You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.10 | চরমপত্র অক্টোবর ১৯৭১ - সংগ্রামের নোটবুক

ক্যারে হা করা আও করিছু না ক্যা? ক্যারে মগরা চোখা, লােক্ করে আছ ক্যা। কবু না? সূর্যের উপকারিতা কি? | হামি কমু, হামি কমু? সূর্যের উপকারিতা স্যার? সূর্যের আগুন দিয়া না, বেঁড়ি ধরান যাবি।

কি কলু? সূর্যের আগুন দিয়া বেড়ি ধরাবু?- ওডা ক্যাংকা করে হয়রে?

আসামের মাইনক্যাচরের আবুল কাসেম হাল সাং প্রযত্নে ঠ্যাটা মালেকা, এই রকম একটা কারবার কইর‌্যা ফেলাইছে। ব্যাডায় দুইজন মাইনষের তিনডা গুরুপের পাটি কাউন্সিল মুসলমান লীগের মাইদ্দে ল্যাং মাইরা দারিকুল ইসলামেরে চিৎ কইর‌্যা ফালাইয়া মন্ত্রী হওনের পর ঘােড়া ডিঙ্গাইয়া ঘাস খাওনের টেরাই নিতাছে। হাজার হইলেও পুরানা হাডিড। মরা পাকিস্তানের পয়লা জামানার বেডায় একবার পার্লামেন্টে প্রস্তাব করছিল, বিশ বছরের লাইগ্যা হগল Opposition পাট্টিরে বেআইনী ঘােষণা করলে ক্যামন হয়?

এইবার মন্ত্রী হওনের লগে লগে ব্যাডায় সেনাপতি ইয়াহিয়া খানরে মাখনবাজী করণের লাইগ্যা পুরানা বােতলের বটিকা বাইর করছে। এইটার নাম ছত্রিশা মহাশক্তি জীবন রক্ষক বটিকা। আর নিজে পেরতেক দিন সকালে তাল মাখনা খাইতে শুরু করছে। ওস্তাদে কইছে, ‘তেল তিসি তাল মাখনা- খায় জানানা হয় মরদানা’। কাসেম্যায় ইয়াহিয়া সা’বের কাছে দিলের মাইদ্দে থাইক্যা আরজ করছে, হুজুরে আলা, পাকিস্তানের মাইদ্দে আল্লাহর ওয়াস্তে এক পাটির শাসন কায়েম কইর‌্যা ফেলান। বাকী হগ্গল পাটিরে বেঅইনী কইর‌্যা দেন।’ কাসেম্যায় অনেক Think কইর‌্যা দেখছে, এক পাট্টির কারবার হইয়া গেলে তাে’ নমিনেশন পাইলেই যথেষ্ট। কী মজা! কী মজা! Election-এ হারনের ব্যাপার থাকবাে না। আল্লায় সারাইছে। ভ্যাগ্যিস্ এইবার আব্বাজান ইয়াহিয়া সা’ব ঠ্যাটা মালেকারে দিয়া হগল হারু পাটির মালগাে খুঁইজ্যা বাইর কইর‌্যা মন্ত্রী বানাইয়া World

২৭৭

Record করছে। হেইর লাইগ্যাই তাে এই রকম একটা চান্সিং হইছে। এখন এলাকার মাইনষেরে কওন যাইবাে। No, No, No, এলাকায় না, এলাকায় না। অংপুর এলাকায় তাে আবার বিচ্ছুগুলার গাবুর মাইর চলতাছে। বিবি সা’ব পােলাপান গাে কওন যাইবাে, মছুয়াগাে জামানায় Election-এ হারু ব্যাডারাই কেমন সােন্দর মন্ত্রী হয়। কিন্তুক কাসেম্যায় এক পাটির ব্যাপারটার মাইদ্দে বুঝতে ভুল কইর‌্যা ফেলাইছেন। পাকিস্তানের তাে ১৯৫৮ সালের অক্টোবর মাস থনেই এক পাট্টির রাজত্ব চলতাছে। খ্রিষ্টান কিলারের Lover বুড়া আইয়ুব খানের টাইম থাইক্যাই তাে’ মছুয়া পাটির শাসন কায়েম হইছে।

আমাগাে মেরহামত মিয়া আকা খক খক্ কইরা কাইস্যা উডলাে। ম্যাচ্‌ বাত্তির কাডি দিয়া কান খাউজ্যাইয়া কইলাে, বুঝছি, বুঝছি, পাকিস্তানের মাইদ্দেই তাে’ চাইড়া মাত্র পাটি আছে না? পয়লা মছুয়া পাটি-মানে মেলেটারি; দু অফিসার পাট্টি মানে এম.এম. আহম্মকের দল; তিরা শিল্পপতিগাে পাট্টি মানে আদমজী-ইস্পাহানী-ফ্যালীদাউদ-সায়গল আর চাইর নম্বরে হইতাছে ব্যবসায়ী পাট্টি মানে দাদা-আব্দুর রহমানআব্দুল গনির দল। আমাগাে ছক্কু মিয়া পচ্চৎ কইরা একগাদা পানের পিক ফালাইয়া কইলাে, তা হইলে যে দেখতাছি, তিনডা মুসলমান লীগ, হুক্কা নছরুল্লার পিডিপি, ছলু মিয়ার কে. এস.পি. খুনী মওদুদীর জামাত, চৌধুরী মােহাম্মদ আলীর লেজামে ইসলাম, মওলানা হাজারভির জমিয়তে উলামা, লাড়কানার ভুট্টোর পিপিপি- এইগুলা সব ঘেটু পাট্টি নাকি? বড় বড় গয়না নাওয়ের পিছনে যেমন কইর‌্যা একটা ছুডাে নাও বান্ধা থাকে, হেইরকম একটা ব্যাপার নাকি? আমি দু’জনের বুঝবার ক্ষেমতা দেইখ্যা অক্করে থ’ বইন্যা গেলাম। দিনে দিনে ছক্ক আর মেহামত মিয়ার Brain অক্করে খােতাই হইতাছে।

আইজ-কাইলকার দুনিয়ার মাইদ্দে একটা আবিষ্কার খুবই জব্বার হইছে। হেইডা হইতাছে, যখনই কোনাে নেতা আন্তাজ করতে পারে যে পাবলিকে তারে বেশি ভালােবাসইস্যা ফেলাইছে, মানে কিনা যেকোনাে টাইমে একটু ঘষাঘষির কারবার। কইরা ফেলাইতে পারে, তখন ব্যাডায় আর পাবলিক মিডিং করে না। মােক্ষম দাওয়াই রইছে- যার নাম সাংবাদিক সম্মেলন। হেই কাম শুরু কইর‌্যা দেয়। বাংলাদেশের দখলীকৃত এলাকায় গেল সাড়ে ছয় মাসের মাইদ্দে কোনাে Public Meeting হয় নাইক্যা। কারণ হেইখানকার হগ্গল হারু পাট্টির নেতারা পাবলিকের ঘষাঘষির ব্যাপারে খুবই ডরাইতাছে। এর উপর আবার রইছে বিচ্ছু। তাই হারু পার্টির নেতারা অখন খালি সাংবাদিক সম্মেলন করতাছে। এইসব নেতাগাে মাইদ্দেও আবার এই রকম মাল রইছে যারা সাংবাদিক সম্মেলনরেও ডরাইতাছে- ঠ্যাং কাঁপে। তাই ইসলামাবাদের সামরিক জান্তা আর একটা দাওয়াই বার করছে- হেইডার নাম বিশেষ সাক্ষাৎকার।

মানে মেজর সালেক গবর্ণমেন্টের মাইনা করা এ.পি.পির থনে না হইলে রেডিও গায়েবী আওয়াজ থনে একটা পােলারে হেই নেতার কাছে পাড়াইয়া দেয়। ব্যাস, হারু পার্টির নেতায় জাতির উদ্দেশ্যে কতকগুলা মিছা কথা হড় হড় কইয়া ফেলাইলাে। লগে

২৭৮

লগে ঢাকার সােয়া তিন হাজার সার্কুলেশনওয়ালা পাকিস্তান অবজার্ভার, মর্নিং নিউজ, পূর্বদেশ, দৈনিক পাকিস্তান, সংগ্রাম, আজাদ- এইসব কাগজ ভােমা ভােমা সাইজের হেডিং দিয়া ছাপাইয়া দিলাে। হেইদিন খাসীর গুর্দার শুরুয়া দিয়া তন্দুর রুটি খাইয়া পাকিস্তান অবজারভারের মাহবুবুল হক যাইয়া মেজর সালেকরে কইলাে কি স্যার কিছু রাইফেল, মেশিনগান, Hand granade গােটা দুই টেবিলে সাজাইয়া ফডাে তুইল্যা খবরের কাগজে ছাপাইলে কেমন হয়? আমরা কমু এইগুলার নাম মুখে আনা যায় নাহেগাে কাছ থনে দখল করছি। তা হইলেই তাে আমাগাে সােলজার আর রাজাকারগাে Morale Strong হইবাে। যেমন বুদ্ধি, হেমন কাম।

পরদিন সকালে ঢাকার খবরের কাগজের মাইদ্দে কী সােন্দর এই ফডাে বাইরাইলাে। কিন্তু মাহবুব সাব আপনার ওস্তাদ হরিবল হক তাে কায়দা কইরা ফরিনে ভাগছে। আপনে Election-এ হারনের পর এতাে তেল মালিশ কইর‌্যাও তাে ঠ্যাটা মালেকা-পিয়াজীর নেক নজরে পড়তে পারলেন না? আপনার কপালডাই কুফা। আমছালা দুইডাই হারাইলেন। এইডারেই কয় Mango Gunny Bag, Both Gone.

এর মাইদ্দে কারাবর হুনছেন নি? এয়ার মার্শাল আসগর খানরে চিনছুইন। হেই যে ব্যাডায় আইয়ুব খানের টাইমে পাকিস্তান বিমান বাহিনীর পেরধান আছিলাে। হেতােনে। ঢাকায় একটা সাংবাদিক সম্মেলন করছে। মার্শাল সা’বের কথাবার্তায় ঠ্যাটা মালেকজেনারেল পিয়াজীর কি রাগ? লগে লগে মেজর ছালেক কয়েকটা খবরের কাগজ, রেডিও আর টেলিভিশন অফিসে টেলিফোন কইরা দিলাে। ব্যাস্ এয়ার মার্শাল আসগর খানের খারাপ কথাবার্তাগুলা আর কেউই জানতে পারলাে না। 

ছক্ক অক্করে ফাল পাইড়া উঠলাে, কী কথা কইছে হেইডা কওন লাগবাে।” কইতাছি, কইতাছি। তাই বইল্যা পাজামার বন ধইর্যা টাইনেইন না। আসগর সাবে কইছে, মালেক্যা-পিয়াজী মিইল্যা যেসব শান্তি কমিটি বানাইছে, হেরা Riot কইর‌্যা বেড়াইতাছে আর মালেকার মন্ত্রীসভা অক্করে কুফা-পাবলিকে সেইগুলার গতরের মাইদ্দে থু দেয়। হেইগুলারে ডেরেনের মাইদ্দে থাইক্যা তুইল্যা আনছে। আপনারাই কন? এইসব কথাবার্তা চাপিস্ করণ ছাড়া আর কোনাে রাস্তাই নাইক্যা।

হ-অ-অ-অ এইদিক্কার কারবার কই নাই, না? বিক্ষুগুলা দিনা কয়েক হইলাে গাইবান্ধা মহকুমায় অক্করে ছেরাবেরা কাম কইর‌্যা ফেলাইছে। গেরামের মাইদ্দে যেমনে কইর‌্যা পেঁকির মাইদ্দে পাড় দিয়া ধানর থনে চাইল বাইর করে, বিচ্ছুগুলা রাজাকার আর মছুয়াগুলারে হেইরকম এটা কারবার কইর‌্যা ফেলাইছে। আরে দৌড়-রে দৌড়। কিন্তু দৌড়াইয়া যাইবাে কোন মুড়া- অ্যাঃ! ব্রহ্মপুত্র নদীর দুইদিকেই তুফান কারবার শুরু হইয়া গেছে। ময়মনসিংহ-সিলেটের উত্তর মুড়া থাইক্যা গাইবান্দা-কুড়িগ্রাম-ঠাকুরগাঁ। অক্করে মছুয়াগুলার গােরস্থান হইয়া গেছে। এর মাইদ্দে আবার চাপাইনবাবগঞ্জ, সাতক্ষীরা, টাঙ্গাইল, নােয়াখালীর থনের মাজমাডার খবর আইতাছে। জেনারেল পিয়াজীর একটাই অর্ডার, রাজাকার লােগকো মণে দেও, মগর মছুয়া বাচাও’ কিন্তুক

২৭৯

মরণে যাগাে ডাক দিছে তাগাে বাঁচাইবাে কেডা? আগেই কইছিলাম এক মাঘে শীত যাইবাে না! অখন কাঁদলে কি হইবাে?