আখালি বধ্যভূমি
সিলেট শহরের অনতিদূরে আখালি। টুকের বাজার ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত হলেও আখালির অধিকাংশ এলাকা সিলেট পৌরসভার অন্তর্ভুক্ত এবং বর্তমানে সিটি কর্পোরেশনের ভেতরে। এ এখালি অঞ্চলের মানুষ মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদান রেখেছে। একাত্তরের ২৫ মার্চ সিলেট শহরেযে ঐতিহাসিক লাঠি মিছিল অনুষ্ঠিত হয়, তার সূচনা আখালি থেকেই।
একাত্তরের ২৮ মার্চ পাকিস্তানি হায়েনার দল আখালিতে প্রবেশ করে। এখানে মদিনা মার্কেটে তারা ক্যম্প প্রতিষ্ঠা করে এবং শুরু করে গণহত্যা। তারা মদিনা মার্কেটে নিরস্ত্র জনতার উপর গুলিবর্ষণ করে। এতে মানিক মিয়া, একজন রিক্সাচালক, এক বৃদ্ধসহ আরও অনেকে নিহত হয়। এরপর ১০ এপ্রিল পাকবাহিনী নোয়াপাড়া গ্রামের আওয়ামী লীগের সমর্থক আব্দুল আজিজ ভুজু-র বাড়ি আক্রমণ করে, কিন্তু তাকে না পেয়ে পাক হায়েনার দল একের পর এক বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিতে থাকে। এসময় তারা এই গ্রামের আব্দুছ সাত্তার ও আব্দুর রাজ্জাক নামের দুজনকে গুলি করে হত্যা করে। ২৩ এপ্রিল জল্লাদরা আড়িখাইয়ের সুশীল চন্দ্র ঘোষকে এবং ২৫ এপ্রিল কলাপাড়ার পুলিন চন্দ্র দেবকে গুলি করে হত্যা করে।
এছাড়া যুদ্ধকালীন পাকবাহিনী এই আখালি এলাকায় ব্যাপক লুটতরাজ, হত্যাযজ্ঞ ও নারী নির্যাতন চালায়। (মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর সংগৃহীত তথ্যসূত্র: সিলেটে গণহত্যা – তাজুল মোহাম্মদ, পৃ.-১৯-২২)