বড়ইতলা বধ্যভূমি
সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার গান্দাইল ইউনিয়নের বড়ইতলা গ্রাম। নিরাপদ ভেবে এ গ্রামে আশ্রয় নিয়েছিল হাজারো মানুষ। ১৯৭১ সালের ১৭ নভেম্বর রাতে রাজাকারদের সহায়তায় পাকিস্তানি সেনারা বরইতলা গ্রাম ঘেরাও করে নির্বিচারে গুলি চালায়। সে সময় স্থানীয় কমান্ডার লুৎফর রহমান (দুদু) ও আব্দুস সাত্তারের নেতৃত্বে মুক্তিবাহিনী পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তোলে। রাত শেষে দিনভর যুদ্ধের পর মুক্তিবাহিনী পিছু হটে। পাকিস্তানি সেনারা গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়ে হত্যাযজ্ঞ চালায়। মসজিদে এত্তেকাফরত ৩০ জন মুসল্লিকেও বেঁধে এনে গ্রামের উত্তরপাশে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে। এরপর পার্শ্ববর্তী উদ্গাড়ী, কাচিহারা, মিরারপাড়া, মাথাইলচাপড়, আলমপুর, দুবলাই, গান্ধাইল, বাঐখোলা গ্রাম থেকে মুক্তিযোদ্ধারা এসে পাক হানাদারদের সঙ্গে ভোর থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত যুদ্ধ করে। ৬ পাক হানাদার ও বাবু নামে এক স্থানীয় রাজাকার নিহত হয়। অন্যদিকে, প্রায় দু’হাজার গ্রামবাসী আহত ও ১০৪ জন শহীদ হন। স্বাধীনতার পর ৭৬ জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার নাম খচিত বরইতলীতে স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়েছে। ২৮ জনের নাম জানা যায়নি। কাজিপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার হাবিবুর রহমান এ তথ্য জানান।
তবে অন্যত্র বরইতলা গ্রামে হামলা চালিয়ে দুই শতাধিক ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে ২০০ জনকে হত্যা করে বলে দাবি করা হয়। (মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর সংগৃহীত তথ্যসূত্র: একাত্তরের বধ্যভূমি ও গণকবর – সুকুমার বিশ্বাস, পৃ.-৯৯; যুদ্ধাপরাধ গণহত্যা ও বিচারের অন্বেষণ – ডা. এম এ হাসান, পৃ.-৪২১)