গালিমপুর গণহত্যা
১৯৭১ সালের ২০ মে ২৯ জন বাঙালির রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল বালাগঞ্জের গালিমপুর গ্রাম। ১৮ মে পাকবাহিনীর দালাল মদরিছ আলী পাকিস্তানি এক সেনাকে নিয়ে গালিমপুরে আসে। তারা গ্রামের কিছু মানুষকে জড়ো করে জানিয়ে দেয় গ্রামের পক্ষ থেকে যেকোনো ২ জন শেরপুরস্থ পাক ক্যাম্পে গিয়ে ক্যাপ্টেনের সঙ্গে দেখা করতে। ১৯ মে বুধবার গ্রামের সুরেশ দাশ ও রাকেশ দাস ক্যাম্পে গেলে ক্যাপ্টেন জানিয়ে দেয় ৫ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হবে। তাঁদের কথামত গ্রামের সবার কাছ থেকে চাঁদা তুলে ২০মে বৃহস্পতিবার রাজাকারদের কাছে ৩ হাজার টাকা পৌছে দিয়ে শান্তি কার্ড সংগ্রহ করা হয়। কিন্তু ঐদিনই দুপুর ১টার দিকে রাজাকার আবদুল আহাদ চৌধুরী (সাদ মিয়া) ও শেরপুর মাদ্রাসার শিক্ষক কালা মৌলভীর নেতৃত্বে পাক সেনাদল গালিমপুরে প্রবেশ করে হত্যায় মেতে ওঠে। প্রথমেই ৬ জনকে ধরে এনে লাইনে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে। এসময় গ্রামবাসীরা চারদিকে ছুটে পালাতে থাকলে হানাদার বাহিনী এলোপাতারি গুলি করা শুরু করে। এসময় ২৯ জন শহীদ হন। হত্যাযজ্ঞের পর পাকবাহিনী ও রাজাকাররা মিলে শতাধিক বাড়িতে লুটপাট করে আগুন লাগিয়ে দেয়। পাকবাহিনী চলে গেলে পরে এলাকাবাসী লাশগুলো বর্তমান হুরুন্নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে গণকবর দেয়।
যুদ্ধের পর সামান্য মাটি ভরাট ও সামনের দিকে কিছু অংশে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হয়। সম্প্রতি এখানে নির্মাণ করা হয়েছে স্মৃতিসৌধ।