পানি উন্নয়ন বোর্ড (ওয়াপদা কলোনি) বধ্যভূমি
১৯৭১ সালের ২রা মে পাক বাহিনী ভোলা শহরে প্রবেশ করে বর্তমান ভোলা পানি উন্নয়ন বিভাগ-১ এর প্রাঙ্গণে অতিথিশালায় (রেস্ট হাউজ) তাঁদের ক্যাম্প স্থাপন করে। এছাড়া এই পানি উন্নয়ন বিভাগের প্রাঙ্গণের বিভিন্ন ভবনের ছাদে বালির বস্তা ব্যষ্টিত বাংকার ছিল ৪টি।
পাক বাহিনীর কমান্ডার মেজর জাহান জেব খান এই রেস্ট হাউজে অবস্থান করতেন। পানি উন্নয়ন বিভাগের পুব পাশে দু’টি ঘরই ছিল পাক বাহিনীর নির্যাতন কেন্দ্র। রাজাকারদের সহযোগিতায় ভোলার বিভিন্ন স্থান থেকে বহু মানুষকে ধরে এনে এখানে নির্যাতন শেষে হত্যা করে পানি উন্নয়ন বিভাগ প্রাঙ্গনের পুব পাশের সীমানা প্রাচীরের বাইরে মাটিতে পুঁতে রাখতো। এটিই ভোলার পরিচিত বধ্যভূমি।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর সংগৃহীত তথ্যে বলা হয়েছে, এইকেন্দ্রে প্রত্যেক রাতেই ১০/১৫জন করে বাঙালিকে পাকসেনারা হত্যা করত। অধিকাংশকেই বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করা হতো। পাশবিকতার কেন্দ্রস্থল ছিল এর অতিথিশালাটি। এখানে রাতের পর রাত ক্যাপ্টেন মুনীর হোসেন এবং সুবেদার সিদ্দিক অসংখ্য নারীকে ধর্ষণ শেষে হত্যা করেছে। ক্যাপ্টেন মুনীর লুটপাট করে নগদ টাকা ও সোনাদানা নিজে হাতিয়ে নিয়েছে আর তার সহযোগীরা নিয়েছে অন্যান্য জিনিস। এসব কাজে সহযোগিতা করেছে শান্তি কমিটি। (মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর সংগৃহীত তথ্যসূত্র: একাত্তরের বধ্যভূমি ও গণকবর – সুকুমার বিশ্বাস, পৃ.-১১৩-১১৪; যুদ্ধাপরাধ গণহত্যা ও বিচারের অন্বেষণ – ডা. এম এ হাসান, পৃ.-৪২৮; মুক্তিযুদ্ধ কোষ, তৃতীয় খণ্ড – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত, পৃ.-২০৫; বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র, অষ্টম খণ্ড – হাসান হাফিজুর রহমান সম্পাদিত, পৃ.-৪৮৬-৪৮৭; দৈনিক পূর্বদেশ, ১৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৭২)।