You dont have javascript enabled! Please enable it! গৌরনদীর ৪টি বধ্যভূমি - সংগ্রামের নোটবুক

গৌরনদীর ৪টি বধ্যভূমি

বাটজোর মরার ভিটা, এএসপি অফিসের নদীর পাড়, গয়নাঘাটা সেতু ও সরকারি কলেজের সংলগ্ন ঘাট (স্থানীয়ভাবে কসাইখানা নামে পরিচিত) এই চার বধ্যভূমিতে ১২শ’ মানুষকে হত্যা করা হয়। মে মাসের প্রথম দিকে পাক বাহিনী গৌরনদী কলেজে স্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করে। ক্যাম্পে আড়াই শতাধিক সৈন্য অ ৫০ জনের মত রাজাকার, আলবদর ছিল। তারা বাটাজোর, ভুরঘাটা, মাহিলাড়া, আশোকাঠী, কসবাসহ প্রতিটি সেতুতে পাক সেনাদের বাংকার করে। এই ক্যাম্পের উত্তরে ভুরঘাটা, দক্ষিণে উজিরপুরের শিকারপুর, পশ্চিমে আগৈলঝাড়ার পয়সারহাট, পূর্বে মুলাদী পর্যন্ত গৌরনদী কলেজ ক্যাম্পের সৈন্যদের নিয়ন্ত্রণে ছিল।। হত্যাকাণ্ড, লুটতরাজ, নারী ধর্ষণসহ নানা কাজে হানাদারদের সহযোগিতা করতো স্থানীয় দালালরা। পাক সেনারা গৌরনদী কলেজের উত্তর পাশে একটি কূপ তৈরি করে সেখানে লাশ ফেলতো। কলেজের উত্তর পাশে হাতেম পিয়নের বাড়ির খালপাড়ের ঘাটলায় মানুষ জবাই করে খালের পানিতে ভাসিয়ে দেওয়া হতো। গার্লস হাইস্কুলের পার্শ্ববর্তী পুল ও গয়না ঘাটা সেতুর উপর বসে মানুষ খুন করে খালে ফেলতো পাক সেনারা। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনায় জানা গেছে, শতশত লোক ধরে এনে ওইসব স্থানে হত্যা করা হতো।

’৭১ সালের ১৪ মে দোনারকান্দিতে চিত্ত বল্লভের নেতৃত্বে স্থানীয় লোকজন ঢাল শড়কি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং ৪ জন সেনাকে কুপিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় পাক সেনারা ক্ষিপ্ত হয়। কসবার দুধ কুমারের মাজার সংলগ্ন রাস্তা দিয়ে চাদশী হয়ে পশ্চিম দিকে শতাধিক সেনা অগ্রসর হয়ে জনতার উপর ব্রাশপফায়ার করে। ৭/৮  টি গ্রামের ৪/৫ হাজার মানুষের ওপর গুলি চালায়। ২ শতাধিক নারীপুরুষকে হত্যা করে ওই সময় তারা। (সূত্র: সাংবাদিক খোকন আহম্মেদ হীরার সংগ্রহ)