার ঘাতকদের চরম নির্যাতনের।

Reference:

একাত্তরের দশ মাস – রবীন্দ্রনাথ ত্রিবেদী

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!