ওয়াপদা বধ্যভূমি
ব্রাহ্মণবাড়িয়া বধ্যভূমিগুলোর মধ্যে ওয়াপদা বধ্যভূমি ছিল কুখ্যাত। বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নিরীহ নিরস্ত্র লোকজনকে এখানে এনে হাত-পা-চোখ বেঁধে হত্যা করা হতো।
৯ অগাস্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া থানার উলচাপাড়া গ্রামে পাক বাহিনী অতর্কিত হামলা চালায়। উলচাপাড়া জামে মসজিদের তৎকালীন ইমাম জামাত সদস্য ও শান্তি কমিটির দালাল আবদুল কুদ্দুস ক্বারীর সহযোগিতায় পাক বাহিনী গ্রাম থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক অস্বিনী কুমার দেবনাথ, আওয়ামী-লীগ কর্মী নায়েব আলী, শিশির কুমার দেবনাথ, তাজুল ইসলাম, আনোয়ারুল ইসলাম, তোতা মিয়া ও আবদুল করীমকে ধরে নিয়ে যায়। তাঁদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া ওয়াপদা ক্যাম্পে আটকে রেখে নির্যাতন চালানো হয়। ১০ অগাস্ট রাতে ওয়াপদার দক্ষিণ পাশে অস্বিনী কুমারকে দিয়ে মাটি কাটিয়ে গর্ত করা হয়। সে রাতেই অস্বিনী কুমারকে হত্যা করে ঐ গর্তে মাটি চাপা দেওয়া হয়। পরবর্তীতে শিশির কুমারকেও হত্যা করা হয়। অন্যরা দীর্ঘদিন নির্যাতনের শিকার হয়ে ছাড়া পায়। (মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর সংগৃহীত তথ্যসূত্র: একাত্তরের বধ্যভূমি ও গণকবর – সুকুমার বিশ্বাস, পৃ.-১৩৮-১৩৯; যুদ্ধাপরাধ গণহত্যা ও বিচারের অন্বেষণ – ডা. এম এ হাসান, পৃ.-১৮৩, ৩৮৮; দৈনিক বাংলা, ২৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৭২; মুক্তিযুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-জয়দুল হোসেন (প্রকাশক, শিকদার আবুল বাশার গতিধারা ৩৮/২ ক বাংলাবাজার ঢাকা ১১, প্রকাশকাল ফেব্রুয়ারী ২০১১) পৃ.-১৫৫)।