আদিত্যপুর গণহত্যা
১৯৭১ সালে ১৪ জুন বালাগঞ্জের আদিত্যপুরে পাকবাহিনী গণহত্যা চালায়। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানান, ১৯৭১ সালের ১৪ই জুন ৪টি সাঁজোয়া যান নিয়ে ২৫ -৩০ জন পাকিস্তানি সেনা আদিত্যপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আসে। আতঙ্কিত হয়ে ওঠে আদিত্যপুর গ্রামবাসী। পাকবাহিনীর দোসর আবদুল আহাদ চৌধুরী (ছাদ মিয়াঁ), মসরু মিয়াঁ সহ কয়েকজন গ্রামে এসে জানায় সবাইকে নিয়ে স্কুল মাঠে বৈঠক হবে। শান্তি কমিটির কার্ড দেওয়া হবে। কার্ড নিতে বিদ্যালয় মাঠে আসা গ্রামের ৬৫ জন পুরুষকে রশি দিয়ে বেঁধে ফেলে পাক সেনারা। অন্যদিকে রাজাকার আবদুল আহাদ চৌধুরী আর মসরু মিয়ার নেতৃত্বে গ্রামের প্রতিটা বাড়িতে চলে লুণ্ঠণ। পাক সেনাদের গুলিতে মুহূর্তেই নিস্তেজ ৬৩টি প্রাণ হয়ে যায়। সেদিন পাক সেনারা মৃত ভেবে ফেলে যাওয়ায় গুলিবিদ্ধ শিবপ্রসাদ সেন ও কংকন সেন নামের দুইজন প্রাণে বেঁচে যান। লাশের পচা গন্ধে ভারী হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। ১৭ই জুন বৃহস্পতিবার রাজাকাররা আবার আদিত্যপুরে এসে গর্ত খুঁড়ে বিদ্যালয় মাঠে লাশগুলো মাটি চাপা দেয়। ২২ শে জুন মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক ওসমানীর নির্দেশে মাটি খুঁড়ে বের করা হয় লাশ। সিলেট সদর হাসপাতালে ময়না তদন্ত শেষে লাশগুলো প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অদূরে বর্তমান গণকবরে সমাহিত করা হয়।
প্রথমে গণকবরের চারপাশে দেয়াল নির্মাণ করা হয়। সম্প্রতি এখানে নির্মাণ করা হয় স্মৃতিস্তম্ভ।