চড়িয়া মধ্যপাড়া ও পাটধারী অন্ধ পুকুরপাড় গণকবর
১৯৭১ সালের ২৫ এপ্রিল সোমবার সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার সলঙ্গা থানার হাটিকুমরুল ইউনিয়নের ৭টি গ্রামে গণহত্যা চালায় পাক বাহিনী। চড়িয়া মধ্যপাড়া, পাটধারী, কালিবাড়ী, শিকার মগড়াপাড়া, চড়িয়া শিকার দক্ষিনপাড়া, গোলকপুর, কাচিয়া গ্রামে এ হত্যাযজ্ঞ চলে। পাকসেনাদের ব্রাশ ফায়ারে প্রায় ২ শতাধিক গ্রামবাসী শহীদ হন। এঁদের মধ্যে ৩৫ জনকে চড়িয়া মধ্যপাড়া পুকুরপাড় ও পাটধারী অন্ধ পুকুরপাড়ে গণকবর দেওয়া হয়েছে।
পাকসেনাদের গুলি লাগার পরও ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়া চড়িয়া মধ্যগ্রামের আবুল কালাম (কাঙ্গাল মণ্ডল) জানান, পাকিস্তানি বাহিনীর একটি দল বগুড়া-নগরবাড়ি মহাসড়কে ব্যারিকেড পেয়ে গ্রামে ঢুকে পড়ে। তখন গ্রামবাসীরা ঘুমিয়ে ছিল। পাকসেনারা ভোর থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত গ্রামবাসীর ওপর নির্বিচারে গুলি চালাতে থাকে। ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়। তাঁদের হাত থেকে কোলের শিশুটিও সেদিন রেহাই পায়নি। তিনি বলেন, ওই দিন সকালে পাকসেনারা ৩৬ জনকে ধরে এনে চড়িয়া মধ্যপাড়ার আব্দুল মজিদ ও ইয়ার আলীর পুকুরের পাশে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে গুলি চালায়। ঘটনাস্থলে ৩৫ জনের মৃত্যু হয়। ৩টি গুলিবিদ্ধ হয়েও বেঁচে যান তিনি।
শহীদ ব্যাক্তিরা হলো- চড়িয়া মধ্যপাড়া গ্রামের বাহাজ উদ্দিন, ইয়াকুব আলী, আদম আলীম, ইউছুব আলী, মেছের উদ্দিন মুন্সী, ছলিম উদ্দিন, আজিজুল জক, গগন মণ্ডল, ডাঃ শাহজাহান আলী, মোহাম্মদ আলী, তারা সরকার, কানছু সরকার, আবু বকর প্রামাণিক, আবেদ আলী, আব্দুর কাইয়ুম, ডাঃ মুজিবর রহমান, ফজল প্রামাণিক, আমানত আলী, আবু তাহের, আহসান আলী, শাহজাহান, কাফি, আবু তালেব, ছানু ফকির, কাঞ্জু প্রামাণিক, আব্দুস ছাত্তার, মাহাম খা, দারোগা আলী, মজিবর রহমান, আজিজ, হাকিমুদ্দীন, আব্দুল মজিদ, পাওমুসাম শমসের আলী, তারা প্রামাণিক। এছাড়াও ঐদিন পাটধারী গ্রামের ২৯ জন, কালীবাড়ী গ্রামের ১৩ জন, শিকার মগপাড়া গ্রামের ৮ জন, চড়িয়াশিকা দক্ষিণ পাড়া গ্রামের ১০ জন, গোলকপুর গ্রামের ৫ জন, কাচিয়ার গ্রামের ১ জনসহ নাম না জানা অনেককে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।