You dont have javascript enabled! Please enable it!

ডাকরার গণহত্যা

১৯৭১ সালের ২১ মে শুক্রুবার (৬ জ্যৈষ্ঠ ১৩৭৮) বাগেরহাতের রজ্জব আলী ফকিরের রাজাকার বাহিনী রামপাল উপজেলার পেড়িখালী ইউনিয়নের ডাকরা গ্রামে ব্যপক গণহত্যা চালায়।

ভারতে চলে যাবার জন্য কদিন ধরে ডাকরা গ্রামের কালিবাড়ির প্রধান পূজারী নোয়াকর্তা বাদল চন্দ্র চক্রবর্তীর অনুসারী অসংখ্য হিন্দু পরিবার মংলা নদী, মাদারতলা নদী ও কুমারখালী খালের তীরে শতাধিক নোউকায় অবস্থান নেউ। সেখানে বাগেরহাটের রাজাকার কমাণ্ডার রজ্জব আলী দলবল নিয়ে ২১ মে বেলা একটার দিকে প্রথমে নদী ও খালের তীরে বাধা নৌকায় থাকা এবং পরে গ্রামে ও কালিবাড়িতে গুলি করে হত্যা করে। কালিবাড়িতে গুলিবিদ্ধ হয়েও যারা মরেনি তাঁদের আকিজ উদ্দিন ও মজিদ কসাই জবাই করে।

দুপুর তিনটার মধ্যে এ হত্যাযজ্ঞ শেষ হয়। সেদিন কালীবাড়িতে কোনো নারীকে হত্যা করেনি রাজাকাররা। তবে গ্রামের পথে বেশ কয়েকজন নারীর লাশ দেখা গেছে। আর কয়েকজন তরুনীকে রজ্জব আলীর নৌকায় তুলে নিয়ে যায় তারা। সন্ধ্যা হওয়ার আগেই জীবিত গ্রামবাসীদের একাংশ পাশের মুসলমান পাড়ায় ও অন্যরা ভারতে পালিয়ে যায়।

পেড়িখালী ইউনিয়নের তৎকালীন চেয়ারম্যান শেখ নজরুল ইসলাম দাবী করেন, ওই দিন কমপক্ষে ৬৪৬ জন মানুষকে হত্যা করা হয়। পরদিন ডা. দেলোয়ার হোসেনের উদ্যোগে যে তরুণরা কালীবাড়ি চত্বরের লাশগুলো মাটিচাপা দেয় তারা। তাঁদের মতে প্রায় দুইশ’ লাশ মাটিচাপা দেয় তারা। এই গণকবর পরে মংলা নদীর গর্ভে তলিয়ে যায়। এছাড়া মংলা নদী মাদারতলী নদী এবং কুমারখালী খালে অনেক লাশ ভেসে যায়, অনেক লাশ বিভিন্ন জায়গায় পড়ে থাকে। রামপাল, বাগেরহাট, মোরেলগঞ্জ ও বৃহত্তর বরিশাল জেলার বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা এই হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। স্বরোচিষ সরকারের ‘একাত্তরের বাগেরহাট’ বইতে অনেক শহীদের নামসহ সেদিনের বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে। নদী ভাঙনে নোয়াকর্তার মন্দিরটিসহ বধ্যভূমি এলাকাটি বেশ কয়েকটি বেশ কয়েক বছর আগে নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে।

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!