You dont have javascript enabled! Please enable it! মনু সেতু বধ্যভূমি - সংগ্রামের নোটবুক

মনু সেতু বধ্যভূমি

মৌলভীবাজার শহরের মনু নদীর সেতুর কাছে সড়ক ও জনপথ বিভাগের ডাকবাংলো ছিল পাক হানাদার বাহিনীর ক্যাম্প। এখানে বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজনকে ধরে এনে নির্যাতন করতো পাকবাহিনী। অপরদিকে এই স্থানটি মৌলভীবাজার শহরের প্রবেশ পথ। লোকজন এই পথ দিয়ে আসা যাওয়ার সময় সঠিক ভাবে সালাম না দিলে ধরে এনে শারীরিকভাবে নির্যাতন চালানো হতো। এছাড়া মানুষের মধ্যে ভয়ভীতি ছড়ানোর জন্য যুক্তরাজ্যে প্রবাসী মো. উস্তোওয়ার ও সিরাজুল ইসলামকে ধরে এনে দুষ্কৃতকারী ধরা হয়েছে তাকে প্রদর্শনের কথা বলে মাইকিং করে তারা। মনু সেতুর উপর দাঁড়ানো লোকজনকেও গুলি করে হত্যা করে মনু নদীর পানিতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। ‘এখানে মাইকিং করে প্রদর্শনী করে মানুষ হত্যা করা হয়েছে। ব্রিকফিল্ডের শ্রমিকদের হত্যা করা হয়েছে। ডাকবাংলো ছিলো তাঁদের টর্চার সেল’। জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমাণ্ডার জামাল আহমদ এ সব কথা জানান। অন্যসূত্রেও উল্লেখ রয়েছে – একাত্তরের ১৪ মে পাকহানাদার বাহিনী বিভিন্ন এলাকা থেকে বাঙালিদের ধরে এনে মৌলভীবাজারের মনু সেতুর উপর প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করে। ঐদিন হানাদার জল্লাদ বাহিনী সমস্ত এলাকাবাসীকে এই সেতুর কাছে সমবেত হবার নির্দেশ দেয়। আতঙ্কিত প্রায় হাজারখানেক মানুষ উপস্থিত হয়ে এ সেতুর উপর উঠলে হানাদাররা এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা এই হত্যাকাণ্ডের নারকীয়তা এখনো ভুলতে পারেনি। (মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর সংগৃহীত তথ্যসূত্র: সিলেটে মুক্তিযুদ্ধের শহীদ স্মারক- তাজুল মোহাম্মদ, পৃ.-৮২; যুদ্ধাপরাধ গণহত্যা ও বিচারের অন্বেষণ ডা. এম এ হাসান, পৃ.-৪৫৫-৪৫৬, ৪৬৫; সিলেটে যুদ্ধকথা – তাজুল মোহাম্মদ, পৃ.-১১১-১১২; বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র, অষ্টম খণ্ড- হাসান হাফিজুর রহমান সম্পাদিত, পৃ.-৪৯৫; দৈনিক আজাদ, ২৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৭২)